নাচোলে মল্লিকপুরে জোড়া খুনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

নাচোলে মল্লিকপুরে জোড়া খুনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন নাচোল উপজেলার মল্লিকপুরে জোড়াখুনের ঘটনায় সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। আজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-গোমস্তাপুর সড়কের মল্লিকপুর বাজারে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। বিকেলে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের খলশী বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে মল্লিকপুর বাজারে গিয়ে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, নিহত মাসুদ রানার পিতা এজাবুল হক, নিহত রায়হানের পিতা আব্দুর রহিম, রায়হানের ভাই জাহাঙ্গীর, আকবর, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আফজাল হোসেন। এসময় তারা নৃশংস এই জোড়া খুনের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দাবি করেন। এসময় তারা রাস্তা অবরোধ করেন। এসময় পুলিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নিয়ে ঘরে ফিরে যান। উল্লেখ, গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুর গরুর হাটের মাছ বিক্রির টিনশেডে প্রতিপক্ষের হামলায় ৬ জন গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশষ্ট জেলা হাসপাতালে নেয়ার পথে উপজেলার খলসী গ্রামের এজাবুলের ছেলে মাসুদ ও চাঁনপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে রায়হান মারা যান। ওই ঘটনায় ৪ জন আহত হন। আহতরা হলেন- খলসী গ্রামের জালালের ছেলে সুমন, আলমের ছেলে রজব আলী ওরফে রনি, রব্বানী ওরফে পাতুর ছেলে আরমান ও ফিরোজের ছেলে ইমন। তাদের মধ্যে সুমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এঘটনায় নাচোল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মল্লিকপুর গ্রামের বাহার আলী মন্ডলের ছেলে আজিজুল হক, এজাবুলের ছেলে তাসিমকে গ্রেপ্তার হয়েছে।    

শিবগঞ্জ সীমান্তে ৩১ ভারতীয় স্মার্ট ফোন উদ্ধার

শিবগঞ্জ সীমান্তে ৩১ ভারতীয় স্মার্ট ফোন উদ্ধার ভারতীয় সীমান্তে পড়ে থাকা ৩১টি মালিবহিন স্মার্ট ফোন উদ্ধার করেছে বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। গতকাল রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের জমিনপুর গ্রামের একটি মাঠ থেকে জব্দ করা হয়। আজ সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে মহানন্দা ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন,সীমান্তে চোরাচালান বন্ধসহ অবৈধ অনুপ্রেবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি সদস্যরা। এরই মাঝে চোরাকারবারিরা মোবাইল ফোনগুলো পাচার করার সময় বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে একটি ব্যাগ তল্লাশী চালিয়ে ৩১টি ভারতীয় মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। জব্দ করা মোবাইল ফোনগুলো কাষ্টমসে জমা দেয়া হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিশুর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ বিষয়ক পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিশুর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ বিষয়ক পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিশুর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ বিষয়ক জেলাপর্যায়ের পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে ‘শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামুলক প্রচার কার্যক্রম’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জেলা তথ্য অফিস এই সভার আয়োজন করে। ইউনিসেফ-বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তায় আয়োজিত সভাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক ও সরকারের উপসচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও। প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও বলেন, “একজন শিশু যখন দেশের মধ্যে জন্মগ্রহণ করে তখন সে দেশের সম্পদে পরিণত হয়। তার ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব তখন রাষ্ট্রের হয়ে যায়। এই শিশুদের নির্যাতন ও বাল্যবিয়ের কারণে দেশের মুখ যেন মলিন না হয়।” তিনি বলেন, “শুধু আইন প্রয়োগের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে রোধ করা সম্ভব হবে না। আইন মানতে হবে।” তিনি বলেন, “মাথা যার, ব্যথা তার। অর্থাৎ যার সন্তান, তাকেই বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে হবে। আর আমরা যারা বাল্যবিয়ে বন্ধে কাজ করছি তাদেরকে সম্মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে।” বাল্যবিয়ে মুক্ত একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি। সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাহমুদুর রশিদ বলেন, বাল্যবিয়ের কারণে একজন কিশোরী যখন মা হন এবং সেই মায়ের যখন