ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে মাহমুদউল্লাহর অবসর যা বলছে বিসিবি

ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে মাহমুদউল্লাহর অবসর যা বলছে বিসিবি আগেই টেস্ট ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শুধু চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওয়ানডে ক্রিকেট। সেখান থেকেও অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মিস্টার সাইলেন্ট কিলার। এতে দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন মাহমুদউল্লাহ। বুধবার (১২ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা সবসময় আমাকে সমর্থন দিয়েছে।’ মাহমুদউল্লাহর অবসর ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় এক বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মাহমুদউল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বাংলাদেশ দলে অসাধারণ অবদানের জন্য মাহমুদউল্লাহকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। বুধবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করা এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ১৮ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টেনেছেন।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন ফরম্যাটে সব মিলিয়ে মাহমুদউল্লাহ ৪৩০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন যেখানে রান করেছেন ১১,০৪৭ রান এবং উইকেট নিয়েছেন ১৬৬টি। আইসিসি ইভেন্টে বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে সর্বাধিক সেঞ্চুরি (৪) করার গৌরব তার রয়েছে এবং ওয়ানডেতে বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ এবং টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। তিনি ছয়টি টেস্ট ম্যাচ এবং ৪৩টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।’ মাহমুদউল্লাহর অবদানের প্রশংসা করে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘এটি বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত সকলের জন্য একটি হৃদয়বিদারক মুহূর্ত, কারণ মাহমুদউল্লাহ প্রায় দুই দশক ধরে জাতীয় দলের শক্তির স্তম্ভ হয়ে আছেন। চাপের মধ্যেও তার ধারাবাহিকতা এবং সাফল্য তাকে অমূল্য সম্পদে পরিণত করেছে। তার নিষ্ঠা এবং পারফরম্যান্স ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি মানদণ্ড স্থাপন করেছে এবং তাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’ বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘মাহমুদউল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পারফর্মারদের একজন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। ব্যাটিং হোক বা বোলিং, যখন দলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তখনই তিনি সেরাটা করে দেখিয়েছেন। চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে তার শান্ত আচরণ এবং মাঠে তার নেতৃত্ব বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিত্বদের একজন হিসেবে তার মর্যাদাকে সুদৃঢ় করেছে।’ ফারুক আহমেদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে, আমরা মাহমুদউল্লাহর অসাধারণ ক্যারিয়ার উদযাপন করছি এবং দল এবং খেলাধুলার প্রতি তার অমূল্য সেবার জন্য আমাদের গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা তার ভবিষ্যতের সকল প্রচেষ্টায় তার সাফল্য কামনা করি এবং আত্মবিশ্বাসী যে তার অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।’

রোহিতকে ২০২৭ বিশ্বকাপ দলের অধিনায়ক দেখতে চান পন্টিং

রোহিতকে ২০২৭ বিশ্বকাপ দলের অধিনায়ক দেখতে চান পন্টিং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন রোহিত শর্মা। শিরোপা জয়ের পর অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়েই এখন অবসর না নেওয়ার কথা জানান তিনি।  ধারণা করা হচ্ছে ২০২৭ সাল পর্যন্ত থাকছেন দলের সঙ্গে। ওই সময় পর্যন্ত দলের অধিনায়ক হিসেবে রোহিতকে দেখতে চান অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিটি পন্টিংও।  আইসিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পন্টিং বলেন, ‘এই পর্যায়ে এসে সবাই আপনার অবসর নেওয়ার অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু আপনি যদি এখনো সেরা খেলোয়াড়দের একজন হয়ে থাকেন, তাহলে অবসরের দরকার কী? আমার মনে হয়, রোহিতের মাথায় ২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনালের হার এখনো ঘুরছে। তিনি চাইবেন আরেকবার সুযোগ নিতে, আইসিসি হোয়াইট-বল ট্রেবল (ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি) সম্পন্ন করতে। এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ করে অবসর প্রসঙ্গে রোহিত শর্মা বলেছিলেন, ‘আমি বর্তমানে এক ধাপ করে এগোতে চাই। ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই বেশি ভাবতে চাই না। এটা বলা ঠিক হবে না যে আমি খেলব বা খেলব না। আমি আমার ক্রিকেট উপভোগ করছি, দলকে নেতৃত্ব দিতে ভালোবাসি। এখন শুধু এটুকুই গুরুত্বপূর্ণ। ’

