মাঠে ফিরেই গোল-অ্যাসিস্টে উজ্জ্বল নেইমার

মাঠে ফিরেই গোল-অ্যাসিস্টে উজ্জ্বল নেইমার শৈশবের ক্লাব সান্তোসের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের পর মাঠে নেমেই আলো উজ্জ্বল নেইমার। দেসপোর্তিভা ফেরোভিয়ারিয়া বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে গোলের পাশাপাশি অ্যাসিস্টও করেছেন তিনি। নেইমারের জ্বলে ওঠার ম্যাচে ৩-১ গোলের বড় ব্যবধানে জিতেছে সান্তোস। ম্যাচের ২০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলের প্রথম গোলটা করেন নেইমার। ৩১ মিনিটে গিয়ের্মের করা গোলেও অ্যাসিস্ট করেন তিনি। বিরতির পর অবশ্য আর মাঠে ফেরেননি নেইমার। তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন পাদুলা। ১৭ বছর বয়সী রবিনিও জুনিয়র বাবার ৭ নম্বর জার্সি পরে নিজের প্রথম ম্যাচ খেললেন। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি অবশ্য নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি। দর্শকেরা একাধিকবার মাঠে ঢুকে পড়ায় দ্বিতীয়ার্ধের ৪০ মিনিটেই থামিয়ে দিতে হয় খেলা।
ট্রফি নয়, ভালোবাসা নিয়েই রিয়াল অধ্যায় শেষ করলেন মদ্রিচ

ট্রফি নয়, ভালোবাসা নিয়েই রিয়াল অধ্যায় শেষ করলেন মদ্রিচ নিরবেই ঘটল এক আবেগঘন বিদায়ের। রিয়াল মাদ্রিদে ১৩ বছর অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল ক্রোয়েশিয়ান তারকা লুকা মদ্রিচের। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) কাছে ৪-০ গোলে হারের ম্যাচটিই হয়ে রইল সাদা জার্সিতে এই কিংবদন্তির শেষ ম্যাচ। জয় নয়, কিংবা ট্রফিও নয়; গতকাল রাতে নিউ জার্সির মাঠে ম্যাচের ফলাফলের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছিল একটি বিদায়ের মুহূর্ত। রিয়াল মাদ্রিদ যখন পিএসজির দাপটে মুখ থুবড়ে পড়ছে, তখন পুরো স্টেডিয়ামের চোখ ছিল একদিকেই। সেটি হচ্ছে লুকা মদ্রিচ! প্রথমার্ধেই ফাবিয়ান রুইসের জোড়া গোল এবং দেম্বেলের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ২৪ মিনিটের মধ্যেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় পিএসজি। পরে গন্সালো রামোসের গোলের মাধ্যমে স্কোরলাইন ৪-০ হয়। ম্যাচটির ৬৪তম মিনিটে মাঠে নামেন ৩৯ বছর বয়সী মদ্রিচ। ম্যাচ তখন অনেকটাই হাতছাড়া, কিন্তু মাঠে নামার পরেও তার উপস্থিতিতে ভুলের কোনো সুযোগ রাখেননি। বল পায়ে তার স্বাচ্ছন্দ্য, নিখুঁত পাস, সেট-পিসে নেতৃত্ব; সবমিলিয়ে খুব অল্প সময়ে দেখা মিলেছে চেনা মদ্রিচের। মে মাসে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মদ্রিচের আনুষ্ঠানিক বিদায় অনুষ্ঠান হয়ে গেলেও, মাঠে এটিই ছিল তার আসল ‘বিদায়’। ম্যাচ শেষে সতীর্থ, এমনকি পিএসজির খেলোয়াড়রাও তাকে জড়িয়ে ধরেন। কোচ জাবি আলোনসোর সঙ্গে দেখা যায় এক আবেগঘন মুহূর্ত। এই কোচই একটা সময় সতীর্থ হয়ে খেলেছিলেন মদ্রিচের সঙ্গে। চলতি ক্লাব বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মদ্রিচ। সময়ের বিচারে খেলার সুযোগ কম হলেও, প্রতিবারই তিনি নিজের অভিজ্ঞতা, নেতৃত্বগুণ দিয়ে দলকে সহায়তা করেছেন। রিয়ালের জার্সিতে প্রায় ৬০০ ম্যাচ খেলা মদ্রিচের ঝুলিতে রয়েছে ২৮টি ট্রফি। তবে শেষ মৌসুমটা কাটেনি ভালো। ট্রফিলেস মৌসুম কাটাতে হয়েছে ইউরোপের সফলতম দলটিকে। তবে মদ্রিচের জন্য এই হতাশা থেকে বড় কিছু ছিল ভক্তদের ভালোবাসা, সতীর্থদের সম্মান এবং এমন এক ঐতিহ্য, যা কেবল গুটিকয়েক কিংবদন্তিরই প্রাপ্য।
রাতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি রিয়াল-পিএসজি

রাতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি রিয়াল-পিএসজি আজ বুধবার (০৯ জুলাই) দিবাগত রাতে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষা করছে এক উত্তেজনাকর লড়াই। নিউ জার্সির ইস্ট রাদারফোর্ডে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ইউরোপের দুই শক্তিশালী ক্লাব— রিয়াল মাদ্রিদ ও প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি)। তবে মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে নামটি, তিনি কিলিয়ান এমবাপ্পে। সদ্যসমাপ্ত মৌসুম শেষে পিএসজির জার্সি খুলে রিয়ালের সাদা রঙে রঙিন হয়েছেন এই ফরাসি সুপারস্টার। এবার প্রথমবারের মতো মাঠে নামছেন সাবেক সতীর্থদের বিরুদ্ধে। আর এমন ম্যাচকে ঘিরে দর্শকদের আগ্রহও আকাশছোঁয়া। চেলসি ইতোমধ্যেই ফ্লুমিনেন্সকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছে। দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট নির্ধারিত হবে আজকের এই বহুল প্রতীক্ষিত ম্যাচেই। রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন এমবাপ্পে। এবার তার কাছে ভক্তদের প্রত্যাশাও সীমাহীন। তবে পিএসজি কোচ লুইস এনরিক অতীত টানতে রাজি নন। তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন, “আমরা অতীত নিয়ে ভাবছি না, বরং সামনে কী অপেক্ষা করছে, সেদিকেই নজর দিচ্ছি।” তবে প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদের গুরুত্ব নিয়ে এনরিক বলেন, “এটা বিশ্বের সবচেয়ে সফল ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচ। এমন ম্যাচ সবসময়ই বিশেষ কিছু।” তবে শুধু প্রতিপক্ষ নয়, চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে নিউ জার্সির গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া। মঙ্গলবার চেলসির ম্যাচ চলাকালীন তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে, আর্দ্রতা ছিল ৫৪ শতাংশ। আবহাওয়া বিভাগ থেকে হিট অ্যালার্ট পর্যন্ত জারি করা হয়। এর মধ্যেই খেলোয়াড়দের মানিয়ে নিতে হচ্ছে। দুই দলের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, পাঁচ ম্যাচে দু’টি করে জয় ও একটি ড্র করেছে রিয়াল ও পিএসজি। তাই পরিসংখ্যানেও সমতা, মাঠেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রতিশ্রুতি। রিয়াল মাদ্রিদ চাইবে আরও একবার ট্রফি ক্যাবিনেট সমৃদ্ধ করতে। আর পিএসজির লক্ষ্য প্রথমবারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখা। আজ রাতের ম্যাচে কে হাসবে শেষ হাসি, তার অপেক্ষায় গোটা ফুটবল বিশ্ব।
‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কারে মেসির হ্যাটট্রিক

‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কারে মেসির হ্যাটট্রিক ইন্টার মায়ামির জার্সি গায়ে তুলে যেন ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কার নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতেই রূপান্তর করে ফেলেছেন লিওনেল মেসি। বরাবরের মতো এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) চলতি মৌসুমে তৃতীয়বারের মতো এই পুরস্কার জিতেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। মন্ট্রিয়েলের বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন মেসি। করেছেন দুটি চমৎকার গোল। ড্রিবল, গতি আর বাঁ পায়ের নিখুঁত ফিনিশে একের পর এক প্রতিপক্ষকে বোকা বানিয়ে দেখিয়েছেন পায়ের জাদু। গোল দুটো এমন ছিল, যা দেখে কেউই বিশ্বাস করতে পারবে না তিনি এখন ৩৮ বছর বয়সী! এই ম্যাচসেরা পারফরম্যান্সের সুবাদে মেসি মায়ামির হয়ে মোট ৯ বার জিতলেন ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কার। এমএলএসের ইতিহাসে এটা এক অনন্য কীর্তি। ১৯৯৬ সালে লিগ শুরুর পর মাত্র ১১ জন খেলোয়াড় এমন কীর্তি গড়েছেন। তবে বেশিরভাগই সেটা করেছেন বহু মৌসুম খেলে। সেখানে মাত্র দুই বছরের মধ্যে মেসি উঠে এলেন ঐতিহাসিক সেই তালিকায়। বর্তমানে খেলছেন এমন ফুটবলারদের মধ্যে এই রেকর্ড আছে মাত্র দু’জনের। তারা হলেন জোসেফ মার্তিনেজ (আটালান্টা ইউনাইটেড) ও লিওনেল মেসি। তবে মেসি এখনই সুযোগ পাচ্ছেন সবার ওপরে উঠে যাওয়ার। আগামী ১০ জুলাই নিউ ইংল্যান্ড রেভ্যুলুশনের মাঠে পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ইন্টার মায়ামি। সেই ম্যাচেই দশম পুরস্কার ছোঁয়ার হাতছানি রয়েছে মেসির সামনে।
ঢাকায় ফিরেই চমকপ্রদ সংবর্ধনা পেলো ইতিহাসগড়া নারী ফুটবল দল

ঢাকায় ফিরেই চমকপ্রদ সংবর্ধনা পেলো ইতিহাসগড়া নারী ফুটবল দল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়ার পর দেশে ফিরতেই লাল-সবুজের সাহসিনী কন্যাদের জন্য অপেক্ষা করছিল এক অভিনব সম্মাননা। মধ্যরাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর হৃদয়স্থল হাতিরঝিলে আয়োজন করা হয় এই ব্যতিক্রমী সংবর্ধনার। শনিবার দিবাগত রাত প্রায় সোয়া ৩টার সময়, ঘুম ভেঙে যাওয়া শহরের নিস্তব্ধতা ভেঙে চিৎকারে মুখর হয়ে ওঠে হাতিরঝিল। সেখানে হাজির ছিলেন ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তারা, কোচিং স্টাফ, ক্রীড়া সাংবাদিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত কিছু সমর্থক। মঞ্চে একে একে উঠলেন ঋতুপর্ণা, আফিদা, মনিকারা। হাতে ছিল দেশের পতাকা, চোখেমুখে ছিল বিজয়ের গর্ব। তাড়াহুড়ার এই আয়োজন নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুললেও এর পেছনে ছিল যুক্তিসঙ্গত কারণ। দলের তারকা খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা ও মনিকা চাকমা পরদিনই ভুটানে লিগ খেলতে রওনা দেবেন। কয়েকদিনের মধ্যে রুপনা চাকমা, মারিয়া মান্দা ও শামসুন্নাহার সিনিয়রও যোগ দেবেন বিদেশি লিগে। তাই দলের সবাইকে একসঙ্গে সম্মান জানানোর এই ক্ষণিক সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি বাফুফে। এর ঠিক দু’ঘণ্টা আগে, রাত দেড়টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে মেয়েরা। সেখানে ছিল ফুলেল শুভেচ্ছা আর অভ্যর্থনার উষ্ণতা। তবে প্রকৃত উদযাপন শুরু হয় হাতিরঝিলে। এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে বাছাইপর্বে মাঠে উপহার দেওয়া নজরকাড়া পারফরম্যান্স। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠে তারা ছিল দুর্বার। প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। আরও একবার ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা। এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ। ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়েছে ১১টি দলের অংশগ্রহণ— অস্ট্রেলিয়া (স্বাগতিক), চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, ফিলিপাইনস, ভিয়েতনাম, চাইনিজ তাইপে, উত্তর কোরিয়া ও উজবেকিস্তান। এখন কেবল বাকি ‘এ’ গ্রুপের একটি দল। এই অর্জন শুধু ক্রীড়াঙ্গনের নয়, এটা জাতির জন্যও এক গৌরবময় মুহূর্ত। মধ্যরাতের ওই সংবর্ধনায় বাজছিল ঢোল, উড়ছিল পতাকা, আর মেয়েদের চোখে ছিল আত্মবিশ্বাসের আলো, যা আগামী দিনের নারী ফুটবলের অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে থাকবে।
দেশে ফিরেই সংবর্ধনা নারী ফুটবল দলকে

দেশে ফিরেই সংবর্ধনা নারী ফুটবল দলকে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের মূলপর্বে জায়গা করে নেওয়ার গৌরবময় অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতে আজ দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর হাতিরঝিল এম্ফিথিয়েটারে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আয়োজন করতে যাচ্ছে এক ব্যতিক্রমী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। মিয়ানমারে বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স শেষে বাংলাদেশ নারী দল আজ সন্ধ্যায় স্থানীয় সময় রওনা দেবে। থাইল্যান্ড হয়ে মধ্যরাত দেড়টার দিকে ঢাকায় পৌঁছাবে তারা। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সোজা যাবে হাতিরঝিলে, যেখানে অপেক্ষায় থাকবে জাতির অভিনন্দন আর ভালোবাসা। এই রাত হতে যাচ্ছে একসাথে বরণ, সম্মান ও বিদায়ের অভূতপূর্ব উপলক্ষ। কেননা দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা ও মনিকা চাকমা পরদিনই ভুটান লিগে খেলতে ঢাকা ছাড়বেন। আরও তিনজন ফুটবলার যাত্রা করবেন দুই দিন পর। ফলে পুরো দল একসাথে থাকছে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। সেই সময়টাকেই রঙিন করে তুলতে এই মধ্যরাতের আয়োজন।
লা লিগার সূচি প্রকাশ, কবে বার্সা-রিয়াল এল ক্লাসিকো

লা লিগার সূচি প্রকাশ, কবে বার্সা-রিয়াল এল ক্লাসিকো ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত দ্বৈরথের দিনক্ষণ চূড়ান্ত। লা লিগা ২০২৫–২৬ মৌসুমে আবার মুখোমুখি বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। তবে এবারের লড়াই শুধু প্রতিপক্ষ নয়, রোমাঞ্চের ব্যপ্তিও বাড়াচ্ছে মাঠ, কোচিং স্টাফ আর নতুন স্কোয়াড গঠন। লা লিগার সূচি অনুযায়ী, এই মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকো অনুষ্ঠিত হবে ২৬ অক্টোবর রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। ফিরতি লেগের উত্তাপ ছড়াবে আগামী ১০ মে বার্সার ঐতিহাসিক ভেন্যু ক্যাম্প ন্যুতে। যেখানে দুই বছর পর আবার ফিরছে ঘরোয়া ফুটবল। গত মৌসুমে রিয়ালের জন্য এল ক্লাসিকো ছিল একরকম দুঃস্বপ্ন। চার ম্যাচেই বার্সার কাছে হেরেছিল তারা। সেই ক্ষত মুছতে এবার নতুন কোচ জাবি আলোনসোর অধীনে বদলে যাওয়ার শপথ নিয়েছে লস ব্লাঙ্কোস। অন্যদিকে হ্যান্সি ফ্লিকের বার্সা চায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব অটুট রাখতে। বিশেষ করে গত মৌসুমে ঘরোয়া ট্রেবল জয়ের পর। নতুন মৌসুম শুরু হচ্ছে ১৭ আগস্ট। সেদিন আলাদা ম্যাচে মাঠে নামবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। বার্সা খেলবে ম্যায়োর্কারন বিপক্ষে। আর রিয়াল মুখোমুখি হবে ওসাসুনার। এছাড়া, দলবদলের বাজারে এসেছে বেশ কিছু বড় চমক। যেগুলো দুই স্কোয়াডেই নতুন রূপ দিয়েছে। সব মিলিয়ে আসন্ন এল ক্লাসিকো কেবল ফলাফলের লড়াই নয়; পুরনো শত্রুতা, নতুন কৌশল আর মাঠে ফিরে আসা ঐতিহ্যের এক পরিপূর্ণ মহারণ।
