01713248557

ইউরোতে লড়াইয়ের অপেক্ষা

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা যে দেশগুলো খেলছে এবারের আসরে, তাদের সবগুলোই উঠেছে নকআউট পর্বে। অঘটনের শিকার হয়ে কোনো দেশই বিদায় নেয়নি গ্রুপ পর্ব থেকে। এখন অপেক্ষা আসল লড়াইয়ের। জিতলে কোয়ার্টার ফাইনাল, হারলে বিদায়-এই সমীকরণ নিয়ে শনিবার শুরু হচ্ছে শেষ ষোলোর লড়াই। শুরুতেই পরীক্ষায় বসতে হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও সাবেক চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক জার্মানিকে। রাত ১০ টায় বার্লিনে ইতালি খেলবে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে এবং রাত ১টায় ডর্টমুন্ডে জার্মানির প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক। পরের দিন ভিন্ন ম্যাচে মাঠে নামবে ইংল্যান্ড ও স্পেন। ইংল্যান্ড খেলবে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে এবং স্পেনের প্রতিপক্ষ এবারের ইউরোতে চকম দেখানো জর্জিয়া। গত ইউরোর ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ইতালি ও ইংল্যান্ড। ওয়েম্বলিতে স্বাগতিকদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইতালি। এবার এই দুই দলের দেখা হতে পারে কোয়ার্টার ফাইনালেই; যদি তারা জিতে যায় নকআউট পর্বের প্রথম ম্যাচ। ইতালি ও ইংল্যান্ডের মধ্যে যারা শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার ফাইনালের বাধা টপকে যাবে, তারা সেমিফাইনালে পাবে রোমানিয়া, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া ও তুরস্কের কোনো দলকে। লড়াইটা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা অন্য সেমিফাইনালে। স্পেন, জার্মানি, ফ্রান্স, পর্তুগালের যেকোনো দুই দলের মধ্যেই হতে পারে আরেকটি সেমিফাইনাল। তবে জর্জিয়া, ডেনমার্ক, স্লোভেনিয়া ও বেলজিয়ামও হয়েতো ছেড়ে কথা বলবে না। জায়ান্টদের হারিয়ে তাদের কোনো দলও উঠে যেতে পারে সেমির লড়াইয়ে। অন্যদিকে সুইজারল্যান্ড ও স্লোভাকিয়ারও অঘটন ঘটানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ইতালি ও ইংল্যান্ডকে স্বস্তি দিতে চাইবে না তারাও। শেষ ষোলোর খেলা ২৯ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত। ৫ ও ৬ জুলাই কোয়ার্টার ফাইনাল। দুটি সেমিফাইনাল ৯ ও ১০ জুলাই। ফাইনাল ১৫ জুলাই।