হারলেও ব্যাটে-বলে সেরা নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা

হারলেও ব্যাটে-বলে সেরা নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা আরও একবার শিরোপার একদম কাছ থেকে ফিরে যেতে হলো নিউজিল্যান্ডকে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে জমজমাট লড়াই করেও শেষ হাসি হাসতে পারেনি কিউইরা। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রবিবার (৯ মার্চ) ৪ উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে এক যুগ পর শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে ভারত। ফাইনালে একাধিক ক্যাচ মিসের খেসারত দিতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে, যা শেষ পর্যন্ত তাদের ৪ উইকেটের পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে শিরোপা হাতছাড়া হলেও ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে উজ্জ্বল ছিলেন কিউই ক্রিকেটাররা। রাচিন রবীন্দ্র: ব্যাট হাতে আসরের সেরা টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্র। প্রথম ম্যাচে না খেললেও বাকি চার ম্যাচে দুই সেঞ্চুরিসহ ২৬৩ রান করেন তিনি, যা তাকে আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বানিয়েছে। ম্যাট হেনরি: বল হাতে শীর্ষে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা বোলারও নিউজিল্যান্ডের। পেসার ম্যাট হেনরি ফাইনালে না খেললেও ১০ উইকেট নিয়ে সবার শীর্ষে আছেন। ফাইনালের সেরা রোহিত শর্মা ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন। ৮৩ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৬ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন তিনি, যা ভারতকে জয়ের পথে নিয়ে যায়। টুর্নামেন্টের সেরা ব্যাটসম্যান ও বোলার নির্বাচিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্র ও ম্যাট হেনরি। তবে শিরোপা জিতে তাদের ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের ওপর ছাপিয়ে গেছে রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতের সাফল্য।

জয়রথ চলছেই, আগামী ৮ বছরেও প্রতিপক্ষদের সতর্কবার্তা কোহলির

জয়রথ চলছেই, আগামী ৮ বছরেও প্রতিপক্ষদের সতর্কবার্তা কোহলির আইসিসির বড় আসরগুলোতে ধারাবাহিক সাফল্যের ধারায় রয়েছে ভারত। গত ১৫ বছরে চারটি আইসিসি ট্রফি জয় সেই ধারাবাহিকতারই প্রমাণ। গতকাল দুবাইয়ে নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে এক যুগ পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে ভারত। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের পর এক বছরেরও কম সময়ে দুটি বড় ট্রফি জিতে অনন্য কীর্তি গড়ল রোহিত শর্মার দল। অভিজ্ঞ রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির সঙ্গে তরুণ ক্রিকেটারদের দারুণ সমন্বয় ভারতকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে। ব্যাট হাতে শুভমান গিল, হার্দিক পান্ডিয়া ও লোকেশ রাহুল নিজেদের দায়িত্ব নেওয়া শিখে গেছেন। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দলের অন্যতম প্রধান অস্ত্র জসপ্রিত বুমরাহকে ছাড়াই খেলতে নেমেছিল ভারত, তবে তরুণ বোলাররা তার অভাব বুঝতেই দেননি। অভিজ্ঞতার শেষ পর্যায়ে থাকা বিরাট কোহলিও ভারতীয় দলের এই অগ্রগতিতে খুশি। জাতীয় দলে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা জল্পনা থাকলেও তরুণদের পারফরম্যান্স দেখে স্বস্তিতে আছেন তিনি। কোহলি বলেন, “যখন আপনি ছাড়তে চান, তখন চেষ্টা করেন দলকে ভালো অবস্থানে রেখে যাওয়ার। আমাদের দলের ভবিষ্যৎ ভালো হাতে রয়েছে। আগামী ৮ থেকে ১০ বছর ক্রিকেট শাসনের জন্য আমরা প্রস্তুত।” ট্রফি জয়ের পর প্রতিক্রিয়ায় কোহলি জানান, “কঠিন অস্ট্রেলিয়া সফরের পর আমরা চেয়েছিলাম ঘুরে দাঁড়াতে। বড় টুর্নামেন্ট জয়ের লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম করেছি, এবং শেষ পর্যন্ত তা সফল হয়েছে। দলের প্রতিটি ক্রিকেটার ম্যাচের দায়িত্ব নিচ্ছে, যা আমাদের শক্তি বাড়াচ্ছে।” শিরোপা জয়ের পর প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের প্রশংসাও করেছেন কোহলি। তিনি বলেন, “নিউজিল্যান্ড দারুণ একটি দল। তারা প্রতিবার বড় মঞ্চে পরিকল্পনা নিয়ে নামে এবং সেটিকে কার্যকর করতে অসাধারণ দক্ষতা দেখায়। বিশ্বের খুব কম দলই এত নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারে।” বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের জয়রথ চলছেই। সামনের দিনগুলোতেও এই আধিপত্য ধরে রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কোহলি।

