‘আমি বোকা’—পেদ্রোকে থাপ্পড় মারা নিয়ে এনরিকের স্বীকারোক্তি

‘আমি বোকা’—পেদ্রোকে থাপ্পড় মারা নিয়ে এনরিকের স্বীকারোক্তি ম্যাচ শেষ, তবু উত্তেজনার শেষ হয়নি। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে চেলসির কাছে ৩-০ গোলে হারার পর পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে জড়িয়ে পড়েন মারাত্মক এক বিতর্কে। চেলসির ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড জোয়াও পেদ্রোকে ঘিরে ঘটে সংঘর্ষ, যার এক পর্যায়ে এনরিকে তার গলা চেপে ধরেন এবং মুখে থাপ্পড় দেন—এই দৃশ্য ধরা পড়ে ‘ডিএজেডএন’-এর ক্যামেরায়। ঘটনার পরপরই পিএসজির সহকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এনরিকে। ক্যামেরায় তার ঠোঁট পড়তে দেখা যায়, ‘আমি বোকা। ও দাঁড়িয়ে ছিল, আমাকে ধাক্কা দেয়। আমি ছুঁয়ে দিই, আর সে লাফিয়ে পড়ে। ’ পরবর্তীতে এনরিকে বলেন, ‘আমি আমার অনুভূতি লুকাই না। এটা এমন এক পরিস্থিতি, যা সবাই এড়াতে পারত। আমি শুধু উত্তেজনা থামাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্বীকার করছি—এটাই সবচেয়ে ভালো কাজ হয়নি। ’ঘটনার সূচনা হয় পিএসজির গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার সঙ্গে পেদ্রোর মুখোমুখি সংঘর্ষ থেকে। কথা কাটাকাটি শুরু হলে আশরাফ হাকিমি অঙ্গভঙ্গিতে বোঝান, পেদ্রো বেশি কথা বলছে। এর মধ্যেই এনরিকে ছুটে আসেন এবং ধাক্কাধাক্কির মাঝে প্রেসনেল কিম্পেম্বে তাকে ঠেকানোর চেষ্টা করলেও, তিনি থাপ্পড় মেরে বসেন পেদ্রোকে। ফিফার সম্ভাব্য শাস্তির মুখে এনরিকে ম্যাচ শেষে হলেও, মাঠে মারধরের জন্য ফিফার পক্ষ থেকে এনরিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আল খেলাইফির সাফাই পিএসজি প্রেসিডেন্ট নাসের আল খেলাইফি এনরিকেকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কোচ বিশ্বের সবচেয়ে শৃঙ্খলাপরায়ণ ও সম্মানযোগ্য ব্যক্তি। তিনি শুধু বল নিতে গিয়েছিলেন এবং ধাক্কা খেয়েছেন। কোচদের প্রতিও সম্মান থাকা উচিত। ’
ওয়াশিংটনকে হারিয়ে শিরোপা জিতল এমআই নিউইয়র্ক

ওয়াশিংটনকে হারিয়ে শিরোপা জিতল এমআই নিউইয়র্ক মাত্র ৬ বলে দরকার ১২ রান, ক্রিজে ছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও গ্লেন ফিলিপস। দেখে মনে হচ্ছিল ওয়াশিংটন ফ্রিডমই হয়তো ধরে রাখবে শিরোপা। কিন্তু চাপের মুখে মাথা ঠাণ্ডা রেখে অসাধারণ এক শেষ ওভারে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন মাত্র ২২ বছর বয়সী রুশিল উগারকার। শিরোপা ওঠে এমআই নিউইয়র্কের ঘরে। বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে ডালাসে অনুষ্ঠিত মেজর লিগ ক্রিকেটের (এমএলসি) ফাইনালে ওয়াশিংটনকে ৫ রানে হারায় নিকোলাস পুরানের দল এমআই নিউইয়র্ক। ১৮১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ১৭৫ রানেই থেমে যায় গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়াশিংটন। শেষ ওভারে প্রথম তিন বলে মাত্র ২ রান দেন উগারকার। চতুর্থ বলে ছক্কার চেষ্টায় ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন ম্যাক্সওয়েল। নতুন ব্যাটার ওবাস পিয়েনার পঞ্চম বলে রান না পেলে এক দফা উদযাপন শুরু করে নিউইয়র্ক শিবির। শেষ বলে বাউন্ডারি হজম করলেও ম্যাচটা হাতছাড়া হতে দেননি তরুণ এই পেসার। শেষ পর্যন্ত তাকে ঘিরেই শিরোপা উৎসবে মাতে দলটি। চলতি বছরে এটি এমআই ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় টি-টোয়েন্টি শিরোপা। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ টুয়েন্টি লিগে চ্যাম্পিয়ন হয় এমআই কেপটাউন এবং মেয়েদের উইমেন’স প্রিমিয়ার লিগ জেতে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ফাইনালে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে এমআই নিউইয়র্কের হয়ে ওপেনিং জুটিতে ৭২ রান যোগ করেন কুইন্টন ডি কক ও মোনাঙ্ক প্যাটেল। ২২ বলে ২৮ রান করে ফেরেন মোনাঙ্ক। ডি কক ৬ চার ও ৪ ছক্কায় খেলেন ৪৬ বলে ৭৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস। মাঝের সময়টায় রান তোলার গতি কমে যায় পুরান, পোলার্ড ও ব্রেসওয়েলের ব্যর্থতায়। তবে শেষ দিকে কুনওয়ারজিত সিংয়ের ১৩ বলে ২২ রানের ক্যামিওতে দল পৌঁছায় ১৮০ রানে। ওয়াশিংটনের হয়ে ফার্গুসন নেন ৩টি উইকেট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে দুই ওপেনার মিচেল ওয়েন ও আন্দ্রেস গাউসকে হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়াশিংটন। এরপর রাচিন রবীন্দ্র ও জেইক এডওয়ার্ডসের ৮৪ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ২২ বলে ৩৩ রান করে ফেরেন এডওয়ার্ডস। মাত্র ২৪ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন রাভিন্দ্রা। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ৭০ রান। শেষ দিকে ম্যাক্সওয়েল ও ফিলিপসের ব্যাটে জমে ওঠে লড়াই। শেষ তিন ওভারে দরকার ছিল ৪১ রান। যার মধ্যে ১৮ ও ১৯তম ওভারে ওঠে ২৯ রান। তবে শেষ ওভারে উগারকারের দৃঢ়তায় শিরোপা হাতছাড়া হয় ওয়াশিংটনের। ফিলিপস ৫ ছক্কায় ৩৪ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকলেও, ম্যাক্সওয়েলের ইনিংস ছিল হতাশাজনক। ১৬ বলে মাত্র ১৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
টানা ৫ ম্যাচে জোড়া গোল মেসির

টানা ৫ ম্যাচে জোড়া গোল মেসির মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) গোলের নেশায় বুদ হয়েছেন লিওনেল মেসি। আরও একবার মাঠে নেমে তিনি দুবার পেয়েছেন জালের দেখা। বাড়িয়ে নিয়েছেন টানা গোল করার রেকর্ড। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালে শেষ হওয়া ম্যাচটিতে ন্যাশভিলকে ২-১ গোলে হারায় ইন্টার মায়ামি। দলের জয়ে একাই গোল দুটি করেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এমএলএসে টানা পাঁচ ম্যাচে দুটি করে গোল করলেন ৩৮ বছর বয়সী বিশ্বকাপজয়ী ফরোয়ার্ড। প্রতিযোগিতাটির ইতিহাসে টানা চার ম্যাচে একাধিক গোলের নজিরও নেই আর কোনো ফুটবলারের। মেসির এই গোলযাত্রা শুরু হয় গত মে মাসে। মন্ট্রিয়লের বিপক্ষে দলের ৪-২ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে দুটি গোল করেন তিনি। পরে কলম্বাস ক্রুর বিপক্ষে ৫-১ ব্যবধানের জয়ে করেন দুটি গোল। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পর গত রোববার মন্ট্রিয়লের বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয়ে চোখধাঁধানো দুটি গোল করেন আটবারের ব্যালন দ’র জয়ী। নিউ ইংল্যান্ড রেভ্যুলেশনের বিপক্ষেও পরে দুবার জাল কাঁপান তিনি। সেই ধারায় এবার মেসির জোড়া গোলের শিকার ন্যাশভিল। সব মিলিয়ে লিগে ১৬ ম্যাচে ১৬ গোল করে ন্যাশভিলের স্যাম সারিজের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন মেসি। এর সঙ্গে ৭টি অ্যাসিস্টও আছে তার। ম্যাচে সার্বিকভাবেই প্রতিপক্ষকে তেমন লড়াই করতে দেয়নি মায়ামি। গোলের জন্য ৯টি শট করে ৫টি লক্ষ্যে রাখে তারা। বিপরীতে ন্যাশভিলের ৮ শটের ২টি ছিল জাল বরাবর। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত মায়ামি। ডি-বক্সের কোনা থেকে লুইস সুয়ারেসের আলতো চিপ অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ১৭তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে নিচু করে নেওয়া ফ্রি-কিকে জাল খুঁজে নেন মেসি। ফ্রি-কিক থেকে আর্জেন্টাইন জাদুকরের ক্যারিয়ারের এটি ৬৯তম গোল। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ৪৯তম মিনিটে হ্যারি মুখটারের চমৎকার হেডে সমতা ফেরায় ন্যাশভিল। দলকে আবার এগিয়ে দিতে সময় নেননি মেসি। এতে অবশ্য ভাগ্যের সহায়তাও পান তিনি। ৬২তম মিনিটে নিজ দলের খেলোয়াড়কে পাস দিতে গিয়ে মেসির পায়ে বল তুলে দেন ন্যাশভিল গোলরক্ষক। বক্সের ভেতরে ঢুকে অনায়াসেই বল জালে জড়ান মেসি। এই পরাজয়ে থামল সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ন্যাশভিলের টানা ১৫ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রা। ১৯ ম্যাচে ১১ জয় ও ৫ ড্রয়ে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে এমএলএসের ইস্টার্ন কনফারেন্সে এখন পঞ্চম স্থানে মায়ামি। শীর্ষে থাকা ফিলাডেলফিয়ার চেয়ে ৫ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে তারা। তবে ক্লাব বিশ্বকাপে ব্যস্ত থাকায় মায়ামি তিনটি ম্যাচ কম খেলেছে।
উদ্বোধনী ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে ৯ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ

উদ্বোধনী ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে ৯ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ সদ্য এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্ব নিশ্চিত করে দেশে ফেরা বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল এবার নেমেছে আরেকটি মিশনে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আজ শুরু হয়েছে নারী সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ। উদ্বোধনী ম্যাচেই দুর্দান্ত শুরু করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ, ৯-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। আজ বিকেলে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় শ্রীলঙ্কা নারী দলকে ১-৯ গোলে পরাজিত করেছে আফঈদারা। ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় মিনিটেই ফ্রি-কিক থেকে অসাধারণ এক গোল করে স্বাগতিক দলকে এগিয়ে দেন স্বপ্না রানী। প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে আরও ৬ টি গোল যোগ করে বাংলাদেশ। বিশাল জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করল বাংলাদেশের মেয়েরা। আজ থেকে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় শুরু হয়েছে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ। স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে টুর্নামেন্টে খেলছে শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটান।
মাঠে ফিরেই গোল-অ্যাসিস্টে উজ্জ্বল নেইমার

মাঠে ফিরেই গোল-অ্যাসিস্টে উজ্জ্বল নেইমার শৈশবের ক্লাব সান্তোসের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের পর মাঠে নেমেই আলো উজ্জ্বল নেইমার। দেসপোর্তিভা ফেরোভিয়ারিয়া বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে গোলের পাশাপাশি অ্যাসিস্টও করেছেন তিনি। নেইমারের জ্বলে ওঠার ম্যাচে ৩-১ গোলের বড় ব্যবধানে জিতেছে সান্তোস। ম্যাচের ২০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলের প্রথম গোলটা করেন নেইমার। ৩১ মিনিটে গিয়ের্মের করা গোলেও অ্যাসিস্ট করেন তিনি। বিরতির পর অবশ্য আর মাঠে ফেরেননি নেইমার। তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন পাদুলা। ১৭ বছর বয়সী রবিনিও জুনিয়র বাবার ৭ নম্বর জার্সি পরে নিজের প্রথম ম্যাচ খেললেন। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি অবশ্য নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি। দর্শকেরা একাধিকবার মাঠে ঢুকে পড়ায় দ্বিতীয়ার্ধের ৪০ মিনিটেই থামিয়ে দিতে হয় খেলা।
