মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের বহিষ্কারাদেশে নিষেধাজ্ঞা

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের বহিষ্কারাদেশে নিষেধাজ্ঞা   মালয়েশিয়ায় একটি গ্লাভস মোল্ড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে বড় সাফল্য পেয়েছেন প্রায় ১০০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির হাইকোর্ট জোরপূর্বক বহিষ্কার ও দেশে ফেরত পাঠানোর ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আজ হাইকোর্টের বিচারক তুয়ান হালদার আব্দুল আজিজ ‘মেডিসেরাম এসডিএন বিএইচডি’ নামের প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এই এক্স-পার্টি ইনজাংশন জারি করেন। ফলে শিল্প আদালত ও দেওয়ানি আদালতে চলমান মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো বা বহিষ্কার করা যাবে না। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, অবিলম্বে ৯৩ জন শ্রমিকের পাসপোর্ট ও অন্যান্য ব্যক্তিগত নথিপত্র ফেরত দিতে হবে। পাশাপাশি শ্রমিকদের ওয়ার্ক পারমিট বা সাময়িক কর্মসংস্থান ভিজিট পাস বাতিলসহ কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে না কোম্পানি।

বড়দিনে ৬০ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ভেনেজুয়েলা সরকার

বড়দিনে ৬০ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ভেনেজুয়েলা সরকার ভেনেজুয়েলার কর্তৃপক্ষ গতকাল অন্তত ৬০ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় এনজিও ফোরো পেনালের সাম্প্রতিক হিসাব অনুসারে জানা গেছে, ভেনেজুয়েলায় কমপক্ষে ৯০২ জন রাজনৈতিক বন্দি রয়েছে। ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর পুনর্নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় এদের আটক করা হয়। রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির জন্য কাজ করা মানবাধিকারকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ‘কমিটি ফর দ্য ফ্রিডম অব পলিটিক্যাল প্রিজনার্স’ জানিয়েছে, এই মুক্তি কার্যক্রম ক্রিসমাস দিবসে শুরু হয়।

বাড়িতেই বানান বড়দিনের বিশেষ লগ কেক

বাড়িতেই বানান বড়দিনের বিশেষ লগ কেক   আগামীকাল বড়দিন। আনন্দঘন সময়ের মধ্যে দিয়ে পরিবার ও আত্মীয়দের সঙ্গে সকাল থেকে রাত অব্দি কাটবে। এদিন বাড়িতেই প্রিয় লগ কেক বানিয়ে প্রিয়জনদের চমকে দিন। উপকরণ: স্পঞ্জ কেকের জন্য– ডিম চারটি, চিনি আধা কাপ, ময়দা আধা কাপ, কোকো পাউডার দুই টেবিল চামচ, বেকিং পাউডার আধা চা চামচ, ভ্যানিলা এসেন্স এক চা চামচ, লবণ এক চিমটি। ফিলিংয়ের জন্য হুইপিং ক্রিম এক কাপ, আইসিং সুগার দুই টেবিল চামচ, ভ্যানিলা এসেন্স আধা চা চামচ। চকলেট কোটিংয়ের জন্য ডার্ক চকলেট ২০০ গ্রাম, ফ্রেশ ক্রিম-হেভি ক্রিম আধা কাপ, বাটার এক টেবিল চামচ। প্রস্তুত প্রণালি: স্পঞ্জ কেক তৈরির জন্য ওভেন ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে প্রিহিট করুন। ডিম ও চিনি ভালো করে ফেটিয়ে নিন। ময়দা, কোকো পাউডার, বেকিং পাউডার ও লবণ একসঙ্গে চেলে মিশিয়ে নিন। ভ্যানিলা এসেন্স যোগ করুন। বেকিং ট্রেতে বাটার পেপার দিয়ে ব্যাটার ঢালুন। ১০-১২ মিনিট বেক করুন। হালকা গরম অবস্থায় কাপড়ের ওপর উল্টে ধীরে ধীরে রোল করে রাখুন। হুইপিং ক্রিম ও আইসিং সুগার বিট করে শক্ত করুন। রোল খোলা হলে ভেতরে ক্রিম লাগান। আবার শক্ত করে রোল করুন। এবার চকলেট ও ক্রিম গলান। বাটার মিশিয়ে মসৃণ করুন। কেকের ওপর ঢেলে ছুরি বা স্প্যাটুলা দিয়ে গাছের ছালের মতো দাগ টানুন।

ইসবগুল শীতকালে কেন খাবেন?