মিরপুর বাদ দিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের সূচি প্রকাশ বিসিবির

মিরপুর বাদ দিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের সূচি প্রকাশ বিসিবির ঈদের পরেই বাংলাদেশে আসছে জিম্বাবুয়ে। দুই টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে যে আসছে জিম্বাবুয়ে তা আগেই নিশ্চিত হয়েছিল। আজ দুই টেস্টের সিরিজের সময়সূচি জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি। সিরিজের কোনো টেস্ট নেই মিরপুরে। দুই টেস্টের একটি চট্টগ্রামে। অন্যটি সিলেট। ২০ এপ্রিল সিলেট টেস্ট দিয়ে সিরিজ শুরু হবে। আর সফর শেষ হবে ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্ট দিয়ে। গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও দুই টেস্টের সিরিজের একটিও ছিল না হোম অব ক্রিকেট নামে পরিচিত মিরপুরে। গত বছর ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে সঙ্গে ২টি টেস্ট খেলার কথা ছিল দুই দলের। তবে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপের বছর হওয়ায় সেই সফরে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে। স্থগিত হওয়ায় টেস্ট সিরিজটিই এবার খেলতে আসছে জিম্বাবুয়ে।

ভারত-নিউজিল্যান্ডের লড়াইয়ে আম্পায়ার-রেফারির নাম প্রকাশ

ভারত-নিউজিল্যান্ডের লড়াইয়ে আম্পায়ার-রেফারির নাম প্রকাশ নানা নাটকীয়তার পর্দা নামতে যাচ্ছে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির। টুর্নামেন্টের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে ভারত। আর এই ম্যাচকে সামনে রেখে চারজন আম্পায়ার এবং ম্যাচ রেফারির নামের তালিকা প্রকাশ করেছে আইসিসি। পল রাইফেল এবং রিচার্ড ইলিংওয়ার্থকে ম্যাচ চলাকালীন ফিল্ড আম্পায়ারের ভূমিকায় দেখা যাবে। ম্যাচের তৃতীয় আম্পায়ার হবেন জোয়েল উইলসন, আর চতুর্থ আম্পায়ার হিসেবে দেখা যাবে কুমার ধর্মসেনাকে। ম্যাচ রেফারির ভূমিকায় থাকবেন রঞ্জন মাদুগালে। আজ নিজেদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এবার ভারত ও নিউজিল্যান্ডের দল ফাইনাল খেলছে, তাই এই দুই দেশের আম্পায়ারদের প্যানেলে জায়গা দেওয়া হয়নি।

