ইজের হ্যাটট্রিকে টটেনহ্যামকে উড়িয়ে দিল আর্সেনাল

ইজের হ্যাটট্রিকে টটেনহ্যামকে উড়িয়ে দিল আর্সেনাল এবেরেচি ইজের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক আরো একবার আর্সেনালকে উল্লাসের উপলক্ষ্য এনে দিল। শনিবার রাতে টটেনহ্যামকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানও আরও পাকাপোক্ত করল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা চেলসির চেয়ে এগিয়ে থাকল ৬ পয়েন্টে। আগের দিন শিরোপা প্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার সিটির পরাজয় যেন মিকেল আর্তেতার দলের সামনে দরজা খুলে দিয়েছিল। আর আঘাত-প্রত্যাঘাতে জর্জরিত স্কোয়াড নিয়েও আর্সেনাল দেখিয়ে দিল এদিন তারা ছিল টটেনহ্যামের তুলনায় কয়েক ধাপ এগিয়ে। ব্যথা আরও গভীর এ কারণে যে, যিনি আর্সেনালের জয়ের মূল কারিগর, সেই ইজে সহজেই টটেনহ্যামের জার্সি গায়ে চাপাতে পারতেন! গত আগস্টে ক্রিস্টাল প্যালেস থেকে স্পার্সের সঙ্গে চুক্তির খুব কাছাকাছি ছিলেন ইজে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে তাকে দলে তুলে নেয় আর্সেনাল। নতুন ক্লাবে ধীরগতির শুরু হলেও ডার্বির মঞ্চে নিজেকে নতুন করে পরিচয় দিলেন ইংলিশ মিডফিল্ডার। ৪১ মিনিটে প্রথম গোল, তার আগেই লেয়ান্দ্রো ট্রোসারের দারুণ ফিনিশ, আর দ্বিতীয়ার্ধে পরপর দুটি গোল করে ম্যাচ বল তুলে নিলেন তিনি। দুই দলের ইনজুরি তালিকা নিয়েই পুরো সপ্তাহ জুড়ে আলোচনা ছিল। আর্সেনাল পায়নি ৫৫ মিলিয়ন পাউন্ডের ফরোয়ার্ড ভিক্টর গিয়কেরেসকে। তবুও স্পার্স কোচ থমাস ফ্রাঙ্ক তিন ডিফেন্ডারের ফর্মেশনই বেছে নেন। শুরুর দিকেই ইজের চমৎকার পাস থেকে ডিক্লান রাইস সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তার শট ব্লক করে দেন গুগলিয়েলমো ভিকারিও। আর্সেনাল বল দখলে এগিয়ে থাকলেও প্রথম ৩০ মিনিটে খেলার গতি ছিল ভারসাম্যপূর্ণ। বুকায়ো সাকা দুটো ফ্রি কিক থেকে চেষ্টা করেছিলেন। একটি ওপর দিয়ে যায়, আরেকটি ঠেকিয়ে দেন ভিকারিও। কিন্তু স্পার্সের রক্ষণভাগের স্থিরতা টিকল মাত্র এক মুহূর্তের জন্য। ৩৬ মিনিটে মিকেল মেরিনোর নিখুঁত পাসে দৌড়ে ঢুকে পড়েন ট্রোসার্ড। মিকি ফান দে ভেনের পায়ের ছোঁয়া বলকে সামান্য দিক বদল করালেও ভিকারিওকে পরাস্ত করলেন বেলজিয়াম তারকা। ডেসটিনি উদোগির ভুলে অফসাইড ফাঁদও ভেঙে যায়। চার মিনিট পর আসে দ্বিতীয় ধাক্কা। জুরিয়েন টিম্বারের ক্রস হেড করে ফিরিয়ে দেন কেভিন ডানসো। কিন্তু সেই বল থেকেই রাইস এক টাচে পাস বাড়িয়ে দেন একেবারে ফাঁকা থাকা ইজেকে। দু’জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিচু শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। ভিএআর দ্রুত অফসাইড পরীক্ষা করলেও কোনো সমস্যা না থাকায় গোলেই মেলে অনুমোদন। এমিরেটস তখন কানফাটা উদযাপনে গর্জে ওঠে। বিরতির আগে আর গোল হজম না করলেও দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই আবার দিশাহারা স্পার্স। শুরু হওয়ার মাত্র ৩৫ সেকেন্ড পরই ইজে আবার গোল করে ৩-০ করেন। টিম্বারের পাস ধরে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১৬ গজ দূর থেকে দারুণ নিখুঁত ফিনিশ। এই গোলেই তার আগের ১৭ ম্যাচের গোলসংখ্যা ছুঁয়ে ফেলেন! টটেনহ্যাম পুরোপুরি হতচকিত। তবে ঠিক ৫৫ মিনিটে এক ঝলকে ম্যাচে ফেরেন তারা। মাঝমাঠে পালহিনার ট্যাকল থেকে বল পেয়ে রিচার্লিসন দেখেন গোলরক্ষক ডেভিড রায়া অনেকটা এগিয়ে এসেছেন। ৪০ গজ দূর থেকে লব করে অসাধারণ এক গোল করেন তিনি। এরপর সার, র্যান্ডাল কলো মুয়ানিকে নামান কোচ ফ্রাঙ্ক। ভিকারিও সাকার একটি বাঁকানো শটও ঠেকান। কিন্তু এরপরই নিশ্চিত করে নেয় আর্সেনাল জয়ের পথ। ট্রোসার্ড ডান দিক থেকে দারুণ পাস বাড়ান ইজের জন্য। উদোগিকে পাশ কাটিয়ে ৭৬ মিনিটে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি, উত্তর লন্ডন ডার্বির ইতিহাসে মাত্র চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে।
অবিশ্বাস্য নাটকীয়তার ফাইনালে সুপার ওভারে হারলো বাংলাদেশ ‘এ’, পাকিস্তান শাহীনস চ্যাম্পিয়ন

