বিজিবি-বিএসএফ’র সহযোগিতায় সীমান্তে মরদেহ দেখানোর ব্যবস্থা: আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি এবং ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিএসএফ সীমান্তে আবারও মানবিকতার এবং দু’দেশের জনগণের ভ্রাতৃপ্রতিম সংম্পর্ক বজায় রাখতে সহযোগিতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় আধাঘন্টা উভয় বাহিনীর সহযোগিতায় ভারতীয় নাগরিক ফনি বেগমের মরদেহ শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের কিরনগঞ্জ বিওপির দায়িত্বপূর্ণ জমিনপুর সীমান্তের শূণ্য রেখায় তাঁর বাংলাদেশী স্বজনদের শেষবারের মত দেখানো হয়। এ সময় দু’দেশে বসবাসবাসকারী আত্মীয়দের মাঝে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মৃত ফনি বেগম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার কালিয়াচক থানার হাজীপাড়া দুই ছতরবিঘি গ্রামের কসিমুদ্দিনের স্ত্রী। গতকাল সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি অইন্না ইলাহি রাজিউন)।
স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানায়, ফনি বেগমের মারা যাবার খবর পেয়ে তাঁর ছোট ভাই জমিনপুর গ্রামের মৃত ফলিমুদ্দিনের ছেলে আতাউর রহমান(৬০) কিরনগঞ্জ ক্যাম্পের মাধ্যমে বড় বড় বোনের মরদেহ শেষ বারের মত দেখানোর সূযোগ করে দেবার জন্য বিজিবি’র সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেন। রাতে আবেদন পেয়ে বিজিবি তাৎক্ষনিক প্রতিপক্ষ বিএসএফ’র সাথে যোগাযোগ করে। এরপর উভয়পক্ষের সম্মতিতে সকালে মরদেহ কাঁটাতারের বেড়ার গেইট খুলে মেইন আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার নং ১৭৯/৩ এস এর শূণ্যরেখায় বাংলাদেশী স্বজনদের দেখানোর আয়োজন করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা ব্যাটালিয়নের (৫৯বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, বাাংলাদেশী স্বজনদের মরদেহ দেখানোর সময় উভয় বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিজিবি সীমান্তবসাী দু’দেশের জনগণের প্রতি এ ধরনের মানবিক সহযোগিতা অব্যহত রাখবে। এ ঘটনায় মৃতের স্বজনরা বিজিবি-বিএসএফ এর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিস্ট ইউপি চেয়্রাম্যান অধ্যক্ষ রুহুল আমীন বলেন,দুই বাহিনীর এ ধরণের আচরণ প্রশংসনীয়। দু’দেশের জনগণ ও বাহিনীগুলোর মধ্যে এ ধরণের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকা উচিত। সংম্লিস্ট ওয়ার্ড সদস্য কামাল উদ্দিন বলেন, ফনি বেগমের বাবার বাড়ি বাংলাদেশে।অর্ধশতাধিক বছর পূর্বে বিয়ে হয়ে তিনি ভারতে স্বামীর বাড়ি চলে যান। প্রতিবেশী দুই দেশে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফনি বেগমের বাবা এবং স্বামীর বাড়ি। মাঝে রয়েছে শুধু তাঁরকাটার বেড়া। উল্লেখ্য গত ৮ নভেম্বর শিবগঞ্জের আজমতপুর সীমান্তে সেলিনা বেগম নামে অপর এক ভারতীয় নারীর মরনদেহ একই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশী স্বজনদের দেখার সূযোগ কওে দেয় দুই বাহিনী।