ইসবগুল শীতকালে কেন খাবেন? ইসবগুলের ভুসিতে বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। প্রতিদিন এক টেবিল চামচ করে তিন বার খেতে খাওয়া যেতে পারে। শীতে পানি পিপাসা কম লাগে। তাই, শীতের শুরু ও শেষের সময়ে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বাড়ে। তাই, শীতকালের জন্যও এটি ভাল। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: সকালে খালি পেটে কিংবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পানিতে ভিজিয়ে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন। পানিতে ভিজিয়ে সামান্য চিনি বা মিসরি মিশিয়ে নিতে পারেন। দুধের সাথেও এটি খেতে পারেন। শীতকালে কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ে, তাই ইসবগুল ভাল কাজ দেয়। পাইলস রোগীদের সারা বছর ইসবগুলের শরবত খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। কারণ, এটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ডায়রিয়া প্রতিরোধ: অনেকেই ডায়রিয়ায় ভুগে থাকেন। তাদের জন্য দারুণ টনিক হল ইসবগুলের ভুসি ও দই। এ দুটি একসাথে মিশিয়ে খেলে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাবেন সহজেই। ওজন কমায়: এতে ফাইবার উপস্থিত থাকায় হজম প্রক্রিয়া অনেক ধীরগতিতে হয়। তাই, ক্ষুধা লাগে অনেক কম। এটি খেলে ওজন কমানো অনেক সহজ হয়ে যায়। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ: ইসবগুলের ভুসিতে রয়েছে জিলাটিন নামের একটি উপাদান; যা দেহে গ্লুকোজের শোষণ ও ভাঙার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে, রক্তে সহজে সুগারের পরিমাণ বাড়তে পারে না। তাই, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এ ভুসি খুবই উপযুক্ত। উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ইসবগুলের শরবত খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ইসবগুলের শরবত দারুণ পথ্য হিসেবে বিবেচিত। হজমে সাহায্য করে: হজম প্রক্রিয়ায় অস্বাভাবিকতা দূর করতেও ইসবগুলের ভুসি দারুণ কাজ করে। ভাজাপোড়া খাওয়ার কারণে হজমের সমস্যা দেখা দিলেও ইসবগুলের শরবত কাজে আসে। পাকস্থলী পরিষ্কার রাখতেও রোজ সকালে খালি পেটে এটি খেতে পারেন। আমাশয় থেকে রক্ষা: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘ইসবগুল আমাশয় রোগের জীবাণু নষ্ট করতে পারে না। তবে, আমাশয়ের জীবাণু পেট থেকে বের করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে।’ রক্তে কোলেস্টেরল কমায়: এ ভুসি খেলে আমাদের অন্ত্রে এক ধরনের স্তর তৈরি হয়। যা কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দান করে। ফলে, আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তাই, হৃদরোগীদের জন্য দারুণ একটি খাদ্য এটি। আমাদের সময়

