01713248557

মেসির রেকর্ড ভেঙ্গে পেলেকে ছুঁলেন কলম্বিয়ার রদ্রিগেজ

মেসির রেকর্ড ভেঙ্গে পেলেকে ছুঁলেন কলম্বিয়ার রদ্রিগেজ কোপা আমেরিকার শুরু থেকেই কলম্বিয়া দলকে নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছিল। দলটি টানা অপরাজিত থেকে টুর্নামেন্ট খেলতে আসে। ব্রাজিলের গ্রুপে পড়েও ব্রাজিলকে টপকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। সেমিতেও তারা প্রমাণ করলো কেন তারা এবারের শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবিদার। আর সে লক্ষ্যে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির অধিনায়ক হামেশ রদ্রিগেজ। কোপা আমেরিকায় যেন পুনর্জন্ম হয়েছে হামেশ রদ্রিগেজের। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলে তাক লাগিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন। কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। অনিয়মিত থেকে এখন ব্রাজিলের ক্লাবে খেলছেন এই মিডফিল্ডার। লিওনেল মেসির নাম সামনে আসলেই মনে হয় কোন অজেয় রেকর্ডের মালিকের নাম; কিন্তু মেসির রেকর্ডও যে ভাঙা যায় তা করে দেখালেন হামেশ রদ্রিগেজ। এক কোপা আমেরিকায় সর্বোচ্চ এসিস্ট করার রেকর্ড গড়লেন তিনি। ২০১৫, ২০১৬, ২০১৯ ও ২০২৪ সালের কোপাতে অংশ নিয়ে এই প্রথমবার ফাইনালে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন হামেশ। টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচে ছয়টি এসিস্ট করেছেন হামেশ। ২০২১ সালে ৫টি এসিস্ট করে রেকর্ড গড়েছিলেন লিওনেল মেসি। তিন বছর পর সেটিকে নিজের করে নিলেন সাবেক এই বায়ার্ন ও এভারটনে খেলা তারকা। শুধু তাই নয়, কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার পেলের একটি বিরল রেকর্ডেও ভাগ বসালেন হামেশ। পেলের ৫৪ বছর পর বড় কোনো এক টুর্নামেন্টে ৬টি অ্যাসিস্টের রেকর্ড গড়লেন কলম্বিয়ান এই তারকা। ১৯৭০ বিশ্বকাপে সর্বশেষ ৬টি অ্যাসিস্ট করেছিলেন পেলে। এবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই পেলের সেই রেকর্ড ছুঁলেন হামেশ রদ্রিগেজ। ম্যাচ শেষে দলের এমন পারফরম্যান্সে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন হামেশ। ‘আজকের ম্যাচটি দুর্দান্ত ছিল। তবে রেফারি ভালো ছিল না। রক্ষণভাগ যারা সামলেছে তার অসাধারণভাবে কাজটি করেছে। আমি জাতীয় দলের হয়ে ১৩ বছর খেলছি এই মুহূর্তটার জন্য। আমরা খুব খুশি।’ টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকা কলম্বিয়ার বিপক্ষে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আগামী ১৪ জুলাই মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।

নিজের ‘শেষ’ কোপা খেলার ইঙ্গিত মেসির

নিজের ‘শেষ’ কোপা খেলার ইঙ্গিত মেসির আগেই শেষবারের মতো কোপা আমেরিকা খেলার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন লিওনেল মেসি। এবার নিজের সঙ্গে যুক্ত করলেও আনহেল দি মারিয়া ও নিকোলাস ওতামেন্দিকেও। এবারের কোপার ফাইনালে উঠে এবারের আসরকে শেষ যুদ্ধ হিসেবেই দেখছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।  আজ বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় কোপার সেমিফাইনালে কানাডাকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। সবশেষ আট আসরে এটি তাদের ষষ্ঠ ফাইনাল। ২০০৭ থেকে প্রতিটি আসরেরই খেলে আসছেন মেসি। তবে এবারের আসরকে তিনি দেখছেন শেষ হিসেবেই।  দি মারিয়া ও নিকোলাস ওতামেন্দির কথা উল্লেখ করে মেসি বলেন, ‘ইদানিং সবকিছু যেভাবে দেখছি, এটিও (কোপা আমেরিকা) সেভাবে দেখছি। দারুণ উপভোগ করছি। ফিদেও (আনহেল দি মারিয়া) ও ওতার (নিকোলাস ওতামেন্দি) মধ্যে যা চলছে, এগুলো যে শেষের লড়াই, সে সম্পর্কেও সচেতন আছি। ’শেষের লড়াইকে অবশ্য খুব বেশি সহজ হিসেবে নিচ্ছেন না আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তবে দলের খেলা উপভোগ করার কথা তিনি জানিয়েছেন ঠিকই। মেসি বলেন, ‘দল হিসেবে আমাদের যা অভিজ্ঞতা হচ্ছে, চলুন উপভোগ করি। আবারও ফাইনালে ওঠা, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য লড়াই করা সহজ নয়। ’ আগামী সোমবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় ফ্লোরিডার হার্ড রক স্টেডিয়ামে শিরোপা জেতার লড়াইয়ে কলম্বিয়া অথবা উরুগুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা।

