ব্রিটেনে ব্যাপক ধরপাকড়, ২৮০ ডেলিভারি রাইডার গ্রেপ্তার

ব্রিটেনে ব্যাপক ধরপাকড়, ২৮০ ডেলিভারি রাইডার গ্রেপ্তার অবৈধ ‘ডেলিভারি রাইডার’ হিসেবে কাজ করা অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে সপ্তাহব্যাপী অভিযান পরিচালনা করেছে যুক্তরাজ্য। গত মাসে চালানো এই অভিযানে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়া প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। আজ ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে অবৈধ রাইডারদের গ্রেপ্তারের এই তথ্য জানানো হয়েছে। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, অভিবাসন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা গত ২০ থেকে ২৭ জুলাই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১ হাজার ৭৮০ জন ডেলিভারি রাইডারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় বৈধ নথিপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৫৩ জনের আশ্রয়-সংক্রান্ত সহায়তা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। দেশটিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা সব কোম্পানিকে তাদের কর্মীদের অভিবাসন-বিষয়ক অবস্থা যাচাইয়ের নতুন আইনি বাধ্যবাধকতাও চালু করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসন ঠেকানো নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। কারণ সম্প্রতি দেশটির ব্রেক্সিটপন্থী নেতা নাইজেল ফারাজের রিফর্ম ইউকে দলের প্রতি সমর্থন বাড়ছে। ব্রিটেনের সীমান্ত নিরাপত্তা-বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা ঈগল বলেছেন, সরকার এটি নিশ্চিত করতে চায়, কোম্পানিগুলো সরকারি নিয়ম মানছে এবং তা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারের পাশাপাশি গাড়ি ধোয়ার দোকান ও রেস্তোরাঁসহ ৫১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিভিল পেনাল্টি নোটিশ জারি করা হয়েছে। অবৈধ কর্মী নিয়োগে অভিযোগে জরিমানার মুখোমুখি হতে পারে এসব প্রতিষ্ঠান। অভিযানে ব্রিটিশ পুলিশ ৫৮টি ই-বাইকসহ ৭১টি যানবাহন জব্দ করেছে। এছাড়া ৮ হাজার পাউন্ড নগদ অর্থ ও ৪ লাখ ৬০ হাজার পাউন্ড মূল্যের অবৈধ সিগারেটও জব্দ করেছে পুলিশ। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, অবৈধভাবে কাজ করা ঠেকাতে অভিবাসন আইনপ্রয়োগকারী দলকে অতিরিক্ত ৫০ লাখ পাউন্ডের তহবিল দেওয়া হবে। এর আগে, গত মাসে দেশটির সরকার ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান ডেলিভারু, উবার ইটস ও জাস্ট ইটের সঙ্গে নতুন একটি চুক্তি করে। এই চুক্তির আওতায় অবৈধভাবে কাজ করা অভিবাসীদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে তথ্য সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠানগুলো। গত জুলাই পর্যন্ত ১২ মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৫ হাজার ৫২ জন অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে ব্রিটেন। এসব অভিবাসীর কাছে দেশটিতে থাকার বৈধ অধিকার ছিল না। ব্রিটেনের অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর এই হার তার আগের ১২ মাসের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নি*হ*ত ৭২

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নি*হ*ত ৭২ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭২ জন। আহত হয়েছেন আরও ৩১৪ জনের বেশি। এতে করে চলমান যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৩৩০ জনে। শুক্রবার ৮ আগস্ট স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর বর্বর গোলাবর্ষণে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯ জন ফিলিস্তিনি। নিহত-আহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, শুধু যেসব মরদেহ ও আহতদের হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়েছে, কেবল তাদেরকেই এই হিসেবের মধ্যে ধরা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকা অনেক মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে ইসরায়েলের অব্যাহত বোমাবর্ষণ ও সরঞ্জামের সংকটে। এদিকে গাজার ওপর অবরোধের কারণে চরম খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ২০১ জনের, যাদের মধ্যে ৯৮ জনই শিশু। এছাড়া, ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১ হাজার ৭৭২ জন। শুক্রবারও ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ গেছে অন্তত ১৬ জনের। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্র ইসরায়েলকে গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানালেও প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ নিঃশেষ ও জিম্মিদের মুক্ত করা পর্যন্ত অভিযান চলবে। ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার অভিযোগও দায়ের হয়েছে।
গাজায় অনাহারে প্রাণহানি বেড়ে ১৯৭

