চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি, ২৪ ঘন্টায় পদ্মায় পানি কমেছে ১৫ সেমি ও মহানন্দার ২ সেমি
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা ও মহানন্দার পানি কমতে শুরু করেছে। সামান্য হলেও উন্নতি হতে শুরু করেছে বন্যা পরিস্থিতি। তবে পানি বন্দি মানুষের দূর্ভোগ বাড়িয়েছে গতকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি। আজ সকাল পর্যন্ত জেলায় ২৪ ঘন্টায় গড়ে ৪০ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে কৃষি বিভাগ। স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রায় ১০ দিন তলিয়ে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে হাজার হাজার বিঘা নদী তীরবতী ও নীচু জমির মূলত: মাসকলাই সহ বিভিন্ন কৃষি ফসল। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের সংখ্যা ৬ হাজার ৮১০ জন। পানি হ্রাস অব্যহত থাকলেও যে সব বাড়ি ও স্থাপনা নিমজ্জিত, যে সব পরিবার পানিবন্দি তাদের জীবন যাত্রা স্বাভাবিক হতে কিছু সময় লাগবে। বিশেষ করে তলিয়ে যাওয়া কাঁচা সড়ক চলাচল উপযোগি সহতে সময় লাগবে। যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলো শুরু হতেও সময় লাগবে। পাউবো সূত্র জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার বিপদসীমা ২২.০৫ মিটার। আজ সন্ধ্যা ৬ টায় পদ্মা প্রবাহিত হচ্ছিল ২১. ১৫ মিটারে, গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মা ১৫ সেমি কমেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অপর প্রধান নদী মহানন্দার বিপদসীমা ২০.৫৫ মিটার। আজ সন্ধ্যায় নদীটি প্রবাহিত হচ্ছিল ১৯.১২ মিটারে, তবে গত ২৪ ঘন্টায় মহানন্দার পানি কমেছে ২ সেমি। তবে জেলার অপর নদী গোমস্তাপুর উপজেলার পূর্ণভবার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ সেমি, যার এর বিপদসীমা ২১.৫৫ মিটার। আজ সন্ধ্যায় নদীটি ১৯.১৩ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব বলেন, আপাতত বন্যার কোনো আশংকা নেই এবং পদ্মা, মহানন্দার পানি কমতে শুরু করেছে। আর পানি কমা অব্যহত থাকার আশা করা হচ্ছে। গতকাল থেকে জেলাবাপী শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত বন্যার উপর প্রভাব ফেলবে না বলে আশা করা হচ্ছে । তবে সার্বিক পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে।
এদিকে, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, জেলার নদীগুলোর পানি বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ ফসলী জমির পরিমান এখন ১ হাজার ৯৮৯ হেক্টর। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৩২ হেক্টর মাসকলাই। নতুন করে কোন জমি প্লাবিত হয়নি। তবে, জেলায় বন্যায় বেশি আক্রান্ত শিবগঞ্জ উপজেলা। এরপর সদর ও গোমস্তাপুর উপজেলা। এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৮১০ জন কৃষক।
শিবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফতাবুজ্জামান আল-ইমরান বলেন, সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ পদ্মাবেষ্টিত পাঁকা ইউনিয়নে আশ্রয় কেন্দ্রে ও আশপাশের উঁচু বাড়িতে পানিবন্দি মানুষের মাঝে দ্রুত শুকনো খাবার দেয়া হবে। পাঁকা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বলেন, পদ্মা কমতে শুরু করেছে। কাঁচা সড়ক তলিয়ে পানিবন্দি দেড় হাজার পরিবার। নিমজ্জিত অর্ধশতাধিক বাড়ি, কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। সদরের নারায়নপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি। নদীভাঙ্গন ও বন্যা উভয় দুর্য়োগে ক্ষতিগ্রস্থ ৫২০ জনের তালিকা প্রশাসনে জমা দেয়া হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছমিনা খাতুন বলেন, এদের আপাতত ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। পরে দূর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় থেকে আরও সাহায্য পেলে করা হবে।