দুর্দান্ত গোলে জয় পেল মেসির দল

দুর্দান্ত গোলে জয় পেল মেসির দল চোট কাটিয়ে লিওনেল মেসি ফিরলেন। তবে ইন্টার মায়ামির খেলায় ধার ফিরল না। পুরো ম্যাচ খেলে মেসি রইলেন নিষ্প্রভ হয়ে। তার দল পারল না খুব একটা জ¦লে উঠতে। তবে শেষ সময়ে লিওনার্দো কাম্পানার দারুণ এক গোলে প্রত্যাশিত তিনটি পয়েন্ট তারা ঠিকই আদায় করে নিল। মেজর লিগ সকারের ম্যাচে বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে ডি. সি. ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে হারায় ইন্টার মায়ামি। বদলি হিসেবে মাঠে নামার কয়েক মুহূর্ত পরই জয়ের নায়ক হয়ে যান কাম্পানা। ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে দর্শনীয় গোলটি করেন একুয়েডরের তরুণ এই ফরোয়ার্ড। আগের ম্যাচে মেসিকে ছাড়া খেলতে নেমে অরল্যান্ডো সিটির বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল মায়ামি। সেদিন দারুণ কিছু সেভ করে দলকে রক্ষা করার নায়ক গোলকিপার ড্রেক ক্যালেন্ডার এই ম্যাচেও অন্তত তিন দফায় দলকে উদ্ধার করেন সম্ভাব্য বিপদ থেকে। এই নিয়ে মৌসুমে চার ম্যাচে কোনো গোল হজম করলেন না ক্যালেন্ডার। হাঁটুর চোট কাটিয়ে মেসির ফেরার ম্যাচে বল পায়ে রাখার লড়াইয়ে অনেক ব্যবধানে এগিয়ে ছিল মায়ামি। ম্যাচের ৬৭ শতাংশ সময় বল ছিল তাদের কাছেই। কিন্তু সেই দাপটের প্রতিফলন পড়েনি আক্রমণে। ধারাল আক্রমণ তারা খুব একটা করতে পারেনি। গোলে শট নেওয়ায় বরং এগিয়ে ছিল ডি. সি. ইউনাইটেডই। ১৫টি শট নেয় তারা গোলে, মায়ামি নিতে পারে ৮টি। চলতি লিগে এখনও পর্যন্ত ১০টি গোল করা ও লিগের সর্বোচ্চ ১২টি অ্যাসিস্ট করা মেসির জন্য এটি ছিল বিরল এক রাত, যেখানে প্রায় পুরোপুরিই আড়ালে পড়ে ছিলেন তিনি। আবহাওয়াও অবশ্য প্রতিকূল ছিল এ দিন। প্রচ- গরমের কারণে প্রথমার্ধে ‘হাইড্রেশন ব্রেক’ দিতে বাধ্য হন রেফারি। পরে তুমুল বৃষ্টির কারণে দুই দলেরই স্বাভাবিক খেলা ব্যাহত হয়। ৯০ মিনিট শেষে অতিরিক্ত যোগ করা হয় সাত মিনিট। এর তৃতীয় মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল ডি.সি. ইউনাইটেড। কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড ক্রিস্তিয়ান দাহোমির দুর্দান্ত এক শট ঝাঁপিয়ে পড়ে শেষ মুহূর্তে একটুর জন্য বাইরে পাঠাতেপারেন মায়ামির গোলকিপার ক্যালেন্ডার। কাম্পানাকে নামানো হয় যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটেই। পরের মিনিটেই তার সেই গোল। মাঝমাঠ থেকে দূরপাল্লার অসাধারণ এক বল বাড়ান সের্হিও বুসকেতস। বক্সের ঠিক মাথায় বাঁ পায়ে দারুণভাবে বলটি ধরে ডান পায়ের চোখধাঁধানো শটে বল জালে জমান কাম্পানা। এই জয়ে ১৫ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে মেজর লিগ সকারের ইস্টার্ন কনফারেন্সের শীর্ষস্থান ধরে রাখল মায়ামি। তবে তাদেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে সিনসিনাতির। ১৪ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৩০। ডি.সি. ইউনাইটেড নবম স্থানে আছে ১৪ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে।

ইতিহাসের পাতায় ম্যানসিটির নাম

ইতিহাসের পাতায় ম্যানসিটির নাম বছর কয়েক আগেও হয়তো কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি এমনটা। ম্যানচেস্টার সিটিই যে এমন কীর্তি গড়বে সেটা তো আরও ভাবনায় আসার কথা নয়। কিন্তু সব ভাবনা দূরে ঠেলে টানা চতুর্থ লিগ শিরোপা ঘরে তুলেছে ম্যানসিটি। দলটির কোচ পেপ গার্দিওলার ভাবনাতেও এমন অবিশ্বাস্য কিছু ছিল না। ফরোয়ার্ড ফিল ফোডেনও তাই এমন সাফল্যে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না। গতরাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট হামকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে টানা চারটি লিগ শিরোপা জিতে নিয়েছে ম্যানসিটি। জিতলেই চ্যাম্পিয়ন এমন সমীকরণের ম্যাচ বলেই ইতিহাদের গ্যালারিতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। দল বেঁধে ম্যাচজুড়ে দলকে সমর্থন দিয়েছেন ভক্তরা। এমন ম্যাচে জোড়া গোল করে আলো ছড়ানো ফিল ফোডেন তাই অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন,’আমরা আজ যেটা করেছি, সেটা ভাষায় প্রকাশ করা ভীষণ কঠিন। কোনো দল কখনই এটা (টানা চার লিগ শিরোপা জয়) পারেনি। ইতিহাসের বইয়ে নিজেদের নাম তুলেছি আমরা।’ গত সাত মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির এটা ষষ্ঠ লিগ শিরোপা। পেপ গার্দিওলা যখন এই ক্লাবে আসেন তখন কেউ যদি তাকে বলতো, সিটি এমন কীর্তি গড়বে গার্দিওলা তাকে ‘পাগল’ বলেই অভিহিত করতেন। কিন্তু কয়েক বছর ঘুরতেই সেটা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। মাঠের লড়াই, খেলোয়াড় দলে টানাসহ সবদিক থেকেই ম্যানসিটি অন্যান্যের চেয়ে এগিয়ে ছিল বলেই এমনটা সম্ভব হয়েছে বলছেন গার্দিওলা,’আমি নিশ্চিত আমাদের সমর্থক, আমাদের দল এখন সেরা। সংখ্যার দিক থেকে কেউই আমাদের চেয়ে ভালো ছিল না। যেমন গোল, পয়েন্ট, টানা চারটি লিগ ট্রফি। আমরা অবিশ্বাস্য কিছু করে ফেলেছি।’