ট্রফি নয়, ভালোবাসা নিয়েই রিয়াল অধ্যায় শেষ করলেন মদ্রিচ

ট্রফি নয়, ভালোবাসা নিয়েই রিয়াল অধ্যায় শেষ করলেন মদ্রিচ নিরবেই ঘটল এক আবেগঘন বিদায়ের। রিয়াল মাদ্রিদে ১৩ বছর অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল ক্রোয়েশিয়ান তারকা লুকা মদ্রিচের। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) কাছে ৪-০ গোলে হারের ম্যাচটিই হয়ে রইল সাদা জার্সিতে এই কিংবদন্তির শেষ ম্যাচ। জয় নয়, কিংবা ট্রফিও নয়; গতকাল রাতে নিউ জার্সির মাঠে ম্যাচের ফলাফলের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছিল একটি বিদায়ের মুহূর্ত। রিয়াল মাদ্রিদ যখন পিএসজির দাপটে মুখ থুবড়ে পড়ছে, তখন পুরো স্টেডিয়ামের চোখ ছিল একদিকেই। সেটি হচ্ছে লুকা মদ্রিচ! প্রথমার্ধেই ফাবিয়ান রুইসের জোড়া গোল এবং দেম্বেলের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ২৪ মিনিটের মধ্যেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় পিএসজি। পরে গন্সালো রামোসের গোলের মাধ্যমে স্কোরলাইন ৪-০ হয়। ম্যাচটির ৬৪তম মিনিটে মাঠে নামেন ৩৯ বছর বয়সী মদ্রিচ। ম্যাচ তখন অনেকটাই হাতছাড়া, কিন্তু মাঠে নামার পরেও তার উপস্থিতিতে ভুলের কোনো সুযোগ রাখেননি। বল পায়ে তার স্বাচ্ছন্দ্য, নিখুঁত পাস, সেট-পিসে নেতৃত্ব; সবমিলিয়ে খুব অল্প সময়ে দেখা মিলেছে চেনা মদ্রিচের। মে মাসে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মদ্রিচের আনুষ্ঠানিক বিদায় অনুষ্ঠান হয়ে গেলেও, মাঠে এটিই ছিল তার আসল ‘বিদায়’। ম্যাচ শেষে সতীর্থ, এমনকি পিএসজির খেলোয়াড়রাও তাকে জড়িয়ে ধরেন। কোচ জাবি আলোনসোর সঙ্গে দেখা যায় এক আবেগঘন মুহূর্ত। এই কোচই একটা সময় সতীর্থ হয়ে খেলেছিলেন মদ্রিচের সঙ্গে। চলতি ক্লাব বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মদ্রিচ। সময়ের বিচারে খেলার সুযোগ কম হলেও, প্রতিবারই তিনি নিজের অভিজ্ঞতা, নেতৃত্বগুণ দিয়ে দলকে সহায়তা করেছেন। রিয়ালের জার্সিতে প্রায় ৬০০ ম্যাচ খেলা মদ্রিচের ঝুলিতে রয়েছে ২৮টি ট্রফি। তবে শেষ মৌসুমটা কাটেনি ভালো। ট্রফিলেস মৌসুম কাটাতে হয়েছে ইউরোপের সফলতম দলটিকে। তবে মদ্রিচের জন্য এই হতাশা থেকে বড় কিছু ছিল ভক্তদের ভালোবাসা, সতীর্থদের সম্মান এবং এমন এক ঐতিহ্য, যা কেবল গুটিকয়েক কিংবদন্তিরই প্রাপ্য।
রাতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি রিয়াল-পিএসজি

রাতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি রিয়াল-পিএসজি আজ বুধবার (০৯ জুলাই) দিবাগত রাতে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষা করছে এক উত্তেজনাকর লড়াই। নিউ জার্সির ইস্ট রাদারফোর্ডে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ইউরোপের দুই শক্তিশালী ক্লাব— রিয়াল মাদ্রিদ ও প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি)। তবে মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে নামটি, তিনি কিলিয়ান এমবাপ্পে। সদ্যসমাপ্ত মৌসুম শেষে পিএসজির জার্সি খুলে রিয়ালের সাদা রঙে রঙিন হয়েছেন এই ফরাসি সুপারস্টার। এবার প্রথমবারের মতো মাঠে নামছেন সাবেক সতীর্থদের বিরুদ্ধে। আর এমন ম্যাচকে ঘিরে দর্শকদের আগ্রহও আকাশছোঁয়া। চেলসি ইতোমধ্যেই ফ্লুমিনেন্সকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছে। দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট নির্ধারিত হবে আজকের এই বহুল প্রতীক্ষিত ম্যাচেই। রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন এমবাপ্পে। এবার তার