নতুন হুজরাপুরে মাছ-মাংস বাজার নির্মাণ কাজ শুরু

নতুন হুজরাপুরে মাছ-মাংস বাজার নির্মাণ কাজ শুরু চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নতুন হুজরাপুর মহল্লার পানির ট্যাংকের ফাঁকা জায়গায় আধুনিক পাইকারি-খুচরা মাছ ও মাংস বাজার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা বাস্তবায়নাধীন এই নির্মাণ কাজ শেষ হবে আগামী জুন মাসের মধ্যে। টিনশেডের এই বাজারে থাকবে মাছপট্টি, মুরগিপট্টি, খাসিপট্টি ও গরুপট্টি। অর্থাৎ নিউমার্কেট এলাকা থেকে মাছ ও মাংসের বাজার স্থানান্তর করা হবে। নতুন এই বাজার নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তৌফিকুল ইসলাম এইসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে সোমবার বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ। এসময় পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তৌফিকুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রোকনপুর সীমান্ত : ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে বিএসএফ ৪ বাংলাদেশী আটক করেছে

রোকনপুর সীমান্ত : ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে বিএসএফ ৪ বাংলাদেশী আটক করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রোকনপুর সীমান্তের ওপারে ভারতের অনুপ্রবেশের দায়ে ৪ বাংলাদেশীকে আটক করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। গত রবিবার রাত ৯টার দিকে তারা রোকনপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করলে স্থানীয় গ্রামবাসী তাদের আটক করে। পরে  সোমবার সকালে বিএসএফের কাছে আটকদের হস্তান্তর করে গ্রামবাসী। সোমবার আটকদের স্বজন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক আটকের কোনো তথ্য জানা নেই বলে জানিয়েছে বিজিবি। আটকরা হলেন- গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের মহবুল আলমের ছেলে মো. মুকুল, মোশারফ হোসেনের ছেলে মো. আলিম, ইসাহাক আলীর ছেলে দুরুল হুদা, মতিউর রহমান ওরফে মতি মিয়ার ছেলে মো. বাবু। এর মধ্যে দুজন রোকনপুর ও বাকি দুজন সাগরইল এলাকার বাসিন্দা। আটক মুকুলের শ্বশুর আনারুল ইসলাম বলেন, গরু দিবে বলে ভারতীয়রা সীমান্তে ডেকেছিল। সেই গরু আনতে আমার জামাইসহ ৪ জন রবিবার রাত ৯টার দিকে ভারতে গিয়েছিল। এসময় ভারতের আদমপুর গ্রামের লোকজন তাদের আটক করে। পরে তাদেরকে ইটাঘাটা বিএসএফ ক্যাম্পে হস্তান্তর করে। রাধারনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মতিউর রহমান বলেন- শুনেছি, আমার ইউনিয়নের ৪ বাংলাদেশীকে বিএসএফ আটক করেছে। আমরা বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। নওগাঁ ১৬ বিজিবির রোকনপুর কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল জাব্বার বলেনÑ ভারতীয়রা ধরে নিয়ে গেছে এরকম কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।

শিবগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবক নিহত

শিবগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবক নিহত শিবগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সায়েম আলী নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আজ বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের বিশ^নাথপুর ঘোনটোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, বিকেলে নিজ বাড়িতে বাঁশের বেড়া নির্মাণ করছিলেন সায়েম আলী। এ সময় বিদ্যুতের তারে স্পর্শ হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। শিবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোজাম্মেল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিজ বসতবাড়িতে বেড়া নির্মাণের কাজ করার সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান সায়েম। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

শিবগঞ্জে ক্রিকেট-ফুটবল খেলা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা

শিবগঞ্জে ক্রিকেট-ফুটবল খেলা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে শিবগঞ্জে উপজেলা ভিত্তিক ক্রিকেট ও ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলাধূলা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বিকেলে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে শিবগঞ্জ স্টেডিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আহবায়ক আজাহার আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব আবদুৎ তোয়াব, সদস্য ফারুক হোসেন, সদস্য ডা. নাহিদুজ্জামান সুমন, সদস্য ফাইয়াজ রহমান তনয়, সদস্য আতিক ইসলাম সিকো, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ডায়মন, ছাত্র আন্দোলনের নেতা আল বশরী সোহান ও সাইমুম সাদাবসহ অন্যরা। এর আগে শিবগঞ্জ স্টেডিয়ামে উপজেলা প্রশাসন ফুটবল দল বনাম উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় ৫-৪ গোলে উপজেলা প্রশাসন দলকে হারিয়ে জয়লাভ করে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ফুটবল দল।

