01713248557

বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু করা হবে না: ধর্ম উপদেষ্টা

বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু করা হবে না: ধর্ম উপদেষ্টা বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছু করবে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন ইস্যুতে তিনি এ কথা বলেন। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়ায় আল মারকাজুল ইসলামী আস সালাফি মাদরাসা পরিদর্শন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করা একটি বিতর্কিত ইস্যু। এটি বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কিছুতে আমরা হাত দেবো না। তিনি বলেন, মাদরাসা শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে যুক্ত নয়। বিভিন্ন গোয়েন্দা রিপোর্টে যা প্রমাণিত। বরং তারা জাতীর দুর্দিনে সবার আগে এগিয়ে আসে। জাতীয় উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। তাই তাদের এখন বড় স্বপ্ন দেখতে হবে। দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে হবে। তিনি আরও বলেন, মসজিদ, মন্দির এবং মাজারে হামলা গর্হিত কাজ। ধর্মীয় উপাসনালয়ে যারা হামলা চালায় তারা মানবতার শত্রু। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য দেশে বিক্ষিপ্তভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

গণভবন পরিদর্শন শেষে যা বললেন উপদেষ্টারা

গণভবন পরিদর্শন শেষে যা বললেন উপদেষ্টারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবন পরিদর্শন করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে তারা তিনজন গণভবন পরিদর্শনে যান। প্রায় এক ঘণ্টা পরিদর্শন শেষে গণভবনের গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিন উপদেষ্টা। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমাদের কেবিনেট মিটিং ছিল। সেখানে গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ও শেখ হাসিনার শাসনকালে জনগণের ওপর যে অত্যাচার, গুম, খুন, নিপীড়নের স্মৃতি এই সংরক্ষণ করে গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হবে এবং জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। আজকে আমরা সেই উদ্দেশেই প্রাথমিকভাবে গণভবন পরিদর্শনে এসেছি। গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করতে স্থাপত্যশিল্পী, আর্কিটেক্ট ও বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরু করব। তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাকা, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের কেবিনেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে, গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর’- এ রূপান্তর করা হবে। যেহেতু ৫ আগস্ট জনগণ গণভবন জয় করেছে এবং অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের ভেতর দিয়ে আমরা ৫ আগস্টের মুহূর্তটি পেয়েছি। ফলে সেটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং জনগণের বিজয়কে ধারণ করার উদ্দেশে এই গণভবনকে জাদুঘরে পরিণত করা হবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবীর বুকে আমরা এটিকে একটি নিদর্শন হিসেবে রাখতে চাই। যে যেকোনো স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, খুনি রাষ্ট্রনায়কদের আসলে কী পরিণতি হয় এবং জনগণই যে আসল ক্ষমতার মালিক সেই বিষয়টিকে একটি নিদর্শন হিসেবে পুরো পৃথিবীর বুকে রাখার জন্য আমরা এই গণভবনকে সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই উদ্দেশে আজকে আমাদের প্রাথমিক পরিদর্শন ছিল। তিনি আরও বলেন, এখানে যারা দায়িত্বরত আছেন, গণপূর্ত ও স্থাপত্য বিভাগের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের থেকে আমরা প্রাথমিক পরামর্শ নিয়েছি। আমরা আমাদের আকাঙ্ক্ষাগুলো বলেছি যে, আমরা কীভাবে এটাকে দেখতে চাই এবং একটি ফরমাল কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হয়ত আগামীকালের মধ্যে কমিটি হয়ে যাবে। কমিটি হলে হয়ত আমরা পরবর্তী সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করব। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা যেন এ জাদুঘর উদ্বোধন করতে পারি, সেজন্য খুব দ্রুত গতিতে কাজ সম্পাদন করার জন্য বলা হয়েছে। কমিটিতে কারা থাকবেন এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, কমিটিতে যারা বিশেষজ্ঞ রযেছেন, স্থাপত্য ও জাদুঘর বিশেষজ্ঞ, আর্টিস্ট, বিদেশে যারা জাদুঘর বিশেষজ্ঞ বা অভ্যুত্থান স্মৃতি ও জাদুঘর করার অভিজ্ঞতা আছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও পরামর্শ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। জাদুঘরে কি থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে প্রথমত ৩৬ দিনের অভ্যুত্থানের স্মৃতি, দিনলিপি থাকবে। যারা এই আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মৃতি থাকবে, তালিকা থাকবে এবং এই আন্দোলন ছাড়াও গত ১৬ বছরে যে নিপীড়ন হয়েছে, যারা গুম হয়েছেন, যাদের বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা থাকবে। এই সকল বিষয়ের একটি রিপ্রেজেন্টেশন থাকবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গণভবন যে ভগ্নাবশেষ অবস্থায় রয়েছে, সেটিকে সর্বোচ্চ সেই অবস্থায় রেখে জাদুঘরটি করা হবে। এখানে কিছু ডিজিটাল রিপ্রেজেন্টেশন থাকবে। পরবর্তী সরকারপ্রধান যিনি হবেন, তার বাসভবন কোথায় হবে জানতে চাইলে এই উপদেষ্টা বলেন, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা হবে। এখন আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যমুনায় থাকবেন। গণভবন পরিদর্শন করে কী দেখলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন আমরা ভেতরে প্রচুর দেওয়াল লিখন, গ্রাফিতি দেখেছি। লুটপাট হওয়া অনেক আসবাবপত্র আবার মানুষ রেখে গেছেন, সেগুলোও সংরক্ষিত রয়েছে। মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে চারদিকে ভাঙচুর অবস্থা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো এই ক্ষোভগুলোকে যথাসম্ভব ইনটেক রেখেই জাদুঘর করার।