‘অ্যানাকোন্ডা’ ও ‘স্পঞ্জবব’ ঢাকায় একসঙ্গে মুক্তি পেয়েছে 

‘অ্যানাকোন্ডা’ ও ‘স্পঞ্জবব’ ঢাকায় একসঙ্গে মুক্তি পেয়েছে  ঢাকার প্রেক্ষাগৃহে আজ ২৬ ডিসেম্বর একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে দুই ভিন্ন ঘরানার হলিউড সিনেমা- হরর-কমেডি ‘অ্যানাকোন্ডা’ এবং অ্যানিমেশন অ্যাডভেঞ্চার ‘দ্য স্পঞ্জবব মুভি: সার্চ ফর স্কয়ারপ্যান্টস’। ‘অ্যানাকোন্ডা’ নামটি শুনলেই দর্শকের মনে ভয় আর উত্তেজনার অনুভূতি জাগে। দীর্ঘদিন ধরেই দর্শকপ্রিয় এই সিরিজের নতুন সিনেমায় দেখা যাবে ভিন্নধর্মী গল্প। ছবিতে জীবনের মাঝপথে এসে সংকটে পড়া একদল মানুষ পুরোনো ‘অ্যানাকোন্ডা’ সিনেমা রিবুট করার সিদ্ধান্ত নেয়। শুটিংয়ের জন্য তারা নিয়ে আসে একটি আসল অ্যানাকোন্ডা, যা দুর্ঘটনাবশত মারা যায়। এরপর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। শুটিংয়ের সূত্র ধরে তারা ঢুকে পড়ে এক গভীর জঙ্গলে, যেখানে মুখোমুখি হয় অজানা ও ভয়ংকর এক প্রাণীর। টম গরমিকান পরিচালিত এই হরর-কমেডি ছবিতে অভিনয় করেছেন পল রুড, জ্যাক ব্ল্যাক, স্টিভ জাহানসহ আরও জনপ্রিয় শিল্পীরা।অন্যদিকে অ্যানিমেশনপ্রেমীদের জন্য থাকছে স্পঞ্জবব স্কয়ারপ্যান্টসের নতুন রোমাঞ্চ। জনপ্রিয় সিরিজের সর্বশেষ সিনেমা ‘দ্য স্পঞ্জবব মুভি: সার্চ ফর স্কয়ারপ্যান্টস’ বিশ্বজুড়ে মুক্তি পেয়েছে গত ১৯ ডিসেম্বর। আজ থেকে ঢাকার প্রেক্ষাগৃহেও উপভোগ করতে পারবেন দর্শকরা। এই সিনেমায় হারিয়ে যাওয়া পোষা প্রাণী গ্যারিকে খুঁজতে সমুদ্রের গভীরে এক দুঃসাহসিক অভিযানে নামে স্পঞ্জবব। সেই অভিযানে তাকে মহাকাশযানে চড়া থেকে শুরু করে ফ্লাইং ডাচম্যানসহ নানা ভিলেনের মুখোমুখি হতে হয়। মুক্তির প্রথম দিনেই ছবিটি আয় করেছে ৫ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার।