শিবগঞ্জে বীরমুক্তিযোদ্ধা মহসিন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত

শিবগঞ্জে বীরমুক্তিযোদ্ধা মহসিন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের আটরশিয়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মহসিন আলী ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। আজ বিকাল ৫টার দিকে আটরশিয়া পশ্চিমপাড়া গোরস্থান প্রাঙ্গণে মরহুমের নামাজে জানাযা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সেখানেই তার মরদেহ দাফন করা হয়। এর আগে সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানাযায় অংশ নেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌফিক আজিজ, শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসসের সাবেক কমান্ডার বজলুর রশিদ সোনু, বীরমুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলম ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মিজানসহ স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধা এবং মুসল্লিরা। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।  

মনাকষা সীমান্তে ফেনসিডিলসহ চোরাকারবারী আটক

মনাকষা সীমান্তে ফেনসিডিলসহ চোরাকারবারী আটক শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ২০ বোতল ফেনসিডিলসহ এক ব্যক্তিকে আটক হয়েছে। আটক ব্যক্তি শিবগঞ্জের সাহপাড়া গ্রামের সোহরাবের ছেলে জাহাঙ্গীর। আজ ভোর ৫টার দিকে দূর্লভপুর ইউনিয়নের বালুটুঙ্গী গ্রামের নিকটবর্তী মাঠে বিশেষ অভিযান চালিয়ে জাহাঙ্গীরকে আটক করা হয়। এ সময় তার দেহে অভিনব কায়দায় ‘বডি ফিটিং’ অবস্থায় ফেনসিডিলগুলো পাওয়া যায়। আজ সকালে পাঠানো ৫৩ বিজিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন তথ্যে মাদক চোরাচালান সম্ভাবনার কথা জানার পর অভিযান শুরু করা হয়। এ সময় মাঠের মধ্যে দিয়ে আসা সন্দেহজনক ওই ব্যক্তিকে থামার সংকেত দিলে বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে সে দৌড়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তবে বিজিবি তাকে ধাওয়া করে আটক করে। ৫৩ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনির-উজ-জামান বলেন, আটক ব্যক্তিকে শিবগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে।  