অবিশ্বাস্য নাটকীয়তার ফাইনালে সুপার ওভারে হারলো বাংলাদেশ ‘এ’, পাকিস্তান শাহীনস চ্যাম্পিয়ন উত্তেজনা, নাটকীয়তা, রোমাঞ্চ, নখ কামড়ানো একেকটি মুহুর্ত, একেকটি বল। হৃদস্পন্দন থেমে যাওয়ার উপক্রম। পেণ্ডুলামের মতো ঝুলতে থাকা ফাইনাল ম্যাচে কখনো পাকিস্তান শাহীনসের মুখে হাসি। আবার কখনো হাসে বাংলাদেশ ‘এ’। সব সীমা অতিক্রম করে, চরম নাটকীয়তা শেষে ইতিহাসের পাতায় পাকিস্তান শাহীনস। দোহায় এশিয়া কাপ রাইর্জিং স্টারসের ফাইনাল ম্যাচ। নির্ধারিত ২০ ওভারের ম্যাচে কেউ কাউকে হারাতে পারে না। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানে পাকিস্তান শাহীনস কাছে ম্যাচ হেরে শিরোপা হারিয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। মূল ম্যাচে পাকিস্তান শাহীনস আগে ব্যাটিং করতে নেমে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায়। জবাব দিতে নেমে ৯৬ রানে ৯ উইকেট হারায় বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ম্যাচ তখন পাকিস্তান শাহীনসের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু দশম উইকেটে সাকলায়েন আহমেদ ও রিপন মণ্ডল সব এলোমেলো করে দেন। রুদ্ধশ্বাস ব্যাটিংয়ে ২৯ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ নিয়ে যান সুপার ওভারে। যদিও তারা শেষ ওভারে জয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৭ রান লাগত বাংলাদেশ ‘এ’-র। প্রথম বলেই রিপন ডাবলস নিলে ম্যাচ নেক টু নেক চলে আসে। পরের দুই বলে দুই ব্যাটসম্যান ২ রান নেন। চতুর্থ বলে গড়বড় করেন রিপন। পেসার আহমেদ ডানিয়েলের স্লোয়ার বাউন্সারে কোনো রান নিতে পারেননি। তাতে চাপ বেড়ে যায়। পরের ২ বলে কোনো বাউন্ডারি না পাওয়ায় ১ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয়। সুপার ওভারেও ব্যাটিং ছিল তালগোল পাকানো। প্রথমে সাকলায়েন ও পরে জিসান আলম আউট হলে বাংলাদেশ ৩ বলেই গুটিয়ে যায়। অথচ হাবিবুর প্রথম বলে ১ রান নেওয়ার পর একটি ওয়াইড ও বাই চারে বাংলাদেশ ২ বলে ৬ রান পেয়ে যায়। তৃতীয় বলেই জিসান আউট হলে বাংলাদেশ ‘এ’-র শিরোপার স্বপ্নও শেষ হয়ে যায়। সাদ মাসুদের বাউন্ডারিতে ২ বল আগেই পাকিস্তান শাহীনস জিতে নেয় সুপার ওভার। নাম বদলে শুধু ‘ইমার্জিং’ থেকে ‘রাইজিং স্টারস’ হয়েছে। বাকিটা ঠিকই আছে, এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য ২০১৯ সালে রানার্সআপ হওয়া। সেটাও ঘরের মাঠে পাকিস্তানের কাছে হেরে। ৬ বছর পর সেই একই তিক্ততার মুখোমুখি বাংলাদেশ ‘এ’। পাকিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করা দল পাকিস্তান শাহীনস (আদতে ‘এ’ দল) ফাইনালে হৃদয় ভাঙে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের। প্রতিযোগিতার সাত আসরে দ্বিতীয়বার রানার্সআপ বাংলাদেশ ‘এ’। তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তান শাহীনস চ্যাম্পিয়ন। এছাড়া শ্রীলঙ্কা জিতেছে দুইবার। ভারত ও আফগানিস্তান জিতেছে একবার করে। রোববার দোহায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে শিরোপা জয়ের দারুণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দলের। কিন্তু ব্যাটিংয়ে চরম ব্যর্থ হয়ে ম্যাচটা স্রেফ উপহার দিয়ে আসেন আকবর আলীরা। টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে পাকিস্তান শাহীনসকে অল্পরানে আটকে রাখার পরিকল্পনা করেছিল দল। নিজেদের বোলিং পরিকল্পনায় তারা পুরোপুরি সফল। দারুণ বোলিং, দুর্দান্ত ফিল্ডিং এবং মাঠে চনমনে থাকা দল পাকিস্তান শাহীনসকে এক মুহূর্তের জন্য থিতু হতে দেয়নি। রান আউটে শুরু হয় আক্রমণ। রান আউটেই শেষ। বাকি ৮ উইকেটের ৩টি নেন রিপন মণ্ডল। ২টি পেয়েছেন রাকিবুল হাসান। এছাড়া ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মেহরব, জিসান ও সাকলায়েন। পাকিস্তান শাহীনসের সাত ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে তারা। দলকে উদ্ধার করেন সাতে নামা সাদ মাসুদ। ২৬ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন তিনি। এছাড়া আরাফাত মিনহাস ২৫ ও মাস সাদাকাত ২৩ রান করে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন। জবাবে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের শুরুটা খারাপ ছিল না। জিসান আলমকে এক পাশে রেখে হাবিবুর রহমান সোহান আক্রমণ করে দলের রান এগিয়ে নেন। ২.