স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসব করানো হয় তখন অনেক সময় সেই মায়ের প্র¯্রাব ও পায়খানার পথ একীভূত হয়ে যায়। ফিস্টুলা রোগ হয়। ফলে সেই মায়ের অনবরত প্র¯্রাব-পায়খানা হতে থাকে। এর ফলে তার শরীর দিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। এতে তার স্বামীসহ শ^শুরবাড়ির লোকেরা বিরক্ত হয় এবং একটা সময় সেই কিশোরী মাকে তালাক দিয়ে দেয়। একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেনÑ এমনই এক কিশোরী মাকে তালাক দেয়ায় তিনি বাপের বাড়ি চলে আসেন। কিন্তু সেখানে তার ঠাঁই হয়েছে গোয়ালঘরের এক কোণায়। কী অমানবিক!, বলেন সিভিল সার্জন। পরামর্শ সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন রাজশাহী পিআইডির উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. তৌহিদুজ্জামান। ধারণাপত্রে তিনি জানান, এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয় বাংলাদেশে এবং বিশে^ আমাদের অবস্থান সপ্তম। আর দেশের মধ্যে পিরোজপুরের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাল্যবিয়ে হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে। এখানে বাল্যবিয়ের হার ৬৫ শতাংশ। এসময় তিনি বাল্যবিয়ের ফলে সৃষ্ট স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জনসংখ্যা, অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন খাতের সমস্যা তুলে ধরেন এবং বাল্যবিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন। জেলা তথ্য অফিসার রূপ কুমার বর্মণের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আবুল কালাম সাহিদ। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিপ্তরের উপপরিচালক সাহিদা আখতার, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, রেডিও মহানন্দার টেকনিক্যাল অফিসার রেজাউল করিমসহ অন্যরা। সভায় অংশগ্রহণকারীরা বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ, প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচারণা বাড়ানো, জন্মনিবন্ধনে বয়স পরিবর্তন রোধ, জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতি বাড়ানো, সরকারি প্রণোদনার ব্যবস্থাসহ বিবিধ সুপারিশ পেশ করেন। অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, ইমাম, পুরোহিত এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

নাচোলে ছুরিকাঘাতে ২ কিশোর নিহতের ঘটনায় ২ জন গ্রেপ্তার

নাচোলে ছুরিকাঘাতে ২ কিশোর নিহতের ঘটনায় ২ জন গ্রেপ্তার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে ২ জন কিশোর নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪ জন। নিহতরা হলেন- নাচোল উপজেলার খলসী গ্রামের মো. এজাবুলের ছেলে মো. মাসুদ (২০) ও চাঁনপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে রায়হান (১৪)। গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুর গরুর হাটের মাছ বিক্রির টিনশেডের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহতরা হলেন- খলসী গ্রামের জালালের ছেলে মো. সুমন (১৮), মো. আলমের ছেলে মো. রজব আলী ওরফে রনি (১৪), মো. রব্বানী ওরফে পাতুর ছেলে মো. আরমান (১৬) ও ফিরোজের ছেলে মো. ইমন (১৫)। বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফ করেন তিনি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, প্রায় ১৫ দিন আগে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের খলসী গ্রামের একটি পেয়ারা বাগানে স্থানীয় লেবার সরদার সালাম ও সাধারণ লেবার শাহীন পলিথিন (পিপি) বাঁধার কাজ করছিল। কাজ করাকালীন কোনো এক সময়ে শাহীন গোপনে লেবার সরদার সালামের প্রসাব করার ভিডিও ধারণ করে এবং সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেয়। বিষয়টি সালামের নজরে এলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আবুল কালাম সাহিদ আরো বলেন- মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মল্লিকপুর গরুরহাটে মল্লিকপুর শহীদ জিয়া স্মৃতি সংঘ আয়োজিত বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে আগে থেকেই শাহীন ও তার লোকজন ধারালো অস্ত্রসহ নিয়ে ওঁতপেতে ছিল। সেই অনুষ্ঠানে সালাম ও তার লোকজন গেলে শাহীন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা সালাম ও তার লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৬ জনকে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা তাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করে। পথে আহত মাসুদ ও রায়হান মৃত্যুবরণ করে। আহত সুমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বাকি ৩ জন প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন। সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিমের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখা এবং নাচোল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নাচোল থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চালিয়ে হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে মল্লিকপুর গ্রামের বাহার আলী মন্ডলের ছেলে মো. আজিজুল হক (৫২), মো. এজাবুলের ছেলে মো. তাসিম (৩২)কে গ্রেপ্তার করে। হত্যাকা-ে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। প্রেস ব্রিফিংয়ে নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ রইস উদ্দিনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চলতি বছর বিদেশে গেছেন ৭ হাজার ৬৯৩ জন কর্মী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চলতি বছর বিদেশে গেছেন ৭ হাজার ৬৯৩ জন কর্মী ‘প্রবাসীর অধিকার-আমাদের অঙ্গীকার, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ-আমাদের সবার’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপন করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসন এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। স্থানীয় সরকার চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক ও সরকারের উপসচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁওয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন- জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন- অভিবাসনের ক্ষেত্রে আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ বা সমস্যা হলো নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা। আমরা যদি নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে পারি তাহলে এটি ব্যক্তিপর্যায়ে যেমন নিরাপদ হবে, পরিবারের পক্ষেও নিরাপদ হবে, তেমনি সামগ্রিকভাবে দেশ লাভবান হবে। আমাদের বাংলাদেশ থেকে যারা প্রবাসে যান অভিবাসী হিসেবে, তাদের প্রায় সবাই অদক্ষ লেবার বা শ্রমিক হিসেবে যান। আবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যার যে বিষয়ে অভিজ্ঞতা নেই, ওই জাতীয় কাজ তিনি কখনোই করেননি, তেমন কাজই তাদের বিদেশে গিয়ে করতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসক বলেন- সাইপ্রাসে প্রধান কাজ হলো সমুদ্রে মাছ ধরা। কিন্তু যার মাছ ধরার দক্ষতা নেই, সে কি করে মাছ ধরবে? এই জন্য যখন আমরা দেশ থেকে বিদেশে যাবো, তখন খুব সতর্কতার সাথে জানতে হবে যে, ওই দেশে গিয়ে আমি কি কাজ করব? তিনি বলেন, যারা যাচ্ছেন, তাদের করণীয় হলো, তার ভিসার কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা, রিক্রুটিং এজেন্সিটি বৈধ কিনা, তারা সঠিকভাবে নিয়ে যাবে কিনা, নিয়োগকর্তার সাথে কোনো কন্ট্রাক্ট আছে কি না, অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে কিনা, কত টাকা বেতন দেয়া হবে, কি কি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে তা চুক্তিপত্রে আছে কিনা- এইসব বিষয় জেনে নিতে হবে। নইলে বিদেশে গিয়ে বিপদে পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। এজন্য জেনে-বুঝে বিদেশ যেতে হবে। যদি দক্ষ হয়ে বিদেশ যাওয়া যায়, তাহলে এখন যে পরিমাণ টাকা আনতে পারছে তখন এর থেকেও বেশি আনা যাবে। জেলা প্রশাসক বলেন, সরকার চেষ্টা করছে, পৃষ্ঠপোষকতা করছে। আপনাদের বিএমইটি, টিটিসির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি আছে, বোয়েসেল আছে, সেখানে একদম ন্যূনতম ব্যয়ে আমরা বিদেশ যেতে পারব। আমাদের জানতে হবে, কোথায় গেলে আমরা এই সেবাগুলো পেতে পারি। আপনারা নিজেরা জানবেন, অন্যদের জানতে ও জানাতে সহযোগিতা করবেন। তাহলে কেউ প্রতারিত হবেন না। আর দালালচক্রের মাধ্যমে কেউই বিদেশ যাবো না। নিজে দক্ষ হবো, প্রশিক্ষিত হবো তারপর বিদেশ যাবো। আব্দুস সামাদ বলেন- শুধুমাত্র দক্ষতা অর্জন করে বিদেশ যাবার কারণে ফিলিপাইনের প্রবাসীরা অনেক বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেন। পক্ষান্তরে আমাদের কর্মীদের দক্ষতা না থাকায় অনেক বেশি লোক বিদেশে যাবার পরও তাদের থেকে অনেক কম মুদ্রা আয় করেন। কাজেই যে কাজে যাবেন, সেই কাজটির বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে বৈভাবে বিদেশে যাবেন, তাহলে বেশি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম হবেন। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র-টিটিসির অধ্যক্ষ মো. মঈন উদ্দিন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক চাঁপাইনবাবগঞ্জের দ্বিতীয় কর্মকর্তা কার্ত্তিক কুমার প্রাং। সূচনা বক্তব্যে অভিবাসন সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মো. আখলাক-উজ-জামান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির মানবপাচার প্রতিরোধ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক দুরুল ইসলাম, ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর আশিকুজ্জামান, সফল প্রবাসী মনিরুল ইসলাম। পরে একজন ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান করা হয়। এর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে এ উপলক্ষে র‌্যালি বের করা হয়। জেলা প্রশাসন এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসসহ কর্মসূচিতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি ও ব্র্যাক অংশগ্রহণ করে। জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মো. আখলাক-উজ-জামান জানান, গত একযুগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে ৬২ হাজার ৯৩৩ জন কর্মী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের জন্য পাড়ি জমিয়েছেন। তার মধ্যে ২০১৫ সালে গেছেন ৪ হাজার ৫৩৮ জন, ২০১৬ সালে ৫ হাজার ৬৮৩ জন, ২০১৭ সালে ৬ হাজার ৬০২ জন, ২০১৮ সালে ৬ হাজার ৮৮৯ জন, ২০১৯ সালে ৫ হাজার ৬১২ জন, ২০২০ সালে করোনা মহামারির বছরে কমে গিয়ে বিদেশ যান ১ হাজার ৮৮১ জন, ২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন দেশে যান ৪ হাজার ২৬২ জন, ২০২২ সালে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে বিদেশ যান ৯ হাজার ১১৪ জন কর্মী, ২০২৩ সালে ১০ হাজার ৬৫৯ জন এবং চলতি বছর নভেম্বর মাস পর্যন্ত বিদেশে গেছেন ৭ হাজার ৬৯৩ জন। কানসাটে ফুটবল খেলা : কানসাটে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে কানসাট ফুটবল মাঠে খেলার উদ্বোধন করেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মো. আখলাক-উজ-জামান। খেলার ধারাবিবরণী দেয়ার সময় দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ও নিরাপদ অভিবাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন স্লোগান প্রচার করা হয়। খেলা শেষে বিজয়ী ও বিজিত দলকে পুরস্কার দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- শিবগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার মো. আব্দুল তৈয়াব, কানসাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেফাউল মূলক, মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুর রহমান, কানসাট ক্লাবের সভাপতি মো. শহিদুল হক হাইদারী ও প্রয়াসের এফএসটিআইপি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. দুরুল ইসলাম। উইনরক ইন্টারন্যাশনাল ও ইউএসএআইডির আর্থিক সহায়তায় প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির এফএসটিআইপি প্রকল্পের অধীনে এই খেলার আয়োজন করা হয়।

প্রয়াসের স্মার্ট প্রকল্পের ঋণ বিতরণ ও অবহিতকরণ সভা

প্রয়াসের স্মার্ট প্রকল্পের ঋণ বিতরণ ও অবহিতকরণ সভা গোমস্তাপুরের আড্ডায় সাসটেইনেবল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ট্রান্সফরমেশন (স্মার্ট) প্রকল্পের অববিহতকরণ সভা ও ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)’র সহযোগিতায় স্মার্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি। আজ সকালে প্রয়াসের ইউনিট-৩০ আড্ডা অফিসে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রয়াসের পরিচালক পঙ্কজ কুমার সরকার। স্মার্ট প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক ও স্মার্ট প্রকল্পের ফোকাল পার্সন ফারুক আহমেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন- প্রয়াসের সহকারী পরিচালক জুলফিকার আলী, কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ ও শাহাদাৎ হোসেন, ইউনিট-৩০ ব্যবস্থাপক রাজিবুল ইসলাম, স্মার্ট প্রকল্পের টেকনিক্যাল অফিসার রিফাত আমিন হিরা, পরিবেশ কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ, এমআইএস ও ডকুমেন্টেশন অফিসার মোমেনা ফেরদৌসসহ অন্যরা। এসময় দুজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে ঋণের চেক বিতরণ করা হয় এবং উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে স্মার্ট প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হয়। স্মার্ট প্রকল্প নিয়ে প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর, শিবগঞ্জ, নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলা এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলায় কার্যক্রম বাস্তাবায়ন করবে। এই প্রকল্পের মেয়াদকাল ৪ বছর। এর মাধ্যমে লক্ষিত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ১ হাজার ৫০০ জনকে ঋণ, অনুদান এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রিসোর্স ইফিশিয়েন্ট অ্যান্ড ক্লিনার প্রোডাকশন (আরইসিপি) চর্চার মাধ্যমে আম উৎপাদনকারী/ আমচাষি / আম ব্যবসায়ী / আম প্রক্রিয়াজাতকারী (আমসত্ব, আচার, ম্যাংগোবার, ম্যাংগোজুস, ম্যাংগো পাউডার)/ আমবাজারতাকারী (দেশ ও বিদেশ)/ আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণে সরঞ্জাম বা মেশিনারিজ যানবাহন/নার্সারি/ জৈব সার উৎপাদন ও বাজারজাতকারী অর্থাৎ আমের সাথে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাগণ এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত হবে।b

