রাজশাহীতে শীতের তীব্রতা বেড়েছে, দুই দিন সূর্যের দেখা নেই

রাজশাহী মহানগর ও আশপাশের উপজেলায় হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বেড়েছে। উত্তরের হিমেল বাতাসের সঙ্গে ঘন কুয়াশার কারণে টানা দুই দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। গভীর রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারপাশ।

রোববার রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এর আগের দিন শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ছিল ২০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহ ধরে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে অবস্থান করছে।

হঠাৎ শীত বাড়ায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষ। কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুররা। শীতের কারণে অনেকেই সকালে কাজে বের হতে পারছেন না।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক তারেক রহমান জানান, শুক্রবার রাত থেকে তাপমাত্রা হঠাৎ কমে গেছে এবং সঙ্গে যোগ হয়েছে ঘন কুয়াশা। শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। বিকেলের পর আবার সূর্য আড়ালে চলে যায়। তাপমাত্রা খুব বেশি না কমলেও শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, চলতি মাস থেকেই মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে এবং এই পরিস্থিতি আগামী ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এবার শৈত্যপ্রবাহের স্থায়িত্ব তুলনামূলক বেশি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তীব্র শীতের প্রভাবে রাজশাহী নগরীতে মানুষের চলাচল কমে গেছে। সকালে দোকানপাট খুলছে দেরিতে এবং রাত ১০টার পর শহরের রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে সন্ধ্যার পর লোকজনের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে এবং দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আগেভাগেই।

এদিকে শীত বাড়ায় নগরীর গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। অভিজাত মার্কেট থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও গরম কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ।

নগরীর রেলগেট এলাকায় কাজের সন্ধানে বসে থাকা শ্রমিক নাজমুল হোসেন বলেন, শীতের কারণে সকালে আসতে দেরি হওয়ায় আজ আর কাজ পাননি। পবার পারভেজ জানান, শীত পড়লে কাজ পাওয়া যেমন কঠিন হয়ে যায়, তেমনি শীতের মধ্যে কাজ করাও কষ্টকর হয়ে পড়ে।

শীতের তীব্রতায় বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের শ্রমিকরা বেশি বেকার হয়ে পড়ছেন। দিনের বেশিরভাগ সময় কুয়াশা থাকায় কাজের সুযোগ কমে যাচ্ছে, যা তাদের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলছে।

সূত্র: বাসস