ঋতুপর্ণার জোড়া গোল, মিয়ানমারকে হারিয়ে মূল পর্বের পথে বাংলাদেশ

ঋতুপর্ণার জোড়া গোল, মিয়ানমারকে হারিয়ে মূল পর্বের পথে বাংলাদেশ ফিফা র্যাংকিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমারকে হারানো মোটেই সহজ কাজ নয়। তবে সেই কঠিন কাজটি সেরে বাছাই পেরিয়ে মূল পর্বের পথে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। জোড়া গোল করে তাদের কাজটি সহজ করে দিলেন ঋতুপর্ণা চাকমা। এএফসি উইমেন’স এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে বুধবার ইয়াংগুনের থুয়ান্না স্টেডিয়ামে ২-১ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। দুই অর্ধে একটি করে গোল করেছেন ঋতুপর্ণা। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ মিনিটে একটি গোল শোধ করেছে মিয়ানমার। তুর্কমেনিস্তানকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে বাছাই শুরু করেছিল মিয়ানমার। আজকের হারে তাদের পয়েন্ট ৩-ই রয়ে গেল। আর বাহরাইনের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৭-০ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। দুই জয়ে বাংলাদেশের পয়েন্ট হলো ৬। গ্রুপের শীর্ষেও তারা। ফলে আজকের জয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে মূল পর্বে টিকিট পাওয়ার দাবিদার হলো বাংলাদেশের মেয়েরা। আগামী শনিবার গ্রুপ পর্বে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে পা না হড়কালে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলা নিশ্চিত হবে আফঈদাদের। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটির শুরু থেকেই বেশ সাবলীল ফুটবল খেলে বাংলাদেশের মেয়েরা। অষ্টাদশ মিনিটে দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। কিন্তু বক্সের ভেতরে ফাউলের শিকার হন তিনি। ফ্রি-কিক নেন ঋতুপর্ণা। তবে তার কিক মিয়ানমারের রক্ষণে প্রতিহত হলে তার ফিরতি নিচু শটে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়িয়ে যায়। আনন্দে মেতে উঠে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। ৬ মিনিট পরে বাম প্রান্ত থেকে ঋতুপর্ণার ক্রসে ছোট বক্সের ভেতরে শামসুন্নাহার জুনিয়র ট্যাপ করলেও বল পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ৩৭তম মিনিটে অল্পের জন্য গোল হজম করেনি বাংলাদেশ। আক্রমণ ঠেকাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন রুপনা। তবে ক্লিয়ার করতে পারেননি তিনি। বল চলে যায় খিন মো মো তুনের পারে। তবে মিয়ানমার অধিনায়কের শট বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মিয়ানমারের একটি আক্রমণ ব্যর্থ হয় ক্রসবারে লেগে। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের রক্ষণে চাপ বাড়ায় মিয়ানমার। তবে শামসুন্নাহার সিনিয়র, আফঈদা খন্দকাররা প্রতিপক্ষের প্রচেষ্টা দারুণভাবে প্রতিহত করেন। ৭২তম মিনিটে ম্যাচে আসে ঋতুপর্ণার দ্বিতীয় গোল। বক্সের একটু উপর থেকে বল নিয়ে কিছুটা দৌড়ে এক ডিফেন্ডারের সামনে থেকে বাম পায়ে শট নেন ঋতুপর্ণা। বল হাওয়ায় ভেসে গোলরক্ষককের মাথার উপর দিয়ে জালে জড়ায়। বাংলাদেশ যখন উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন মরিয়া মিয়ানমার ম্যাচে ফেরার সুযোগ পায়। সতীর্থের আড়াআড়ি ক্রসে আনমার্কড থাকা উইন উইন নিখুঁত শটে রুপনাকে পরাস্ত করেন। তবে এরপর আর বিপদ হতে দেয়নি বাংলাদেশের মেয়েরা।
ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে রূপকথার জয়ে শেষ আটে আল হিলাল

ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে রূপকথার জয়ে শেষ আটে আল হিলাল ক্লাব বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে সবচেয়ে বড় চমক দেখালো সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল। রূপকথার জয়ে ম্যানচেস্টার সিটিকে বিদায় করে কোয়ার্টার-ফাইনালে পৌঁছে গেল আল হিলাল। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকাল পৌনে ১০টায় শেষ হওয়া ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো রোমাঞ্চে ঠাসা ম্যাচে পেপ গুয়ার্দিওলার দলকে ৪-৩ গোলে হারায় সৌদি আরবের ক্লাবটি। আল হিলালের জয়ের নায়ক মার্কোস লেওনার্দো। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকা দলকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরান ২২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। পরে ১১৩তম মিনিটে জয়সূচক গোলটিও করেন তিনি। আরেক ব্রাজিলিয়ান মালকমও করেন একটি গোল। আল হিলালের বাকি গোলটি করেন সেনেগালের ডিফেন্ডার কালিদু কুলিবালি। ম্যাচজুড়ে অসাধারণ পারফরম্যান্সে বারবার দলকে রক্ষা করেন আল হিলালের গোলকিপার বোনু। ম্যান সিটির হয়ে জালের দেখা পান বের্নার্দো সিলভা, আর্লিং হালান্ড ও ফিল ফোডেন। অরল্যান্ডোর ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে বল নিয়ন্ত্রণে রাখা, গোলে শট, সব পরিসংখ্যানেই অনুমিতভাবেই বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। ম্যাচের ৬৯ শতাংশ সময় বল ছিল তাদের কাছে। গোলে ৩০টি শট নেয় তারা, এর ১৪টি ছিল লক্ষ্যে। কিন্তু কাজে লাগে কেবল ৩টি। আল হিলাল গোলে শট নেয় ১৭টি। তবে লক্ষ্যে ছিল কেবল ৬টি। এর ৪টিতেই সফল হয়ে বাজিমাত করে তারা। ম্যাচের নবম মিনিটে জটলা থেকে গোল করে সিটিকে এগিয়ে দেন বের্নার্দো সিলভা। তবে আল হিলালের ফুটবলারদের জোর প্রতিবাদে কান দেননি রেফারি। ২৪তম মিনিটে আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ পায় সিটি। এবার হালান্ডের পাস থেকে বক্সের ভেতর বল পেয়ে সাভিনিয়ো গোলকিপার বোনুকে কাটিয়ে যান। কিন্তু বোনু হাল ছাড়েননি। নিজেকে দ্রুত সামলে নিয়ে সাভিনিয়োর শট ঠেকিয়ে দেন তিনি। সিটির আক্রমণ চলতে থাকে। ৩০, ৩৮ ও ৪৪তম মিনিটে তিন দফায় দলকে রক্ষা করেন বোনু। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে বদলে যায় চিত্র। প্রথম মিনিটেই সমতায় ফেরে আল হিলাল। বিপজ্জনকভাবে বল নিয়ে সিটির বক্সে ঢুকে যান মালকাম। জটলার মধ্যে এক পর্যায়ে তার শট ফিরিয়ে দেন সিটির গোলকিপার এদেরসন, কিন্তু সিটির একজনের পায়ে লেগে আসা বলে হেড করে জালে পাঠান লেওনার্দো। ছয় মিনিট পর আল হিলাল এগিয়ে যায় চোখধাঁধানো এক পাল্টা আক্রমণে। নিজেদের বক্সের ঠিক বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক পাস বাড়ান জোয়াও কান্সেলো। মাঝমাঠের একটু ওপর থেকে বল