৭ সফরসঙ্গী নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন ড. ইউনূস

৭ সফরসঙ্গী নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন ড. ইউনূস জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যাবেন অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সফরে তার সঙ্গে থাকবেন ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল। আগামী ২২-২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সফর করবেন তিনি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তৌহিদ হোসেন জানান, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে সংক্ষিপ্ত সফরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিউইয়র্কে যাবেন। এ সময় তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যাচ্ছেন সেটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তিনি খুব সংক্ষিপ্ত সফর করে চলে আসবেন।

রবিবার থেকে সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন নতুন সময়সূচী

রবিবার থেকে সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন নতুন সময়সূচী আগামী ৮ সেপ্টেম্বর রবিবার থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ থাকবে। প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের দীর্ঘ অবকাশকালে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর হতে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত আপিল বিভাগের অফিসের সময়সূচি রবিবার হতে বৃহস্পতিবার (সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি ব্যতীত) কার্যকাল সকাল ৯টা হতে বেলা ৩টা পর্যন্ত। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকছে। অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের ভেকেশন জজ মনোনিত করার কথা জানিয়ে এতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতির কোর্টের অবকাশকালে আপিল বিভাগের মামলা সংক্রান্ত জরুরি বিষয়াদি নিষ্পত্তির জন্য ভেকেশন জজ হিসেবে বিচারপতি রেজাউল হককে মনোনীত করেছেন।

তিস্তার পানি আমাদের অধিকার বলেছেন ড. ইউনূস

তিস্তার পানি আমাদের অধিকার বলেছেন ড. ইউনূস অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমাদের তিস্তা নদীর পানি পাওয়ার অধিকার আছে। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করবো। দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত বিষয়টি ঝুলে থাকার কারণে কোনো দেশেরই লাভ হচ্ছে না। সম্প্রতি ঢাকায় নিজ বাসভবনে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেন ড. ইউনূস।

বন্যার্তদের জন্য ৪০ লাখ ডলার সহায়তা বরাদ্দ করেছে জাতিসংঘ

বন্যার্তদের জন্য ৪০ লাখ ডলার সহায়তা বরাদ্দ করেছে জাতিসংঘ বাংলাদেশে বন্যার্ত মানুষের জন্য ৪০ লাখ ডলার সহায়তা বরাদ্দ করেছে জাতিসংঘ। গত বুধবার সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্রের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে পাঠ করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক ব্রিফিংয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতিটি পাঠ করেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী জয়েস এমসুয়া সংস্থার নিজস্ব কেন্দ্রীয় জরুরী সহায়তা তহবিল (সিইআরএফ) নামক মানবিক সহায়তা তহবিল থেকে বাংলাদেশের জন্য এ বরাদ্দ দিয়েছেন। গত মাসের শেষ থেকে বাংলাদেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষকে সহায়তার জন্য এ অর্থ খরচ করা হবে।  