কোয়েল কেউ তাতিয়ে দিলেই খারাপ কথা বলি না

কোয়েল কেউ তাতিয়ে দিলেই খারাপ কথা বলি না ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। দর্শক-সমালোচকদেরও প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তবে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে তার বিতর্ক নেই! বলা যায়, মল্লিকবাড়ির কন্যার জীবনটা পরিচ্ছন্ন। রুপালি জগতে কাজ করেও এতটা পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করা মুশকিল! ২২ বছরের ক্যারিয়ারে যেমন বিতর্ক নেই, তেমনই বেফাঁস মন্তব্য করতেও দেখা যায়নি তাকে। এটা কীভাবে বজায় রেখেছেন? ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোয়েল মল্লিকের কাছে এই প্রশ্নই রাখা হয়। এ বিষয়ে কোয়েল মল্লিক বলেন, “সত্যি বলছি, আমি যে খুব ভেবে সবকিছু করি তা নয়। এভাবেই তৈরি হয়েছি। আমার কোনো কথা যদি অন্য মানুষকে কষ্ট দেয়, তাহলে সেই কথাটা বলি না। নিজেকে অসম্ভব নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। খানিকটা ব্যাখ্যা করে কোয়েল মল্লিক বলেন, “রাগের মুহূর্তে অনেকে খারাপ কথা বলে ফেলেন। আমার ক্ষেত্রে, রাগের মুহূর্তেও নিজেকে অসম্ভব সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। তাই রাগের চেয়ে দুঃখ তাড়াতাড়ি হয় আমার। আর একটা বিষয়, আমি হঠকারী নই। কেউ তাতিয়ে দিল, আর উত্তেজিত হয়ে খারাপ খারাপ কথা বলে ফেললাম; সেটা সহজে কেউ করতে পারেন না। তাই আলাদা করে নিজেকে তৈরি করেছি, তা নয়। তবে কী কোয়েল মল্লিকের রাগ নেই? জবাবে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমার ধৈর্য খুব বেশি। হঠাৎ করে রেগে গিয়েছি, এমনটা খুব কম হয়েছে। তাই অনেকক্ষণ ধৈর্য ধরে রাখার পরে হয়তো বলি। তবে সেটাও যে খুব চেঁচামেচি করে, তা নয়। বলতে পারেন, তখন একটু কড়া হয়ে কথা বলি। খারাপভাবে কখনো কথা বলিনি। আপনাদের পেশায় ধৈর্য থাকা জরুরি। এ প্রসঙ্গ উঠতেই কোয়েল মল্লিক বলেন, “পেশা বলে নয়, মানুষের জীবনে এই বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো পেশাতেই ধৈর্য দরকার। আমাদের তো বটেই। আমি এটা ছাড়া নিজেকে ভাবতেই পারব না। কোয়েল মল্লিকের জীবনে প্রথম প্রেম প্রযোজক নিসপাল সিং। ভালোবাসার মানুষকেই বিয়ে করেছেন তিনি। দীর্ঘ সাত বছর গোপনে প্রেম করে ২০১৩ সালে ১ ফেব্রুয়ারি সাতপাকে বাঁধা পড়েন এই যুগল। তবে পারিবারিক আয়োজনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন তারা। স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে কোয়েল মল্লিক : বিয়ের সাত বছর পর অর্থাৎ ২০২০ সালের ৫ মে পুত্রসন্তানের মা হন কোয়েল। পুত্রের নাম রেখেছেন কবীর। ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর কন্যাসন্তানের মা হন এই অভিনেত্রী। স্বামী-সন্তানদের কারণে অভিনয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েন কোয়েল। গত বছর তার অভিনীত একটি সিনেমাও মুক্তি পায়নি। চলতি বছরে তার ৩টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। বর্তমানে তার হাতে একটি সিনেমার কাজ রয়েছে।