নিয়ে গুলির বেগে এগিয়ে যান মালকাম, সিটির বক্সে ঢুকে গোলকিপারকে পরাস্ত করেন তিনি নিখুঁত ফিনিশিংয়ে। মিনিট তিনেক পরই কর্নার থেকে জটলার মধ্যে হালান্ডের টোকায় সমতায় ফেরে সিটি। সিটি এরপর দফায় দফায় আক্রমণ করতে থাকে। কিন্তু কখনও অল্পের জন্য বল চলে যায় বাইরে দিয়ে, কখনও বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ান বোনু। ৮৫তম মিনিটে বোনুর দারুণ এক সেভের পর ফিরতি বলে গোললাইন থেকে কোনোমতে রক্ষা করেন আল হিলালের আলি লাজামি। একটু পরই বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া রুবেন দিয়াসের জোরাল শট ঠেকান বোনু। ৯০ মিনিট শেষে অতিরিক্ত সময়ের পঞ্চম মিনিটে রুবেন নেভেসের কর্নার থেকে দারুণ হেডে আল হিলালকে এগিয়ে দেন কুলিবালি। ১০৪তম মিনিটে গোছানো আক্রমণ থেকে হায়ান শেহকির অসাধারণ ক্রস থেকে ফোডেনের চমৎকার ফিনিশিংয়ে আবার সমতায় ফেরে সিটি। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি পেপ গার্দিওলার দলের। ১১৩তম মিনিটে সের্গেই মিলিনকোভিচের হেড ডাইভ দিয়ে রক্ষা করেন সিটি গোলকিপার, কিন্তু বল যায় সামনেই থাকা লেওনার্দোর কাছে। বল তার পেটে লাগার পর তিনি পড়িমরি করে পড়ে গেলেও কোনেরকমে পা ছুঁইয়ে পাঠাতে পারেন জালে। পরের সময়টায় গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে সিটি। এর ফাঁকে সুযোগ পেয়ে পাল্টা আক্রমণ করে আল হিলাল। কিন্তু দুই দলের খেলায়ই তো ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। কোনো দলই আর গোল করতে পারেনি। এ দিনের আগের এক ম্যাচে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রানার্স আপ ইন্টার মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়ে চমক দেখায় ফ্লুমিনেসি। তাদের সঙ্গেই কোয়ার্টার-ফাইনালে লড়বে আল হিলাল। এটি তাই নিশ্চিত, সেমি-ফাইনালে খেলবে ব্রাজিল কিংবা সৌদি আরবের একটি ক্লাব।
হারের সঙ্গে শেষ হলো ডি মারিয়ার ইউরোপ অধ্যায়

হারের সঙ্গে শেষ হলো ডি মারিয়ার ইউরোপ অধ্যায় ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর একপাশে উদযাপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন চেলসির খেলোয়াড় থেকে কোচিং স্টাফের সদস্যরা। অন্যপাশে হতাশা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেনফিকার ফুটবলাররা। মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে অঝরে চোখের পানি ফেলছিলেন আনহেল ডি মারিয়া। কেননা চেলসির কাছে হারের টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়ার পাশাপাশি এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির ইতি টানলেন ইউরোপ অধ্যায়ের। ২০০৭ সালে তরুণ ডি মারিয়া আর্জেন্টাইন ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রাল ছেড়ে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন নিয়ে ফুটবলের সব চেয়ে বড় বাজার ইউরোপে পা রাখেন। ইউরোপে তার শুরুর গন্তব্য ছিল এই বেনফিকা। এরপর মাঝখানে রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজি এবং জুভেন্টাসের মতো ইউরোপ কাঁপানো দলগুলোতে খেলেছেন। ক্যারিয়ারের গোধূলি বেলায় ৩৭ বছর বয়সে আবারও ফিরে যাবেন শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রাল থেকে। সেখান থেকে টানতে চান বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি।