নারী এশিয়ান কাপ ২০২৬এর ড্র, ব্র্যান্ড উন্মোচন ও ম্যাচসূচি প্রকাশ

নারী এশিয়ান কাপ ২০২৬এর ড্র, ব্র্যান্ড উন্মোচন ও ম্যাচসূচি প্রকাশ সিডনি টাউন হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে এএফসি নারী এশিয়ান কাপ অস্ট্রেলিয়া ২০২৬-এর চূড়ান্ত ড্র অনুষ্ঠান, যেখানে একসাথে উন্মোচিত হয়েছে প্রতিযোগিতার অফিসিয়াল ব্র্যান্ড এবং ম্যাচের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি। ১২টি দেশের অংশগ্রহণে এবারের আসর বসতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি বিশ্বমানের ভেন্যুতে-সিডনি, পার্থ এবং গোল্ড কোস্টে, যা নিশ্চিত করছে এক মাসের দুর্দান্ত নারী ফুটবল উৎসব। আগামী ১ মার্চ পার্থ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া বনাম ফিলিপাইনস ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে এশিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই নারী ফুটবল টুর্নামেন্টের ২১তম আসরের। বিশেষ আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের অভিষেক ম্যাচ-যেখানে তারা মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চীনের বিপক্ষে। এই ‘ডেভিড বনাম গোলিয়াথ’ লড়াইটি অনুষ্ঠিত হবে ৩ মার্চ, ওয়েস্টার্ন সিডনি স্টেডিয়ামে।

উরুগুয়েকে হারিয়ে কোপা ফাইনাল-অলিম্পিকে ব্রাজিল

উরুগুয়েকে হারিয়ে কোপা ফাইনাল-অলিম্পিকে ব্রাজিল মেয়েদের কোপা আমেরিকায় ব্রাজিল সবসময়ই ফেভারিট। ৯ আসরের মধ্যে ৮ বারই শিরোপা ঘরে তুলেছে সেলেসাও মেয়েরা। আজ দশম আসরে উরুগুয়েকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রাজিলের মেয়েরা। দাপুটে এই জয়ে তারা এক ঢিলে দুটি পাখি শিকার করল। একইসঙ্গে কোপা আমেরিকার ফাইনাল ও ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে জায়গা নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল। ইকুয়েডরের রদ্রিগো পাস দেলগাদো অলিম্পিক স্টেডিয়ামে প্রতিটি বিভাগেই দারুণ দাপট দেখিয়েছে ব্রাজিলের মেয়েরা। ম্যাচের প্রথমার্ধেই তারা উরুগুয়ের জালে তিনবার বল জড়ায়। দ্বিতীয়ার্ধে এক গোল করে ব্যবধান কমালেও তা যথেষ্ট ছিল না উরুগুইয়ানদের জন্য। এক লাল কার্ডে খানিক বাদেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে। পরে আরও দুই গোল হজম করে তারা রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছে। বল পজেশনেও স্পষ্ট ব্যবধানে (৬৯ শতাংশ) এগিয়ে ছিল মার্তা সিলভারা। আগেরদিন গোলশূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল কলম্বিয়া। আগামী শনিবার দিবাগত রাতে কোপার শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে লড়বে ব্রাজিল ও কলম্বিয়ার মেয়েরা। অবশ্য এই দুটি দেশই গ্রুপপর্বে একসঙ্গে ছিল, পরস্পরের দেখায় খেলার নিষ্পত্তি হয় ড্র দিয়ে। এখন পর্যন্ত উভয় দলই অপরাজেয়। ব্রাজিল ৫ ম্যাচের চারটিতে (আরেকটি ম্যাচ ড্র) এবং কলম্বিয়া তিন ম্যাচে (ড্র দুটিতে) জিতেছে।  

অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: কঠিন গ্রুপে বাংলাদেশ

অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: কঠিন গ্রুপে বাংলাদেশ আগামী বছরের ১ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারী এশিয়া কাপ ২০২৬। এবারই প্রথমবারের মতো মহাদেশীয় এই টুর্নামেন্টে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। আজ সিডনির বিখ্যাত হারবার ফ্রন্টে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে ১২ দলের ড্র অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াসহ তাইওয়ান, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের কোচ ও খেলোয়াড়রা। কিন্তু বাংলাদেশের পাশাপাশি জাপান, উত্তর কোরিয়া, ইরান ও ফিলিপাইনের কোনো প্রতিনিধি এই ড্র অনুষ্ঠানে ছিল না। পিটার বাটলারের শিষ্যরা রয়েছে ‘বি’ গ্রুপে। সেখানে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ—চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান। অন্যদিকে ‘এ’ গ্রুপে: অস্ট্রেলিয়া, উত্তর কোরিয়া, ইরান, ফিলিপাইন। আর ‘সি’ গ্রুপে: জাপান, ভারত, ভিয়েতনাম, চাইনিজ তাইপে। এই এশিয়া কাপ শুধু একটি মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট নয়, বিশ্বকাপ ও অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাওয়ার মঞ্চ। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেই বাংলাদেশের সামনে খুলে যেতে পারে ২০২৭ ব্রাজিল নারী বিশ্বকাপ ও ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল। ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র‌্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র‌্যাঙ্কিং ৫৫)। র‌্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না। প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা। এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ।

ফিনালিসিমা ২০২৬: আর্জেন্টিনা-স্পেন মহারণের দিনক্ষণ ঘোষণা করল কনমেবল

ফিনালিসিমা ২০২৬: আর্জেন্টিনা-স্পেন মহারণের দিনক্ষণ ঘোষণা করল কনমেবল দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল ২০২৬ মৌসুমের প্রতিযোগিতার সূচি প্রকাশ করেছে। সেই সূচিতেই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হলো কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও ইউরো চ্যাম্পিয়ন স্পেনের মধ্যকার ফিনালিসিমা। এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালের মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে, তবে এখনো ভেন্যু নির্ধারিত হয়নি। কয়েক সপ্তাহ আগেই আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ক্লদিও ‘চিকি’ তাপিয়া ও স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল লৌজানের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়, যাতে ম্যাচটি ১৭ থেকে ২৫ মার্চ ২০২৬ এর মধ্যে আয়োজনের কথা বলা হয়। তবে এটি নির্ভর করছে স্পেনের বিশ্বকাপ কোয়ালিফিকেশনের ওপর। স্পেন যদি তাদের গ্রুপ (যেখানে আছে তুরস্ক, জর্জিয়া ও বুলগেরিয়া) দ্বিতীয় হয়ে শেষ করে, তবে মার্চ মাসেই তাদের প্লে-অফ ম্যাচ পড়বে। সে ক্ষেত্রে ফিনালিসিমা আয়োজনে জটিলতা তৈরি হবে। একমাত্র বিকল্প তখন বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্ত, যা উভয় দলই এড়িয়ে চলতে চায়, কারণ তখন প্রস্তুতির সময় খুবই অল্প থাকবে। ম্যাচের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলেও ভেন্যু এখনো নিশ্চিত নয়। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাচ আয়োজনের কথা ভাবা হচ্ছিল, বিশ্বকাপের প্রাক-ঘোষণা হিসেবে। তবে কাতার ও সৌদি আরবও ম্যাচ আয়োজনের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে, ম্যাচটি এশিয়ায় নেওয়ার উদ্দেশ্যে। এই ম্যাচে লিওনেল মেসি বনাম লামিন ইয়ামাল—দুজনের প্রথম মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে, যা এই দ্বৈরথকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

নাটকীয় টাইব্রেকারে সেরা ইংল্যান্ড, স্পেনের স্বপ্নভঙ্গ

নাটকীয় টাইব্রেকারে সেরা ইংল্যান্ড, স্পেনের স্বপ্নভঙ্গ স্পেনের আধিপত্য, দারুণ গোল, আর তারপর ইংল্যান্ডের প্রত্যাবর্তন; সব মিলিয়ে উইমেন’স ইউরো ২০২৫-এর ফাইনাল ছিল এক উত্তেজনার নাট্যমঞ্চ। ম্যাচে দারুণভাবে এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছে ইংল্যান্ড, যারা টাইব্রেকারে ৩-১ ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে আবারও ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেদের মুকুট অক্ষুণ্ণ রাখল। গতকাল দিবাগত রাতে ঐতিহাসিক এই লড়াইয়ে শুরু থেকেই স্পেন ছিল আগ্রাসী মেজাজে। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়েও গোল না আসায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। এই জয়ে ইংল্যান্ড ইউরোর ইতিহাসে তৃতীয় দল হিসেবে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করল। এর আগে কেবল জার্মানি ৮ বার এবং নরওয়ে ২ বার এই কীর্তি গড়েছিল। বিশ্বকাপজয়ী স্পেনের সামনে ছিল প্রথম ইউরো শিরোপা জয়ের সুবর্ণ সুযোগ, কিন্তু টাইব্রেকারে হোঁচট খেয়ে সোনার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল। অন্যদিকে, ইংল্যান্ড নারী ফুটবলের এক নতুন অধ্যায় রচনা করল। সংগ্রামের মাঝেও আত্মবিশ্বাস আর ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে।