চলতি বছর হারিয়ে গেছেন অনেক তারকা

চলতি বছর হারিয়ে গেছেন অনেক তারকা   হারিয়ে যাচ্ছে চলতি বছর। আর মাত্র কয়েকদিনের অতিথি সে! এই হারিয়ে যেতে চলা বছরে হারিয়ে গেছেন অনেক তারকা। আমাদের আজকের আয়োজন নিভে যাওয়া সেই তারকাদের নিয়ে অঞ্জনা রহমান (৪ জানুয়ারি) চলতি বছরের শুরুতেই বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান মারা যান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৪ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী অঞ্জনা নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশ ছাড়াও তিনি অভিনয় করেছেন ৯টি দেশের ১৩টি ভাষার সিনেমায়। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আন্তর্জাতিক পুরস্কার, একাধিক জাতীয় স্বর্ণপদক ও বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন কয়েকবার। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও অঞ্জনা পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক স্বীকৃতি। প্রবীর মিত্র (৫ জানুয়ারি) অভিনেত্রী অঞ্জনার শোক না কাটতেই খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র ৮১ বছর বয়সে মারা যান। ৫ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। রুপালি পর্দার নবাবখ্যাত কিংবদন্তি এই অভিনেতা দীর্ঘ অভিনয়জীবনে অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকমহলে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। গুলশান আরা আহমেদ (১৫ এপ্রিল) টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী গুলশান আরা আহমেদ মারা যান চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তিনি ইন্তেকাল করেন। এই অভিনেত্রী ‘হৃদয়ের কথা’, ‘ডাক্তার বাড়ি’, ‘ভালোবাসা আজকাল’, ‘লাল শাড়ি’সহ আরও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি কাজল আরেফিন অমির জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এ কাবিলার (জিয়াউল পলাশ) মা ‘পলি চেয়ারম্যান’ চরিত্রে অভিনয় করে বর্তমান প্রজন্মের কাছে পরিচিতি পান। এ ছাড়া মাছরাঙা টেলিভিশনের ধারাবাহিক ‘সিটি লাইফ’সহ অসংখ্য নাটক ও ধারাবাহিকে দেখা গেছে তাকে। সাঙ্কু পাঞ্জা (২৯ মে) ঢাকাই চলচ্চিত্রের খল অভিনেতা সাঙ্কু পাঞ্জা মৃত্যুবরণ করেন গত ২৯ মে। জন্মসূত্রে সাঙ্কু পাঞ্জার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে। তার দুই মেয়ে রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য ছিলেন। ‘প্রেম কয়েদি’, ‘মনের জ্বালা’, ‘দুর্ধর্ষ’, ‘ধর মাস্তান’সহ অনেক জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই খল অভিনেতা। তানিন সুবহা (১০ জুন) ১০ জুন মারা যান চিত্রনায়িকা তানিন সুবহা। ২ জুন থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তানিন। আগেই তাকে ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তানিন সুবহার জন্ম মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার মোল্লারহাটে। তবে তার শৈশব কাটে বরিশালে নানাবাড়িতে। বাবার চাকরি সূত্রে পরিবারের সঙ্গে সৌদি আরবও থেকেছেন কয়েক বছর। ২০১২ সালে ‘ক্লোজআপ ওয়ান’ ও ‘ম্যাঙ্গোলি নাচো বাংলাদেশ নাচো’ প্রতিযোগিতায় নাম লেখান। বেশিদূর যেতে না পারলেও শোবিজে কাজ করার আগ্রহ জন্মায়। এরপর বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়ে শোবিজে নাম লেখান তিনি। অভিনয় করেন নাটক-সিনেমায়। ‘মাটির পরী’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় তার অভিষেক হয়, এরপর নাম লেখান বেশ কিছু সিনেমায়। জীনাত রেহানা (২ জুলাই) বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কালজয়ী গান হিসেবে বিবেচিত ‘সাগরের তীর থেকে’ গানের কণ্ঠশিল্পী জীনাত রেহানা গত ২ জুলাই সকালে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের সংগীতজগতের এক উজ্জ্বল নাম ছিল জীনাত রেহানা। ১৯৬৫ সালে টেলিভিশনের শিল্পী হিসেবেও সংগীতজগতে যাত্রা শুরু করেন তিনি। যদিও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ সময় কাজ করার কারণে তাকে নিয়মিত গানে পাওয়া যায়নি, তবু তার গাওয়া বেশ কিছু গান আজও সমানভাবে জনপ্রিয়। একে রাতুল (২৭ জুলাই) একই মাসে সংগীতাঙ্গন হারায় আরেক প্রতিভাবান শিল্পীকে। ব্যান্ড ‘ওন্ড’-এর ভোকালিস্ট ও বেজিস্ট, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার একে রাতুল মারা যান ২৭ জুলাই। তিনি প্রয়াত চিত্রনায়ক জসীমের পুত্র হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। জাহানারা ভূঁইয়া (২৫ আগস্ট) চলচ্চিত্রে নারীকেন্দ্রিক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য পরিচিত অভিনেত্রী জাহানারা ভূঁইয়া দীর্ঘদিন রোগ ভোগের পর ২৫ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। সত্তর ও আশির দশকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি জাহানারা ভূঁইয়া গীতিকার, নির্মাতা ও প্রযোজক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। এ দেশে নারী চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম তিনি। ফরিদা পারভীন (১৩ সেপ্টেম্বর) বছরের শেষভাগে এসে দেশের সংগীতাঙ্গন হারায় কিংবদন্তি লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে। তিনি ১৩ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেন। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন এই নন্দিত গায়িকা। বেশ কয়েকবার তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে যান না-ফেরার দেশে। ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া ফরিদা পারভীন গানে গানে কাটিয়েছেন ৫৫ বছর। ক্যারিয়ারের শুরুতে দেশাত্মবোধক গান গাইলেও তার পরিচয় গড়ে ওঠে লালনকন্যা হিসেবে। তার কণ্ঠে ‘মিলন হবে কত দিনে’, ‘অচিন পাখি’ গানগুলো আজও বাঙালির চেতনার অংশ হয়ে আছে। লালনগীতিকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দিতে তার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।