গাজায় অনাহারে প্রাণহানি বেড়ে ১৯৭ গাজায় ইসরায়েলের হামলা চলছেই। এতে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। এর সঙ্গে বাড়ছে অনাহার ও অপুষ্টিজনিও প্রাণহানিও। খবর আল জাজিরার। গতকাল সকাল থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাটিতে ২২ ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। আর অপুষ্টিজনিত কারণে আরও দুই শিশু মারা গেছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র। গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও চারজনের প্রাণ গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনাহারজনিত প্রাণহানি বেড়ে ১৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে, এর মধ্যে ৯৬ জনই শিশু। জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজার শতাধিক অপরিণত শিশুর জীবন এখন বিপদের মুখে। হাসপাতালে জ্বালানি সংকটে নবজাতকদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গাজায় কাজ করা এনজিও নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, সেখানে দুই লাখের বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। এর কারণ হিসেবে তারা শিশুদের পুষ্টিকর খাবারের অভাবকে দায়ী করেছে। ইউরোপীয় কমিশনের দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তেরেসা রিবেরা বলেন, এই যুদ্ধ অনেকাংশেই গণহত্যার সংজ্ঞায় রূপ নিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হয়। সেই থেকে এ পর্যন্ত ৬১ হাজার ১৫৮ ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন এক লাখ ৫১ হাজার ৪৪২ জন। গাজা সরকার বলছে, প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। যারা ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে নিখোঁজ রয়েছেন, তাদেরও নিহত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
সেমিকন্ডাক্টর আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

সেমিকন্ডাক্টর আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের বিদেশে তৈরি সেমিকন্ডাক্টরের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি সেই সঙ্গে ছাড়ের কথাও বলেছেন। আর সেটি হলো যেসব প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করবে সেসব কোম্পানির ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপ ছাড় দেওয়া হবে। ট্রাম্প বলেন, আমরা চিপস এবং সেমিকন্ডাক্টরের ওপর প্রায় ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব, কিন্তু যদি কোনো কোম্পানি সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্মাণ করে, তাহলে কোনও চার্জ লাগবে না। বুধবার ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় ওভাল অফিসে মার্কিন এ প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ ঘোষণার আগেই যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেয় অ্যাপল। তবে বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অপ্রত্যাশিত নয়। মঙ্গলবার সিএনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, আগামী সপ্তাহে সেমিকন্ডাক্টরে নতুন শুল্ক আসতে পারে। এই ঘোষণার পরপরই এশিয়ার প্রধান সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী দেশগুলো সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে সতর্ক হয়ে উঠেছে। তাইওয়ানের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের প্রধান লিউ চিন-চিং আইনসভায় জানান, বিশ্বের বৃহত্তম চিপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টিএসএমসি যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করায় শুল্কমুক্ত থাকবে। গত মার্চে টিএসএমসি অ্যারিজোনায় তাদের বিনিয়োগ ১৬৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছিল। দক্ষিণ কোরিয়াও দ্রুত জানিয়ে দিয়েছে যে, তাদের শীর্ষ চিপ নির্মাতা স্যামসাং ও এসকে হাইনিক্স এই শুল্কের আওতায় পড়বে না। বাণিজ্য দূত ইয়ো হান-কু বলেন, গত জানুয়ারিতেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যেই সুবিধাজনক শুল্ক নীতি পেয়েছে। ফিলিপাইনের সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক্স শিল্প সমিতির প্রেসিডেন্ট ড্যান লাচিচা বলেছেন, এ শুল্ক তাদের জন্য ‘ধ্বংসাত্মক’ হতে পারে, কারণ দেশটির মোট রপ্তানির ৭০ শতাংশই সেমিকন্ডাক্টর খাত থেকে আসে। ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দ্বিদলীয় সমর্থনে চিপস অ্যাক্ট পাস করান। এর আওতায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি ও কর ছাড় দেওয়া হয় বিদেশি কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনে উৎসাহিত করতে। টিএসএমসি, স্যামসাং ও এসকে হাইনিক্সের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এই সেমিকন্ডাক্টর শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর আরোপিত সাম্প্রতিক শুল্কেরই অংশ। এর আগে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, গাড়ি ও ওষুধ শিল্পের ওপরও আলাদা শুল্ক আরোপ করেছে হোয়াইট হাউজ। নতুন এই শুল্ক বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে, যদিও বিস্তারিত নিয়মাবলী এখনও স্পষ্ট নয়।
ভারত থেকে পোশাক কেনা স্থগিত করছে মার্কিন কোম্পানি