৩ ওভারে রান ২২। ওই সময়ে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ ‘এ’। এক ছক্কা মেরে জিসান আউট হন। সঙ্গী হারানোর পর হাল ছাড়েননি হাবিবুর। আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যাটিং করে এগিয়ে যান। কিন্তু ভুল এক শটেই সব শেষ! হাবিবুর শুধু নিজের বিপদই ডেকে আনেননি, ম্যাচের এপিটাফ লিখে দেন। ১৭ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৬ রান করে হাবিবুর আউট হন সাদ মাসুদের বলে। এরপর দলের পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। ৩৬ থেকে দলীয় রান ৫৩ রানে যেতে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ ‘এ’। জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলে প্রথমবার ডাক পাওয়ার দিনে মাহিদুল অঙ্কন রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে শূন্য রানে আউট হন। ইয়াসির কাভারে ক্যাচ দেন ৮ রানে। আকবর (২), রাব্বী (৩) ও মৃতু্যঞ্জয় (০) ক্রিজে গিয়েছেন আর ফিরেছেন। এই ৩টি উইকেট নেন সুফিয়ান মুকিম। চায়নাম্যানের গুগলি বুঝতেই পারেননি তারা। ৫৩ রানে বাংলাদেশ ‘এ’-র ৭ ব্যাটসম্যান সাজঘরে। সেখান থেকে লড়াই শুরু করেন রাকিবুল ও মেহরব। ধ্বংসস্তুপ থেকে দলকে টেনে তোলেন। রাকিবুল দুটি চার ও একটি ছক্কায় জবাব দেন। মেহরব হাঁকান একটি চার। তাদের ২৬ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ ‘এ’। ৩৬ বলে ৪৭ রান প্রয়োজন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের। সেখানে শাহীদ আজিজকে প্রথম বলেই ছক্কা উড়ান মেহরব। তাতে ড্রেসিংরুমে ফেরে প্রাণ। এরপর সিঙ্গেল-ডাবলসে লক্ষ্য আরো কাছাকাছি আসতে শুরু করে। কিন্তু বড় শট খেলতে গিয়েই বিপদে পড়েন মেহরব। পেসার আহমেদ ডানিয়েলের শর্ট বল উড়াতে গিয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ২১ বলে ১৯ রান করেন তিনি। তখনও জয় বেশি দূরে ছিল না বাংলাদেশের। ২৭ বলে লাগত ৩৬ রান। কিন্তু হাতে উইকেট কেবল ২টি। এক ওভারের বিরতিতে দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ রান করা রাকিবুল এলবিডব্লিউ হন। তবুও হাল ছাড়েন না সাকলায়েন ও রিপন। সাকলায়েন ১৯তম ওভারে আজিজকে দুটি ছক্কা ও রিপনকে এক ছক্কা মারেন। তাতে সমীকরণ দাঁড়ায় ৬ বলে ৭ রান। কিন্তু শেষ ওভারে ১ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় তাদেরকে। এরপর সুপার ওভারেও। ফাইনাল ম্যাচটা হেরে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা নিয়েই এখন দেশে ফিরতে হবে তাদের।
রোনালদোর বিস্ময়কর বাইসাইকেল কিকে আল-নাসরের দাপুটে জয়

রোনালদোর বিস্ময়কর বাইসাইকেল কিকে আল-নাসরের দাপুটে জয় ৪০ বছর বয়সেও যেন সময়কে থামিয়ে রেখেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। রোববার রাতে সৌদি প্রো লিগে আল-নাসরের হয়ে আবারও দেখালেন সেই চেনা জাদু। এক অসাধারণ বাইসাইকেল কিকে গোল করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন পর্তুগিজ তারকা। ডান দিক থেকে আসা একটি ক্রসে মুহূর্তের মধ্যে শরীরকে আকাশে ভাসিয়ে অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে যে গোলটি করলেন, সেটি আটকানোর কোনো উপায়ই ছিল না প্রতিপক্ষ গোলকিপারের। রোনালদোর এই গোলেই আল নাসর ৪-১ ব্যবধানে হারায় আল-খালিজকে। আন্তর্জাতিক বিরতিতে পর্তুগাল দলে তিনি লাল কার্ড দেখেছেন আয়ারল্যান্ড ম্যাচে। আবার দেশকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করানোর উৎসবও করেছেন। ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা জাগিয়েছেন তিনি। যা হবে ইতিহাসের নতুন অধ্যায়। ২০২৫-২৬ মৌসুমে আল-নাসর যেন থামতেই জানে না। আল-খালিজের বিপক্ষে এই ৪–১ গোলের জয় তাদের টানা নবম জয়। লিগে সর্বোচ্চ ৩০ গোল করে তালিকার শীর্ষে তারা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও জোয়াও ফেলিক্স; দুজনেই করেছেন ১০টি করে গোল, দলটিতে এখন যেন পর্তুগিজ ঝড়। আল-আওয়াল পার্কে এই ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল আল-নাসর। চতুর্থ মিনিটেই ফেলিক্সের নিখুঁত পাস থেকে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন রোনালদো। যদিও অল্পের জন্য বাইরে যায় বলটি। এরপর সাদিও মানের দুর্দান্ত ক্রস থেকে ছয় গজ বক্সের ভেতর থেকেও পান আরও একটি সুযোগ। কিন্তু গোলকিপার অ্যান্থনি মরিস অবিশ্বাস্য সেভে বাঁচান দলকে। ৩৩ মিনিটে ফেলিক্সের গোলটি ভিএআর চেকের পরে হ্যান্ডবলের কারণে বাতিল হয়ে যায়। তবে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি আল-নাসরকে। অ্যাঞ্জেলোর দুর্দান্ত ক্রসে ফেলিক্স এবার ঠিকই বল জালে জড়ান। কয়েক মিনিট পরই ফেলিক্সের প্রেসিং থেকে পাওয়া বল ধরে ওয়েসলি করেন দারুণ এক গোল। তাতে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় আল নাসর। বিরতির পরই ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় আল-খালিজ। শুরুতেই মুরাদ আল হাওসাভির দুর্দান্ত এক শটে ব্যবধান কমে আসে। মুহূর্তেই বদলে যায় ম্যাচের রং। চাপ বাড়াতে থাকে অতিথিরা। তবে গোলরক্ষক নাওয়াফ আল-আকিদির দৃঢ়তায় টিকে থাকে আল-নাসর। এরই মাঝে সাদিও মানে চমৎকার এক লব শটে ব্যবধান বাড়িয়ে দেন ৩-১ এ। তারপর বিরাট ভুল করেন আল-খালিজের দিমিত্রিওস কুরবেলিস। আলি আল হাসানের ওপর ভয়ংকর স্টাম্পিং করে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। এরপরই আসে রাতের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ; ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সেই জাদুকরি বাইসাইকেল কিক। নাওয়াজ বুশালের ক্রসে হাওয়ায় ভেসে উঠে নিখুঁত ওয়ালি, বল গিয়ে জড়ায় জালের কোণায়। পুরো স্টেডিয়াম মুহূর্তের মধ্যে উল্লাসে মুখরিত হয়ে ওঠে। ৪-১ ব্যবধানে নিশ্চিত হয়ে যায় আল নাসরের বড় জয়। ফেলিক্স ছিলেন দলের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। এক গোলের পাশাপাশি ওয়েসলির গোলে দেন গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসিস্ট। লিগের যৌথ সর্বোচ্চ গোলদাতাও এখন তিনি ও রোনালদো। তবে ব্রোজোভিচের দিনটা ছিল একেবারেই বাজে। অযথা হাত দিয়ে বল ছুঁয়ে ফেলায় দল বঞ্চিত হয় সম্ভাব্য এক দুর্দান্ত গোল থেকে। প্রথমার্ধেই তাকে তুলে নেন কোচ হেসুস।
পাকিস্তানে আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে বন্দুকধারীদের হামলা

পাকিস্তানে আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে বন্দুকধারীদের হামলা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়েছে। আজ সোমবার এ হামলা হয়েছে বলে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের। একটি নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তর ভবনটিতে দুই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “প্রথম আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী প্রথমে কনস্টেবলের প্রধান প্রবেশপথে হামলা চালায় এবং অন্যজন কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে।” কর্মকর্তা আরো বলেন, “সেনাবাহিনী ও পুলিশ সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এলাকাটি ঘিরে রেখেছে এবং পরিস্থিতি সাবধানতার সাথে পরিচালনা করছে। কারণ, আমাদের সন্দেহ হচ্ছে সদর দপ্তরের ভিতরে কিছু সন্ত্রাসী রয়েছে।” সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরটি একটি সেনানিবাসের কাছে জনাকীর্ণ এলাকায় অবস্থিত।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্ব চলতে পারে: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্ব চলতে পারে: কানাডার প্রধানমন্ত্রী কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওয়াশিংটনের ভূমিকাকে অতিরঞ্জিত করা উচিত নয়। তিনি আরো বলেন, “মার্কিন সম্পৃক্ততা ছাড়াই বিভিন্ন সমস্যার সমাধান সম্ভব। অর্থনীতির ‘গুরুত্বের কেন্দ্র’ যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।” রবিবার (২৩ নভেম্বর) জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। খবর আরটির। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত এ বছরের জি-২০ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র অংশগ্রহণ করেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারকে শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ না করার কারণ হিসেবে এটি উল্লেখ করেছেন। ওয়াশিংটন আরো দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু বয়কট করেছে তাই জি-২০ সম্মেলন শেষে কেবল এর চেয়ারম্যানের বক্তব্য পাওয়া যেতে পারে। তবে রবিবার সম্মেলন শেষে জি-২০ একটি যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করেছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি বলেন, “এই বৈঠকে বিশ্বের জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশ, বিশ্বব্যাপী জিডিপির দুই-তৃতীয়াংশ এবং