সিরিয়ার আলেপ্পো বিদ্রোহীদের দখলে

সিরিয়ার আলেপ্পো বিদ্রোহীদের দখলে দীর্ঘ আট বছর পর আবার আসাদ সরকারের হাতছাড়া হয়ে গেল সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটি। আকস্মিক আক্রমণের তিন দিন পর সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোতে প্রবেশ করেছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে সরকারি বাহিনী শহরটি পুনরুদ্ধারের পর এবারই প্রথমবারের মতো তারা সেখানে পা রাখে। সিরিয়ার সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, কট্টর ইসলামপন্থি সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শামের নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা এ আক্রমণ চালায়। বেসামরিক মানুষের জানমাল রক্ষায় তারা পুনরায় সেনা মোতায়েন প্রক্রিয়ার দিকে যাচ্ছেন। এদিকে গতকাল শনিবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্রোহীরা শহরের অধিকাংশ এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। গত বুধবার আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে শহরের বাইরের বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রবেশ করে বিদ্রোহীরা। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ সংস্থা সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বিদ্রোহীরা আলেপ্পো শহরের কেন্দ্রে পৌঁছায়। ভিডিও ফুটেজ যাচাই করে দেখা গেছে, জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত যোদ্ধারা শহরের কেন্দ্রস্থলের একটি চত্বরে সিরিয়ার সরকারবিরোধী পতাকা ওড়াচ্ছে। আলেপ্পো দখল প্রসঙ্গে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী বলছে, তারা একটি ‘বড় হামলার’ জবাব দিয়েছে। তাদের দাবি, শহরটির বিভিন্ন পয়েন্টে সামরিক অবস্থান শক্তিশালী করা হয়েছে। কিন্তু শহরের একাধিক বাসিন্দা জানান, আলেপ্পোর পশ্চিমাংশের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে সরকারি বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার নবগঠিত সশস্ত্র বিরোধী জোটের সামরিক শাখার প্রধান বলেন, ‘‘তারা ‘শাসক বাহিনী ও ইরানের সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষের পর’ আলেপ্পোর উপকণ্ঠে সিরিয়া সরকারের সামরিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। বিদ্রোহী বাহিনীর শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিদ্রোহীদের অগ্রসর হওয়ার প্রেক্ষাপটে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ট্যাঙ্কগুলো আলেপ্পো ছেড়ে যাচ্ছে। শহরের কেন্দ্রীয় সাদুল্লাহ আল-জাবিরি স্কয়ারে ধারণ করা আরও দুটি ভিডিওতে দেখা গেছে, জলপাই রঙের পোশাকে বিদ্রোহীরা সিরিয়ার বিরোধী দলের পতাকা নাড়ছে। প্রায় জনশূন্য চত্বরে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে স্লোগান দিচ্ছে তারা। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানায়, এদিন আলেপ্পো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে আঘাত হানে আর্টিলারি শেল। এতে অন্তত চারজন নিহত হন। যদিও বিদ্রোহীরা এ হামলার দায় অস্বীকার করেছে। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলেপ্পো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী বলেন, ‘একটি আর্টিলারি শেল ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় তলায় আঘাত করেছিল। তখন ছাত্ররা ভেতরেই ছিলেন। হামলায় হতাহত প্রসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটসের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার আলেপ্পো ও ইদলিবের গ্রামাঞ্চলে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে ছয় শিশু, দুই নারীসহ অন্তত ১৫ বেসামরিক মানুষ নিহত হন। আহত হন ৩৬ জন। এ হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) এক জেনারেল নিহত হয়েছেন। সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের আকস্মিক উত্থানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এ অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে তিনি সিরিয়ার সরকার ও সেনাবাহিনীর প্রতি ইরানের ‘নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন’ অব্যাহত রাখার ওপরও জোর দেন। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে বিদ্রোহীদের অভ্যুত্থানের পর ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সমর্থনে রাশিয়া সিরিয়ায় সেনা মোতায়েন করে।

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব যে শর্ত দিলেন পুতিন ও জেলেনস্কি

