ফিলিস্তিনে শিশুসহ ৭৮ জনকে হত্যা করল ইসরায়েল

ফিলিস্তিনে শিশুসহ ৭৮ জনকে হত্যা করল ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আবারও হামলা চালিয়ে শিশুসহ অন্তত ৭৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েল। সোমবার ১৪ জুলাই বিভিন্ন এলাকায় চালানো হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আলজাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বিমান হামলায় দক্ষিণ গাজার রাফা, খান ইউনিস, মধ্য গাজার বুরেইজ ও গাজা শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। ফিলিস্তিনের বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, রাফায় একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে হামলা চালিয়ে অন্তত ৫ জন ত্রাণপ্রার্থীকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮৩৮ জন ফিলিস্তিনি। এদের অনেকেই নারী ও শিশু।এছাড়া খান ইউনিসে একটি বাস্তুচ্যুত শিবিরে চালানো হামলায় নিহত হয়েছেন আরও ৯ জন। মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। উত্তর গাজায়ও হামলার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সেখানে একটি ট্যাংক হামলার শিকার হলে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) তিন সদস্য নিহত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজা শহরের তুফাহ ও শুজাইয়া এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল, যা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন। গাজা শহরে এইসব হামলায় অন্তত ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন। এদিকে ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ অবরোধের কারণে গাজায় জ্বালানি ও খাদ্য সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল সব ধরনের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে, ফলে বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ হাসপাতাল ও জরুরি সেবা।
গুপ্তচরবৃত্তির শাস্তি কঠোর করে ইরানের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস

গুপ্তচরবৃত্তির শাস্তি কঠোর করে ইরানের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস ইরানের পার্লামেন্ট গুপ্তচরবৃত্তি এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি শত্রু রাষ্ট্রকে সহযোগিতার শাস্তি বাড়ানোর জন্য একটি বিলের সংশোধনী অনুমোদন করেছে। খবর বিবিসি ও ইরান ফ্রন্ট পেজের। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, সংশোধনী প্রস্তাবটি আজ সোমবারের অধিবেশনে বিপুল ভোটে পাস হয়েছে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী, যদি কেউ শত্রু রাষ্ট্র ও গোষ্ঠীর জন্য কোনো গোয়েন্দা ও গুপ্তচরবৃত্তির কার্যকলাপ এবং অপারেশনাল কার্যক্রমে জড়িত বলে প্রমাণিত হয়, তfহলে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা যাবে। সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলকে এই শত্রু রাষ্ট্র ও গোষ্ঠী চিহ্নিত করার কর্তৃপক্ষ এবং মিনিস্ট্রি অব ইন্টেলিজেন্সকে শত্রুদের নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করার কর্তৃপক্ষ হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে প্রস্তাবের মূল বক্তব্যে। সুপ্রিম জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল (যারা ইতোমধ্যেই শত্রু রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত) বাদে অন্যান্য শত্রু রাষ্ট্র ও গোষ্ঠীগুলোকে মনোনীত করার ক্ষমতা রয়েছে। সংশোধিত আইনে শত্রু রাষ্ট্রগুলোকে আর্থিক, প্রযুক্তিগত বা সামরিকভাবে সহায়তাকেও অপরাধের আওতায় আনা হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমের লক্ষ্যে স্টারলিংকের মতো অবৈধ যোগাযোগ ডিভাইস ব্যবহারও দণ্ডনীয়। এছাড়াও সংশোধিত মূল প্রস্তাবের আরেকটি অনুচ্ছেদে জনসাধারণের মধ্যে বিভাজন বা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে শত্রু বা বিদেশি নেটওয়ার্কগুলোতে যারা তথ্য বা ভিডিও পাঠায় তাদের শাস্তি নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী এই কর্মকাণ্ডগুলো এখন থেকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। একইসাথে এর জন্য কারাদণ্ড এবং সরকারি ও জনসেবা থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে। ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়কে ‘প্রতিকূল মিডিয়া’ চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য দ্রুত আইনি পদক্ষেপ চালু করা হয়েছে। ইরানের আইনপ্রণেতারা জোর দিয়ে বলেছেন, ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এই ব্যবস্থাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শত বছর বয়সেও প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা বিয়ার