বিশ্বের বাণিজ্যের তিন-চতুর্থাংশ প্রতিনিধিত্বকারী দেশগুলোকে একত্রিত করা হয়েছিল এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণ ছাড়াই। তার ভাষ্য, “এ ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে, বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বের কেন্দ্র স্থানান্তরিত হচ্ছে।” কানাডার প্রধানমন্ত্রীর মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বয়কট সত্ত্বেও বৈঠকে জি-২০ সদস্যদের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো জানান, কানাডা দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত এবং চীন সহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত এবারের জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্টের সহযোগী মাকসিম ওরেশকিন। তিনি সম্মেলনের সফলতা নিয়ে প্রশংসা করেছেন। তিনি জানান, তার দল ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ দেশগুলোর সঙ্গে অনেক গঠনমূলক যোগাযোগ করেছে এবং এমনকি ‘বন্ধুত্বহীন’ দেশগুলোর কাছ থেকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও যৌথ প্রকল্পের বিষয়ে কিছু প্রস্তাবও পেয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা শীর্ষ সম্মেলনের আগে বলেছিলেন, জি-২০ ‘আপন গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে’। তিনি আরো বলেন, বৈঠক বয়কট করার মার্কিন সিদ্ধান্ত ‘তাদেরই ক্ষতি’।
ইউক্রেন ও মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

ইউক্রেন ও মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার জন্য জেনেভায় আলোচনায় ‘অসাধারণ অগ্রগতি’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তবে তিনি বলেন, “এখনও কিছু কাজ বাকি আছে।” আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শান্তিচুক্তির সব দফা চূড়ান্ত হয়ে যেতে পারে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরের স্থানীয় সময় রবিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ইউক্রেনীয় এবং ইউরোপীয় আলোচকদের বৈঠক শেষে রুবিও সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। খবর বিবিসির । বৈঠক শেষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “এমন ইঙ্গিত রয়েছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল আমাদের কথা শুনছে।” ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে গত সপ্তাহে ফাঁস হওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২৮ দফা পরিকল্পনা নিয়ে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। এই পরিকল্পনায় রাশিয়াকে অনেক সুবিধা দেওয়ায় হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিল। সেসময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “ইউক্রেনের সামনে একটি বিকল্প রয়েছে-আমাদের মর্যাদা হারানো অথবা একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হারানো।” রবিবার গভীর রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, জেনেভার আলোচক দলগুলোর একটি ‘খুব ভালো দিন’ কেটেছে। তিনি জানান, আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল- ২৮ দফার মার্কিন শান্তি পরিকল্পনায় যেসব ইস্যু খোলা রয়ে গেছে, সেগুলোতে ফারাক কমানো। আলোচনায় জড়িত দলগুলো এতে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ অর্জন করেছে। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, যেকোনো চূড়ান্ত চুক্তি অনুমোদন করতে হবে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের, এরপর তা রাশিয়ার কাছে পাঠানো হবে। এখনও কয়েকটি বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। রবিবার পরে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেনের যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই পক্ষ একটি ‘হালনাগাদ ও পরিমার্জিত শান্তি কাঠামো’ নিয়ে একমত হয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে যৌথ প্রস্তাব নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করবে। ইউরোপের কয়েকটি দেশ- যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির নেতৃত্বে- বিকল্প একটি শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করেছে বলে