মিউনিখে মহারণে মুখোমুখি ফ্রান্স-স্পেন

মিউনিখে মহারণে মুখোমুখি ফ্রান্স-স্পেন দেখতে দেখতে শেষের পথে ইউরো-২০২৪। ২৪টি দলের অংশগ্রহণে ১৪ জুন শুরু হয়েছিল ইউরোর এবারের আসর। এখন কেবল ৪টি দল টিকে আছে। তার মধ্যে আজ রাতে বিদায় নিবে একটি দল। বিদায়ের আগে প্রাণপণ লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে ফ্রান্স ও স্পেন। মিউনিখের সেই মহারণটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায়। অবশ্য সেমিফাইনালের আগে ফ্রান্সের চিন্তার নাম গোল করতে না পারা। গ্রুপপর্ব থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত তারা ওপেন প্লেতে কোনো গোল করতে পারেনি। পোল্যান্ডের বিপক্ষে কেবল একটি গোল করেছে পেনাল্টি থেকে এবং সেটি করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। এছাড়া অস্ট্রিয়া ও বেলজিয়ামের বিপক্ষে তারা দুটি আত্মঘাতী গোলে জিতেছিল। গ্রুপপর্বে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল। আর কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালের সঙ্গে গোলশূন্য থাকার পর টাইব্রেকারে জিতেছিল। ফ্রান্স দলে তারকার অভাব না থাকলেও তারা এবার তাদের পারফরম্যান্স দিয়ে ভক্ত-সমর্থক-দর্শকদের সন্তুষ্ট করতে পারছেন না। অবশ্য এই বিষয়টি মোটেও আমলে নিতে রাজি নন কোচ দিদিয়ের দেশম, ‘আপনি যদি আমাদের খেলা দেখে বিরক্ত হন, তাহলে অন্য খেলা দেখুন। সেটাই ভালো আপনার জন্য। আমাদের খেলা আপনার দেখতে হবে না। এটা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। এটা সবার জন্যই বেশ কঠিন।’ তবে ফ্রান্সের তুলনায় বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে স্পেন। তারা ইনিয়েস্ত-জাভি-রামোস-ক্যাসিয়াস-পুয়োল-পিকে-বুসকেটস-ভিয়াদের পর আরেকটি সোনালী প্রজন্ম পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। ১২ বছর পর তারা আরও একটি বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠা এবং জয়ের অপেক্ষায় আছে। এবারের আসরে স্পেনের তরুণ প্রজন্মের ফুটবলাররা বেশ ভালো পারফরম্যান্স করছে। তারা গ্রুপপর্বে ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, জর্জিয়ার বিপক্ষে বড় জয় পেয়েছে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে আয়োজক ও শিরোপা প্রত্যাশী জার্মানিকে অতিরিক্ত সময়ের গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে এসেছে। এ যাত্রায় তারা পারফরম্যান্স দিয়ে মন ভরিয়েছে ভক্ত-সমর্থক ও দর্শকদের। তাতে করে ফুটবলপ্রেমীরা স্পেনের এই দলটিকে সোনালী প্রজন্মের সেই দলের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছে যারা ব্যাক টু ব্যাক তিন-তিনটি মেজর শিরোপা জিতেছিল। স্পেনের মিডফিল্ডার রদ্রি জানিয়েছেন, সোনালী প্রজন্ম হতে তাদেরকে লিগ্যাসি তৈরি করতে হবে। যেমনটা করেছিলেন ক্যাসিয়াস-ইনিয়েস্তা-জাভিরা, ‘আমরা এখন যে সোনালী প্রজন্মের কথা বলি তারা কিন্তু শুরুতে সোনালী প্রজন্ম ছিল না। সেটা করতে তাদেরকে নিজেদের একটি লিগ্যাসি তৈরি করতে হয়েছে। এমন একটি দল হয়ে উঠতে হয়েছে। আমাদেরকেও তেমন করতে হবে, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে একটি দল হয়ে উঠতে হবে। নিজেদের লিগ্যাসি তৈরি করতে হবে। ফ্রান্সের বিপক্ষে খুবই কঠিন একটি ম্যাচ আমাদের। যারা বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দল। তারা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিবে।’ ফ্রান্স ও স্পেন এ পর্যন্ত ৩৬ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। তার মধ্যে স্পেন জিতেছে ১৬টিতে। ফ্রান্সের জয় ১৩টিতে। ৭টি ম্যাচ হয়েছে ড্র। সবশেষ পাঁচবারের দেখায় দুইবার জিতেছে ফ্রান্স, দুইবার জিতেছে স্পেন। একটি ম্যাচ হয়েছে ড্র। বোঝাই যাচ্ছে আজও হাড্ডাহাড্ডি এক লড়াই হবে মিউনিখে। সেমিফাইনালের আগে জার্মানির বিপক্ষের ম্যাচে ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে যান পেদ্রি। তাকে আর ইউরোতে পাবেন না লুইস দে লা ফুয়েন্তে। তার পরিবর্তে যিনি খেলছেন সেই দান ওলমো আছেন দারুণ ছন্দে। ফ্রান্সের বিপক্ষের ম্যাচে শুরু থেকেই হয়তো খেলবেন ওলমো। এছাড়া ফুয়েন্তের হাতে আরও একজন বিকল্প আছেন, নাম তার মিকেল মেরিনো। যিনি জার্মানির বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে গোল করে দলকে জিতিয়েছিলেন। নিষিদ্ধ হওয়া দানি কারবাহালের পরিবর্তে একাদশে আসবেন অভিজ্ঞ রাইটব্যাক জেসাস নাভাস। এদিকে ফ্রান্সের অবশ্য কোনো খেলোয়াড়ের নিষেধাজ্ঞা সমস্যা নেই। কোয়ার্টার ফাইনালে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সেমিফাইনালে ফিরেছেন আদ্রিয়েন র‌্যাবিয়ট। যিনি কোচ দেশমের বেশ প্রিয়ভাজন। সেক্ষেত্রে এডুয়ার্ডো কামাভিঙ্গার পরিবর্তে শুরুর একাদশে আসবেন র‌্যাবিয়ট। বেঞ্চে চলে যাবেন আঁতোয়ান গ্রিজমানও। ফ্রান্স তাদের আক্রমণভাগের ধার বাড়াতে একাদশে ঢোকাতে পারে ওসমানে দেম্বেলে ও মার্কাস থুরামকেও। স্পেন ও ফ্রান্স উভয় দল ৪-৩-৩ ফরম্যাটে খেলতে পারে। স্পেনের সম্ভাব্য শুরুর লাইনআপ: সিমন, নাভাস, নাচো, ল্যাপোর্তে, কুকুরেলা, রদ্রি, ওলমো, ফ্যাবিয়ান, ইয়ামাল, মোরাতা ও উইলিয়ামস। ফ্রান্সের সম্ভাব্য শুরুর লাইনআপ: মাইগনান, কৌন্দে, উপামেকানো, সালিবা, হার্নান্দেজ, চৌমেনি, কান্তে, রাবিয়ট, দেম্বেলে, থুরাম ও এমবাপ্পে।

সেমিফাইনালের আগে সুখবর আর্জেন্টিনার

সেমিফাইনালের আগে সুখবর আর্জেন্টিনার চলমান কোপায় অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে পা রেখেছে আর্জেন্টিনা। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ কানাডা। এই ম্যাচে জয় পেলেই শিরোপার মঞ্চে পা রাখবে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। আগামী ১০ জুলাই  বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় আর্জেন্টিনা ও কানাডার সেমিফাইনাল ম্যাচটি শুরু হবে।কানাডার বিপক্ষে সাফল্য পেতে পুরোদমে অনুশীলনে ব্যস্ত আলবিসেলেস্তেরা। আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম টিওয়াইসি প্রকাশিত এক বার্তায় জানা যায় আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের অনুশীলনের সময় এমি মার্টিনেজ তার দলের সতীর্থ এবং আর্জেন্টিনার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন। তিনি বলেন, আরো একবার জয় তারপরই ফাইনাল।