পরিসংখ্যান ও রেকর্ডের পাতায় মুশফিক

পরিসংখ্যান ও রেকর্ডের পাতায় মুশফিক গুঞ্জন ছিল বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আরও এক বছর থাকতে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। বোঝায় যাচ্ছে ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকে অবসরের ব্যাপারে মুশফিকে উপর কোন চাপ ছিল না। তবে বুধবার (৫ মার্চ, ২০২৫) রাতে মুশফিক জানিয়ে দিলেন রঙিন পোষাকে অনেক হয়েছে, আর না। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেকেই বেছে নিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটেরর মিস্টার ডপেন্ডেবল। এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সাদা বলের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সঙস্করণ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন এই ডানহাতি কিপার ব্যাটসম্যান। ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল মুশফিকের। বিদায়বেলায় ওয়ানডে পরিসংখ্যান ও মাইলফলকের রঙিন পাতা গুলো একনজর উল্টিয়ে দেখা যাক। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলা ক্রিকেটার মুশফিক। মিস্টার ডিপেন্ডেবল ২৭৪টি ওডিয়াই খেলেছেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাকিব আল হাসান খেলেছেন ২৪৭টি ম্যাচ। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসলেও বাংলাদেশের জার্সিতে সাকিব তার শেষ ওডিয়াই খেলে ফেলেছেন। এখন জাতীয় দল থেকে অবসরে যাননি এবং ২০০ বেশি ওডিয়াই খেলা ক্রিকেটার আছেন কেবল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি খেলেছেন ২৩৯ ম্যাচ। ওডিআইতে উইকেটকিপার হিসেবে মুশফিকের ডিসমিসাল সংখ্যা ২৯৭টি, ২৪১টি ক্যাচের সাথে করেছেন ৫৬টি স্টাম্পিং। অন্যদিকে ১২৬টি ডিসমিসাল নিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে পরের নামটি খালেদ মাসুদ পাইলটের। ওডিআই ইতিহাসে ডিসমিসাল সংখ্যায় মুশফিক আছেন পাঁচ নম্বরে। এ ছাড়া সাধারণ ফিল্ডার হিসেবে আরও ২টি ক্যাচ নিয়েছেন মুশফিক। ওয়ানডেতে মুশফিকের রান সংখ্যা ৭৭৯৫। বাংলাদেশের হয়ে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। শীর্ষে থাকা তামিম ইকবাল করেছেন ৮৩৫৭ রান। এই ওডিয়াই সংস্করণে ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট অভিষিক্ত মুশফিকের ক্যারিয়ারের বয়স ১৮ বছর ২০২ দিন। যা বাংলাদেশের জন্য রেকর্ড। সব দেশ মিলিয়ে অষ্টম এই রেকর্ডটি আছে অষ্টম নম্বরে। টাইগারদের হয়ে এই পরিসংখ্যানের দ্বিয়ীয় স্থানে আছেন ১৭ বছর ২১৪ দিন ধরে খেলে যাওয়া রিয়াদ। মুশফিক ওয়ানতে সিরিজসেরা হয়েছেন ৬ বার। শীর্ষে থাকা সাকিব ৭ বার সিরিজসেরা হয়েছিলেন। তবে একটা জায়গায় সবার উপরে মুশি। উইকেটকিপার হিসেবে সিরিজসেরা হওয়ার দৌড়ে পুরো বিশ্বেই সবার ওপরে তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক ও ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে রেকর্ডটা ভাগাভাগি করছেন মুশফিক। ওডিয়াইতে দুবার এক ম্যাচে ৫টি ডিসমিসাল করেছেন মুশফিক। যা বাংলাদেশের রেকর্ড। অন্যদিকে খালেদ মাসুদের আছে একবার ৫টি ডিসমিসালের রেকর্ড। মুশফিকের ওডিআই সেঞ্চুরি সংখ্যা ৯টি। ওডিয়াইতে শতকের হিসেবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যৌথভাবে সাকিবের সঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে মুশফিক। শীর্ষে আছে ১৪টি সেঞ্চুরি করা তামিম। ৫৮ বার ওডিআইতে অর্ধশত ছুঁয়েছেন মুশফিক। যা বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম দুটি স্থানে আছে যথাক্রমে তামিম (৭০) ও সাকিব (৬৫)। বরাবর ১০০টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ওয়ানডেতে। তার চেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছেন কেবল মাহমুদউল্লাহ (১০৭) ও তামিম (১০৩)। চলমান চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কোন ম্যাচ না জিতে বিধ্বস্ত হয়ে ফিরেছে বাংলাদেশে।  অন্যদিকে ব্যাট হাতে চরম ব্যর্থ ছিলেন মুশফিক। ২ ম্যাচে করতে পেরেছিলেন কেবল ২ রান। এরপরই সমালোচিত হতে থাকেন ৩৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। একই দিন সকালে ৩৫ বছর বয়সী স্টিভেন স্মিথেও ওয়ানডে জার্সি তুলে রাখেন। অজি এই তারকা ব্যাটসম্যানের অবসরের খবর চাউর হওয়ার পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুশফিককে নিয়ে সমালোচনা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। সমালোচকদের আর সুযোগ না দিয়ে নিজেই ওয়ানডে থেকে সরে পড়লেন তিনি।

ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে স্মিথের অবসর

ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে স্মিথের অবসর ভারতের বিপক্ষে লড়েছেন বেশ। চেষ্টা করেছেন ভালো সংগ্রহ গড়ার। বাকিদের থেকে বেশি রানও এসেছে তার ব্যাট থেকে। কিন্তু জেতাতে পারেননি দলকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল থেকে বিদায় হয় অস্ট্রেলিয়ার। ৭৩ রানের ইনিংস খেলেও এই হতাশা মেনে নিতে হয় স্টিভেন স্মিথকে। এরই সঙ্গে ওয়ানডে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের অবসানও ঘটালেন এই ব্যাটার।  সেমিফাইনাল হারার পরই সতীর্থদের নিজের অবসর নেওয়ার বিষয়টি জানান স্মিথ। অথচ ছন্দে ছিলেন এই ব্যাটার। খেলতে পারতেন ২০২৭ বিশ্বকাপেও। কিন্তু নতুনদের জায়গা করে নতুন দল গঠনের লক্ষ্যে সরে দাঁড়ালেন। তিনি বলেন, ‘২০২৭ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার উপযুক্ত সুযোগ এখনই। কাজেই আমার মনে হয়েছে, জায়গা করে দেওয়ার সঠিক সময় এসেছে। ’অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুবার বিশ্বকাপ জেতা এই ব্যাটার রোমন্থন করলেন আগের স্মৃতি। বললেন, ‘দারুণ এক ভ্রমণ ছিল এটি, প্রতিটি মিনিট আমি উপভোগ করেছি। এত বেশি অসাধারণ সময় কেটেছে এবং দুর্দান্ত সব স্মৃতি আছে! চমৎকার সব সতীর্থকে সঙ্গী করে দুটি বিশ্বকাপ জয় করা ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। ’ ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মেলবোর্নে শুরু হয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেটে স্মিথের পথচলা। এই সংস্করণে তিনি খেলেছেন ১৭০ ম্যাচ। সংগ্রহ করেছেন ৫ হাজার ৮০০ রান। এর মধ্যে রয়েছৈ ১২ সেঞ্চুরি ও ৩৫ ফিফটি। গড় ৪৩.২৮, স্ট্রাইক রেট প্রায় ৮৭। সর্বোচ্চ ইনিংসটি ১৬৪ রানের। দলের হয়ে জিতেছেন ২০১৫ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ বিশ্বকাপ।

