উত্তপ্ত ভারতের আসাম, উপজাতি অঞ্চলে সহিংসতায় নিহত ২
উত্তপ্ত ভারতের আসাম, উপজাতি অঞ্চলে সহিংসতায় নিহত ২ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে উপজাতিদের অন্যতম স্বশাসিত অঞ্চল কার্বি-আংলং এলাকায় সহিংসতায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর সেখানে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। উপজাতীয়দের এলাকা হিন্দিভাষী, বাঙালি ও নেপালিরা ‘দখল করে রেখেছে’ এবং ওই ‘বহিরাগতদের উৎখাত করতে হবে’- এমন দাবি নিয়ে অনশন আন্দোলন চলছিল গত ৬ ডিসেম্বর থেকে। গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) অনশনকারীদের ‘তুলে’ গুয়াহাটিতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় পুলিশ। তারপরেই সহিংসতা শুরু হয়। মঙ্গলবারও সহিংসতা চলেছে। আসাম পুলিশের মহাপরিচালক হরমিত সিং বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, তিনি নিজে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। মহাপরিচালক জানান, অনশন আন্দোলন যারা করছিলেন, তাদের নেতাকে চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসকদের পরামর্শেই। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। এরপরই ভুয়া খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয় যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীরা একটি সেতু দখল করতে চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন পুলিশের ওপরে বোমা নিক্ষেপ ও তীর ছুঁড়ে হামলা চালানো হয় বলে জানান হরমিত সিং। এরপরে বহিরাগতদের দোকান ভাঙচুর, পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ইট ছোঁড়াছুঁড়ি করতে দেখা যায় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা ভিডিওতে। কী দাবিতে আন্দোলন? ভারতীয় সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিল অনুযায়ী কার্বি আংলং অঞ্চলটির প্রশাসন চালায় স্বয়ংশাসিত একটি কাউন্সিল। সেখানকার জমি, অরণ্যের ওপরে উপজাতীয়দের অধিকারও সংরক্ষিত রয়েছে। ওয়েস্ট কার্বি আংলং জেলার কার্বি উপজাতীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বহিরাগত, অ-উপজাতীয় মানুষ তাদের সংরক্ষিত অঞ্চলে জমি দখল করে রয়েছে। কার্বি আংলং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংরক্ষিত এলাকা থেকে উচ্ছেদের নোটিশ দিলেও গৌহাটি হাইকোর্টে দায়ের করা একটি পিটিশনের ফলে সেই প্রক্রিয়া নিয়ে এগোনো যায়নি। গত এক বছর ধরে স্থানীয় উপজাতীয়রা দাবি করে আসছেন, বহিরাগত এবং দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। অবশেষে কার্বি উপজাতীয়রা ৬ ডিসেম্বর থেকে এ দাবি নিয়ে অনশন শুরু করেন। এ অবস্থায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন পুলিশের মহাপরিচালক। এর আগে, রাজ্যের মন্ত্রী রনোজ পেগুও ওয়েস্ট কার্বি জেলার খেরোনিতে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ২৬ ডিসেম্বর রাজ্য সরকার, কার্বি আংলং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। তিনি বলেন, আমরা কার্বি সমাজকে বলেছিলাম, সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে জমির অধিকার এবং উপজাতীয়দের অন্যান্য সমস্যাগুলো নিয়ে দেখছে। কার্বি সমাজের বৃহত্তর সমস্যাগুলো নিয়েও আলোচনা হবে। সহিংসতার শুরু যেভাবে আলোচনার কথা থাকলেও সোমবার থেকে হঠাৎই সহিংসতা শুরু হয়। বার্তা সংস্থা এএনআই এবং আসামের গণমাধ্যম জানায়, সোমবার অনশনরত আন্দোলনকারীদের কয়েকজনকে পুলিশ সরিয়ে নিয়ে গেলে প্রথমে স্থানীয় কিছু মানুষ রাস্তা অবরোধ করে। এরপরে তারা মিছিল করে গিয়ে ডংকামুকাম এলাকায় কার্বি আংলং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিলের প্রধান তুলিরাম রংহাঙের পারিবারিক বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। দফায় দফায় সংঘর্ষে দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা মঙ্গলবার রাতে তার এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেছেন। কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ দাবি করছেন, নিহতদের একজন পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। রাজ্য পুলিশের আইজি আইনশৃঙ্খলা অখিলেশ কুমার সিং জানান, আন্দোলনকারীদের ছোড়া পাথর এবং ইটের ঘায়ে অন্তত ৪৮ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বাড়তি পুলিশ বাহিনী নিয়ে আসা হয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা অনুযায়ী স্বাভাবিক চলাচলে নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়। একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি মানুষ একত্রিত হওয়া, বিকেল ৫টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সব ধরনের যাতায়াত বন্ধ, মশাল নিয়ে মিছিল করা ইত্যাদি নিষিদ্ধ হয়েছে কার্ব আংলং এলাকায়। সেদিন থেকে মোবাইল ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে রেখেছে সরকার।
তাসকিনদের হারিয়ে প্লে-অফের পথে মোস্তাফিজের দুবাই

তাসকিনদের হারিয়ে প্লে-অফের পথে মোস্তাফিজের দুবাই বল হাতে মোস্তাফিজুর রহমান ও ওয়াকার সালামখিলের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পর শায়ান জাহাঙ্গীর ও জর্ডান কক্সের দারুণ ব্যাটিংয়ে শারজাহ ওয়ারিয়র্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে দুবাই ক্যাপিটালস। এই জয়ে ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে উঠে এল মোহাম্মদ নবির দল, যা তাদের প্লে-অফের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে দিল। দুবাইয়ে আজ টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দুবাই ক্যাপিটালস। মোস্তাফিজুর রহমানের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও আফগান স্পিনার ওয়াকার সালামখিলের ঘূর্ণিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৩৪ রানেই থমকে যায় শারজাহর ইনিংস। মোস্তাফিজ ১টি উইকেট শিকার করে টুর্নামেন্টে নিজের মোট উইকেট সংখ্যা ১৫-তে নিয়ে গেছেন। এক পর্যায়ে উইকেট সংখ্যায় তিনি সালামখিলের সমান হলেও, পরে সালামখিল আরও ২ উইকেট নিয়ে (মোট ১৭ উইকেট) শীর্ষস্থানটি নিজের দখলে রাখেন। ১৩৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দুবাইকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীর ও জর্ডান কক্স। শায়ান ৫১ রান করে আউট হলেও এক প্রান্ত আগলে রাখেন কক্স। শেষ পর্যন্ত ৫০ বলে ৬১ রান করে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। সহজ জয়ের পথে থাকা দুবাইকে ১৮তম ওভারে কিছুটা চাপে ফেলেছিলেন শারজাহর বাংলাদেশি পেসার তাসকিন আহমেদ। ওই ওভারের প্রথম বলে চার হজম করলেও দ্বিতীয় বলেই লুইস ডু প্লয়কে সাজঘরে ফেরান তিনি। টানটান উত্তেজনার সেই ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন তাসকিন। তবে ১৯তম ওভারে সব হিসাব পাল্টে দেন টিম সাউদি। ওই এক ওভারেই ১৮ রান তুলে নিয়ে শারজাহর জয়ের আশা কার্যত শেষ করে দেয় দুবাই। শেষ ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকে ছক্কা মেরে রোভম্যান পাওয়েল দলের জয় নিশ্চিত করেন। ৫ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটের জয় পায় দুবাই। এই জয়ের ফলে ৯ ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে এসেছে দুবাই ক্যাপিটালস। অন্যদিকে টানা হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতেই (৬ নম্বর) পড়ে রইল শারজাহ ওয়ারিয়র্স।
জিদানের সামনে ছেলে লুকার দাপুটে অভিষেক

জিদানের সামনে ছেলে লুকার দাপুটে অভিষেক ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানের জন্য গত রাতটি ছিল একেবারেই অন্যরকম। ফুটবল মাঠে অনেক গৌরবময় মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেও এবার তিনি গ্যালারিতে বসে উপভোগ করলেন ছেলের সাফল্যের আনন্দ। আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে (আফকন) আলজেরিয়ার হয়ে ছেলে লুকা জিদানের অভিষেক ম্যাচ ও জয় স্বচক্ষে দেখলেন এই ফরাসি কিংবদন্তি। মরক্কোর এল হাসান স্টেডিয়ামে সুদানের বিপক্ষে ৩-০ গোলের বড় জয় পায় আলজেরিয়া। ক্যারিয়ারের স্বর্ণযুগে জিনেদিন জিদান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে বিশ্ব কাঁপিয়েছেন, আর ২৭ বছর বয়সী ছেলে লুকা জিদান সামলাচ্ছেন আলজেরিয়ার গোলপোস্ট। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে পুরো সময় গোলপোস্টের নিচে অতন্দ্র প্রহরী হয়ে ছিলেন লুকা। ম্যাচে দুটি দুর্দান্ত সেভ করার পাশাপাশি অভিষেক ম্যাচেই তিনি রেখেছেন ‘ক্লিন শিট’। ছেলের খেলা দেখতে স্টেডিয়ামের সামনের সারিতেই বসেছিলেন জিনেদিন জিদান। ম্যাচ চলাকালীন স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে যখনই ফরাসি এই মহানায়কের মুখ ভেসে উঠছিল, তখনই পুরো গ্যালারি করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে। জিনেদিন জিদানের উপস্থিতি আলজেরীয় সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা যোগ করে। লুকা জিদানের ফুটবলের হাতেখড়ি ফ্রান্সে। তিনি ফ্রান্সের অনূর্ধ্ব-২০ দল পর্যন্ত খেলেছেন। তবে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ফিফা তাঁর জাতীয়তা পরিবর্তনের আবেদন অনুমোদন দেয়। এরপর অক্টোবরে উগান্ডার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আলজেরিয়ার হয়ে তার আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়। বর্তমানে তিনি স্প্যানিশ ক্লাব গ্রানাডার হয়ে গোলকিপিং করছেন। আলজেরিয়া ইতিমধ্যে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবং ফর্ম বজায় থাকলে আগামী বিশ্বকাপের মঞ্চে জিদান পরিবারের পরবর্তী সদস্য হিসেবে লুকা জিদানকে দেখা যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে
নাইজেরিয়ার মসজিদে বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ৭
নাইজেরিয়ার মসজিদে বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ৭ নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহর মাইদুগুরিতে একটি মসজিদের ভেতরে বোমা বিস্ফোরণে অন্তত সাতজন মুসল্লি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে। এই হামলার দায় এখনো কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। তবে জিহাদবিরোধী মিলিশিয়া নেতা বাবাকুরা কোলোর মতে, এটি একটি সন্দেহজনক বোমা হামলা। মাইদুগুরি নাইজেরিয়ার বর্নো রাজ্যের রাজধানী। এই রাজ্য দীর্ঘদিন ধরে জিহাদি সংগঠন বোকো হারাম এবং তাদের সহযোগী ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্সের (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। যদিও শহরটিতে গত কয়েক বছরে বড় ধরনের কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শহরের গামবোরু বাজার এলাকার একটি মসজিদের ভেতরে এই বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে নাগাদ মুসল্লিরা যখন মাগরিবের নামাজের জন্য জড়ো হয়েছিলেন, তখন মসজিদের ভেতর বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। মসজিদের অন্যতম নেতা মালাম আবুনা ইউসুফ নিহতের সংখ্যা আটজন বলে জানিয়েছেন। তবে সরকারি কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। নাইজেরিয়ান পুলিশের মুখপাত্র নাহুম দাসো এএফপিকে বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি যে সেখানে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। তিনি আরও জানান, বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণ দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করেছেন। বাবাকুরা কোলোর মতে, এই হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, বোমাটি মসজিদের ভেতর রাখা হয়েছিল এবং নামাজ চলাকালীন মাঝামাঝি সময়ে সেটি বিস্ফোরিত হয়। তবে কিছু প্রত্যক্ষদর্শী এটিকে আত্মঘাতী বোমা হামলা বলেও বর্ণনা করেছেন। আহতদের সঠিক সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে প্রত্যক্ষদর্শী ইসা মুসা ইউশাউ এএফপিকে বলেন, আমি অনেক আহত মানুষকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে দেখেছি। ঘটনার পরপরই ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় একজন ব্যক্তি মাটিতে কাতরাচ্ছেন এবং কয়েকটি মরদেহ চাদর দিয়ে ঢাকা রয়েছে। এদিকে, মাইদুগুরিতে কর্মরত একটি আন্তর্জাতিক এনজিও তাদের কর্মীদের কাছে পাঠানো নিরাপত্তা সতর্কবার্তায় গামবোরু বাজার এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। এএফপি ওই সতর্কবার্তাটি দেখেছে। ২০০৯ সাল থেকে নাইজেরিয়া জিহাদি বিদ্রোহের মুখে রয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যদিও এক দশক আগের তুলনায় সহিংসতা কিছুটা কমেছে, তবু এই বিদ্রোহ পাশের দেশ নাইজার, চাদ ও ক্যামেরুনেও ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় সহিংসতা নতুন করে বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিনের সামরিক অভিযানের পরও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এখনো প্রাণঘাতী হামলা চালানোর সক্ষমতা ধরে রেখেছে। মাইদুগুরি শহরটি একসময় নিয়মিত গোলাগুলি ও বোমা হামলার সাক্ষী ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শান্ত রয়েছে। শহরটিতে সর্বশেষ বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটে ২০২১ সালে। তবুও রাজ্যের রাজধানীতে সংঘাতের চিহ্ন এখনো স্পষ্ট। এখানেই বড় বড় সামরিক অভিযানের সদর দপ্তর অবস্থিত। প্রতিদিন সামরিক পিকআপ গাড়ি শহরের রাস্তায় চলাচল করে, যেগুলোর পেছনে সশস্ত্র সেনারা অবস্থান নেন এবং তাদের হেলমেট প্রখর দুপুরের রোদ থেকে সুরক্ষা দেয়। সন্ধ্যার পরও শহরে নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট কার্যকর থাকে। যদিও একসময় দুপুরের পর বন্ধ হয়ে যেত এমন বাজারগুলো এখন রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকে। অন্যদিকে, গ্রামীণ এলাকায় বিদ্রোহ এখনো অব্যাহত রয়েছে। বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলছেন, চলতি বছরে জিহাদি সহিংসতা আবারও বাড়তে পারে।