আক্ষেপ নিয়ে টনি ক্রুসের বিদায়

আক্ষেপ নিয়ে টনি ক্রুসের বিদায় স্পেনের বিপক্ষে হেরে এবারের ইউরো মিশন শেষ হয়েছে জার্মানির। ঘরের মাঠে অন্যতম ফেভারিট হিসেবে খেলেও শিরোপা ঘরে তুলতে পারল না দলটি। সেই আক্ষেপ নিয়েই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছেন টনি ক্রুস। বিদায়ের দিনে অনেকটা আবেগজড়িত কণ্ঠেই জানিয়েছেন, আরেকটু থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। ম্যাচ শেষে টনি ক্রুস বলেন, ‘আমরা যা করেছি তার জন্য গর্ববোধ করতে পারি। দলকে সাহায্য করতে পেরে আমি খুশি। আমার ধারণা, আমরা জার্মান ফুটবলকে আবারও আশা দেখিয়েছি এবং সময় যত এগিয়েছে দল হিসেবে আমরা তত ভালো হয়েছি। এই দলটা ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে। কিন্তু আজকে আমাদের অনেক মন খারাপ, কারণ আমরা আরেকটু সময় থাকতে চেয়েছিলাম।’ নিজের শেষ ম্যাচেও মাঠে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছেন ক্রুস। তার ট্যাকলেই ম্যাচের অষ্টম মিনিটে আহত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্প্যানিশ তারকা পেদ্রিকে। প্রতিপক্ষের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্ট্রাইকার লামিন ইয়ামালকেও আটকে রেখেছেন তিনি। তবে জার্মানির স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে ১১৯তম মিনিটে করা মিকেল মোরেনোর গোল। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ৫১ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় স্পেন। জার্মানি ওই গোল পরিশোধ করেছে ম্যাচ শেষের স্রেফ ১ মিনিট আগে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ড্র হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে দানি ওলমোর দুর্দান্ত এক ক্রসে মাথা ছুঁয়ে গোল করেন স্পেনের মোরেনো। আর তাতেই ইউরো থেকে ছিটকে যায় জার্মানি। বিদায় হয়ে যায় টনি ক্রুসেরও।

ব্রাজিলের ম্যাচে আর্জেন্টিনার তিন রেফারি

ব্রাজিলের ম্যাচে আর্জেন্টিনার তিন রেফারি ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মহাদ্বৈরথ যেন থামার নয়। ফুটবল মাঠে দুই দলের লড়াইয়ের ঝাঁজ ছড়িয়ে গেছে সর্বত্র। কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের ম্যাচেও থাকছে আর্জেন্টিনা! এই ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব থাকছেন তিনজন আর্জেন্টাইন রেফারি। ব্রাজিল-উরুগুয়ে হাইভোল্টেজ ম্যাচের অফিসিয়ালদের নাম প্রকাশ করেছে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল। তাতে দেখা যায়, ম্যাচের মূল রেফারিসহ তিনজনই আর্জেন্টাইন। আহামীকাল রোববার (৭ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে ব্রাজিল ও উরুগুয়ে।  এই ম্যাচের জয়ী দল সেমি-ফাইনালে খেলবে কলম্বিয়া ও পানামার মধ্যকার ম্যাচের জয়ী দলের বিপক্ষে। চার কোয়ার্টার ফাইনালের শেষটিতে অ্যালেজিয়েন্ট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচে মূল রেফারি হিসেবে থাকছেন আর্জেন্টিনার দারিও হেরেরা। তার সহকারী হিসেবে থাকবেন আর্জেন্টিনার হুয়ান বেলাত্তি ও ক্রিস্টিয়ান নাভারো। চতুর্থ ও পঞ্চম রেফারি এল সালভাদরের ইভান বারটন ও নিকারাগুয়ার হেনরি পুপিরো। ব্রাজিলের ম্যাচে আর্জেন্টাইন রেফারি নিয়ে এতো আলোচনার অবশ্য কারণ আছে। এর আগে গ্রুপ পর্বে কলম্বিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টাইন রেফারি মাউরো ভিগলিয়ানোর ভুলে একটি পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয়েছিল ব্রাজিল। মাউরো ভিএআরের দায়িত্বে ছিলেন।  পরে ভুল স্বীকার করে নেয় কনমেবল।