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে ভারত

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে ভারত বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুল দলকে নিয়ে গেলেন জয়ের কাছাকাছি। শেষে গিয়ে খেই হারালেন কোহলি। বিলিয়ে দিলেন উইকেট। তবে হার্দিক পান্ডিয়া নেমে করলেন বাজিমাত। তিন ছক্কায় জয় সহজ করে দিয়ে হলেন আউট। ফিনিশিংটা আসে রাহুলের হাত ধরেই। ছক্কা মেরে ভারতকে তুললেন ফাইনালে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারাল ভারত। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৩ ওভারে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। জবাব দিতে নেমে এই রান ১১ বল হাতে রেখে তাড়া করে ফেলে ভারত। তৃতীয় ওভারে কুপার কনোলিকে শূন্য রানে হারিয়ে শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। এই ধাক্কা সামলে তিনে নামা স্মিথ জুটি গড়েন ট্রাভিস হেডের সঙ্গে। ধীরগতিতে খেলে তারা জুটির অর্ধশতক পূর্ণ করেন। নবম ওভারে হেডকে ফিরিয়ে জুটিটি ভাঙেন বরুণ চক্রবর্তী। ৩৩ বলে ৩৯ রান করে বিদায় নেন অজি ওপেনার। চারে নেমে লাবুশেন সঙ্গ দেন স্মিথকে। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। ৩৬ বলে ২৯ রান করে শিকার হন মোহাম্মদ শামির। এর মধ্যে ৬৮ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন স্মিথ। পাঁচে নেমে জস ইংলিশ ১১ রান করে উইকেট হারান। তবে লড়তে থাকেন স্মিথ। যদিও সেঞ্চুরি অব্দি নিয়ে যেতে পারেননি নিজের ইনিংস। শামির বলে বোল্ড হয়ে ৯৬ বলে ৭৩ রান করে ফেরেন অজি অধিনায়ক। স্মিথের বিদায়ের পর লড়েন কেয়ারি। তবে বাকিরা ব্যর্থ হচ্ছিলেন ব্যাট হাতে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৭ ও বেন ডারউইশ বিদায় নেন ১৯ রানে। শেষদিকে গিয়ে রানআউট হয়ে ফেরেন কেয়ারি। যাওয়ার আগে খেলে যান ৫৭ বলে ৬১ রানের ইনিংস। ভারতের পক্ষে ১০ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন শামি। দুটি করে উইকেট নেন বরুণ ও রবীন্দ্র জাদেজা। একটি করে পান হার্দিক পান্ডিয়া ও অক্ষর প্যাটেল।রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই শুভমান গিলকে হারায় ভারত। ৮ রান করে তিনি ফেরেন সাজঘরে। রোহিত শর্মাও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ২৯ বলে ২৮ রান করেন তিনি। তিনে নেমে বিরাট কোহলি লড়াই চালিয়ে যান। তাকে সঙ্গ দেন শ্রেয়াস আইয়ার। ১১১ বলে ৯১ রানের জুটি গড়েন তারা। তবে ফিফটির পাঁচ রান আগে শ্রেয়াস বিদায় নিলে ভাঙে এই জুটি।  অক্ষর প্যাটেল নেমে অবশ্য ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ৩০ বলে ২৭ রান করেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে ৪৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান কোহলি ও রাহুল। ৫৩ বল ফিফটি পূর্ণ করা কোহলি দেখেশুনে খেলতে থাকলেও ৪৩তম ওভারে ডারউইশের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন। ৯৮ বলে ৮৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শেষদিকে পান্ডিয়া এসে খেলেন ভয়হীন ইনিংস। ২৪ বলে ২৮ রান করেন তিনি। বাকি কাজটা সারেন রাহুল। ৩৪ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

ভারতের বহুল কাঙ্ক্ষিত ‘প্রতিশোধের’ ম্যাচ

ভারতের বহুল কাঙ্ক্ষিত ‘প্রতিশোধের’ ম্যাচ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম সেমি ফাইনালেই মুখোমুখি হতে যাচ্ছে সবশেষ বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়া-ভারত। চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায় বিকেল ৩টায় শুরু হতে যাওয়া এই মহারণে রোহিত শর্মার দল এগিয়ে। ভারত দলের জন্য হাতের তালুর মতই মুখস্থ দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট। এবারের আসরে দলটি আইসিসির সুবিধা নিয়ে একই ভেন্যুতে খেলার সুযোগ পাচ্ছে প্রতিটি ম্যাচ। ফলে কোন ধরনের ভ্রমণ করতে হচ্ছে না নীল শিবিরকে। তাছাড়া প্রতি ম্যাচ একই ধরনের উইকেটে খেলবে বলে স্কোয়াডে গড়ার সময় সেই বাড়তি সুবিধা পেয়েছে ভারত। দুবাইয়ের ‘ধীর এবং নিচু’ উইকেটের কথা মাথায় রেখে রোহিত শর্মারা দলে নিয়েছেন পাঁচজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার। সবশেষ ম্যাচে ভারত আসরের সবচেয়ে ব্যালেন্সড দল নিউ জিল্যান্ডকে রীতিমত খাবি খাইয়েছে। কার্যকরী স্পিনে পরিপূর্ণ কিউইদের সাহসীকতার সাথে সামলেছে টিম ইন্ডিয়ার মিডল অর্ডার। বল হাতেও কেন উইলিয়ামসন ও টম লাথামদেরও ঘূর্ণি বিষে কাবু করেছে নীল শিবির।