কাছে ভক্তদের প্রত্যাশাও সীমাহীন। তবে পিএসজি কোচ লুইস এনরিক অতীত টানতে রাজি নন। তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন, “আমরা অতীত নিয়ে ভাবছি না, বরং সামনে কী অপেক্ষা করছে, সেদিকেই নজর দিচ্ছি।” তবে প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদের গুরুত্ব নিয়ে এনরিক বলেন, “এটা বিশ্বের সবচেয়ে সফল ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচ। এমন ম্যাচ সবসময়ই বিশেষ কিছু।” তবে শুধু প্রতিপক্ষ নয়, চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে নিউ জার্সির গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া। মঙ্গলবার চেলসির ম্যাচ চলাকালীন তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে, আর্দ্রতা ছিল ৫৪ শতাংশ। আবহাওয়া বিভাগ থেকে হিট অ্যালার্ট পর্যন্ত জারি করা হয়। এর মধ্যেই খেলোয়াড়দের মানিয়ে নিতে হচ্ছে। দুই দলের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, পাঁচ ম্যাচে দু’টি করে জয় ও একটি ড্র করেছে রিয়াল ও পিএসজি। তাই পরিসংখ্যানেও সমতা, মাঠেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রতিশ্রুতি। রিয়াল মাদ্রিদ চাইবে আরও একবার ট্রফি ক্যাবিনেট সমৃদ্ধ করতে। আর পিএসজির লক্ষ্য প্রথমবারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখা। আজ রাতের ম্যাচে কে হাসবে শেষ হাসি, তার অপেক্ষায় গোটা ফুটবল বিশ্ব।
‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কারে মেসির হ্যাটট্রিক

‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কারে মেসির হ্যাটট্রিক ইন্টার মায়ামির জার্সি গায়ে তুলে যেন ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কার নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতেই রূপান্তর করে ফেলেছেন লিওনেল মেসি। বরাবরের মতো এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) চলতি মৌসুমে তৃতীয়বারের মতো এই পুরস্কার জিতেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। মন্ট্রিয়েলের বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন মেসি। করেছেন দুটি চমৎকার গোল। ড্রিবল, গতি আর বাঁ পায়ের নিখুঁত ফিনিশে একের পর এক প্রতিপক্ষকে বোকা বানিয়ে দেখিয়েছেন পায়ের জাদু। গোল দুটো এমন ছিল, যা দেখে কেউই বিশ্বাস করতে পারবে না তিনি এখন ৩৮ বছর বয়সী! এই ম্যাচসেরা পারফরম্যান্সের সুবাদে মেসি মায়ামির হয়ে মোট ৯ বার জিতলেন ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কার। এমএলএসের ইতিহাসে এটা এক অনন্য কীর্তি। ১৯৯৬ সালে লিগ শুরুর পর মাত্র ১১ জন খেলোয়াড় এমন কীর্তি গড়েছেন। তবে বেশিরভাগই সেটা করেছেন বহু মৌসুম খেলে। সেখানে মাত্র দুই বছরের মধ্যে মেসি উঠে এলেন ঐতিহাসিক সেই তালিকায়। বর্তমানে খেলছেন এমন ফুটবলারদের মধ্যে এই রেকর্ড আছে মাত্র দু’জনের। তারা হলেন জোসেফ মার্তিনেজ (আটালান্টা ইউনাইটেড) ও লিওনেল মেসি। তবে মেসি এখনই সুযোগ পাচ্ছেন সবার ওপরে উঠে যাওয়ার। আগামী ১০ জুলাই নিউ ইংল্যান্ড রেভ্যুলুশনের মাঠে পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ইন্টার মায়ামি। সেই ম্যাচেই দশম পুরস্কার ছোঁয়ার হাতছানি রয়েছে মেসির সামনে।
ঢাকায় ফিরেই চমকপ্রদ সংবর্ধনা পেলো ইতিহাসগড়া নারী ফুটবল দল