রহনপুরে পূণর্ভবার তীরে গ্রাম বাংলার পিঠা-পুলি উৎসব ও পোষালু

রহনপুরে পূণর্ভবার তীরে গ্রাম বাংলার পিঠা-পুলি উৎসব ও পোষালু  গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকায় পূণর্ভবা নদী তীরের বাবুরঘোন গ্রামে  প্রতিবছরের ন্যয় এবছরও  হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী  পিঠা-পুলি উৎসব এবং  গ্রামীন পিকনিক ’পোষালু’। আয়োজন ও  উপস্থাপনের স্বকীয়তার কারণে ১৭ বছর আগে ২০০৮ সালে  একদম ঘরোয়া আবহে শুরু  হওয়া আয়োজনটি  জনপ্রিয় ও সমাদৃত হয়েছে। দূর-দূরান্তের অতিথিরা  দেশীয় সংস্কৃতির শেকড়ের টানে এখন অপেক্ষা করে থাকেন শীতের মৌসুমের এই দিনটির জন্য। অনেকেই আবার একে বলেন নবান্ন উৎসব। আজ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে মাতোয়ারা ছিল  মূল আয়োজক উত্তর রহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মমতাজ বেগমের বড় গলি ঘেরা ও বিশাল আঙ্গিণার বাড়িটি। আয়োজনের মধ্যে ছিল নতুন ধানের ঢেঁকিছাটা ও যাঁতায় পেষা চালের তৈরি বিভিন্‌ন পিঠা তৈরী ও খাওয়া, দুপুরে আলু-ডিমের ঘন্ট দিয়ে তরকারি ও  নানা পদের শীতের শাকের সাথে ভাপ ওঠা  অগ্রাহায়ণ মাসে ওঠা চালের ভাত দিয়ে পোষালু। দুপুরের এই খাবার ভারী মজার বলেই সকলের আগ্রহের কেন্দ্র শুধু পিঠা নয় এটিও। আর  আগ্রহ দিনব্যাপী  বিভিন্ন বয়সী নারী  এবং কিশোরীদের হারিয়ে যেতে বসা গ্রামীন গীত। সঙ্গে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীন খেলাধুলো। দিনব্যাপী শিশুদের  আনন্দ-হুল্লোড় তো পুরো গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে। অংশগ্রহণকারীদের পোষাকেও রয়েছে উৎসব। হলুদ পেড়ে লাল শাড়ি পরে উঠোনের চারদিকে কুয়াশা ঘেরা ভোর থেকেই  বসে গেছেন নারী ও কিশোরীরা। তবে দিনের শুরু  কাকডাকা ভোরে। কিশোরীরা সারিবদ্ধভাবে কলসিতে নদী থেকে পানি আনার মধ্যে দিয়ে কাজ শুরু হয়।  এরপর ছাঁটা হয় চাল। পিষা হয় যঁতায়। এরপর আঙ্গিনার মাঝখানে বড় হাঁড়িতে পানি সিদ্ধ করে ভাপ উঠলে সেই ভাপ দিয়ে তৈরী তে শুরু করে ভাপা,কুলি ,তিল,তেল সহ বিভিন্ন রকমের পিঠা। গরম গরম পরিবেশনও করা হয় শীতের সকালে। সকল কাজই হয় আনন্দের সাথে গীত গাইতে গাইতে দলবদ্ধভাবে। সেই মাথে চলে  একক ও দলীয় নৃত্য, একক ও দলীয় গান, ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি, অভিনয় ইত্যাদি বিনোদনমূলক পরিবেশনা যার সবই  বাঙ্গালীর গ্রামীন সংস্কৃতির অংশ। মূল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলো হয় বাড়ির আঙ্গিনা ও পাশের বড় গলিতে দুপুরের পোষালু খাবার পর পড়ণÍ বিকেলে। অতিথিদের সমাদর করে খাওয়ানো হয়। গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের বাড়ি বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয় পিঠা। দিন ব্যাপী পুরো গ্রামেই বিরাজ করে উৎসবের আমেজ।বিকেলে বৌ-ঝি’রা অংশ নেন বালিশ খেলা, চামচ খেলা, হাড়ি খেলা,এক্কা দোক্কা,কিত কিত খেলা, কলসি দৌড় ইত্যাদি খেলায়। সন্ধ্যায় শেষ হয় এই আয়োজন। আয়োজনের খরচ যোগায় গ্রামের  বিদ্যলয়ের শিক্ষার্থীরা এবং গৃহীনিরা। শধু টাকা  দিয়ে নয়। বরং বাড়ি  বাড়ি থেকে ধান,চাল, আলু, মসলা, ডিম,তেল সংগ্রহ করা হয় উৎসবের আগেই। মমতাজ বেগম বলেন, দাদী-নানীর কাছে শোণা নবান্ন উৎসবের গল্প থেকে তিনি প্রথ অনুপ্রেরণা পান। পুরোনো যুগে ধান ওঠার পর গৃহস্থরা দাওয়াত করে কৃষক-কৃষাণী,আত্মীয় আর অতিথিদের খাওয়াতেন বলে। এসব গল্প শুনে, গ্রামীন সংস্কৃতির টানে আর হারিয়ে যেতে বসা বিভিন্ন ঐতিহ্য ধরে রাখতে নিজের বাড়িতেই উৎসব শুরু করেন। শুরুর দিনগুলো সহজ ছিল না। শিশু ও নারীদের নিয়ে কাজ করতে তিনি ভালবাসেন। অনেক পরিশ্রম করতে হয়। বিদেশী সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের যুগে আমাদেও নিজেদের ঐতিহ্য ও অথীতকে তো হারিয়ে যেতে দেয়া যাবে না। সকলকেই এসব রক্ষায় কাজ করতে হবে। চিন্তা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমার  প্রধান শক্তি আমার পরিবার। বোন জেলার ভোলাহাট উপজেলার খানেআলমপুর মাদ্রাসার ইসলামী স্টাডিজের প্রভাষক শামীমা বেগম ও ভাই আল মামুন আমার পাশে থাকেন সবসময়। পারিবারিক আয়োজনেই ১৭ বছর ধরে এই উসব চলছে জানিয়ে মমতাজ বলেন, দেশীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন দিন সহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস তাঁরা পারিবারিক আয়োজনেই গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে পালন করেন। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাওয়া জেলার প্রবীণ সাংবাদিক সামসুল ইসলাম টুকু ও হরিমোহন সরকারি উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজমাল মামুন বলেন, এম আয়োজন বিরল। যে কেউ দেখলে আবেগাপ্লুত হয়ে পুরোনো যুগে ফিরে যাবেন।