গার্দিওলা-জাভির ‘আবেদনপত্র’ ভুয়া, জানাল ভারতের ফুটবল ফেডারেশন

গার্দিওলা-জাভির ‘আবেদনপত্র’ ভুয়া, জানাল ভারতের ফুটবল ফেডারেশন ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ হওয়ার জন্য পেপ গার্দিওলা ও জাভি হার্নান্দেজ আবেদন করেছেন— এমন দাবিকে সরাসরি ভুয়া বলে উড়িয়ে দিল অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ)। গতকাল এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ফেডারেশন জানায়, এই দুই স্প্যানিশ কোচের নাম ব্যবহার করে যেসব আবেদন পাঠানো হয়েছে, সেগুলোর কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি। এআইএফএফ-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এমন কিছু ইমেইল পেয়েছি যেখানে পেপ গার্দিওলা ও জাভি হার্নান্দেজের নামে আবেদন জমা দেওয়া হয়। যাচাই করে দেখা গেছে, এই আবেদনগুলো ভুয়া। এগুলোর পেছনে কারা আছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ’ এর আগে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এআইএফএফ-এর জাতীয় দল পরিচালনা বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছিলেন, কোচ হিসেবে জাভির নামও আবেদনকারীদের তালিকায় দেখা গেছে। তবে ফেডারেশনের এক টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য জানান, জাভিকে নিয়োগ দেওয়া এআইএফএফ-এর জন্য ‘অত্যন্ত ব্যয়বহুল’ হবে বলে বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। গত বছর জুনে ইগর স্টিমাচকে বরখাস্ত করার পর ভারত জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন স্প্যানিশ কোচ মানোলো মার্কেজ। কিন্তু তিনি চলতি মাসেই পদত্যাগ করে পুনরায় আইএসএল ক্লাব এফসি গোয়ার কোচের দায়িত্বে ফিরে গেছেন। ফলে নতুন করে কোচ খুঁজছে এআইএফএফ। সংস্থাটি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭০টি আবেদন পেয়েছে তারা। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর মাত্র তিনজনকে শর্টলিস্ট করা হয়েছে। সেই তালিকা নিয়েই এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

বোনমাতির জাদুতে ইউরোর ফাইনালে স্পেন

বোনমাতির জাদুতে ইউরোর ফাইনালে স্পেন আইতানা বোনমাতির অতিরিক্ত সময়ের চোখ ধাঁধানো এক গোলে ইউরো ২০২৫-এর ফাইনালে উঠেছে স্পেন। সেমিফাইনালে তারা ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে জার্মানিকে। ফলে ২০২৩ নারী বিশ্বকাপ ফাইনালের পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে ইউরো ফাইনালেও—স্পেন বনাম ইংল্যান্ড। পুরো ৯০ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকার পর ১১৩তম মিনিটে জাদুকরী এক টার্ন নিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন দুইবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী বোনমাতি। তারপর দারুণ এক ফিনিশে জার্মান গোলরক্ষক অ্যান-ক্যাথরিন বার্গারকে পরাস্ত করেন তিনি। শেষ দিকে মরিয়া আক্রমণ চালায় জার্মানি। তবে স্পেনের গোলরক্ষক কাতা কোল দুর্দান্ত এক ডাইভ দিয়ে লেয়া শুলারের শট ফিরিয়ে দেন এবং নিশ্চিত করেন স্পেনের প্রথম ইউরো ফাইনাল। ২০২৩ নারী বিশ্বকাপে ওলগা কারমোনার একমাত্র গোলে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্পেন। এবার সেই দুই দলের মধ্যে আবারও বড় মঞ্চে দেখা হচ্ছে। সেমিফাইনালে ম্যাচের প্রথমার্ধে স্পেন বলের দখল ধরে রাখলেও গোল পাননি, বরং ক্লারা বুল এবং জিওভানা হফম্যান কিছু দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন জার্মানির পক্ষে। দ্বিতীয়ার্ধে স্পেন আরও দাপট দেখালেও, ফ্রান্সের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ১০ জন নিয়ে ১০০ মিনিট খেলা জার্মান রক্ষণ একটুও ভাঙেনি। ৯০ মিনিটের শেষ মুহূর্তে ক্লারা বুলের ডিফ্লেক্টেড এক শট কোলের মাথার ওপর দিয়ে গোল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। কিন্তু সময়মতো সেটি ফিরিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক। এরপর কার্লোটা ওয়ামসারের শটও ঠেকিয়ে দেন অসাধারণ দক্ষতায়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেন সেই খেলোয়াড়, যিনি টানা দুবার বিশ্বের সেরা হয়েছেন—আইতানা বোনমাতি। তার নিখুঁত টার্ন ও গোলেই ইউরোর ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে উঠলো লা রোহা।