ঢাকায় ফিরেই চমকপ্রদ সংবর্ধনা পেলো ইতিহাসগড়া নারী ফুটবল দল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়ার পর দেশে ফিরতেই লাল-সবুজের সাহসিনী কন্যাদের জন্য অপেক্ষা করছিল এক অভিনব সম্মাননা। মধ্যরাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর হৃদয়স্থল হাতিরঝিলে আয়োজন করা হয় এই ব্যতিক্রমী সংবর্ধনার। শনিবার দিবাগত রাত প্রায় সোয়া ৩টার সময়, ঘুম ভেঙে যাওয়া শহরের নিস্তব্ধতা ভেঙে চিৎকারে মুখর হয়ে ওঠে হাতিরঝিল। সেখানে হাজির ছিলেন ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তারা, কোচিং স্টাফ, ক্রীড়া সাংবাদিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত কিছু সমর্থক। মঞ্চে একে একে উঠলেন ঋতুপর্ণা, আফিদা, মনিকারা। হাতে ছিল দেশের পতাকা, চোখেমুখে ছিল বিজয়ের গর্ব। তাড়াহুড়ার এই আয়োজন নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুললেও এর পেছনে ছিল যুক্তিসঙ্গত কারণ। দলের তারকা খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা ও মনিকা চাকমা পরদিনই ভুটানে লিগ খেলতে রওনা দেবেন। কয়েকদিনের মধ্যে রুপনা চাকমা, মারিয়া মান্দা ও শামসুন্নাহার সিনিয়রও যোগ দেবেন বিদেশি লিগে। তাই দলের সবাইকে একসঙ্গে সম্মান জানানোর এই ক্ষণিক সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি বাফুফে। এর ঠিক দু’ঘণ্টা আগে, রাত দেড়টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে মেয়েরা। সেখানে ছিল ফুলেল শুভেচ্ছা আর অভ্যর্থনার উষ্ণতা। তবে প্রকৃত উদযাপন শুরু হয় হাতিরঝিলে। এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে বাছাইপর্বে মাঠে উপহার দেওয়া নজরকাড়া পারফরম্যান্স। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠে তারা ছিল দুর্বার। প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। আরও একবার ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা। এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ। ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়েছে ১১টি দলের অংশগ্রহণ— অস্ট্রেলিয়া (স্বাগতিক), চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, ফিলিপাইনস, ভিয়েতনাম, চাইনিজ তাইপে, উত্তর কোরিয়া ও উজবেকিস্তান। এখন কেবল বাকি ‘এ’ গ্রুপের একটি দল। এই অর্জন শুধু ক্রীড়াঙ্গনের নয়, এটা জাতির জন্যও এক গৌরবময় মুহূর্ত। মধ্যরাতের ওই সংবর্ধনায় বাজছিল ঢোল, উড়ছিল পতাকা, আর মেয়েদের চোখে ছিল আত্মবিশ্বাসের আলো, যা আগামী দিনের নারী ফুটবলের অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে থাকবে।
দেশে ফিরেই সংবর্ধনা নারী ফুটবল দলকে

দেশে ফিরেই সংবর্ধনা নারী ফুটবল দলকে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের মূলপর্বে জায়গা করে নেওয়ার গৌরবময় অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতে আজ দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর হাতিরঝিল এম্ফিথিয়েটারে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আয়োজন করতে যাচ্ছে এক ব্যতিক্রমী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। মিয়ানমারে বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স শেষে বাংলাদেশ নারী দল আজ সন্ধ্যায় স্থানীয় সময় রওনা দেবে। থাইল্যান্ড হয়ে মধ্যরাত দেড়টার দিকে ঢাকায় পৌঁছাবে তারা। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সোজা যাবে হাতিরঝিলে, যেখানে অপেক্ষায় থাকবে জাতির অভিনন্দন আর ভালোবাসা। এই রাত হতে যাচ্ছে একসাথে বরণ, সম্মান ও বিদায়ের অভূতপূর্ব উপলক্ষ। কেননা দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা ও মনিকা চাকমা পরদিনই ভুটান লিগে খেলতে ঢাকা ছাড়বেন। আরও তিনজন ফুটবলার যাত্রা করবেন দুই দিন পর। ফলে পুরো দল একসাথে থাকছে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। সেই সময়টাকেই রঙিন করে তুলতে এই মধ্যরাতের আয়োজন।