শত বছর বয়সেও প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা বিয়ার বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপ্রধান ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট পল বিয়া (৯২)। তিনি চলতি বছরের নির্বাচনে অষ্টম মেয়াদের জন্য প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১২ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি শতবর্ষ ছুঁইছুঁই বয়সেও দেশটির ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। রবিবার (১৩ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “‘আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব, আপনারা নিশ্চিত থাকুন জাতি যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি আমি তা দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করব।” সোমবার (১৪ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চার দশকেরও বেশি সময় আগে ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে আহমেদো আহিদজো পদত্যাগ করলে ১৯৮২ সালে ক্ষমতায় আসেন বিয়া। তার স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই জল্পনা-কল্পনা চলছে। সর্বশেষ গত বছরে তিনি ৪২ দিনের জন্য জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অদৃশ্য হয়ে যান। তবে তার পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত ছিল। রবিবার পল বিয়া আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার আগে, বেশ কিছুদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় ছিলেন। ২০১৮ সালে, প্রথমবারের মতো, তিনি সেই বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষণা করার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেছিলেন, যা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে জনসাধারণের সঙ্গে একটি বিরল সরাসরি যোগাযোগ ছিল। ক্ষমতাসীন ক্যামেরুন পিপলস ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (সিপিডিএম) নেতাকর্মীরা এবং তার সমর্থকরা গত বছর থেকে প্রকাশ্যে বিয়ার আরেক মেয়াদে প্রার্থী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। কিন্তু বিরোধী দল এবং কিছু নাগরিক সমাজের গোষ্ঠী যুক্তি দিচ্ছে যে তার দীর্ঘ শাসন অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এরই মধ্যে দুই মিত্র ক্ষমতাসীন জোট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে এবং আলাদাভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। ক্যামেরুনের মানবাধিকার আইনজীবী নংহো ফেলিক্স আগবর সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, “প্রেসিডেন্ট বিয়ার আবারো প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা ক্যামেরুনের স্থবির রাজনৈতিক পরিবর্তনের স্পষ্ট লক্ষণ। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার পর দেশটির যা প্রয়োজন তা হল পুনর্নবীকরণ, পুনরাবৃত্তি নয়। ক্যামেরুনবাসী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন এবং জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব পাওয়ার অধিকার রাখে।” রবিবার বিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে নতুন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা নিশ্চিতভাবেই তার স্বাস্থ্য নিয়ে বিতর্ক পুনরুজ্জীবিত করবে। তিনি খুব কমই জনসমক্ষে উপস্থিত হন এবং প্রায়ই তার কার্যালয়ের ক্ষমতা শক্তিশালী চিফ অফ স্টাফের (সেনাপ্রধান) কাছে দায়িত্ব অর্পণ করেন। গত বছরের অক্টোবরে তিনি ৪২ দিন অনুপস্থিতির পর ক্যামেরুনে ফিরে আসলেও স্বাস্থ্য নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকে। যদিও সরকার দাবি করে যে তিনি ভালো আছেন এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় উল্লেখ করে তার স্বাস্থ্য নিয়ে সবধরনের আলোচনা নিষিদ্ধ করেছে। ২০০৮ সালে বিয়া প্রেসিডেন্টের নির্দিষ্ট মেয়াদসীমা বাতিল করে দেন, যার ফলে তার অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পথ পরিষ্কার হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি ৭১.২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন, যদিও বিরোধী দলগুলো ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিল। ক্যামেরুন ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে মাত্র দুজন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে। আফ্রিকান কোকো ও তেল উৎপাদনকারী এই দেশটিকে বিয়ার দীর্ঘ শাসনামলে অর্থনৈতিক সংকট, বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা ও উত্তরাঞ্চলে বোকো হারাম জঙ্গি হামলার মতো নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ২০২৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী বিরোধী নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।তাদের মধ্যে রয়েছেন ২০১৮ সালের ক্যামেরুন রেনেসাঁ আন্দোলনের রানার-আপ মরিস কামটো, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের জোশুয়া ওসিহ, ক্যামেরুন পার্টি ফর ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশনের আইনজীবী আকেরে মুনা ও ক্যাব্রাল লিবি। তারা সবাই বিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দীর্ঘ শাসনামলের সমালোচনা করেছেন এবং ২০২৫ সালে সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন পদ্ধতিতে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনে নিহত ৬

রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনে নিহত ৬ রাশিয়া রাতভর ৬২০টিরও বেশি ড্রোন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায়। রাশিয়ার এ হামলায় কমপক্ষে ছয় ব্যক্তি নিহত এবং অনেকেই আহত হয়েছে। এ দিকে শনিবার ইউক্রেন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো প্যাট্রিয়ট বিমান-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেতে যাচ্ছে। এ জন্য তারা একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কিয়েভ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক ভাষণে বলেছেন, ‘রাশিয়ানরা আমাদের দেশের বিরুদ্ধে তাদের নির্দিষ্ট সন্ত্রাসী কৌশল ব্যবহার করে চলেছে। রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর এবং বিভিন্ন অঞ্চলে মারাত্নক আঘাত করছে।’ মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি আলোচনা স্থগিত থাকায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মস্কো বিমান হামলা বাড়িয়েছে। জেলেনস্কি ইরানের তৈরি ড্রোনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ছাব্বিশটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৫৯৭টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছিল রাশিয়া, যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ছিল ‘শাহেদ’ নামের ড্রোন।’ ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, তারা ৩১৯টি শাহেদ ড্রোন এবং ২৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। তারা আরো জানিয়েছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় ২০টি ড্রোন ‘পাঁচটি স্থানে আঘাত করেছে। জেলেনস্কি বলেছেন, পূর্ব ও দক্ষিণের সম্মুখ রেখা থেকে অনেক দূরে দক্ষিণ-পশ্চিম চেরনিভতসি অঞ্চলে এই হামলায় কমপক্ষে দুইজন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘পশ্চিমে লভিভে ১২জন আহত হয়েছেন। কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, ডিনিপ্রোপেট্রোভস্কে দুইজন এবং খারকিভে তিনজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় প্রসিকিউটর কার্যালয় জানিয়েছে, রাশিয়া উত্তর-পূর্ব সুমি অঞ্চলে ‘বেসামরিক লোকদের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে। হামলার ফলে দুজন নিহত হয়েছেন।
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৮০০ ছাড়াল

গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৮০০ ছাড়াল গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের মোট সংখ্যা ৫৭ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৬১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৩১ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত মোট ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫৭ হাজার ৮২৩ জনে পৌঁছেছে। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ নগরীতে আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৮৮৭ জনে পৌঁছেছে। মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কারণ অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি। উল্লেখ্য, ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে বড় ধরনের হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। দীর্ঘ ১৫ মাস ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ২৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৫ হাজার ৮৪৬ জন আহত হয়েছেন। জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং প্রায় ৮৫ শতাংশ জনসংখ্যা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন। গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যা বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে রায় উপেক্ষা করে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ১,৩০০-এর বেশি কর্মীকে ছাঁটাই শুরু

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ১,৩০০-এর বেশি কর্মীকে ছাঁটাই শুরু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করা শুরু করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। শনিবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়, কূটনৈতিক খাতে ‘গঠনমূলক সংস্কার’ আনার অংশ হিসেবে পররাষ্ট্র দপ্তরে বড় ধরনের ছাঁটাই শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ জুলাই) থেকে এই প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ বিদেশে মার্কিন স্বার্থ রক্ষা এবং প্রচারের মার্কিন ক্ষমতাকে দুর্বল করবে। পররাষ্ট্র দপ্তরের জারি করা এক নোটিশে জানানো হয়, মোট ১ হাজার ৩৫৩ জনকে ছাঁটাই করা হচ্ছে, যার মধ্যে ১ হাজার ১০৭ জন সিভিল সার্ভিস এবং ২৪৬ জন ফরেন সার্ভিস অফিসার। পররাষ্ট্র দপ্তরের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ছাঁটাই হবে ধাপে ধাপে, যেখানে স্বেচ্ছা অবসানসহ প্রায় ৩ হাজার কর্মীকে বিদায় জানানো হবে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে মোট ১৮ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই পদক্ষেপ তারই অংশ। রয়টার্স বলছে, এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন ওয়াশিংটন বিশ্ব মঞ্চে একাধিক সংকটের সঙ্গে লড়াই করছে: ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ, প্রায় দুই বছর ধরে গাজা সংঘাত এবং ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার কারণে মধ্যপ্রাচ্য সংকট। ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের কাছে ট্রাম্প প্রশাসনের পাঠানো পাঁচ পৃষ্ঠার একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে তারা পররাষ্ট্র ভবন ও তাদের ইমেল ঠিকানায় প্রবেশাধিকার হারাবেন। ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশেষ অফিস খোলা হয়েছে, যেখানে তাদের অফিসিয়াল ব্যাজ, ল্যাপটপ, টেলিফোন ও অন্যান্য দপ্তরের সম্পদ জমা দিতে হচ্ছে। এসময় কর্মীদের অনেককেই সহকর্মীদের জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে বিদায় নিতে দেখা গেছে। ট্রাম্প তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি নিশ্চিত করার জন্য যে পুনর্গঠন চেয়েছেন, তার প্রথম ধাপ হলো এই পদক্ষেপ। তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক কর্মকর্তাদের মতে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অবস্থানকে দুর্বল করে তুলতে পারে। বিশেষ করে চীন ও রাশিয়ার মতো প্রতিপক্ষ যখন আগ্রাসী কূটনীতির মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের অবস্থান আরো জোরদার করছে। ভার্জিনিয়ার ডেমোক্র্যাট সিনেটর টিম কেইন কড়া প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “এটি একটি হাস্যকর সিদ্ধান্ত এবং এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে, যখন চীন বিশ্বজুড়ে সামরিক ও পরিবহন ঘাঁটি স্থাপন করছে, রাশিয়া সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর বর্বর হামলা চালাচ্ছে, আর মধ্যপ্রাচ্য একের পর এক সংকটে জর্জরিত। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত শুধু দুর্ভাগ্যজনকই নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।” চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই পুনর্গঠন পরিকল্পনার অনুমোদন দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, কাজের ধরন ও কূটনৈতিক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এতে সরকারি অর্থের কতটা সাশ্রয় হবে, সে সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট হিসাব দিতে পারেনি প্রশাসন। ট্রাম্প ফেব্রুয়ারিতে রুবিওকে প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র নীতি ‘বিশ্বস্ততার সঙ্গে’ বাস্তবায়িত হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য পররাষ্ট্র পরিষেবা পুনর্গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ট্রাম্প জানান, তিনি যেসব আমলাকে বিশ্বাসঘাতক বলে মনে করেন তাদের বরখাস্ত করে ‘রাষ্ট্রকে পরিষ্কার’ করবেন। এই রদবদল ট্রাম্পের ফেডারেল আমলাতন্ত্রকে সংকুচিত করার এবং করদাতাদের অর্থের অপচয় কমানোর এক অভূতপূর্ব প্রচেষ্টার অংশ। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল এইড, যা বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য কাজ করে তা ভেঙে দিয়েছে এবং এটিকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের অধীনে গুটিয়ে এনেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পুনর্গঠনটি মূলত ১ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল কিন্তু চলমান মামলা-মোকদ্দমার মধ্যে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে পারেনি। কারণ, পররাষ্ট্র দপ্তর মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপক কর্মী ছাঁটাই বন্ধ করার বিচারিক আদেশের বিষয়ে বিবেচনা করার জন্য অপেক্ষা করছিল। মঙ্গলবার, মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য চাকরি ছাঁটাই ও অসংখ্য সংস্থার আকার পরিবর্তনের পথ পরিষ্কার করে দেয়।