গোমস্তাপুরে প্রাথমিক উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন

গোমস্তাপুরে প্রাথমিক উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডের দাবির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে অমর্যাদাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের পদত্যাগের দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বিকেল ৪টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত এই মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- সমন্বয় পরিষদের উপজেলা সমন্বয়ক রুহুল আমিন শিহাব, পশ্চিম আনারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমীন, ভাগোলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুনুর রশিদ খোকন। মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা জানান, গত ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরী সার্কিট হাউসের সভাকক্ষে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “আমি শিক্ষকদের বলব, যদি সমাজে আপনাদের যে শ্রদ্ধার জায়গা আছে, সেটা অটুট রাখতে হয় বা ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে শিক্ষকতা পেশাকে অর্থমূল্যে বিবেচনা করা যাবে না। যারা মনে করবেন যে, না আমার পোষাচ্ছে না, খুব ভালো, তাহলে আপনি প্রাথমিকে থাকবেন না, অন্য পেশায় চলে যান।” স্বৈরাচারের ভাষায় এই মন্তব্য করেছেন তিনি। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা অবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করছেন।

নাচোলে দ্বৈত ব্যান্ডমিন্টন টুর্নামেন্টর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

নাচোলে দ্বৈত ব্যান্ডমিন্টন টুর্নামেন্টর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে আই.এস.সি দ্বৈত ব্যান্ডমিন্টন টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল দিবাগত রাতে পৌর এলাকার ইসলামপুর ব্যান্ডমিন্টন কোটে এ টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্ঠা রহমত আলী জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা, রাজশাহী জেলার তানোর, গোদাগাড়ি ও নওগাঁ জেলার নিয়াতপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার ২৪টি ব্যান্ডমিন্টন দল অংশগ্রহন করে। প্রায় রাত্রি ৩টা পর্যন্ত এ খেলা চলে। এ টুর্নামেন্টে শিবগঞ্জ উপজেলার সাদি ব্যান্ডমিন্টন একাডেমী বিজয়ী হয়। যৌথভাবে রানার আপ হয় রহনপুর ব্রডব্যান্ড দল ও দিগন্ত ব্যডব্যান্ড দল। বিজয়ী দলকে চ্যাম্পিয়ান ট্রফি ও নগদ ১০ হাজার টাকা ও রানা আপ রহনপুর ব্রডব্যান্ড দলকে ট্রফি ও ৭হাজার টাকা এবং দিগন্ত ব্রডব্যান্ড দলকে ট্রফি ও ৩হাজার টাকা প্রদান করা হয়। খেলা পরিচালনা করেন উপদেষ্ঠা তোহিদুল ইসলাম তুষার, কুরবান আলী, রহমত আলী, ইসলামপুর স্পোটিং ক্লাবের সভাপতি আনোয়ার হোসেন পিয়ার, সাধারণ সম্পাদক হোসেন মাহমুদ। খেলায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সাইদুর রহমান, এজাবুল হক, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোখলেসুর রহমান টুকু, সমাজসেবক আলিমুজ্জামান বুলবুল ও নাচোল প্রেসক্লাবের সভাপিত অলিউল হক ডলার প্রমূখ। উপদেষ্টা রহমত আলী আরো জানান, এই ক্লাবের মাধ্যমে সামাজিক কার্যক্রমে (মৃত বাড়িতে ও ইফতারির সময়) আমাদের নিজস্ব ডেকোটরের মালামাল বিনামূলে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া যুব সমাজকে মাদক মুক্ত রাখতে খেলাধুলা ব্যবস্থা করা হয়। তাছাড়া বাল্যবিয়ে, মাদক নির্মুলে ব্যবস্থা গ্রহনসহ বিভিন্ন সামাজিক অসংগতির বিরুদ্ধে সংক্রিয় ভ’মিকা পালন করে।