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বিজয় সংবর্ধনা, বিজয় মেলা উদ্বোধনসহ নানা আয়োজনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে উদযাপিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। আজ সূর্যোদযের সাথে সাথে পুরাতন স্টেডিয়ামে ৩১ বার তোপধ্বনি ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপরই জেলা প্রশাসক কার্ডালয় চত্বরে জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা সংবলিত স্মৃতিফলকের বেদীতে জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, পুলিশ সুপার রেজাউল করিমের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ, প্রধান নির্বাহী(উপ-সচিব) আফাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে জেলা পরিষদ, পৌর প্রশাসক(উপ-সচিব) দেবেন্দ্র নাথ উর^াও এর নেতৃত্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তর, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক,সামাজিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ  পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পরে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক ও সরকারের উপসচিব দেবেন্দ্রনাথ উরাওয়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের সবাইকে বৈষম্যহীন সবাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী, সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাহমুদুর রশীদ ও পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফাজ উদ্দীনসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ। আলোচনা শেষে দোয়া পরিচালনা করা হয়। সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা শেষে স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে ২দিনব্যাপী বিজয়মেলার স্টল পরিদর্শন করেন অতিথিরা। শিবগঞ্জে যথাযথ মর্যদায় মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ সকালে উপজেলা চত্বরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের সংবর্ধণা দেয়া হয়। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফতাবুজ্জামন আল ইমরানের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, বীর মুত্তিযোদ্ধা তসলিম উদ্দিন, তরিকুল আলম, বজলার রশিদ সনু, জোবায়ের আলী, আব্দুল মান্নান, আব্দুল হামিদসহ অন্যরা। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তৌফিক আজিজ, শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর প্রধান, শিক্ষক ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধিগণ। এর আগে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, উপজেলা চত্বরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর প্রধান, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আলোচনার শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের ফুলেল  শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সম্মাননার ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অন্যদিকে, বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে গোমস্তাপুরে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন, রহনপুর আহম্মদী বেগম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্রতিকী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবার সদস্যদের সংবর্ধনা, মসজিদ মন্দির ও গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনা, খেলাধূলা, আলোচনাসভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া ওই মাঠে বিজয় মেলার ১৬টি স্টল অংশ নেয়। পরে রহনপুর আহম্মদী বেগম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত আনজুম অনন্যা। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বীরমুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী, আকতার আলি কচি খান ও তোজাম্মেল হোসেন সাপাটু, গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল বাশার, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আতিকুল ইসলাম আজম। এ সময় সরকারী কর্মকর্তা, বীরমুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষার্থীরা। আলোচনা শেষে চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতার বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন : জাহাঙ্গীরের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন ও বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি চাঁপাইনবাবগঞ্জে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২৪ ও বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ৫৩তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল জেলা শহরের রেহাইচর এলাকায় মহানন্দা নদীঘেঁষা সড়ক ভবনের ভেতরে অবস্থিত ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের শাহাদৎস্থলে পূষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত করা, শিবগঞ্জ উপজেলার ছোট সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর ও মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন ৭ নং সেক্টর কমান্ডার শহিদ মেজর নাজমুল হকের সমাধিতে এবং সোনামসজিদ বালিয়াদীঘি এলাকায় গণকবরে পূষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত করা। আজ সকাল ৯টায় ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের শাহাদৎস্থলে পূষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ, পুলিশ সুপার রেজাইল করিম, জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক দেবেন্দ্রনাথ উঁরাও, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাকিব হাসান তরফদার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছমিনা খাতুন, ক্যাপ্টেন জাহঙ্গীরের ভাগিনা মো. নাজমুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান টুলু, তরিকুল ইসলাম, খাইরুল ইসলামসহ অন্যরা। এছাড়াও শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস ও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ। পরে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও শিবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের আয়োজনে ঐতিহাসিক সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের সমাধিস্থলে ও গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবর জিয়ারত ও দোয়া মোনাজাত করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ, জেলা পুলিশ সুপার রেজাউল করিম, শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার আফতাবুজ্জামান আল ইমরানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সোনামসজিদ প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযোদ্ধা পতাকা উত্তোলন করা হয়। উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ঠিক আগ মূহুর্তে এই দিনে সম্মুখ সমরে এই রেহাইচরে শত্রু সেনার বুলেটে প্রাণ বিসর্জন দেন ক্যাপ্টেন জাহঙ্গীর। পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তাঁকে সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়। এদিকে, গোমস্তাপুর ও নাচোল উপজেলাতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।   চাঁপাইনবাবগঞ্জে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন ও বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি (ছবি)

ঢাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোরাম’র প্রীতি সমাবেশ

ঢাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোরাম’র প্রীতি সমাবেশ ঢাকায় ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোরাম’র প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকাস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাবাসীদের সংগঠন ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোরাম’ এই প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করে। আজ সকাল ৯ টায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (কাকরাইল, ঢাকা) এর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, রাষ্ট্রপতির সাবেক সামরিক সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল ড. আমিনুল করিম রুমি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, সমন্বয়ক সাদিক কাইউম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক এমপি লতিফুর রহমান, রাজউক এর প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার নুরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলামসহ অন্যরা। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী দেলওয়ার হোসেন। পরে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিহত শহিদ পরিবার ও আহতদের মধ্যে আর্থিক উপহার ও কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উপহার সামগ্রী এবং সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শীতার্ত মানুষের মাঝে ৫৯ বিজিবি’র শীতবস্ত্র বিতরণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শীতার্ত মানুষের মাঝে ৫৯ বিজিবি’র শীতবস্ত্র বিতরণ চাঁপাইনবাবগঞ্জে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নে অবস্থিত ৫৯ বিজিবি মহানন্দা ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর এলাকার স্থানীয় শীতার্ত জনসাধারণের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আজ দুপুর ১টার দিকে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজিবি’র রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে রউফ। উপস্থিত ছিলেন ৫৯বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া, ব্যাটালিয়ন সহকারী পরিচালক বেলাল হোসেন সহ বিভিন্ন পদমর্যাদার বিজিবি সদস্যরা। অনুষ্ঠানে ১৫০ জন মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। বিতরণ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সেক্টর কমান্ডার ও ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক। তাঁরা বলেন, প্রতিবছরই সদর দপ্তর এলাকায় এবং সীমান্তের দূর্গম এলাকায় মানবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এবরাও তারই ধারাবাহিকতায় এই আয়োজন করা হয়েছে। বিজিবি’র এমন মানবিক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যহত থাকবে।