কোরবানী ঈদ উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-পদ্মাসেতু-ঢাকা রুটে ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চলাচল শুরু
আসন্ন কোরবানী ঈদ উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-পদ্মাসেতু-ঢাকা রুটে চতুর্থ বছরের মত ৩দিনের জন্য ক্যাটল ষ্পেশাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ষ্টেশন থেকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ট্রেনটি গত সোমবার(১০জুন) ম্যাংগো ষ্পেশাল ট্রেনের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলেও বুধবার প্রথম কোরবাণী পশু বহন শুরু করল। এ বছর আম মৌসুমে কোরবাণী ঈদ হওয়ায় ট্রেনটি ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনের সাথে একত্রে চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন রেল কর্মকর্তারা। এজন্য একটি নতুন অত্যাধুনিক প্রতিটি ২৮টনের ৬ ওয়াগনের ট্রেন দিয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। প্রয়োজনে ওয়াগন সংখ্যা বাড়ানো হবে।
প্রথম দিন ট্রেনটি ৪ ওয়াগন ভর্তি গরু-খাসি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মধ্যে অধিকসংখ্যকই গরু (৭১টি) ও অল্প কয়েকটি ছাগল রয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ষ্টেশন মাষ্টার ওবাইদুল্লাহ। তিনি বলেন, ৪টি ওযাগন সম্পূর্ণ বুক হয়েছে। প্রতি ওয়াগনের ভাড়া ১৫হাজার ৪৭০টাকা।সেই হিসেবে প্রতিটি গরুর ভাড়া ৭৭৩.৫০ টাকা। একটি ছাগলের ভাড়া এর অর্ধেক। অর্থ্যাৎ দুটি ছাগল বা একটি গরুর ভাড়া একই। কোন ব্যবসায়ী বা খামারীকে একটি ওয়াগনের পুরোট্ইা ভাড়া করতে হবে। রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষুদ্র খামারী ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয় করে দিচ্ছেন ওয়াগন ভাড়ার সুবিধার্থে। কারণ পশু পরিবহন কম করলেও ওয়াগণের পুরো ভাড়া দিতে হবে। বুধবার চরটি ওয়াগন ভাড়া করেছেন ঢাকার ফয়সাল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের শামীম মুন্সি, পান্না ও মাসুদ রানা নামে চার ব্যবসায়ী। সকলের গন্তব্য ঢাকার শাজাহানপুর,কমলাপুর ও সংলগ্ন পশুর হাট। শামীম মুন্সি বলেন, তিনি এর আগেও গত তিন মৌসুমে ট্রেনে গরু নিয়ে ঢাকা গেছেন। রেলের নিরাপত্তা, ভাড়া ও ব্যবস্থপনায় তিনি সন্তুষ্ট। অন্য ব্যবসায়ীদেও প্রায় একই অভিমত। তবে ট্রেনে পাওয়ার কার না থাকায় ওয়াগনগুলোতে ফ্যান থাকলেও চলছে না। এতে গরমে কষ্ট হচ্ছে পশু এবং সাথের রাখাল ও ব্যবসায়ীদের। বৃহস্পতিবারের(১৩জুন) জন্য ২টি ওয়াগন আগাম বুক হয়েছে।
রেলের পাকশী বিভাগের বানিজি্িযক কর্মকর্তা নাসিরুদ্দিন জানান, এটি রেলের সেবামুলক পরিবহন। লাভ বিবেচনায় এসব ট্রেন চালানো হচ্ছে না । তবে এটি একসময় লাভজনক যেন হয় সে চেস্টাও রয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত ২০২১ সালে প্রথম ক্যাটল ট্রেন ১৭ জুলাই থেকে ১৮জুলাই পর্যন্ত দুদিন চলে। পরিবহন করে ১১২টি ছাগল ও ১৩১টি গরু। আয় হয় ৯২হাজার ৩০ টাকা। ২০২২ সালেও দুদিন চলে ট্রেনটি ১৬০টি ছাগল ও ৩৬টি গরু পরিবহন করে। আয় হয় ৪২ হাজার ১২০ টাকা। ২০২৩ সালের ২৪ জুন থেকে ২৫জুন পর্যন্ত দুদিন চলে পরিবহন করে ১৬১টি ছাগল ও ৭৮টি গরু। আয় হয় ৮৬ হাজার ৮৪০ টাকা। গত তিনবার ভাড়া একই ও কিছু কম ছিল। এবার সামাণ্য্য বাড়ানো হয়েছে। গত তিন মৌসুমের মধ্যে প্রথম দুই মৌসুম ট্রেনটি ম্যাংগো ষ্পেশালের সাথে নয় বরং পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধ সেতু (যমুনা সেতু) দিয়ে পরিচালনা করা হয়েছিল। এবার সর্বাধিক পশু পরিবহন হবে বলে আশা করছেন রেল কর্মকর্তারা। তারা ভবিষ্যতে এসব ট্রেনের আরও সুবিধা বাড়ানোর কথাও বলছেন।