স্মার্ট প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা

স্মার্ট প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাসটেইনেবল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট ট্রান্সফরমেশন (স্মার্ট) প্রকল্পের আওতায় অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ। এসময় তিনি বলেন, আম প্রক্রিয়াজাতকরে সারাবছরই যেন মানুষের কাছে পোঁছে দিতে পারি, এটা কিন্তু আমাদের কর্মপরিকল্পনা এটা যে শুধু সরকারি কর্মপরিকল্পনা তা কিন্তু না এটা সরকারি এবং বেসরকারি দপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি। আমের প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে প্রয়াস আমাদের সাথে কাজ করছেন এটাও আমাদের যে কর্মপরিকল্পনা রয়েছে তারই একটি অংশ। তিনি আরো বলেন আপনারা (প্রয়াস) স্মার্ট প্রকল্পের মাধ্যেমে যে সকল বিষয় নিয়ে কাজ করবেন এগুলো আমি শুনলাম জানলাম এগুলো ভালো একটি উদ্যোগ, পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ। আরইসিপি এর মাধ্যমে সম্পদের স্বল্প ব্যায়ে সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। এগুলো আমাদের জন্য টেকসই এবং ভালো হবে। আপনাদের এই উদ্যোগের জন্য আমরা সারাবছরই যেন আমাদের ভোক্তার কাছে পোঁছে দিতে পারি সেই চেষ্টাটা থাকবে। একিই সাথে আমাদের মার্কেটিং পলিসিতে দুর্বলতা থাকার কারণে আমরা ভোক্তার কাছে সেভাবে পোঁছাতে পারছিনা। এখনো আমাদের সুযোগ আছে মার্কেটিং পলিসিটাকে আরো ফ্রুটফোলিওভাবে এগাতো পারি যার মাধ্যমে আমাদের জন্য লাভজনক হবে এবং ভোক্তারা সহজলব্য ভাবে পেতে পারে সেবিষয়ে আমরা কাজ করছি। আব্দুস সামাদ আরো বলেন, আমরা যদি শতভাগ অর্গানিক উপায়ে আম উৎপাদন করতে পরি তাহলে আমাদের আমের চাহিদাটা আরো বাড়বে। তিনি আরো বলেন, সরকরি এবং বেসরকারি সকল উদ্যোগ যেন পজিটিভলি হই আমরা আপনারদের সাথে আছি। আমাদের সকলের লক্ষ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই উদ্যেশ্যেই আমরা সকলে কাজ করবো। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হাসিব হোসেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা পেস প্রকল্পের আওতায় ছোট পরিসরে ফ্যাক্টরি তৈরি করে ভেল্যু চেইনে কাজ করা চেষ্টা করেছিলোম। প্রয়াস মনে করে যে প্রয়াস ইনিশিয়েটিভ নিবে কিন্তু বাস্তবায়ন করবে সবাই। তিনি আরো বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম প্রয়াস কাঁচা আমের পাউডার তৈরি করেছে। এখন অনেকেই করছে এটা আমাদের একটি অর্জন। শুধুমাত্র আমাকেই করতে হবে এটা আমরা মনে করছি না। হাসিব হোসেন আরো বলেন, বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয় আমার সেখানে আমি সার্চ করে থাকি বিভিন্ন মেশিননারিজ বা আইটেম বাজারে গিয়ে দেখি যেটা দেখতে ভালো লাগছে কম খরচ হচ্ছে সেগুলো নিয়ে কাজ করার। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রয়াসের আউটলেট দিয়েছি ছোট পরিসরে সেখান থেকে শিখছি আগামীতে আরো বড় হবে সেটা প্রত্যাশা করছি। তিনি আরো বলেন, প্রয়াস চাঁপাইনবাবগঞ্জে জন্ম নিলেও একদিন সবজায়গাতে থাকবে সব কাজই করবে। প্রয়াসকে মানুষ চিনবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রয়াস হিসেবে। এসময় তিনি আরো বলেন আমাদের গরু, ছাগল, গাড়লের খামার আছে সেখান থেকে আমরা প্রতি কোরবানির ঈদে অনলাইনের মাধ্যমে সেগুলো বিক্রি করে থাকি। আমরা ছোট পরিসরে কাজটি করছি আমরা চাই আমাদের এটা দেখে অন্যরাও এই কাজটা করুক লাভবান হোক। হাসিব হোসেন বলেন আমার স্বপ্ন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ম্যাগো ট্যুরিজম হোক। এমনকি সেটা যেন সারাবছর পাওয়া যায় সেটার জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের কালচারাল টিম আছে প্রয়াস ফোক থিয়েটার ইনস্টিটিউট নামে। সেখানে লোকাল খাবার যেগুলো আছে আমাদের সেগুলো প্রমোট করার চেষ্টা