ফাইনালের আগে আজ রাতে মুখোমুখি হবে স্পেন-জার্মানি

ফাইনালের আগে আজ রাতে মুখোমুখি হবে স্পেন-জার্মানি একদিকে স্পেন-জার্মানি অন্যদিকে পর্তুগাল-ফ্রান্স। ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে যেন ফাইনালের রোমাঞ্চ উপহার দিচ্ছে। আজ রাত ১০টায় স্টুটগার্টে স্বাগতিক জার্মানদের মুখোমুখি উড়ন্ত স্পেন। ম্যাচটি ঘিরে এরই মধ্যে উন্মাদনা তুঙ্গে। ইউরোপের দুই ফুটবল পরাশক্তির বহুল প্রতিক্ষীত এই ম্যাচটির দিকে চোখ থাকবে ফুটবল বিশ্বের। এই ম্যাচে জয়ী দল সেমিফাইনালে পর্তুগাল বনাম ফ্রান্সের মধ্যকার বিজয়ী দলের মোকাবিলা করবে। গ্রুপপর্বে তিন ম্যাচের সবকটিতে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করে স্পেন। গত রোববার শেষ ষোলোর ম্যাচে তারা জর্জিয়াকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে শেষ আটে উঠেছে। এ নিয়ে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ ম্যাচে জয়ের ধারা ধরে রেখেছে স্পেন। লুইস ডি লা ফুয়েন্তের তারুণ্যনির্ভর দল আত্মবিশ্বাসী মনোভাব নিয়েই জার্মানির বিপক্ষে মাঠে নামতে যাচ্ছে। শেষ পাঁচটি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে এই প্রথম তারা শেষ আটের টিকেট পেয়েছে। এমনকী খোদ জার্মানির জসুয়া কিমিচ স্বীকার করেছে এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দল হলো স্পেন। ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম স্থানে থাকা স্পেন ১৯৮৮ সালের পর জার্মানির বিপক্ষে শেষ ছয়টি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচের একটিতেও হারেনি। ছয়টি ম্যাচের তিনটিতে জয় ও তিনটি ড্র হয়েছে। ২০২২ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে এই দুই দলের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। স্পেনের একটি অভিশপ্ত রেকর্ড রয়েছে। ইউরো কিংবা বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে কখনই তারা স্বাগতিক দেশকে হারাতে পারেনি। ১৯৩৪ সালের পর থেকে এমন নয়টি ম্যাচেই প্রতিটিতেই তারা পরাজিত হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে। এদিকে, ১৯৯৬ সালের পর প্রথম ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পথে ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে স্বাগতিক জার্মানি। বিশ্বকাপে ১৪ বার ও ইউরোতে পাঁচবার মিলিয়ে সর্বমোট ১৯তম কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে মাঠে নামবে জার্মানি। বৈশ্বিক এই দুটি বড় টুর্নামেন্টে আর কোনো দল এতবার শেষ আটে খেলেনি। ইউরো ২০২৪’এ সবচেয়ে বেশী গোল (১০), সবচেয়ে বেশী আক্রমন (২৬৫), গোলের সবচেয়ে বেশী শট (৭১), গড়ে সর্বোচ্চ পজিশন (৬২%) নিয়ে শেষ আটে খেলতে নামবে জার্মানরা। তার ওপর বাড়তি অ্যাডভান্টেজ হিসেবে থাকছে স্বাগতিক সমর্থক। সব মিলিয়ে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সব ক্ষেত্রই প্রস্তুত আছ। এখন শুধু মাঠে নিজেদের প্রমাণের অপেক্ষা। ঘরের মাঠে শেষ আট ম্যাচে অবশ্য লা রোজাদের বিপক্ষে অপরাজিত রয়েছে জার্মাান। ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে এখনো কোনো স্বাগতিক দল বিদায় নেয়নি। আজকে ম্যাচে স্প্যানিশ বস ডি লা ফুয়েন্তে অপরিবর্তিত দল নিয়ে মাঠে নামার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ১৬ বছর বয়সী লামিন ইয়ামাল ও অ্যাথলেটিকো বিলবাও নিকো উইলিয়ামস তিন জনের আক্রমনভাগে অধিনায়ক আলভারো মোরাতার সঙ্গী হবে। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে পেড্রিকে ছাড়িয়ে ওলমো ও মিকেল মেরিনোর খেলার সম্ভাবনাই বেশী। তবে মূল একাদশে রড্রি ও ফাবিয়ান রুইজের সাথে পেড্রিও খেলতে পারেন। পায়ের ইনজুরি কাটিয়ে নাচো ফার্নান্দেজের দলে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। তাকে জায়গা দিতে সেন্ট্রাল ডিফেন্সে লি নরমান্ড অথবা অমারিক লাপোর্তের মধ্যে একজন বদলী বেঞ্চে চলে যাবেন। ফুল-ব্যাক হিসেবে মাঠে নামবেন ডানি কারভাহাল ও মার্ক কুকুরেলা। অন্যদিকে সেন্টার-ব্যাক জোনাথান টাহ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে জার্মান দলে ফিরছেন। ডেনমার্কের বিরুদ্ধে বাদ পড়েছিলেন লেফট-ব্যাক ম্যাক্সিমিলিয়ান মিটেলস্টাডে। কিন্তু ডেভিড রমকে ছাড়িয়ে তারই মূল দলে ফেরার সম্ভাবনা বেশী। আক্রমনভাগে লেরয় সানের পরিবর্তে ফ্লোরিয়ান রিটজ ফিরতে পারেন।