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব যে শর্ত দিলেন  জেলেনস্কি প্রায় তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এবার ইতি টানার ইঙ্গিত দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ন্যাটোর সুরক্ষা পেলে যুদ্ধবিরতি সম্ভব বলেই ইঙ্গিত দিলেন তিনি। শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের শীর্ষ প্রতিবেদক স্টুয়ার্ট রামসেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকার জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমরা যদি এই যুদ্ধের সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করতে চাই এবং ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল এখনও আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সেসবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই সেক্ষেত্রে আমাদের ন্যাটোর আশ্রয়ে যাওয়া প্রয়োজন। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরপরই এক রকম লেখা হয়ে গিয়েছিল ইউক্রেনের যুদ্ধের ফল। এরপরও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শেষ চেষ্টা স্বরূপ ইউক্রেনকে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন। তাতেও দমে যায়নি রাশিয়া। ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রেখেছে রুশ সেনারা। আর এর মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। আর তা মেনে নিয়ে এখন যুদ্ধবিরতির কথা ভাবতে শুরু করেছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসন জেলেনস্কিকে প্রস্তাবে জানিয়েছে, প্রায় ৩ বছরের যুদ্ধে ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রুশ বাহিনী দখল করেছে সেসব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ যদি রুশ বাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়া হবে। সেই প্রস্তাবই এখন মেনে নেওয়ার কথা ভাবছে জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে ন্যাটোর ছাতার তলায় যেতে চাই। তারপর ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল বেদখল হয়েছে সেগুলো পুনরুদ্ধারে কূটনৈতিক পন্থায় অগ্রসর হতে চাই। আমার মনে হয় এটা সম্ভব। তবে ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়া দখল করেছে সেগুলোকে আমরা রুশ ভূখণ্ড হিসাবে স্বীকৃতি দিতে পারি না। এটা অসম্ভব এবং ইউক্রেনের সংবিধানবিরোধী।এদিকে এই যুদ্ধে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন এই চার প্রদেশের দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে চার প্রদেশকে রুশ ভূখণ্ড হিসাবে স্বীকৃতিও দিয়েছে মস্কো। অন্যদিকে ন্যাটোর পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ইউক্রেনকে সদস্যপদ দেওয়া সম্ভব নয়।

ত্রিপুরার হাসপাতালও বাংলাদেশিদের চিকিৎসা দেবে না

ত্রিপুরার হাসপাতালও বাংলাদেশিদের চিকিৎসা দেবে না কলকাতার পর এবার বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার একটি হাসপাতালও। এরই মধ্যে ওই হাসপাতালে বাংলাদেশিদের জন্য হেল্প ডেস্কও বন্ধ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য ভারতে ভ্রমণ করে থাকেন। কলকাতার পাশাপাশি ত্রিপুরা ও দক্ষিণ ভারতের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা করাতে যান বাংলাদেশি রোগীরা। তবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর উভয় দেশের সম্পর্কেও দেখা দিয়েছে শীতলতা। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের কোনো রোগীকে চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কলকাতার জেএন রায় হাসপাতাল। এবার সেই একই পথে হাঁটল ত্রিপুরার আইএলএস হাসপাতালও। আগরতলায় অবস্থিত আইএলএস হাসপাতালটি একটি মাল্টি-সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। শনিবার তারা এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার দাবিতে স্থানীয়রা ওই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে আইএলএস হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না করার ঘোষণা দেয়। আইএলএস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের চিকিৎসা করানো বন্ধ করা নিয়ে স্থানীয়রা যে দাবি তুলেছেন তার সঙ্গে আমরা একমত। আখাউড়া চেকপোস্টে ও আইএলএস হাসপাতালে তাদের জন্য যে হেল্প ডেস্ক ছিল সেটিও এবার বন্ধ করা হলো। এদিকে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা না করার বিষয়ে হাসপাতালগুলোর সিদ্ধান্তের প্রতি একমত জানিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য শমীক ভট্টাচার্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হবে না বলে হাসপাতালগুলো যে বার্তা দিয়েছে তাতে আমি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। তার দাবি, গোটা ভারতের উচিত বাংলাদেশকে সমস্ত রকম পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করে দেওয়া। প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে স্বৈশাসক শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর থেকেই টানাপোড়েন চলছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। সম্প্রতি সাবেক ইসকন সদস্য এবং সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের জেরে আরো তিক্ত হয়েছে প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্ক।

ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের তাণ্ডবে নিহত ১৮

ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের তাণ্ডবে নিহত ১৮ ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের প্রভাবে শ্রীলংকায় ১৫ জন, ভারতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে । এর প্রভাবে তামিলনাড়ু ও পুদুচেরীতে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে চেন্নাইয়ে ট্রেন চলাচল ও ফ্লাইট ওঠানামা ব্যাহত হয়। বন্ধ ঘোষণা করা হয় বিমানবন্দর। ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার ৩০ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল স্থলভাগে আঘাত হানে। এরইমধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। এরইমধ্যে তামিলনাড়ু র‍াজ্যটির স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বহু মানুষকে। রোববার ভোর ৪টা পর্যন্ত চেন্নাই বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট স্থগিত ছিল। তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ের কোথাও কোথাও বন্যা দেখা দিয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, শনিবার চেন্নাইয়ে বৃষ্টি সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনায় বিদ্যুতায়িত হয়ে কমপক্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ফিনজালের প্রভাবে শ্রীলঙ্কায় ১৫ জনের মৃত্যুর তথ্য মিলেছে। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলেই মারা গেছে ১০ জন। ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ। জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা।

বিকেলে তামিলনাড়ু উপকূলে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজাল’, রেড অ্যালার্ট

বিকেলে তামিলনাড়ু উপকূলে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজাল’, রেড অ্যালার্ট বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নতুন ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজাল’ দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে গত ছ’ঘণ্টায় উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। এই সময়ে সমুদ্রে তার গতি ছিল ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার। শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলের মধ্যেই তামিলনাড়ু উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে এই ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজাল’, জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর বা মৌসম ভবন। স্থলভাগে প্রবেশ করার সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত। তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরীর উপকূলে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ, অফিস। মৌসম ভবন জানিয়েছে, শনিবার সকালে চেন্নাই থেকে ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম এবং পুদুচেরী থেকে ১৮০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ঘূর্ণিঝড়টি অবস্থান করছিল। আগামী কয়েক ঘণ্টায় তা আরও পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে সরবে। শনিবার বিকেলের মধ্যে হবে ঘূর্ণিঝড়ের ‘ল্যান্ডফল’। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা। তামিলনাড়ু-পুদুচেরী উপকূলে কারইকাল এবং মহাবলীপুরমের মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড়। এই সময়ে তার গতি থাকবে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে ‘ফিনজাল’ এর বেগ। এর ফলে সোমবার পর্যন্ত তামিলনাড়ু, পুদুচেরী, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং কর্নাটকের বেশ কিছু এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তামিলনাড়ুর বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর বিভিন্ন এলাকায় দু’হাজারের বেশি ত্রাণশিবির খুলেছে। উপকূল এলাকা থেকে সাড়ে ৪শ’র বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে। খুলে দেওয়া হয়েছে একাধিক হেল্পলাইন নম্বর।

৭৫ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করল আমিরাত

৭৫ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করল আমিরাত সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে গ্রেপ্তার হওয়া আরও ৭৫ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছে দেশটির সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে তারা বিক্ষোভ করেছিলেন তারা। এ নিয়ে মোট ১৮৮ জনকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দিয়েছে আরব আমিরাত। শুক্রবার ২৯ নভেম্বর দুপুরে ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. সারওয়ার আলম। তিনি বলেন, এ ইস্যুতে আমিরাতে আর কোনো বাংলাদেশি গ্রেপ্তার নেই। এর আগে দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে সারওয়ার আলম লেখেন, ‘জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এ ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে মিছিল ও বিক্ষোভ করায় আটক আরও ৭৫ প্রবাসী বাংলাদেশিকে আজ ক্ষমা করল আমিরাত সরকার। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১৮৮ জনকে মুক্তি দিয়েছে আমিরাত সরকার। এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, গত ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের। সেখানে বড় অংশজুড়ে ছিল ৫৭ বাংলাদেশির শাস্তি মওকুফের বিষয়টি। প্রধান উপদেষ্টা প্রেসিডেন্টকে প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষমা করে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট তার কথা রেখেছেন। প্রধান উপদেষ্টা এ সুখবরটি পেয়েছেন। উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল দেশটির আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এপারের বাড়িঘর কেঁপে উঠল মিয়ানমারের বিস্ফোরণে

এপারের বাড়িঘর কেঁপে উঠল মিয়ানমারের বিস্ফোরণে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পর পর কয়েকটি বিকট বিস্ফোরণে এপারে বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়িঘর কেঁপে ওঠেছে। এতে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিন থেকে পাঁচটি বিকট শব্দ শুনতে পান টেকনাফ, উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের বাসিন্দারা। সীমান্ত এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, গত এক বছরে মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে এমন শব্দ তারা কখনও শুনেননি। বিস্ফোরণের শব্দের পর অনেকেই আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। রাত সাড়ে ৮টার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক সীমান্ত এলাকার লোকজন এমন আতঙ্কের কথা প্রকাশও করেছেন। নাইক্ষ্যছড়ির ঘুমধুম থেকে টেকনাফ সদর পর্যন্ত বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে জানিয়েছেন টেকনাফ সদরের বাসিন্দা জাবেদ ইকবাল। ঘুমধুমের বাসিন্দা আজিজুল হক জানান, মিয়ানমারের বলিবাজারের এলাকা থেকে বিকট শব্দ ভেসে আসে। এসময় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আরাকান আর্মির ক্যাম্পে মিয়ানমার সরকারি বাহিনী গোলা বর্ষণ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের বিস্ফোরণের শব্দটি অনেক বেশি ভয়াবহ। এমন শব্দ আর কখনও শোনা যায়নি। গোলার শব্দ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রাতে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে থেমে থেমে ভারী মর্টার শেলের শব্দ শুনতে পেয়েছি। এসব গোলার শব্দ এখন নিয়মিত ঘটনার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের গোলার বিকট শব্দ আগে পাওয়া যায়নি। যার ফলে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্তে আগুনের কুণ্ডলী, যুদ্ধবিমানও দেখা গেছে। এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলার ইউএনওর দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী বলেন, মিয়ানমারের গোলার বিকট শব্দে আমার বাসভবনও কেঁপে উঠেছে। সীমান্তের লোকজনের খোঁজ রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি সীমান্তের আমাদের বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছেন। এদিকে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে সীমান্তে কড়া পাহারায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ ইশতিয়াক মুর্শেদ।