করি। হাসিব হোসেন আরো বলেন, এই প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পরিবেশবান্ধব উপায়ে কাজ করা। আমের উৎপাদন বা আমের তৈরি প্রোডাক্ট উৎপাদন করার জন্য সেটা পরিবেশ বান্ধব উপায়ে তৈরি করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ডিপ ইরিগেশনের মাধ্যমে বাগান তৈরি করার কথা আমরা বলছি। তিনি আরো বলেন আমকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফ্লাগশিপে ধরে রাখার জন্য আমাদের কাজ অনেক। এটা একা কারো কাজ না সবারই কাজ, এখানে গণমাধ্যমের ও অনেক কাজ আছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রয়াস বড় হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি প্রয়াস জনগণের সাথে থাকবে এবং সরকারের সাথে থেকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। সরকারের যে নির্দেশনা আছে সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবে। নতুন চিন্তাভাবনাগুলোকে মাথায় নিয়ে এগিয়ে যাবে। বিশেষ অতিথি বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক নাকিব হাসান তরফদার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার, শষ্য বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ জহুরুল ইসলাম। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রয়াসের পরিচালক পঙ্কজ কুমার সরকার। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্রয়াসের কার্যক্রম তুলে ধরেন কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ) আব্দুস সালাম। স্মার্ট প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশন উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম। এসময় অন্যানোর মধ্যে বক্তব্য দেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা জব্বার আলী এসময় অন্যানোর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার অনুজ চন্দ, প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির সহকারী পরিচালক জুলফিকার আলী, কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক ও স্মার্ট প্রকল্পের ফোকাল পার্সন ফারুক আহমেদ, কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন, রেইজ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আলম বিশ্বাস, স্মার্ট প্রকল্পের পরিবেশ কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ, প্রয়াসের অফিসার শাহরিয়ার শিমুলসহ অন্যরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্মার্ট প্রকল্পের এমআইএস ও ডকুমেন্টেশন অফিসার মোমেনা ফেরদৌস। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)’র সহযোগিতায় স্মার্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি। উল্লেখ্য, স্মার্ট প্রকল্প নিয়ে প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর, শিবগঞ্জ, নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলায় এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলায় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে। এই প্রকল্পের মেয়াদকাল ৪ বছর। এর মাধ্যমে লক্ষিত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ১ হাজার ৫০০ জনকে ঋণ, অনুদান এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রিসোর্স ইফিশিয়েন্ট অ্যান্ড ক্লিনার প্রোডাকশন (আরইসিপি) চর্চার মাধ্যমে আম উৎপাদনকারী / আমচাষি / আম ব্যবসায়ী / আম প্রক্রিয়াজাতকারী (আমসত্ব, আচার, ম্যাংগোবার, ম্যাংগোজুস, ম্যাংগো পাউডার) / আমবাজারতাকারী (দেশ ও বিদেশ) / আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণে সরঞ্জাম বা মেশিনারিজ যানবাহন / নার্সারি / জৈব সার উৎপাদন ও বাজারজাতকারী অর্থাৎ আমের সাথে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাগণ এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত হবেন।