কিছু গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তবে বিবিসি তা দেখেনি এবং রুবিওও এমন কোনো পরিকল্পনার অস্তিত্ব অস্বীকার করেন। এর আগে রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ইউক্রেনের নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ-সমাপ্তির প্রচেষ্টার জন্য ‘কোনো কৃতজ্ঞতা দেখাচ্ছে না’। তিনি আরো উল্লেখ করেন, ইউক্রেনের মিত্র কিছু ইউরোপীয় দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে মস্কো তেল ও গ্যাস রপ্তানি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে। জেনেভায় মার্কিন খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করা হয়। ফাঁস হওয়া ট্রাম্পের ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় সৈন্যদের পূর্ব দোনেৎস্কের কিছু অংশ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং এই অঞ্চলসহ লুহানস্ক ও ২০১৪ সালে রাশিয়ার সংযুক্ত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে থাকবে। মার্কিন এই শান্তি পরিকল্পনায় ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর আকার কমিয়ে ৬ লাখ সদস্যে সীমিত করতে বলা হয়েছে। বর্তমানে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৮ লাখ ৮০ হাজার জন। পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, এর বিনিময়ে কিয়েভ ‘নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তা গ্যারান্টি’ পাবে, যদিও সেটির বিস্তারিত কোনো বিবরণ দেওয়া হয়নি। এতে আরো বলা হয়েছে, রাশিয়া তার প্রতিবেশীদের আক্রমণ করবে না এবং ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদান স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ হবে। খসড়া প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, রাশিয়ার ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলোর জোট জি৭-এ যোগদানের জন্য মস্কো আমন্ত্রণ জানানো হবে। এর মাধ্যমে জোটটিকে আবারো জি৮-এ পরিণত করার মাধ্যমে- রাশিয়াকে ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে পুনঃএকীভূত’ করা হবে। ইউক্রেনকে প্রস্তাবগুলোতে একমত হওয়ার জন্য ট্রাম্প আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। তবে ইউক্রেনের যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান ও ইউরোপের মিত্ররা মার্কিন প্রস্তাবগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পর, শনিবার ট্রাম্প জানান, এটি কিয়েভের জন্য তার ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ নয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, “আমি খুব আশাবাদী যে আমরা খুব শিগগির শান্তিচুক্তির প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে যাচ্ছি, সেটি বৃহস্পতিবার হোক, অন্যান্য দিন হোক বা পরের সপ্তাহের সোমবার হোক।”
ইংলিশ চ্যানেলে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ-ট্যাঙ্কার আটক

ইংলিশ চ্যানেলে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ-ট্যাঙ্কার আটক ইংলিশ চ্যানেলে রাশিয়ার একটি যুদ্ধজাহাজ ও ট্যাঙ্কার আটক করেছে যুক্তরাজ্যের একটি পেট্রোল জাহাজ। সোমবার (২৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রবিবার (২৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাজ্যের টহল জাহাজ এইচএমএস সেভার্ন গত দুই সপ্তাহে ইংলিশ চ্যানেলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় রাশিয়ান কর্ভেট আরএফএন স্টোইকি এবং ট্যাঙ্কার ইয়েলনিয়াকে আটক করেছে ও ঘনিষ্ঠ নজরদারি চালিয়েছে। পরে ওই নজরদারির দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয় ন্যাটোর আরেক সদস্য দেশের কাছে, ব্রিটনির উপকূলে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গত দুই বছরে যুক্তরাজ্যের জলসীমার চারপাশে রুশ নৌ তৎপরতা ৩০ শতাংশ বেড়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের উপকূলে টহলরত জাহাজ ছাড়াও, ন্যাটো মিশনের অংশ হিসেবে ব্রিটেন আইসল্যান্ডে তিনটি পোসাইডন নজরদারি বিমান মোতায়েন করেছে, যাতে উত্তর আটলান্টিক ও আর্কটিক রুটে রুশ নৌবাহিনীর গতিবিধি রিয়েল টাইমে ধরা যায়। ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে যখন প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলি জানান, রাশিয়ার গুপ্তচর জাহাজ ইয়ান্টার স্কটল্যান্ডের উপকূলে যুক্তরাজ্যের পর্যবেক্ষণ বিমানগুলোর পাইলটদের দিকে লেজার মেরে অবস্থান চেক করছিল। ব্রিটেন ইয়ান্টারের এই কর্মকাণ্ডকে ‘বেপরোয়া ও বিপজ্জনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে এবং বলেছে যে, ব্রিটেন তার ভূখণ্ডে যেকোনো অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে জবাব দিতে প্রস্তুত। রাশিয়ার লন্ডনের দূতাবাস হিলির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে ‘সামরিক উত্তেজনা ছড়ানোর’ অভিযোগ করেছে এবং বলেছে, মস্কোর কোনো আগ্রহ নেই যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার। ব্রিটিশ সরকারের নতুন বাজেট প্রকাশের এক সপ্তাহ আগে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে হিলি এই সতর্কতা জারি করেছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার রাশিয়া, চীন এবং ইরানের হুমকির কারণে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিলেও সরকারকে অর্থনৈতিক ঘাটতি পূরণের জন্য কর বৃদ্ধি ও ব্যয় কমানোসহ কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
মিসরের সিনেমার প্রধান বাজার সৌদি আরব

মিসরের সিনেমার প্রধান বাজার সৌদি আরব মিসরের চলচ্চিত্রশিল্পের সাম্প্রতিক সাফল্য ইতোমধ্যেই আলোচনায়। বিশেষ করে বিদেশি বাজারে খুব ভালো করছেন দেশটির সিনেমা। কায়রো ইন্ডাস্ট্রি ডেজ চলাকালে কায়রো ফিল্ম কানেকশন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মিসরীয় সিনেমা রপ্তানির প্রধান বাজার হয়ে ওঠেছে এখন সৌদি আরব। আরব বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ও প্রভাবশালী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির দেশ মিসর। দীর্ঘ দশকজুড়ে তাদের সিনেমা কখনো সফল, কখনো আবার পড়েছে মন্দায়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বাজারের তুলনায় বিদেশি বাজারে আয় বেড়েছে বহু গুণ। ২০২১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত মিসরের শীর্ষ ১০ রপ্তানি চলচ্চিত্রের মধ্যে ৯টির সবচেয়ে বড় আয় এসেছে সৌদি আরব থেকে। সৌদির সর্বকালের শীর্ষ ৬৫ ছবির মধ্যে ২৭ শতাংশই মিসরীয়। রোমান্টিক-কমেডি ‘বাহেবেক’ মিসরে আয় করেছিল ২.৮ মিলিয়ন ডলার। অথচ ছবিটি বিদেশে আয় করে ২২.৯ মিলিয়ন ডলার। যার বৃহৎ অংশ সৌদিতে। ‘সন্স অব রিজক ৩: নকআউট’ ছবিটি দেশে আয় করেছিল ৬.১ মিলিয়ন ডলার। আর বিদেশে এর আয় ২২.৩ মিলিয়নেরও বেশি। ‘আ স্ট্যান্ড ওয়ার্দি অব মেন’ ছবি দেশে ১.৭ মিলিয়ন ও বিদেশে ১৮.৩ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। ২০২৪ সালে সৌদি বাজারে ৩৩টি মিসরীয় ছবি মুক্তি পায় এবং মোট আয় করে ৫৩ মিলিয়ন ডলার। মিসরের নিজস্ব বাজারের মোট আয়ের (২৩.৫ মিলিয়ন ডলার) দ্বিগুণেরও বেশি এই পরিসংখ্যান। মিসর-সৌদি যৌথ প্রযোজনার ছবিগুলো সৌদিতে বিশেষ কর সুবিধাও পায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হানি খলিফার থ্রিলার ‘ফ্লাইট ৪০৪’। এটি এবারের অস্কারের জন্য মিসর থেকে জমা পড়েছে। উচ্চ বাজেটের কৌতুক ও অ্যাকশন দীর্ঘদিন ধরে দাপট দেখালেও এখন কম বাজেটের ছবিও সফল হচ্ছে মিসরে। উদাহরণ হিসেবে ওমর এল মুহানদেসের মাঝারি বাজেটের কৌতুক গল্পের ‘সিকো সিকো’ ছবির কথা বলা যায়। এই সিনেমাটি দেশে আয় করেছে প্রায় ৪ মিলিয়ন ডলার এবং সৌদিতে আরও ৪.২ মিলিয়ন আয় করে মিসরের ইতিহাসের দ্বিতীয় সফলতম ছবি হিসেবে নাম লিখিয়েছে। বিশ্ব বাজারে মিসরের সিনেমা পৌঁছে দিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিনার্জি ছিল প্রধান পরিবেশক। তবে ২০২৫ সালে এগিয়ে গেছে মিসর ইন্টারন্যাশনাল ফিল্মস। এই বছরে সিনার্জির সাবেক কর্মকর্তা আহমেদ বদাওয়ি ফিল্ম স্কয়ার নামে নতুন সংস্থা চালু করেছেন। এটি দ্রুত বাজার বাড়াচ্ছে। হলিউডসহ বিদেশি ছবি বিতরণে শীর্ষে রয়েছে ইউনাইটেড মোশন পিকচার্স। সৌদি আরবের আরব রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউভিএফ এখন মধ্য বাজেটের মিসরীয় ছবি অর্থায়ন ও আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তির ওপর জোর দিচ্ছে। ভ্যারাইটির এক প্রতিবেদনে কায়রো ফিল্ম কানেকশনের বিগত ১০ আসরের সাফল্যও তুলে ধরা হয়েছে। পিচিং, পরামর্শ, অর্থসহায়তা ও বিভিন্ন পুরস্কারের মাধ্যমে তারা বহু আরব নির্মাতাকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে।