বাস থেকে নামিয়ে পাকিস্তানে ৯ যাত্রীকে গুলি করে হত্যা

বাস থেকে নামিয়ে পাকিস্তানে ৯ যাত্রীকে গুলি করে হত্যা পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশে সশস্ত্র ব্যক্তিদের হাতে অপহৃত বাসযাত্রীদের মধ্যে ৯ জনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই যাত্রীদের গতকাল সন্ধ্যায় দুটি বাস থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে পর্বতাঞ্চলে রাতের আঁধারে তাদের হত্যা করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। সরকারি কর্মকর্তা নবীদ আলম জানিয়েছেন, নিহতদের অধিকাংশই শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন এবং পাঞ্জাবে ফিরছিলেন। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানান, নিহতদের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে এবং তাদের পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
আরো ৭ দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

আরো ৭ দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প শ্রীলঙ্কা-ফিলিপাইনসহ আরো ৭টি দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু। প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন করে আরো ৭টি দেশের পণ্যের ওপর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র আমদানি শুল্ক আরোপ করবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে ফিলিপাইনের ওপর ২০ শতাংশ, ব্রুনেই ও মলদোভার ওপর ২৫ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কা, ইরাক, আলজেরিয়া ও লিবিয়ার ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই তথ্যগুলো ট্রাম্প তার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল–এ প্রকাশিত চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন। সেসব চিঠি মূলত তিনি সংশ্লিষ্ট দেশের নেতাদের উদ্দেশে পাঠিয়েছেন। তিনি লেখেন, “আমরা আপনাদের সঙ্গে অগ্রসর হতে চাই, তবে সেটা হবে কেবল আরো ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায্য বাণিজ্যের ভিত্তিতে।”ট্রাম্প আরো বলেন, এসব শুল্ক হার এখনো যথেষ্ট নয় যাতে ওই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি পুরোপুরি দূর করা যায়। তিনি সতর্ক করে বলেন, যেসব পণ্য অন্য দেশের হয়ে অন্য মাধ্যমে পাঠিয়ে শুল্ক এড়ানোর চেষ্টা করা হবে, সেগুলোর ওপরও উচ্চ শুল্ক বসানো হবে। পাশাপাশি যদি কোনো দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র তার জবাবে ওই দেশের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে। এর আগে ১৪টি দেশকে শুল্কের চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এর মধ্যে তালিকায় রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মিয়ানমার, লাওস, কাজাকিস্তান, মালয়েশিয়া। এই দেশগুলোর উপরে আমদানি শুল্ক হিসেবে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কর আরোপ করা হয়েছে। আর এদের মধ্যে মিয়ানমার ও লাওসে সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপিত হয়েছে ৪০ শতাংশ আর দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়েছে। অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে তিউনিশিয়া, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, বসনিয়া, হার্জিগোভিনিয়া, সার্বিয়া ও থাইল্যান্ড। এক্ষেত্রেও শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ২৫ থেকে ৩৬ শতাংশ। বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়ার দেশগুলোই যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রাথমিক লক্ষ্যবস্তু। তবে সবার নজর রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রধান অংশীদারদের উপরে যারা এখনও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের চিঠি পায়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন আরো বাণিজ্য চুক্তি প্রকাশের জন্য চাপে রয়েছে, এখনও পর্যন্ত ওয়াশিংটন কেবল যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামের সঙ্গেই বাণিজ্য চুক্তি করেছে। চিনের সঙ্গে একইরকম শুল্ক কমানোর চুক্তি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প।