১১৭ বছরের মধ্যে রেকর্ড তুষারপাত সিউলে, নিহত ৪

১১৭ বছরের মধ্যে রেকর্ড তুষারপাত সিউলে, নিহত ৪ রেকর্ড ভেঙেছে দক্ষিণ কোরিয়ার তুষারপাত। ১১৭ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম নভেম্বরে সবচেয়ে বেশি তুষারপাত হয়েছে দেশটির রাজধানী সিউলে। অতিরিক্ত শীতে এরইমধ্যে চারজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। আজ সিউলের কিছু অংশে স্থানীয় সময় সকাল ৮টার মধ্যে ৪০ সেন্টিমিটারের (১৬ ইঞ্চি) বেশি তুষার জমেছে। জানা গেছে, ইতিমধ্যে ভারী ও রেকর্ড তুষারপাতের কারণে সিউলে ১৪০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে ফেরি ও ট্রেন চলাচল। সিউলের পাশাপাশি প্রদেশ গেয়ংগিতেও বৃহস্পতিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বুধবার তুষার চাঁপা পরে সিউল গল্ফ রেঞ্জে একজন মারা যায় এবং দু’জন আহত হয়। এছাড়া আর একজন গাড়ি পার্কে একটি প্রতিরক্ষামূলক তাঁবু ধসে মারা যায়। এছাড়া অতিরিক্ত তুষারপাতে রাজধানীর পূর্বদিকের মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত আরও দুজন নিহত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় গ্যাংওয়ান প্রদেশের কেন্দ্রীয় শহর ওনজুতে একটি মহাসড়কে ৫৩টি গাড়ির সংঘর্ষে ১১ জন আহত হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি শুরু হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল

যুদ্ধবিরতি শুরু হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল লেবাননে ইসরায়েল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। আজ বুধবার স্থানীয় সময় ভোর চারটার দিকে দুপক্ষের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। খবর রয়টার্সের। যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও এখনই লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে না ইসরায়েল। তবে ৬০ দিনের মধ্যে তাদের অবশ্যই লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে বলে জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরেও বৈরুত জুড়ে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে এটা উদযাপনের জন্য করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণ লেবানন থেকে বাস্তুচ্যুত হাজারো মানুষ। তবে লেবাননের সেনাবাহিনী ইসরায়েল সীমান্তবর্তী বসতিদের নিজ বাড়িতে ফিরতে একটু অপেক্ষা করতে বলেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির সঙ্গে কথা বলে তিনি জানান, সকাল ৪টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

রাশিয়ার যুদ্ধবিমান পথ আটকাল যুক্তরাষ্ট্রের বি-৫২ বিমানের

রাশিয়ার যুদ্ধবিমান পথ আটকাল যুক্তরাষ্ট্রের বি-৫২ বিমানের  বাল্টিক সাগর-সংলগ্ন রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ অঞ্চলের কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বি-৫২ বোমারু বিমান রাশিয়ার সু-২৭ যুদ্ধবিমানের বাধার মুখে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি সামরিক মহড়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। বোমারু বিমানগুলো ফিনল্যান্ডের আকাশসীমায় যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। ফিনল্যান্ড সম্প্রতি পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হয়েছে। দেশটির সীমান্ত রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় ১,৩৪০ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত। মহড়ার সময় রাশিয়ার যুদ্ধবিমান যুক্তরাষ্ট্রের বিমানগুলোর গতিরোধ করে। সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা আরও বেড়েছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেন রাশিয়ার ভেতরে হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাবে মস্কো ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে মধ্যপাল্লার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এই প্রেক্ষাপটে সোমবারের ঘটনা নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার মতে, রাশিয়ার বাধার ধরন পেশাদার এবং নিরাপদ ছিল। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমানগুলো পূর্বপরিকল্পিত পথে থেকে তাদের মহড়া চালিয়ে যায়। ফিনল্যান্ডের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, এই মহড়া তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও উন্নত করতে পরিচালিত হয়েছে। তবে মহড়ার সময় রাশিয়ার বাধা দেওয়ার বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে। এর পরের বছর ফিনল্যান্ড ন্যাটোর সদস্যপদ লাভ করে। ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিনল্যান্ড কিয়েভের প্রতি শক্ত সমর্থন দিয়ে আসছে। ইউক্রেনের পাশে থাকা পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ফিনল্যান্ডের এই যৌথ মহড়া রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা আরও বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।