গণভবনকে জাদুঘর করে উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত

গণভবনকে জাদুঘর করে উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’-এ রূপান্তর করে তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকের পর সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সাংবাদিকদের এ কথা জানান। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের যে গণভবন এটি আসলে কখনো এর যে নাম, গণভবন হয়ে উঠতে পারেনি। এই গণভবনকে যেহেতু ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জয় করেছে এটিকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি, শহীদদের স্মৃতি, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে যত অন্যায়-অবিচার হয়েছে সব কিছুর স্মৃতি সংরক্ষণ করার জন্য গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। আসিফ মাহমুদ বলেন, খুব দ্রুতই এটা নিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে। জনগণ যেভাবে বিজয় করেছে এটিকে সেই অবস্থাতেই রাখা হবে। এর ভেতরে আমরা একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করবো। যাতে এই অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে জুলাইয়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এই আন্দোলন দমনে তৎকালীন শেখ হাসিনার সরকার আগ্নেয়াস্ত্রের বাড়াবাড়ি রকমের ব্যবহার করে বলে অভিযোগ ওঠে। জুলাইয়ের মাঝমাঝিতে কয়েক শ’ ছাত্র-জনতার প্রাণ ঝরে। পরে সেই আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলন দমনে হাসিনার সরকার আরও কঠোর হয়। নির্বিচারে হত্যা করে ছাত্র-জনতাকে। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ওই সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে চলে যান।

পদত্যাগ করলেন সিইসিসহ ইসি সদস্যরা

পদত্যাগ করলেন সিইসিসহ ইসি সদস্যরা নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ এবং এই সংক্রান্ত আলোচনার মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে এসে পদত্যাগ করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের এই ঘোষণা দেন সিইসি। সিইসির সঙ্গে চার সদস্য অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশেদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমানও পদত্যাগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমিসহ নির্বাচন কমিশনের সকলেই পদত্যাগের জন্য মনস্থির করেছি। পদত্যাগের কাগজপত্র সচিবের কাছে জমা দিয়েছি। এখন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে সেগুলো জমা দেবেন। সংবাদ সম্মেলনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান ও মো. আলমগীর উপস্থিত থাকলেও  বেগম রাশেদা সুলতানা ও মো. আনিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন না। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নির্বাচন কমিশন সংস্কার ও নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব নির্ধারণ করা থাকলেও মাত্র আড়াই বছরেই বিদায় নিলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০২২ সালে ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের পর সেই আইনের অধীনে প্রথম নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নেন কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচজন। ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।

বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদী মার্চ

বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদী মার্চ বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) সারাদেশে শহীদী মার্চ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কেন্দ্রীয়ভাবে মার্চটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুরু হবে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমম্বয়ক সারজিস আলম।  মার্চে শহীদদের স্মরণ করে ছবি, উক্তিসহ বিভিন্ন স্মারক নিয়ে ছাত্র-জনতাকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।  মার্চটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, কলাবাগান, ধানমন্ডি, সংসদভবন, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ হবে।   সারজিস আলম বলেন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা নিজ জায়গা থেকে শহীদী মার্চে অংশ নেবে। এছাড়া ঢাকা মহানগরসহ দেশের প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শহীদী মার্চ পালিত হবে।  সরকার পতনের এক মাসের পূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনের শহীদদের ছবি থাকতে পারে। যে কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছে, সেসব কথা প্ল্যাকার্ডে থাকতে পারে। এছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে কী চাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছে কী চাই—এসবও থাকতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমম্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, আবু বাকের মজুমদার, লুৎফর রহমান, তরিকুল ইসলাম, হাসিব আল ইসলামসহ প্রমুখ।

সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ‘মার্চিং অর্ডার’

সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ‘মার্চিং অর্ডার’  সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ‘মার্চিং অর্ডার’ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশনা দেন। উপদেষ্টার নির্দেশনাগুলো হলো:   ১. সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ‘মার্চিং অর্ডার’ দিয়েছেন। ২. সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণ করতে হবে। ৩. জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়ার যে প্রত্যয়, যে ভয়হীন চিত্ত আমাদের উপহার দিয়েছে, তার ওপর দাঁড়িয়ে বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। ৪. নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গৎবাঁধা চিন্তা-ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে, চিন্তার সংস্কার করে, সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। ৫. দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে, সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। ৬. সরকারি অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ৭. সরকারি ক্রয়ে যথার্থ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দুর করতে হবে। ৮. সৃষ্টিশীল, নাগরিক-বান্ধব মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচির সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে, যা নিয়মিত মূল্যায়ন/পরিবীক্ষণ করা হবে। ৯. ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আগ্রহ, ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাতে হবে।