ভারত থেকে পোশাক কেনা স্থগিত করছে মার্কিন কোম্পানি কোনো কোনো কোম্পানি এরই মধ্যে অর্ডার স্থগিত করেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড। যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক ব্র্যান্ড গ্যাপ ও কোল’স এ পোশাক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পার্ল গ্লোবাল জানিয়েছে, নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর অনেক ক্লায়েন্ট তাদের কল করছেন। তারা বাড়তি খরচ বহন ও উৎপাদন অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়া হবে কি না—তা জানতে চাচ্ছেন। পার্ল গ্লোবালের কারখানা রয়েছে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও গুয়াতেমালায়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পল্লব ব্যানার্জি রয়টার্সকে বলেন, সব ক্রেতাই ইতোমধ্যেই আমাকে ফোন করছেন। তারা চাচ্ছেন, আমরা যেন ভারতে না থেকে অন্য দেশে উৎপাদন স্থানান্তর করি। যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ভারতের পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ২৫ শতাংশ কার্যকর হয়েছে। আগামী ২৮ আগস্ট থেকে আরও ২৫ শতাংশ কার্যকর হওয়ার কথা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ এবং চীনের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।রয়টার্স বলছে, কিছু মার্কিন ক্রেতা তাদের অর্ডার স্থগিত রেখেছে, আর কিছু ক্রেতা জোর দিচ্ছে উৎপাদন যেন এমন দেশে সরিয়ে নেওয়া হয় যেখানে শুল্কের হার কম। ভারত থেকে রিচাকো এক্সপোর্টস চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ১১৩ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের ক্লায়েন্টদের মধ্যে আছে জে. ক্রু গ্রুপ। রপ্তানি হওয়া এই পরিমাণ পোশাক ভারতের বিভিন্ন কারখানায় তৈরি হয়। রিচাকো এক্সপোর্টসের মহাব্যবস্থাপক দিনেশ রহেজা বলেন, এই শিল্পে এখন খরা দেখা দিয়েছে। আমরা নেপালের কাঠমান্ডুতে উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছি। ভারতের শীর্ষ পোশাক প্রস্তুতকারক রেমন্ডের অর্থ বিভাগের প্রধান অমিত আগরওয়াল বলেছেন, ইথিওপিয়ায় মার্কিন শুল্ক মাত্র ১০ শতাংশ। তাই তারা সেখানকার একটি কারখানায় উৎপাদন বাড়ানোর কথা চিন্তা করছেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই কার্যক্রম শুরু হতে পারে। পোশাক খাতে নানা শঙ্কা : ভারতে নিটওয়্যার রাজধানী হিসেবে পরিচিত তামিল নাড়ুর তিরুপপুর। এখান থেকে মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যোগান দেওয়া হয়। চলতি বছরের শুরুতে এখানকার রপ্তানিকারকরা ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তাদের মাঝে নানা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কটন ব্লসম ইন্ডিয়ার নির্বাহী পরিচালক নবীন মাইকেল জন বলেন, তিরুপপুরের কিছু কারখানাকে ক্রেতারা অর্ডার স্থগিত রাখতে বলেছে। আবার কেউ কেউ ৫০ শতাংশ শুল্ক পুরোপুরি কার্যকর হওয়ার আগেই যতটা সম্ভব পণ্য পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছেন। তিরুপপুরে তৈরি হওয়া কিছু পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মাত্র ১ ডলারেও কেনা যায়। আবার নারী-পুরুষদের টি-শার্টের দাম পড়ে সাড়ে তিন থেকে ৫ ডলার।তিরুপপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এন থিরুকুমারন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢুকতে এসব পোশাকের ওপরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হতে যাচ্ছে।
গাজায় ব্যবহৃত হতে পারে’ এমন সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি বন্ধ করছে জার্মানি