সাফ অনূর্ধ্ব-২০এ সাগরিকার ৪ গোলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

সাফ অনূর্ধ্ব-২০এ সাগরিকার ৪ গোলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ ‘এলেন, দেখলেন, জয় করলেন’। চিরকালীন প্রবাদটি মোসাম্মৎ সাগরিকার সঙ্গে সম্পূর্ণ প্রাসঙ্গিক। নিষেধাজ্ঞার জন্য তিন ম্যাচ ছিলেন না। আজ অলিখিত ফাইনালে ফিরেই ৪ গোল করেছেন। তার অসাধারণ পারফরম্যান্সে ৪-০ গোলে নেপালকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পাঁচ ম্যাচ শেষে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেই ছিল। শীর্ষস্থান ধরে রাখতে আজ নেপালের বিপক্ষে অন্তত ড্র করতে হতো স্বাগতিকদের। সহজ সমীকরণ মাথায় নিয়ে খেলতে নেমে নেপালকে ৪ গোল দিয়ে পূর্ণ ১৮ পয়েন্ট নিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। নেপাল দুই বার বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে ১২ পয়েন্ট নিয়ে রানার্স আপ হয়েছে। সাগরিকা প্রথমার্ধে একটি এবং দ্বিতীয়ার্ধে তিনটি গোল করেন। সাগরিকার এটি টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন এই ফরোয়ার্ড। পরের ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে এক গোল করছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে নেপালের ডিফেন্ডার সিমরানের সঙ্গে হাতাহাতি করে লাল কার্ড দেখেন। এতে পরের তিন ম্যাচ খেলতে পারেননি। আজ ফিরেই আবার হ্যাটট্রিক করলেন। সাগরিকার তিনটি গোলই বেশ বুদ্ধিদীপ্ত। ৮ মিনিটে মিডফিল্ড থেকে থ্রু বল পান সাগরিকা। নেপালের ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এগিয়ে যান বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড। নেপালের গোলরক্ষক বক্সের বাইরে এসে তাকে আটকাতে পারেননি। কোনাকুনি প্লেসিং শটে সাগরিকা বল জালে জড়ান। ৫২ মিনিটে বক্সের সামনে নেপালের তিন ডিফেন্ডারের মাঝে বল পান সাগরিকা। অসাধারণ দক্ষতায় বল রিসিভ করে খুব দ্রুত মুভ করে ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলেন। গোলরক্ষক পোস্ট থেকে বেরিয়ে আসেন। তার নাগাল পাওয়ার আগেই বল জালে পাঠান কুশলী ফরোয়ার্ড। হ্যাটট্রিক পূর্ণ করতে বেশি সময় নেননি সাগরিকা। পাঁচ মিনিট পর বাংলাদেশ অর্ধ থেকে বাড়ানো এক লম্বা বলে সাগরিকা ডিফেন্ডারের সঙ্গে তাড়া করে পেয়ে যান। এবারও তিনি দারুণ দক্ষতায় বল জালে পাঠান চোখের পলকেই। গ্যালারীর সামনে গোল উদযাপন করেন। ৭৬ মিনিটে আবারো সাগরিকার গোল। এবার বলের যোগানদাতা মুনকি আক্তার। আজকের দিনটি পুরোটাই সাগরিকার। অলিখিত ফাইনালেল মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার চার গোলেই বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন। নেপাল আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে থেকে সমতা এনেছিল। ঐ ম্যাচে বাংলাদেশের বৃটিশ কোচ পিটার বাটলার দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক পরিবর্তন করেছিলেন। এরপরই মূলত নেপাল খেলায় ফেরার সুযোগ পায়। আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের জালে বলই পাঠাতে পারেনি প্রতিপক্ষ। প্রথমার্ধে কয়েকটি সুযোগ পেলেও দ্বিতীয়ার্ধে নেপালকে কোনো সুযোগই দেয়নি বাংলাদেশ।

