01713248557

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৪ ঘন্টায় মহানন্দার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ সেমি. ও পূণর্ভবার ৪ সেমি.


চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার পানি বৃদ্ধি স্থিও হলেও মহানন্দা, পূণর্ভবা, পাগলাসহ সকল নদনদীরপানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে। স্থানীয়রা, প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার বিঘা নদী তীরবতী ও নীচু জমির মূলত: মাসকলাই সহ বিভিন্ন কৃষি ফসল। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরে সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ৮১০ জন ।  নিম্নাঞ্চল কিছু বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। তবে কাঁচা সড়ক তলিয়ে পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন আরও বেশি পরিবার। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।
পাউবো সূত্র জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার বিপদসীমা ২২.০৫ মিটার। আজ সন্ধ্যা ৬টায় পদ্মা প্রবাহিত হচ্ছিল ২১.৩০ মিটারে। গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মার পানি স্থিও রয়েছে। পদ্মা বিপদসীমার ৭৫ সেমি নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অপর প্রধান নদী মহানন্দার বিপদসীমা ২০.৫৫ মিটার। সন্ধ্যায় নদীটি প্রবাহিত হচ্ছিল ১৯.১৪ মিটারে। গত ২৪ ঘন্টায় মহানন্দার পানি বেড়েছে ৭ সেমি। জেলার অপর নদী গোমস্তাপুর উপজেলার পূর্ণভবার বিপদসীমা ২১.৫৫ মিটার। সন্ধ্যায় নদীটি ১৯.০৩ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘন্টায় এই নদীর পানি বেড়েছে ১৫ সেমি। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব বলেন, বন্যার আশংকা এখনও নেই। পদ্মা স্থিও হয়েছে। আজ থেকে জেলাবাপী শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ভারী আকারে দীর্ঘস্থায়ী না হলে বন্যার উপর প্রভাব পড়বে না। তবে সার্বিক পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। ১/২ দিনের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, জেলার নদীগুলোর পানি বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ ফসলী জমির পরিমান বেড়ে ১ হাজার ৯৮৯ হেক্টর হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৩২ হেক্টরই মাসকলাই। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা। এরপর সদর ও গোমস্তাপুর উপজেলা রয়েছে আক্রান্তের তালিকায়। এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৮১০ জন কৃষক। যদি দ্রুত পানি নেমে যায় তবে কিছু ফসল রক্ষা পেতে পারে বলেও জানান তিনি। পরিস্থিতি উর্ধতণ ও সংশ্লিস্ট সকল মহলকে জানানো হয়েছে। কৃষি সাহায্য পাওয়া গেলে কর্ াহবে।
শিবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফতাবুজ্জামান আল-ইমরান বলেন, সব থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পদ্মাবেষ্টিত পাঁকা ইউনিয়ন। ইউপি ভবন,পাঁকা সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে পানি যে কোন সময় ঢুকে পড়বে। কিছু বাড়ির আঙ্গিনাতে পানি ঢুকে পড়েছে। প্রয়োজনে উঁচু স্থানে ও আশ্রয় কেন্দ্রে জনসাধারণকে সরিয়ে নেয়া হবে। এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মনাকষা ও দূর্লভপুর ইউনিয়নও বন্যা হুমকির মুখে। ইউনিয়নগুলোতে তলিয়ে গেছে কাঁচা সড়ক। এতে পানিবন্দি হয়েছেন কিছু মানুষ। পাঁকা ইউপির ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য রুহুল আমিন বলেন,অর্ধশতাধিক বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ৩নং ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, পানি বন্দি হয়েছেন কিছু পরিবার।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছমিনা খাতুন বলেন, নারায়ন ইউনিয়নে একটি আশ্রয় কেন্দ্র,একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কম্যুনিটি ক্লিনিক ভাঙ্গণে বিলীন হয়েছে। ক্লিনিকটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। জলমগ্ন হয়েছে নদী তীরবর্তী অন্তত: ৩০টি বাড়িঘর। এর আগে ভাঙ্গণের কারণে ৪৬২ পরিবার বাড়ি সরিয়ে নেয়। আলাতুলি ইউনিয়নে ৪৬৩ পরিবার বাড়ি ভেঙ্গে সরিয়ে নিয়েছে। নারায়নপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, ৪৬২ পরিবার যারা ভাঙ্গণে বাড়ি সরিয়ে নিয়েছে তারা নীচু অঞ্চলে যাওয়ায় এবার বন্যায় পানিবন্দি হয়েছে। একটি মাদ্রসায় পানি প্রবেশ করেছে ও একটি উচ্চ বিদ্যালয় পানিবন্দি। দুই উপজেলার ইউএনওরা জানান, সকল ক্ষয়ক্ষতির পরিমানের তালিকা করা হচ্ছে। শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনে ত্রাণের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি উর্ধতণ ও সংশ্লিস্ট সকল মহলকে জানানো হয়েছে।