প্রিন্স মাহমুদ পঁচিশে নতুন করে দেখা দিয়েছেন

প্রিন্স মাহমুদ পঁচিশে নতুন করে দেখা দিয়েছেন   ১৯৯৫ সাল থেকে এখনও নিজ মহিমায় উজ্জ্বল প্রিন্স মাহমুদ। যদিও গানের ভুবনে তাঁর পদযাত্রা শুরু হয়েছিল আরও কয়েক বছর আগে। তবে ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত মিশ্র ‘শক্তি’ অ্যালবামের মাধ্যমে সূচনা আজকের প্রিন্স মাহমুদ হয়ে ওঠা। সংগীতের মানের কাছে আপস না করার কারণে তাঁর প্রতিটি সৃষ্টি হয়ে উঠেছে অনবদ্য; যা তাঁকে নিয়ে এসেছে কিংবদন্তিদের কাতারে। এ কারণে ২০২৫ সালেও নন্দিত এই গীতিকবি ও সুরকারের আয়োজন নিয়ে সংগীতপ্রেমীর কৌতূহল ছিল চোখে পড়ার মতো। এ বছরের বড় চমক ছিল একই সিনেমার জন্য এই সুরকারের একসঙ্গে চারটি ভিন্ন রকম গান তৈরির বিষয়টি। ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘জংলি’ সিনেমার গানগুলোয় প্রিন্স নিজেকে উপস্থাপন করেছেন আরও নতুন ভাবে। ‘জংলি’ সিনেমার কাজ করার জন্য প্রিন্স মাহমুদের নাম ঈদজুড়ে ছিল আলোচনায়। এই আলোচনা শুরু হয়েছিল এক বছর আগে যখন ‘জংলি’ টিম ঘোষণা দেয়, ‘জংলি হবে প্রিন্স মাহমুদের সুরে’। ‘জংলি’ রিলিজ হওয়ার আগেই তাহসান ও আতিয়া আনিসার ‘জনম জনম’ গানটি আলোচনায় আসে। সবচেয়ে বেশি প্রশংসা পায় ইমরান ও কনার দ্বৈত গান ‘বন্ধু গো শোনো’। এ গানটি প্রায় সবাই নব্বই দশকের সিনেমার দ্বৈত গানের আদল খুঁজে পান এবং বলেছেন, ‘অনেকদিন সিনেমায় এমন গান হয়নি’। অন্যদিকে হাবিব ওয়াহিদ প্রথমবারের মতো প্রিন্স মাহমুদের সুরে গেয়েছেন ‘যদি আলো আসত’ গানটি। এই গানও অনেকে পছন্দ করেছেন। এ ছাড়া ‘মায়াপাখি’ শিরোনামে মাহতিম সাকিবও একটা গান করেছেন, যা অনেক শ্রোতাকে আবেগে ভাসিয়ে নিয়েছে। এ কারণে ‘জংলি’র প্রচারে সিনেমার পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা-অভিনেত্রী সিয়াম, বুবলী, দীঘিসহ প্রত্যেকে প্রিন্স মাহমুদের প্রশংসায় সরব ছিলেন। যাদের কথায় এটিই স্পষ্ট, তারুণ্যে উদ্দীপ্ত পঁচিশের প্রিন্স মাহমুদ যেন নতুন করে দেখা দিয়েছেন ২০২৫ সালে। যে তারুণ্য কেবলই নতুন ও অভিনব সৃষ্টিতে মেতে ওঠার সাহস ও প্রেরণা জোগায়। এই প্রথম কোনো সিনেমায় একসঙ্গে চারটি গান তৈরি এবং তাঁর সুবাদে অগণিত শ্রোতার ভালোবাসা কুড়িয়েও বাড়তি কোনো উচ্ছ্বাস দেখাননি প্রিন্স মাহমুদ। তিনি আসলে এমনই। শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ তাঁর শিল্পী সত্তাকে খুশি করলেও এ নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা প্রকাশ করেন না। এ বিষয়টি স্বাভাবিক মেনে নিলেও সবাই অবাক হয়েছেন যে ঘোষণায় তাহলো– হঠাৎ করে সিনেমার গান তৈরির বিয়ষটিতে দাঁড়ি টেনে দেওয়ায়। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমের একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এর মধ্যে বেশ কিছু সিনেমার কাজ ফিরিয়ে দিয়েছি; যা হয়তো অনেকেই ভাবতে পারেন না। সিনেমায় আসলে আমার নতুন কিছু দেওয়ার নেই। যে যাই বলুন সিনেমার গান নায়ক-পরিচালকের গান হয়, আমার গান হয় না। অকারণ ক্রেডিট নেওয়ার কোনো মনে হয় না। পুরোনো দিনের সুরকারদের জন্য হয়তো ঠিক ছিল কিন্তু এখন নয়। ভুল বুঝবেন না। আসলে সিনেমার কাজ এনজয় করছি না। প্রতিটি গান ঠিকঠাক করতে হবে নিজ তাগিদেই, কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না–এটি এ মুহূর্তে একটি মানসিক চাপ। নিজ খেয়ালে কাজ করা চিরকালের অভ্যাস। আমার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের অনুপস্থিতিও ছিল না। তারপরও। তবে সিনেমার গান করতে গিয়ে সম্মান পেয়েছি। এটি বলতেই হবে। যোগাযোগ একদম বন্ধ রাখার পরও সর্বোচ্চ প্রচার পেয়েছি। অন্য কারও ক্ষেত্রে এমন ঘটেছে কিনা জানা নেই। এটিও চাপ। আপন আলোয় ভাবছি। রিগ্রেট নেই। যা ছেড়ে আসি, ছেড়েই আসি। যাই হোক, অডিওর গানে থাকব; যে গান আমার গান হবে। প্রিন্সের এ কথায় অনেকে হতাশ হবেন, তবু এই আশায় প্রহর গুনে যাবেন যে, একদিন না একদিন আবার তিনি ফিরবেন সিনেমার গানে। যদিও সিনেমায় গান তৈরির বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলেননি প্রিন্স মাহমুদ। তবে নতুন গানের খবর ঠিকই জানিয়ে দিয়েছেন। সেখানেও থাকছে চমক। কারণ এবার তিনি গান তৈরি করছেন একাত্তর, চব্বিশ জুলাই ও বিভিন্ন সময়ের বীর শহীদদের নিয়ে; যার প্রথম গানটি প্রয়াত প্রতিবাদী তরুণ আবরার ফাহাদকে নিয়ে লেখা। একটি পোস্টে প্রিন্স লিখেছেন, ‘আবরার ফাহাদকে নিয়ে একটা গান করেছি। এটি আমার সেরা গানের একটি হতে যাচ্ছে। প্রতিটি লাইন সবার প্রিয় লাইন হবে। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ অনেক বড় আয়োজনে আসছি। এখানে শেষ নয়, এই সুরকার জানিয়েছেন, আরও সাত শহীদকে নিয়ে আলাদাভাবে গান তৈরি করছেন। তাঁর কথায়, ‘কেউ কিছু করছে দেখে আমি সেটি করে ফেলি–এই ভাবনা কখনও মনের মধ্যে কাজ করে না। সময় চলে যাচ্ছে এখনই করতে হবে, এমনও নয়। কোনো কিছু শুরু করার আগে নিজের প্রস্তুতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে কাজ করি। বেশ কিছু কমার্শিয়াল কাজ ছেড়েছি শুধু আবরার ফাহাদসহ জুলাই শহীদদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করব বলে। জুলাই বিপ্লবের অগ্রসৈনিক, শহীদী মিছিলের নেতা আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ওয়াসিম আকরাম, শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনসহ ৭ জনকে নিয়ে কাজ করছি আপাতত। তাড়াহুড়ো করছি না। সংবাদের শিরোনাম হতে নয়, নিজের জন্য করেছি। তাড়না থেকে করেছি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে অর্জিত জ্ঞান বা উপলব্ধি থেকে বুঝি, সব গান গান হয়ে ওঠে না। এই গানগুলো গান হবে আশা করছি। ভালোবাসায় রাখবেন। এই কথার মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন ২০২৫ প্রসঙ্গের সমাপ্তি টেনেছেন, তেমনি আভাস দিয়ে রেখেছেন আগামী বছরেও ভিন্ন রকম করে তুলে ধরার।