ভুটানের লিগে নতুন চ্যালেঞ্জে তহুরা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র

ভুটানের লিগে নতুন চ্যালেঞ্জে তহুরা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের দুই উদীয়মান তারকা তহুরা খাতুন ও শামসুন্নাহার জুনিয়র এবার পা রাখতে যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবলে। প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে কোনো লিগে অংশ নিতে ভুটানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তারা। ভুটানের নারী ফুটবল লিগে রয়্যাল থিম্পু কলেজ এফসির হয়ে মাঠে নামবেন এই দুই ফরোয়ার্ড। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের জার্সিতে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন তহুরা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র। সদ্য সমাপ্ত এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে দুজনেই ৩টি করে গোল করেছেন। তাদের এই উজ্জ্বল পারফরম্যান্সই হয়তো এনে দিয়েছে নতুন এই সুযোগ। বাংলাদেশও প্রথমবারের মতো নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। ভুটানে রওনা দেওয়ার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে তহুরা লেখেন, ‘ভুটানের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছি। নতুন পথচলা শুরু হচ্ছে, সবাই দোয়া করবেন। ’ এ নিয়ে ভুটানের নারী লিগে খেলা বাংলাদেশি ফুটবলারের সংখ্যা দাঁড়াল ১২ জনে। প্রথম ধাপে সেখানে পাড়ি জমান জাতীয় দলের অভিজ্ঞ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া। তারা বর্তমানে খেলছেন পারো এফসির হয়ে। পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে যোগ দেন মারিয়া মান্দা, সানজিদা খাতুন, মাসুরা পারভীন, রুপনা চাকমা, শামসুন্নাহার সিনিয়র ও কৃষ্ণা রানী সরকার। থিম্পু সিটি ক্লাবের হয়ে খেলছেন সানজিদা, মারিয়া ও শামসুন্নাহার সিনিয়র। অন্যদিকে, ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডের হয়ে মাঠে নামছেন রুপনা, মাসুরা ও কৃষ্ণা। ভুটানের বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করে চলেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন আরও দুই ফুটবলার—তহুরা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র।

ভুটান লিগে সাবিনা-ঋতুপর্ণাদের গোলবন্যা

ভুটান লিগে সাবিনা-ঋতুপর্ণাদের গোলবন্যা দেশের ফুটবলে নারী লিগ না হওয়ায় ভুটান লিগে খেলছেন একাধিক নারী ফুটবলার। যার মধ্যে পারো এফসি হয়ে সর্বোচ্চ ৪ জন ফুটবলার। প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসাচ্ছেন সাবিনা, ঋতুপর্ণা, সুমাইয়া, মনিকারা। সর্বশেষ গতকাল ফুন্টশোলিং হিরোস এফসি বিপক্ষে মাঠে নামে পারো এফসি। ম্যাচের ফুন্টশোলিং হিরোসের বিপক্ষে ২২-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাবিনা-ঋতুপর্ণারা। ম্যাচের মাত্র দুই মিনিটে ঋতুপর্ণার গোলে গোল উৎসব শুরু করে পারো এফসি। প্রথমার্ধে দুই দলের স্কোর লাইন দাঁড়ায় ১২-০। বিরতির পর আরও ১০টি গোল হজম করে ফুন্টশোলিং হিরোস। সর্বোচ্চ ৭ গোল করে ম্যাচসেরা হন সাবিনা খাতুন। এছাড়াও ডাবল হ্যাটট্রিক করেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ঋতুপর্ণা চাকমা। সেইসঙ্গে ৪ টি গোল করেন সুমাইয়া এবং জোড়া গোল করেন মনিকা চাকমা।