ব্রাজিলকে পেনাল্টি দেননি রেফারি, ভুল স্বীকার আয়োজকদের

ব্রাজিলকে পেনাল্টি দেননি রেফারি, ভুল স্বীকার আয়োজকদের কোপা আমেরিকার শেষ আট নিশ্চিত হয়েছে ব্রাজিলের। তবে কলম্বিয়ার সঙ্গে শেষ ম্যাচে ড্র করায় তারা এই পর্বে উঠেছে গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে। কোয়ার্টার ফাইনালে সেলেসাওদের তাই মুখোমুখি হতে হবে উরুগুয়ের।  কলম্বিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করার ম্যাচটিতে রেফারির একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়। ডিফেন্ডার দানিয়েল মুনেস বক্সের ভেতরে ফেলে দিয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে। কিন্তু সেটি পেনাল্টি দেননি রেফারি। ম্যাচের ৪২তম মিনিটের এই ঘটনায় পেনাল্টির জোরালো দাবি তুলেছিলেন ব্রাজিলের ফুটবলাররা। কিন্তু ভেনেজুয়েলার রেফারি হেসুস ভালেনজুয়েলা ফাউলের বাঁশি বাঁজাননি। ধরতে পারেননি ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির দায়িত্বে থাকা আর্জেন্টিনার মাউরো ভিগিলিয়ানোও। তাদের এই ভুল স্বীকার করে নিয়েছে কোপা আমেরিকার আয়োজক সংস্থা কনবেল। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘পেনাল্টি বক্সের ভেতরে ওই চ্যালেঞ্জে ডিফেন্ডার বলে পা ছুয়াতে পারেননি। এর ফল হিসেবে, তার কাজটা ঠিক হয়নি। রেফারি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে পারেননি ও খেলা চালিয়ে যেতে দিয়েছেন। ’ ‘ভিএআরও এটা বের করতে পারেনি যে ডিফেন্ডার বল ছুতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারকে বেপেরোয়াভাবে আঘাত করার আগে। এজন্য ভিএআরও ভুলভাবে মাঠের সিদ্ধান্তকে নিশ্চিত করেছে। ’ ওই সিদ্ধান্তে ব্রাজিলকে বেশ ভুগতে হয়েছে। ড্র করায় এখন গ্রুপ সি এর সেরা দল উরুগুয়ের বিপক্ষে কোয়ার্টারে লড়তে হবে তাদের। এ ম্যাচে তারা পাচ্ছে না ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকেও। ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে দলটির কোচ দরিভাল জুনিয়র বলেছেন, ‘এই ঘটনার পর আমরা গোল হজম করেছি। শুধু রেফারি আর ভিএআরই পেনাল্টি দেখেনি, যেটা নিশ্চিতভাবেই ছিল। ’

