ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে আর্চার ও টাং

২০২৬ সালের আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে ইংল্যান্ড। সেই দলে জায়গা পেয়েছেন ইনজুরিতে থাকা গতি তারকা জোফরা আর্চার। বাঁ দিকের সাইড স্ট্রেইনের কারণে অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টের পর পুরো সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেও বিশ্বকাপ ভাবনায় আর্চারের ওপর আস্থা রেখেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড।

১৫ সদস্যের এই প্রাথমিক স্কোয়াডে প্রথমবারের মতো সীমিত ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ডাক পেয়েছেন পেসার জশ টাং। হেড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও সাদা বলের অধিনায়ক হ্যারি ব্রুক মনে করছেন, ভারত ও শ্রীলঙ্কার তুলনামূলক ফ্ল্যাট উইকেটে টাং হতে পারেন কার্যকর ‘স্ট্রাইক বোলার’।

অন্যদিকে, সীমিত ওভারের দলে জায়গা হারিয়েছেন জেমি স্মিথ। ওপেনিংয়ে ব্যর্থ পরীক্ষার পর নতুন বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কা সফরের স্কোয়াডেও তাকে রাখা হয়নি। দীর্ঘদিন পর টি-টোয়েন্টি দলে ফিরেছেন বেন ডাকেট, যিনি নিউ জিল্যান্ড সফরের তিনটি টি-টোয়েন্টিতে ছিলেন না।

অ্যাশেজ সিরিজে ইংল্যান্ডের সেরা পারফরমার ছিলেন জোফরা আর্চার। অ্যাডিলেড টেস্টে তিনি নিয়েছিলেন ৯ উইকেট, গড় ২৭.১১। সেই ম্যাচেই প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও জ্বলে উঠেছিলেন। তুলে নিয়েছিলেন নিজের প্রথম টেস্ট হাফ-সেঞ্চুরি। তবে তৃতীয় টেস্টেই ইনজুরিতে পড়েন এই ফাস্ট বোলার।

বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনের পর আর্চার অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে যান এবং বর্তমানে বার্বাডোজে ইসিবির মেডিক্যাল টিমের তত্ত্বাবধানে পুনর্বাসনে আছেন। শ্রীলঙ্কা সফরের তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টিতে তিনি খেলতে পারবেন না। তার জায়গায় ব্রাইডন কার্স থাকছেন। বিশ্বকাপের আগে ভারতের মাটিতে গ্রুপ ‘সি’র প্রথম ম্যাচ (নেপালের বিপক্ষে, ৮ ফেব্রুয়ারি, মুম্বাই) সামনে রেখে দলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা আর্চারের।

টি-টোয়েন্টিতে অভিজ্ঞতা কম হলেও (২১ ম্যাচ), চলতি বছরে পারফরম্যান্সে নজর কেড়েছেন জশ টাং। দ্য হান্ড্রেডে সর্বোচ্চ ১৪ উইকেট নিয়ে ছিলেন টুর্নামেন্টের শীর্ষ উইকেটশিকারি। অ্যাশেজের দুই টেস্টে নিয়েছেন ১২ উইকেট, গড় ১৮.৫৮। মেলবোর্নে ৫/৪৫ সহ ম্যাচে ৭/৮৯ নিয়ে জিতেছিলেন ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ পুরস্কার। ইংল্যান্ডের ২০১১ সালের পর অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্ট জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি।

অলরাউন্ডার উইল জ্যাকস দুই স্কোয়াডেই ফিরেছেন। জাক ক্রলি দীর্ঘ বিরতির পর ওয়ানডে দলে ফিরেছেন। তবে জর্ডান কক্স ও ইনজুরিতে থাকা সাকিব মাহমুদের জায়গা হয়নি।

অ্যাশেজ শেষ হওয়ার মাত্র ১০ দিনের মাথায় শ্রীলঙ্কা সফর শুরু হলেও টেস্ট তারকাদের বিশ্রাম দেয়নি ইংল্যান্ড। অভিজ্ঞতার ওপর ভরসা রাখার পেছনে সাদা বলের ক্রিকেটে বাজে সময় কাটানোর চাপই বড় কারণ। ২০২৫ সালের শুরু থেকে সীমিত ওভারের দায়িত্ব নেওয়ার পর ম্যাককালামের অধীনে টি-টোয়েন্টিতে ১৩ ম্যাচে জয় ৬টি, হার ৫টি। ওয়ানডেতে ১৫ ম্যাচে হার ১১টি। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি যোগ্যতা নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাফল্যই ম্যাককালামের ওপর চাপ কমাতে পারে। ২০১০ ও ২০২২; এই দুইবার শিরোপা জিতেছে ইংল্যান্ড। ২০২৪ আসরে সেমিফাইনালে থেমেছিল তারা।

ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রাথমিক দল ও শ্রীলঙ্কা সফরের স্কোয়াড

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রাথমিক দল:
হ্যারি ব্রুক (অধিনায়ক), রেহান আহমেদ, জোফরা আর্চার (শুধু বিশ্বকাপ), টম ব্যান্টন, জ্যাকব বেথেল, জস বাটলার, স্যাম কারান, লিয়াম ডসন, বেন ডাকেট, উইল জ্যাকস, জেমি ওভারটন, আদিল রশিদ, ফিল সল্ট, জশ টাং, লুক উড।

শ্রীলঙ্কা সফরের ওয়ানডে দল:
হ্যারি ব্রুক (অধিনায়ক), রেহান আহমেদ, টম ব্যান্টন, জ্যাকব বেথেল, জস বাটলার, ব্রাইডন কার্স, জাক ক্রলি, স্যাম কারান, লিয়াম ডসন, বেন ডাকেট, উইল জ্যাকস, জেমি ওভারটন, আদিল রশিদ, জো রুট, লুক উড।