চেন্নাই, কানপুরের পর মিরপুরেও বিধ্বস্ত বাংলাদেশ
হারের চিত্রনাট্য লেখা হয়ে গেছে প্রথম ইনিংসেই। ব্যাটারদের ব্যর্থতার মিছিলের পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনশর বেশি রান করেও হার ঠেকানো যায়নি। তৃতীয় দিনই শেষ হতে পারতো ম্যাচ। সেটা না হওয়ায় বৃষ্টিকে ধন্যবাদ দিতে পারে বাংলাদেশ। চেন্নাই থেকে কানপুর হয়ে মিরপুর; দেশ বদলায়, বদলায় ভেন্যু, কিন্তু বদলায় না ফল কিংবা পারফরম্যান্স। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশ হারে ৭ উইকেটে। চতুর্থ দিন মাত্র ১০৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম সেশনেই ৩ উইকেট হারিয়ে জিতে যায় প্রোটিয়ারা। কদিন আগেই ভারতের বিপক্ষে চেন্নাইয়ে চতুর্থ দিনে হারের পর কানপুরে দুইদিন বৃষ্টির পেটে গেলেও বাংলাদেশের হার ঠেকানো যায়নি। ঘরের চেনা মাঠ মিরপুরও যেন ঠিক তাই। দুই ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে গেলো। দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। সাকিব আল হাসানের আসা না আসাকে ঘিরে এই টেস্ট ছিল আলোচনার কেন্দ্রতে, নিরাপত্তার চাদরে ঢীক রাখা হয়েছিল শের-ই-বাংলার আশপাশ। বাইরে তুমুল আলোচনা থাকলেও মাঠের ক্রিকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর দল শুধু সমালোচনাই উপহার দিয়ে যাচ্ছেন।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রান করে স্বাগতিক শিবির। বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকা তোলে ৩০৮ রান। ২০২ রানে পিছিয়ে খেলতে নেমে বাংলাদেশ তোলে ৩০৭ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০৬। ত্রিস্টান স্টাবস ৩০ ও রায়ান রিকেলটন ১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন টনি ডি জর্জি। অধিনায়ক এইডেন মার্করামের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। ডেবিড বেডিংহ্যাম করেন ১২ রান। ৩ উইকেটই জমা হয় প্রথম ইনিংসে ফাইফার পাওয়া তাইজুল ইসলামের ঝুলিতে। সব মিলিয়ে তিনি পেয়েছেন ৯টি উইকেট।
এর আগে ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা উড়িয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিরোধ গড়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ-জাকের আলী। দুজনে ১৩৮ রানের জুটি গড়ে পাল্টা আক্রমণে লিড এনে দেন। জাকের আলী অভিষেক ফিফটির পর ফিরলেও মিরাজ ছিলেন ভরসা হয়ে। তৃতীয় দিন ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারলেও চতুর্থ দিন একবারে ভালো যায়নি। দিনের শুরুতে মাত্র ২৫ মিনিটে ৩ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
ইনিংস হার এড়াতে পারাটা বাংলাদেশের সাফল্য বলা যায়। চতুর্থ দিন তৃতীয় বলে নাঈম হাসান ফেরেন ১৬ রানে। নতুন ব্যাটার তাইজুল এসেও টিকতে পারেননি। ৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শেষ ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। আক্ষেপ মাত্র ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি পেলেন না। সর্বোচ্চ ৯৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশি ব্যাটারদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর এটি।
এ ছাড়া মাহমুদুল হাসান জয় ৪০, মুশফিকুর রহিম ৩৩ ও নাজমুল হোসেন শান্ত ২৩ রান করেন। লিটন দাস ব্যর্থ ছিলেন প্রথম ইনিংসের মতো। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৭ রান। রানের খাতা খুলতে পারেননি মুমিনুল হক। ১ রান করেন সাদমান ইসলাম। প্রথম ইনিংসে ৩০০ উইকেটের কীর্তি গড়া কাগিসো রাবাদা নেন সর্বোচ্চ ৬ উইকেট। এ ছাড়া ৩ উইকেট নেন কেশব মহারাজ।