ভিনিকে হারিয়ে হতাশ ব্রাজিল কোচ

ভিনিকে হারিয়ে হতাশ ব্রাজিল কোচ এবারের কোপা আমেরিকায় দারুণ ছন্দে ছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালের আগে দুই হলুদ কার্ড দেখে ছিটকে গেছেন তিনি। তাই তাকে ছাড়াই শেষ আটের লড়াইয়ে নামতে হবে সেলেসাওদের। দলের সেরা তারকাকে এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হারানোয় হতাশ ব্রাজিলের কোচ দরিভাল জুনিয়র। আজ গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে কলম্বিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল। আগের ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে জোড়া গোল করা ভিনি এই ম্যাচেও তেমন কিছুর পুনরাবৃত্তি ঘটানোর লক্ষ্যেই নেমেছিলেন। কিন্তু মাত্র সপ্তম মিনিটেই কলম্বিয়ার অধিনায়ক হামেস রদ্রিগেজকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন তিনি।   আগের ম্যাচেও হলুদ কার্ড দেখেছিলেন ভিনি। ফলে টানা দুই হলুদ কার্ড দেখার শাস্তিস্বরূপ কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি বেঞ্চে বসে দেখতে হবে তাকে। ভিনিকে ছাড়া যে শেষ আটের লড়াই কঠিন হবে, তা মানছেন ব্রাজিলের বিস্ময়বালক এনদ্রিক। ১৭ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার বলেন, ‘ভিনির মতো খেলোয়াড়ের বিকল্প পাওয়া কঠিন। তাকে ছাড়া খেলা কঠিন হবে। ‘ এনদ্রিকের সঙ্গে একমত দরিভালও। তবে ভিনির হলুদ কার্ড পাওয়া মানতে পারছেন না ব্রাজিল কোচ। তার মতে কার্ড দেখানোটা ছিল অদ্ভুত ঘটনা। তিনি বলেন, ‘ম্যাচের প্রথম চ্যালেঞ্জেই হলুদ কার্ড দেখানোটা অদ্ভুত ঘটনা। তারকা খেলোয়াড় ছাড়া খেলতে বলে অনেকে। এবার সেই মুহূর্ত চলে এসেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সেরা খেলোয়াড়দের পাচ্ছি না। এর আগে নেইমারকে হারিয়েছি। তবে অন্যদের সামনে আসার সময় এটাই। ‘ আগামী ৭ জুলাই লাস ভেগাসে উরুগুয়ের বিপক্ষে শেষ আটের লড়াইয়ে নামবে ব্রাজিল।

কোপা আমেরিকার গ্রুপপর্ব শেষ, কোয়ার্টার ফাইনালের সূচি প্রকাশ

কোপা আমেরিকার গ্রুপপর্ব শেষ, কোয়ার্টার ফাইনালের  সূচি প্রকাশ আজ ব্রাজিল-কলম্বিয়া ও কোস্টারিকা-প্যারাগুয়ের ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হলো কোপা আমেরিকার এবারের আসরের গ্রুপপর্বের খেলা। চারটি গ্রুপ থেকে আটটি দল জায়গা করে নিয়েছে শেষ আট তথা কোয়ার্টার ফাইনালে। দলগুলো হলো- আর্জেন্টিনা, কানাডা, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর, উরুগুয়ে, পানামা, কলম্বিয়া ও ব্রাজিল। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হবে কোয়ার্টার ফাইনাল তথা সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াই। তার আগে চলুন দেখে নিই কোপা আমেরিকার ৪৮তম আসরের শেষ আটের সময়সূচি— কোয়ার্টার ফাইনালের সময়সূচি: তারিখ মুখোমুখি সময় (বাংলাদেশ) ৫ জুলাই আর্জেন্টিনা-ইকুয়েডর সকাল ৭টা ৬ জুলাই ভেনেজুয়েলা-কানাডা সকাল ৭টা ৭ জুলাই কলম্বিয়া-পানামা ভোর ৪টা ৭ জুলাই উরুগুয়ে-ব্রাজিল সকাল ৭টা কোয়ার্টার ফাইনাল শেষে আগামী ১০ জুলাই সকাল থেকে শুরু হবে সেমিফাইনালের লড়াই। ১১ জুলাই হবে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। আর ১৪ জুলাই সকালে হবে ফাইনালে। এরপর পর্দা নামবে কোপা আমেরিকার এবারের আসরের।