বেশিরভাগ দেশের ওপর ১০ শতাংশ ভিত্তি শুল্ক হার এবং ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করেন তিনি। ট্রাম্পের এই ঘোষণা বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা ও আর্থিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল। পরে উত্তেজনা কমাতে শুল্কনীতি ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে হোয়াইট হাউজ। তখন ট্রাম্প জানান, এই ৯০ দিনে তিনি দেশগুলোর সঙ্গে ৯০টি বাণিজ্য চুক্তি করতে চান। ওই সময় পর্যন্ত দেশগুলোকে উচ্চহারের শুল্কারোপ থেকে ছাড় দেন ট্রাম্প। তবে ফলাফল ট্রাম্পের সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষার চেয়ে অনেক কম। যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম ও চীন ছাড়া অন্য দেশগুলো এখনও পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছায়নি। দেশগুলোকে বাণিজ্যচুক্তিতে আসার জন্য সময়সীমা নতুন করে বাড়িয়ে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত আলোচনার সময় বেঁধে দিয়েছেন ট্রাম্প। ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নতুন শুল্ক কার্যকর হবে।
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২০, নিখোঁজ ১৭১

টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২০, নিখোঁজ ১৭১ যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মধ্যাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২০ জনে পৌঁছেছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ১৭১ জন। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার (৪ জুলাই) টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের স্যান অ্যান্টোনিও শহরে প্রবল বৃষ্টির কারণে গুয়াডালুপ নদীর পানি বেড়ে এই বন্যা হয়। বন্যার পানিতে কের কাউন্টির নদী তীরবর্তী সামার ক্যাম্প ‘মিস্টিক’ প্লাবিত হয়। এতে ক্যাম্পে অংশ নেওয়াদের মধ্যে অন্তত ২৭ জন মেয়ে ও ক্যাম্পের পরিচালক ৭০ বছর বয়সী রিচার্ড ইস্টল্যান্ড মারা গেছেন। এছাড়া আরো ৫ জন ক্যাম্পার ও ১৯ বছর বয়সী একজন মেন্টর এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কের কাউন্টি। এখানে কমপক্ষে ৯৬ জনের প্রাণ গেছে, যার মধ্যে ৩৬ জনই শিশু। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে কমপক্ষে ১৬১ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। বন্যায় কের কাউন্টির বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ত্রাভিস, বার্নেট, কেন্ডাল, উইলিয়ামসন এবং টম গ্রিন কাউন্টিতেও প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। কের কাউন্টির বন্যাকে বড় ধরনের বিপর্যয় বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আগামীকাল শুক্রবার টেক্সাস সফর করার পরিকল্পনা করছেন তিনি। টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বন্যার দুর্বল সতর্কতা ব্যবস্থা ও জরুরি প্রতিক্রিয়া মোকাবিলার জন্য সংসদে একটি বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেছেন। পর্যাপ্ত সতর্কতার অভাব ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা জানিয়েছে, শুক্রবার তীব্র বৃষ্টিপাতের প্রায় ১২ ঘণ্টা আগে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছিল। তবে, সতর্কতার মাত্রা কেবল ‘মাঝারি’ হিসেবে জারি করা হয়েছিল। টেক্সাসের গভর্নর প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও উদ্ধার কার্যক্রমের গতি বাড়ানোর জন্য নিয়ম ও আইন মূল্যায়ন এবং সহজ করার জন্য নতুন আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ১৬ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ১৬ ফিলিস্তিনি নিহত গাজা উপত্যকায় ইরায়েলের চালানো হামলায় ভোর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর আল জাজিরার। নিহতদের মধ্যে রয়েছে শাতি শরণার্থী শিবিরে হামলায় নিহত আটজন, দেইর আল-বালাহতে একটি বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন দুজন এবং খান ইউনিসে তাঁবুতে ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন আরও দুজন। এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠক করেছেন। তবে এখনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। ইসরায়েলি বাহিনী টানা বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে গাজায়। সোমবার সারাদিনে চালানো হামলায় অন্তত ৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। গাজায় চলমান ইসরায়েলের অবরোধের কারণে জ্বালানি সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, এই সংকট চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং আরও মৃত্যু ও দুর্ভোগ তৈরি করবে এই অবরুদ্ধ উপত্যকায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৫৭ হাজার ৫৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৯ জন।