গাজায় ব্যবহৃত হতে পারে’ এমন সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি বন্ধ করছে জার্মানি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘গাজা উপত্যকায় ব্যবহৃত হতে পারে’ এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির অনুমোদন দেবে না জার্মান সরকার। ইসরায়েল গাজায় ‘সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে’ – এ কথা উল্লেখ করে শুক্রবার ৮ আগস্ট চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এ ঘোষণা দেন। ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা আজ ভোরে গাজা শহর দখলে নেওয়ার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। প্রায় দুই বছর ধরে চলা গণহত্যা যুদ্ধের পর বহির্বিশ্বের তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও এই পদক্ষেপ নিয়েছে নেতানিয়াহুর দখলদার সরকার। মের্জ বলেন, হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি চাওয়া ইসরায়েলের অধিকার। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জার্মান সরকার বিশ্বাস করে যে, গত রাতে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা গাজা উপত্যকায় আরও কঠোর সামরিক পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ফলে এই লক্ষ্যগুলো কীভাবে অর্জন করা যেতে পারে, তা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে।’এই পরিস্থিতিতে, জার্মান সরকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ব্যবহৃত হতে পারে এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির অনুমোদন দেবে না।’ গত জুনে জার্মান পার্লামেন্ট জানিয়েছিল, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৩ মে পর্যন্ত ইসরায়েলে ৫৬৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
স্পেনের এক শহরে ‘পাবলিক স্পেসে’ মুসলিম উৎসব নিষিদ্ধ

স্পেনের এক শহরে ‘পাবলিক স্পেসে’ মুসলিম উৎসব নিষিদ্ধ স্পেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এক শহরে মুসলিমদের ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো ধর্মীয় উৎসব সরকারি জনসাধারণের স্থানগুলোতে উদযাপন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান গতকাল এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির রক্ষণশীল পিপলস পার্টি (পিপি) মুরসিয়ার হুমিয়া শহরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুসলিমদের জন্য স্পেনে এটাই প্রথমবারের মতো এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা। এক প্রস্তাবনায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে, নগরীর ক্রীড়া-জনকল্যাণমূলক কেন্দ্রগুলো কোনো ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক বা সামাজিক কর্মকা-ে ব্যবহার করা যাবে না, যদি না তা স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত হয় এবং আমাদের পরিচয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়।
ট্রাম্পের হুমকিতে বাড়তে পারে আইফোন ও তেলের দাম

ট্রাম্পের হুমকিতে বাড়তে পারে আইফোন ও তেলের দাম যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার তেল ক্রেতাদের ওপর ‘সেকেন্ডারি শুল্ক’ আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের সরবরাহ কমে দাম বাড়তে পারে, আর এর প্রভাব পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনের মতো ভোক্তা পণ্যের দামে। ট্রাম্পের আগে ভেনিজুয়েলার তেল ক্রেতাদের ওপর একই ধরনের শুল্ক আরোপ হয়েছিল। এবার রাশিয়ার ক্ষেত্রে তা হলে প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, ওপেকের হাতে অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতা থাকায় দাম বৃদ্ধির ধাক্কা কিছুটা কম হতে পারে। রাশিয়া ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বা গোপন নৌবহরের মতো ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। তবু রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল ক্রেতা ভারত এখন ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের মূল লক্ষ্য হতে পারে। ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রে ভারতের অবদান তিনি মেনে নেবেন না। যদি শতভাগ শুল্ক আরোপ হয়, তবে ভারতের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হতে পারে। এতে আইফোনের মতো ভারতে তৈরি পণ্যের দামও বাড়বে। ভারত ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে ‘দ্বৈত নীতি’র অভিযোগ করেছে। কারণ দুই দেশের মধ্যে এখনো পারমাণবিক জ্বালানি ও সারের কাঁচামালের বাণিজ্য চলছে। চীনের ক্ষেত্রেও একই শুল্ক আরোপ করা হলে বাস্তবায়ন কঠিন হবে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ গুণ বেশি আমদানি আসে সেখান থেকে। এতে দুই অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় ধাক্কা লাগতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়তে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এখনো রাশিয়ার অন্যতম বড় জ্বালানি ক্রেতা হলেও ২০২৭ সালের মধ্যে সব ধরনের আমদানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। তবে যদি রুশ জ্বালানি কেনার কারণে শতভাগ শুল্ক আরোপ হয়, ইউরোপের রপ্তানি খাত বড় ধাক্কা খেতে পারে। রাশিয়ার প্রবৃদ্ধি গত বছর ছিল ৪.৩ শতাংশ, তবে চলতি বছর তা ০.৯ শতাংশে নেমে আসার আশঙ্কা করছে আইএমএফ। প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়ে জিডিপির ৬.৩ শতাংশে তুলেছেন, আর ইউক্রেন তার অর্থনীতির ২৬ শতাংশ ব্যয় করছে যুদ্ধে। ট্রাম্পের দাবি, এই শুল্ক রাশিয়ার অর্থপ্রবাহ কমিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সাহায্য করবে এবং সেখানে মৃত্যু ও ধ্বংসের অবসান ঘটাবে।
যুক্তরাষ্ট্রে মেডিকেল প্লেন বিধ্বস্ত, নি*হ*ত ৪