বিয়ের দিনে হাসপাতালে গায়িকা পলক মুচ্ছালের ভাই

বিয়ের দিনে হাসপাতালে গায়িকা পলক মুচ্ছালের ভাই বলিউডের সংগীতশিল্পী পলাশ মুচ্ছাল ও ভারতীয় নারী ক্রিকেটার স্মৃতি মান্ধানার বহুল প্রতীক্ষিত বিয়ের দিনেই দুঃসংবাদ! গত রোববার তাদের চার হাত এক হওয়ার কথা থাকলেও এর আগের দিন কনের বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এর একদিন পরেই হাসপাতালে ভর্তি হলেন বর- পলাশ মুচ্ছাল। বলিউডের জনপ্রিয় গায়িকা পলক মুচ্ছালের ভাই পলাশ মুচ্ছাল। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে পলাশেরও। ফলে নির্ধারিত দিনে আর বিয়ে হয়নি পলাশ-মান্ধানার। সূত্র জানায়, ভাইরাল সংক্রমণ ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় পলাশ মুচ্ছালকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে তার অসুস্থতা গুরুতর নয়। চিকিৎসার পর তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে হোটেলের পথে রওনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, স্মৃতির বাবা গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাবাকে ছাড়া বিয়ে করতে রাজি হননি স্মৃতি মান্ধানা, তাই তাৎক্ষণিকভাবে বিয়ে স্থগিত করা হয়। ভারতের জনপ্রিয় তারকা ক্রিকেটার স্মৃতি মন্ধানা এবং উঠতি গায়ক পলাশ মুচ্ছালের বিয়ে নিয়ে ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দুই পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতার কারণে বিয়েটি পিছিয়ে গেল।
এবার তিশার বিরুদ্ধে ভারতীয় প্রযোজকের প্রতারণার অভিযোগ

এবার তিশার বিরুদ্ধে ভারতীয় প্রযোজকের প্রতারণার অভিযোগ কলকাতার সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে অগ্রিম পারিশ্রমিক নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে অভিনেত্রী তানজিন তিশার বিরুদ্ধে। শরীফ খান নামে এক প্রযোজক এমন গুরুতর অভিযোগ করেছেন। এম. এন. রাজ পরিচালিত ‘ভালোবাসার মরশুম’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হন তানজিন তিশা। কিন্তু এই অভিনেত্রীর অসহযোগিতা ও বারবার মিথ্যা বলার কারণে বাধ্য হয়ে তাকে সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদ পড়ার পর তিশা অগ্রিম নেওয়া পারিশ্রমিকের অর্থ ফেরত দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ প্রযোজকের। তবে এসব অভিযোগকে ‘ফালতু’ বলে মন্তব্য করেছেন তিশা। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে তানজিন তিশা বলেন, “এই অভিযোগ ফালতু। আমাকে চুক্তির সময় এক তৃতীয়াংশ পেমেন্ট দেয়া হয়েছিল। এই সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ভিসা পাওয়ার অপেক্ষায় দেড়মাস কোনো কাজ করিনি। চুক্তিতে উল্লেখ আছে, শুটিং ক্যানসেল হলে এই অর্থ ফেরত যাবে না। প্রযোজকের অপেশাদার আচরণের ঘটনা উল্লেখ করে তিশা বলেন, “শরীফ (শরীফ খান) নামে একজন আমার সঙ্গে মধ্যরাতে ফোন করে কথা বলতে চেয়েছে, এত রাতে আমি কেন কথা বলব? এটা তো পেশাদার আচরণ হতে পারে না। আমি অবশ্য দিনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। আর উনি তো এই সিনেমার প্রযোজকই নন। এর বেশি কিছু বলতে হলে আমার আইনজীবী বলবেন। তিশার আইনজীবী জসীম উদ্দিন বলেন, “তানজিন তিশা চুক্তি অনুযায়ী তার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে পালন করেছেন। তিনি শিডিউল প্রদান করেছেন এবং কাজের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু ডিরেক্টর ভিসা এবং শুটিংয়ের প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে চুক্তির সংশ্লিষ্ট ধারাসমূহ অনুযায়ী ডিরেক্টরের ডিফল্ট (অপরাধ) স্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তিশার পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আর্টিস্ট ডিফল্ট ঘটেনি। বরং ভিসা বিলম্ব ও শিডিউল বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে তিশাই সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রযোজক দাবি করেছেন, প্রথমে ৩০ হাজার রুপি পরে তিশার বোনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশি ৪ লাখ ১২ হাজার টাকা পাঠানো হয়। এরপর থেকেই গড়িমসি শুরু করেন তিশা।