যুক্তরাষ্ট্রে মেডিকেল প্লেন বিধ্বস্ত, নি*হ*ত ৪ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একটি মেডিকেল পরিবহন প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে গেছে। এতে বিমানে থাকা চারজন আরোহীর সবাই মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ৫ আগস্ট রাতে চিনলে মিউনিসিপ্যাল বিমানবন্দরে অবতরণের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর এবিসি নিউজের। নাভাজো পুলিশ ডিপার্টমেন্ট জানায়, বিমানটি কাছাকাছি একটি হাসপাতাল থেকে একজন রোগী নিতে যাচ্ছিল। তবে অবতরণের সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, বিধ্বস্ত বিমানটি ‘বিচক্রাফ্ট ৩০০’ মডেলের ডুয়াল-প্রোপেলার এয়ারক্রাফট। এটি সিএসআই অ্যাভিয়েশন নামের একটি সংস্থার মালিকানাধীন। কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় নিউ মেক্সিকোর আলবুকার্কে। নাভাজো ডিপার্টমেন্ট অব ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্টের পরিচালক শেরেন সান্দোভাল বলেন, বিমানটির ক্রুরা চিনলে শহরের ইন্ডিয়ান হেলথ সার্ভিস হাসপাতাল থেকে একজন সংকটাপন্ন রোগী নিতে যাচ্ছিল। এরপর রোগীসহ আলবুকার্কে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে রোগীর অবস্থান বা তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। দুর্ঘটনার কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে এফএএ এবং ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি)। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় আরেকটি মেডিকেল পরিবহন বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আটজন নিহত হন।
ভারতের উত্তরাখন্ডে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় নিখোঁজ ৫০

ভারতের উত্তরাখন্ডে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় নিখোঁজ ৫০ ভারতের উত্তরাখন্ডে ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যায় নিখোঁজ হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। উত্তরকাশী জেলার ধরলি গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টির পর এই বিপর্যয় ঘটে। স্থানীয় প্রশাসনের বরাতে এএনআই জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন, ভেসে গেছে ৪০-৫০টি বাড়ি। নিখোঁজ রয়েছেন ৫০ জনের বেশি। সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তার চোখের সামনে একের পর এক হোটেল-রিসোর্ট ভেসে গেছে, অথচ আগে থেকে কোনো সতর্কতা ছিল না। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, প্রচণ্ড পানির তোড়ে ধসে পড়ছে ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। ধারণা করা হচ্ছে, পর্যটননির্ভর ধরলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে বহু হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল। সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বন্যা ও ভূমিধসে একটি সেনা ক্যাম্প ও উদ্ধারকারী দলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় প্রাণহানি ও নিখোঁজের ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শোক প্রকাশ করেছেন এবং দুর্গতদের সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন।