বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন

বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন। সোমবার (২৪ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের বাসভবনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেতা। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই, ইন্ডিয়া টুডে এ খবর প্রকাশ করেছে। ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর জানিয়ে বলিউড সিনেমার গুণী পরিচালক করন জোহর ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দিয়েছেন। গুণী তারকার একটি ছবি পোস্ট করে এই নির্মাতা-সঞ্চালক লেখেন, “একটি যুগের অবসান… এক মহাতারার প্রস্থান… মূলধারার সিনেমার এক বীরের প্রতিচ্ছবি… অবিশ্বাস্য রূপবান এবং পর্দায় এক অনন্য রহস্যময় উপস্থিতি… তিনি ছিলেন এবং চিরকাল থাকবেন ভারতীয় সিনেমার এক সত্যিকারের জীবন্ত কিংবদন্তি… যিনি সিনেমার ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী হয়ে আছেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন।” শূন্যতার কথা জানিয়ে করন জোহর লেখেন, “আজ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে বিশাল শূন্যতা তৈরি হলো… এমন এক শূন্যতা, যা কোনোদিন কোনোভাবে পূরণ হবে না… তিনি চিরকালই আমাদের একমাত্র ধর্মজি… আমরা আপনাকে ভালোবাসি, সদয় মহাশয়… আমরা আপনাকে ভীষণ মিস করব… আজ স্বর্গ ধন্য হলো… আপনার সঙ্গে কাজ করা ছিল আমার আশীর্বাদ…।” অনেক দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন ধর্মেন্দ্র। গত ১১ নভেম্বর তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। যদিও সেই খবর সঠিক ছিল না। তারপর থেকে বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা চলছিল। সোমবার (২৪ নভেম্বর) ফের তার মৃত্যুর খবর নেট দুনিয়ায় চাউর হয়। মূলত, আজ এ অভিনেতার বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার পর এই গুঞ্জনের সূচনা। তাছাড়া শোবিজ অঙ্গনের অনেকে ধর্মেন্দ্রর বাড়িতে হাজির হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ অভিনেতার মৃত্যুর খবর নিয়ে পরিবার থেকে কিছু জানানো হয়নি।   ১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার সাহনেওয়াল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষণ দেওল। ছোটবেলায় সিনেমার পর্দা ছিল তার কাছে জাদুর জানালা। সেই গ্রাম থেকে, কাদামাখা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনিও একদিন বড় পর্দায় আলো ছড়াবেন। ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনের ‘ট্যালেন্ট কনটেস্ট’-এ জয়ী হন। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। প্রথম সিনেমা মুক্তির পরই  নজর কাড়েন। তবে প্রকৃত সাফল্য আসে তারও কয়েক বছর পর। বিশেষ করে ‘শোলা আউর শবনম’ (১৯৬১), ‘বন্দিনী’ (১৯৬৩), ‘ফুল আউর পাথর’ (১৯৬৬) ও ‘সত্যকাম’ (১৯৬৯) সিনেমার মাধ্যমে। ষাট ও সত্তরের দশক ছিল ধর্মেন্দ্রর সোনালি যুগ। শক্তিমত্তা, মাধুর্য ও সংবেদনশীলতার এমন মিশেল বলিউড আগে দেখেনি। ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘ড্রিম গার্ল’, ‘শোলে’—প্রতিটি সিনেমায় ধর্মেন্দ্র হয়ে উঠেছেন ভারতীয় পুরুষত্বর নতুন সংজ্ঞা। শক্তির মধ্যে প্রেম, সাহসের মধ্যে কোমলতা—এই অনন্য ভারসাম্যই তাকে আলাদা করে দেয় সমসাময়িক নায়কদের থেকে। ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর প্রেমের গল্পই যেন একটি সিনেমা। ‘তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান’ সিনেমার শুটিং সেটে তাদের দেখা হয়। তারপর ‘শোলে’, ‘সীতা আউর গীতা’, ‘ড্রিম গার্ল’ এর মতো একের পর এক সিনেমায় রোমান্সের পরত জমতে থাকে। তখন ধর্মেন্দ্রর সংসারে ছিলেন প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌর। তবু হৃদয়ের টান থামেনি। সমাজের চোখ রাঙানি, সমালোচনা, বিতর্ক—সব পেরিয়ে ধর্মেন্দ্র ও হেমা এক হয়েছেন। ধর্মেন্দ্র বলেছিলেন, “আমি কাউকে আঘাত করিনি, আমি শুধু হৃদয়ের কথা শুনেছি।” হেমা মালিনী তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, “তিনি একসঙ্গে শক্তিশালী ও কোমল। ঝড়ের মাঝেও পাহাড়ের মতো পাশে থেকেছেন।” তাদের দুই মেয়ে এষা ও অহনা আজও বলেন—বাবা এখনো মায়ের জন্য শায়রি লেখেন, ভালোবাসায় বলেন, “মেরি হেমা।” ধর্মেন্দ্রর দুই সংসারে ছয়জন সন্তান রয়েছে। তারা হলেন—পুত্র সানি ও ববি দেওল, কন্যা এষা, অহনা, বিজেতা ও অজিতা। ধর্মেন্দ্রর অভিনয়ে অদ্ভুত মানবিকতা ছিল। ‘সত্যকাম’ সিনেমায় আদর্শবাদী যুবক থেকে শুরু করে ‘অনুপমা’ সিনেমার সংবেদনশীল লেখক—প্রতিটি চরিত্রেই জীবনের রঙ ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। ‘শোলে’ সিনেমায় ‘বীরু’ চরিত্রে তার সংলাপ—“বসন্তি, ইন কুত্তো কে সামনে মৎ নাচনা” এখনো ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অমর। কিন্তু পর্দার বাইরে তিনি একেবারে আলাদা মানুষ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “স্রষ্টা আমাকে সব দিয়েছেন। কিন্তু আমি কখনো দাবিদার হইনি।” এটাই ধর্মেন্দ্রর জীবনের দর্শন, বিনয়, মহত্ত্ব।  খ্যাতির চূড়ায় থেকেও ধর্মেন্দ্র তার জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত মাটির মানুষ ছিলেন। লোনাভালার খামারে কাজ করেছেন, ট্র্যাক্টর চালিয়ে ভিডিও পোস্ট করেছেন ইনস্টাগ্রামে। ২০২৫ সালের দশেরা উপলক্ষে ভিডিও বার্তায় বলেন, “ভালো মানুষ হয়ে বাঁচুন, তবেই সাফল্য আপনার পিছু নেবে।” তার এই সরলতাই তাকে কোটি ভক্তের হৃদয়ে অমর করেছে।  ধর্মেন্দ্রর জীবন মানেই হিন্দি সিনেমার ক্রমবিবর্তনের প্রতিচ্ছবি। সাদা-কালো যুগের সামাজিক নাটক থেকে সত্তরের দশকের অ্যাকশন ব্লকবাস্টার—সবকিছুতেই তিনি ছিলেন সামনের সারিতে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো— ফুল আউর পাথর (১৯৬৬), সত্যকাম (১৯৬৯), মেরা গাঁও মেরা দেশ (১৯৭১), শোলে (১৯৭৫), চুপকে চুপকে (১৯৭৫), দ্য বার্নিং ট্রেন (১৯৮০), লাইফ ইন আ মেট্রো (২০০৭), আপনে (২০০৭), রকি আউর রানি কি প্রেম কাহানি (২০২৪) প্রভৃতি। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তার অভিনীত ‘ইক্কিস’ সিনেমা। আগামী ডিসেম্বরে এটি মুক্তির কথা রয়েছে।   অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ বেশ কিছু সম্মাননা জমা পড়েছে ধর্মেন্দ্রর ঝুলিতে। ১৯৯০ সালে ‘ঘায়েল’ সিনেমার জন্য ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ধর্মেন্দ্র। ২০১২ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কার পান। ২০০৪ সালে লোকসভায় বিকানেরের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাছাড়া অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন এই অভিনেতা। তবে পুরস্কার ধর্মেন্দ্র একবার বলেছিলেন—“আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার সাধারণ মানুষের হাসিমুখ।”

ভূমিকম্প নিয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিঠি

ভূমিকম্প নিয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিঠি ভূমিকম্পে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তর। রবিবার (২৩ নভেম্বর) প্রধান প্রকৌশলী (রুটিন দায়িত্ব) মো. তারেক আনোয়ার জাহেদী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, ২১ নভেম্বর-২০২৫ এ সংগঠিত ভূমিকম্পে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় তার জেলার ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের ক্ষয়ক্ষতির তথ্যসহ সচিত্র প্রতিবেদন সংযুক্ত ছক মোতাবেক জরুরি ভিত্তিতে সোমবারের (২৪ নভেম্বর) মধ্যে স্বাক্ষরিত স্ক্যানকপি ও সফটকপি (Excel-Nikosh Font) ইমেইলে ([email protected]) প্রেরণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। এদিকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তথ্য আহ্বান করা হয়েছে। নির্ধারিত ছক অনুযায়ী আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে হার্ড ও সফট কপি নির্ধারিত ইমেইলে পাঠাতে হবে। ছকে জেলা-উপজেলার নাম, ক্ষতিগ্রস্ত কক্ষের সংখ্যা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ, বিবরণ ইত্যাদি তথ্য প্রধান শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। চিঠিতে জানানো হয়েছে, বিগত ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পন অনুভূত হয়। যার উৎপত্তিস্থল ছিলো ঢাকার কাছাকাছি নরসিংদী জেলায়। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জানা যায় যে, দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন অবস্থায়, বিভাগের আওতাধীন সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তথ্য সংযুক্ত ছক মোতাবেক আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে হার্ড ও সফট কপি (Nikos ফন্ট এক্সেল শিটে) পরিচালক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন-এর ইমেইলে ([email protected]) পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।

ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭০৫

ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭০৫ গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০৫ জন নতুন রোগী। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৬ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩৭ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৭ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৩ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৪ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচ জন, সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬ জন রয়েছেন।     ২৪ ঘণ্টায় ৮১৬ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এ যাবত মোট ৮৮ হাজার ২৫৮ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৯০ হাজার ৯৬৯ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক তিন শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক সাত শতাংশ নারী রয়েছেন।        গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে এ যাবত ডেঙ্গুতে মোট ৩৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।

সাময়িক বন্ধ হচ্ছে এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম

সাময়িক বন্ধ হচ্ছে এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার বিকাল ৪টা থেকে এই কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে। ইসি সূত্র জানিয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও প্রিন্টের কাজ শুরু হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম বন্ধের বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন) মো. সাইফুল ইসলাম। আজ সোমবার তিনি গণমাধ্যমে জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আজ বিকাল ৪টার পর থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ইসি সূত্র জানায়, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং তালিকা প্রিন্টের কার্যক্রম শুরু হবে। এজন্য সাময়িকভাবে এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম বন্ধ থাকতে পারে। তবে দ্রুতই এনআইডি সংশোধন কার্যক্রম চালু করা হবে।

আসন্ন নির্বাচনে কমনওয়েলথের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

আসন্ন নির্বাচনে কমনওয়েলথের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য কমনওয়েলথের পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি আয়োরকর বচওয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই সহযোগিতা কামনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পাশাপাশি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সফলভাবে আয়োজনের জন্য আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ সময় শার্লি বচওয়ে আশ্বস্ত করে বলেন, কমনওয়েলথ বাংলাদেশকে নির্বাচন এবং নির্বাচন-পরবর্তী উত্তরণ প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে। তিনি বলেন, কমনওয়েলথের ৫৬টি দেশ; যার মধ্যে জি–৭ ও জি–২০-এর সদস্যরাও রয়েছে। এর মাধ্যমে একে অপরকে সহায়তা করার অনেক সুযোগ রয়েছে। কমনওয়েলথ মহাসচিব জানান, তিনি দেশের প্রধান বিচারপতি, আইন উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।  তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে খুবই আশাবাদী। কমনওয়েলথ ভোটের আগে বেশ কয়েকটি পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। দুই নেতা তারুণ্যের ক্ষমতায়ন, উদ্যোক্তা উন্নয়ন, আরও সামাজিক ব্যবসা সৃষ্টি এবং বেকারত্ব, কার্বন নিঃসরণ ও বৈষম্য কমানোর লক্ষ্যে ‘তিন-শূন্য’ তত্ত্ব বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা করেছেন।

বেলিংহামের শেষ মুহূর্তের গোলে হার এড়াল রিয়াল

বেলিংহামের শেষ মুহূর্তের গোলে হার এড়াল রিয়াল জুদ বেলিংহামের শেষ মুহূর্তে করা সমতাসূচক গোল রিয়াল মাদ্রিদকে বাঁচিয়ে দিল পরাজয়ের হাত থেকে। শনিবার দিবাগত রাতে এলচের মাঠে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দুইবার পিছিয়ে পড়েও ২-২ ড্র করে রিয়াল। এই ড্রয়ে বার্সেলোনা থেকে মাত্র ২ পয়েন্টে এগিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে লস ব্লাঙ্কোস। প্রথমার্ধে ছিল গোল-মিসের উৎসব। অথচ তুমুল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের সেই অর্ধ শেষ হয় গোলশূন্যতেই। শুরুতেই রাউল আসেনসিওর পাস থেকে কিলিয়ান এমবাপ্পে গোল করার মতো অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। পাল্টা আক্রমণে আন্দ্রে সিলভাও খুঁজে পাননি পোস্ট। এরপর থিবো কোর্তোয়া দারুণ এক সেভে বাঁচান দলকে, রাফা মিরের শট ঠেকিয়ে দিয়ে। একদিকে মাদ্রিদের আক্রমণভাগ ব্যর্থ, অন্যদিকে সুযোগ পেয়েও এলচে বারবার ভুল করেছে। বিশেষ করে ২৭ মিনিটে আন্দ্রে সিলভার এক ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে শট না নিয়ে মিরকে খুঁজতে গিয়ে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। এমবাপ্পে এরপর আরেকবার গোলরক্ষক পেনিয়ার কাছে থামেন। দুই দলের গোলরক্ষকের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে প্রথমার্ধ ০-০ তে শেষ হয়। বিরতির পরও পেনিয়া আগের ছন্দ ধরে রাখেন। রদ্রিগোর শট চমৎকারভাবে ঠেকান তিনি। কোর্তোয়াও তাই। তবু গোল হজম এড়ানো গেল না। ৫৩ মিনিটে জার্মান ভালেরার পেছন দিকের ব্যাকহিল পাস থেকে ফেবাস ক্লোজ রেঞ্জ থেকে বল জালে পাঠান। এগিয়ে যায় এলচে। এরপর জাবি আলোনসো একের পর এক পরিবর্তন আনেন। বেঞ্চ থেকে নামানো ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ৭২ মিনিটে গোলের সামনে বল পেয়েও শট না নিয়ে এমবাপ্পেকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আলভারো নুনিয়েজ তা কাটিয়ে দেন। অবশেষে আক্রমণের চাপ ধরে রেখে ৭৮ মিনিটে হুইসেন গোল করে সমতা ফেরান। এলচের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের কর্নার ক্লিয়ার করতে না পারার ব্যর্থতার সুযোগটা নেন তিনি। সমতায় ফিরেও থামেনি এলচে। মির ও মার্টিন নেটো দুইজনই লিড পুনরুদ্ধারের সুযোগ পেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ৮৪ মিনিটে রদ্রিগেজ বক্সের ঠিক বাইরে থেকে দারুণ শটে এলচেকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। ২০১৩ সালে লা লিগায় ফেরার পর এই প্রথম রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জয়ের গন্ধ পাচ্ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু নাটক বাকি ছিলই। ৮৭ মিনিটে ফ্রি-কিক ক্লিয়ার করতে না পারলে বল এসে পড়ে বেলিংহামের সামনে। তিনি টোকা দিয়ে গোললাইন পার করিয়ে দেন। রক্তাক্ত অবস্থায় পেনিয়ার ফাউলের দাবি রেফারি আমলে নেননি। যোগ করা সময়ের শুরুতেই হতাশা বাড়ে এলচের। এমবাপ্পেকে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ দেখে মাঠ ছাড়েন ভিক্টর চুস্ত। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় ম্যাচ। ম্যাচ শেষে রিয়ালের কোচ আলোনসো বলেন, ‘‘ফুটবল এমনই। ভালো একটা সময় কাটানোর পর হঠাৎ খারাপ ফল আসতেই পারে। সমালোচনা হবে, আমাদের তা মেনে নিয়েই এগোতে হবে। দল এখনো লড়াই করে যাচ্ছে, আমরা উন্নতির জায়গাগুলো দেখব। সামনে অনেক ম্যাচ আছে। আমাদের সেখানেই ফোকাস করতে হবে। আমরা ফলাফলে খুশি নই, তবে ছন্দে ফিরতেই হবে।’’

ইজের হ্যাটট্রিকে টটেনহ্যামকে উড়িয়ে দিল আর্সেনাল

ইজের হ্যাটট্রিকে টটেনহ্যামকে উড়িয়ে দিল আর্সেনাল এবেরেচি ইজের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক আরো একবার আর্সেনালকে উল্লাসের উপলক্ষ্য এনে দিল। শনিবার রাতে টটেনহ্যামকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানও আরও পাকাপোক্ত করল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা চেলসির চেয়ে এগিয়ে থাকল ৬ পয়েন্টে। আগের দিন শিরোপা প্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার সিটির পরাজয় যেন মিকেল আর্তেতার দলের সামনে দরজা খুলে দিয়েছিল। আর আঘাত-প্রত্যাঘাতে জর্জরিত স্কোয়াড নিয়েও আর্সেনাল দেখিয়ে দিল এদিন তারা ছিল টটেনহ্যামের তুলনায় কয়েক ধাপ এগিয়ে। ব্যথা আরও গভীর এ কারণে যে, যিনি আর্সেনালের জয়ের মূল কারিগর, সেই ইজে সহজেই টটেনহ্যামের জার্সি গায়ে চাপাতে পারতেন! গত আগস্টে ক্রিস্টাল প্যালেস থেকে স্পার্সের সঙ্গে চুক্তির খুব কাছাকাছি ছিলেন ইজে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে তাকে দলে তুলে নেয় আর্সেনাল। নতুন ক্লাবে ধীরগতির শুরু হলেও ডার্বির মঞ্চে নিজেকে নতুন করে পরিচয় দিলেন ইংলিশ মিডফিল্ডার। ৪১ মিনিটে প্রথম গোল, তার আগেই লেয়ান্দ্রো ট্রোসারের দারুণ ফিনিশ, আর দ্বিতীয়ার্ধে পরপর দুটি গোল করে ম্যাচ বল তুলে নিলেন তিনি। দুই দলের ইনজুরি তালিকা নিয়েই পুরো সপ্তাহ জুড়ে আলোচনা ছিল। আর্সেনাল পায়নি ৫৫ মিলিয়ন পাউন্ডের ফরোয়ার্ড ভিক্টর গিয়কেরেসকে। তবুও স্পার্স কোচ থমাস ফ্রাঙ্ক তিন ডিফেন্ডারের ফর্মেশনই বেছে নেন। শুরুর দিকেই ইজের চমৎকার পাস থেকে ডিক্লান রাইস সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তার শট ব্লক করে দেন গুগলিয়েলমো ভিকারিও। আর্সেনাল বল দখলে এগিয়ে থাকলেও প্রথম ৩০ মিনিটে খেলার গতি ছিল ভারসাম্যপূর্ণ। বুকায়ো সাকা দুটো ফ্রি কিক থেকে চেষ্টা করেছিলেন। একটি ওপর দিয়ে যায়, আরেকটি ঠেকিয়ে দেন ভিকারিও। কিন্তু স্পার্সের রক্ষণভাগের স্থিরতা টিকল মাত্র এক মুহূর্তের জন্য। ৩৬ মিনিটে মিকেল মেরিনোর নিখুঁত পাসে দৌড়ে ঢুকে পড়েন ট্রোসার্ড। মিকি ফান দে ভেনের পায়ের ছোঁয়া বলকে সামান্য দিক বদল করালেও ভিকারিওকে পরাস্ত করলেন বেলজিয়াম তারকা। ডেসটিনি উদোগির ভুলে অফসাইড ফাঁদও ভেঙে যায়। চার মিনিট পর আসে দ্বিতীয় ধাক্কা। জুরিয়েন টিম্বারের ক্রস হেড করে ফিরিয়ে দেন কেভিন ডানসো। কিন্তু সেই বল থেকেই রাইস এক টাচে পাস বাড়িয়ে দেন একেবারে ফাঁকা থাকা ইজেকে। দু’জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিচু শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। ভিএআর দ্রুত অফসাইড পরীক্ষা করলেও কোনো সমস্যা না থাকায় গোলেই মেলে অনুমোদন। এমিরেটস তখন কানফাটা উদযাপনে গর্জে ওঠে। বিরতির আগে আর গোল হজম না করলেও দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই আবার দিশাহারা স্পার্স। শুরু হওয়ার মাত্র ৩৫ সেকেন্ড পরই ইজে আবার গোল করে ৩-০ করেন। টিম্বারের পাস ধরে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১৬ গজ দূর থেকে দারুণ নিখুঁত ফিনিশ। এই গোলেই তার আগের ১৭ ম্যাচের গোলসংখ্যা ছুঁয়ে ফেলেন! টটেনহ্যাম পুরোপুরি হতচকিত। তবে ঠিক ৫৫ মিনিটে এক ঝলকে ম্যাচে ফেরেন তারা। মাঝমাঠে পালহিনার ট্যাকল থেকে বল পেয়ে রিচার্লিসন দেখেন গোলরক্ষক ডেভিড রায়া অনেকটা এগিয়ে এসেছেন। ৪০ গজ দূর থেকে লব করে অসাধারণ এক গোল করেন তিনি। এরপর সার, র‍্যান্ডাল কলো মুয়ানিকে নামান কোচ ফ্রাঙ্ক। ভিকারিও সাকার একটি বাঁকানো শটও ঠেকান। কিন্তু এরপরই নিশ্চিত করে নেয় আর্সেনাল জয়ের পথ। ট্রোসার্ড ডান দিক থেকে দারুণ পাস বাড়ান ইজের জন্য। উদোগিকে পাশ কাটিয়ে ৭৬ মিনিটে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি, উত্তর লন্ডন ডার্বির ইতিহাসে মাত্র চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে।

অবিশ্বাস্য নাটকীয়তার ফাইনালে সুপার ওভারে হারলো বাংলাদেশ ‘এ’, পাকিস্তান শাহীনস চ‌্যাম্পিয়ন

অবিশ্বাস্য নাটকীয়তার ফাইনালে সুপার ওভারে হারলো বাংলাদেশ ‘এ’, পাকিস্তান শাহীনস চ‌্যাম্পিয়ন উত্তেজনা, নাটকীয়তা, রোমাঞ্চ, নখ কামড়ানো একেকটি মুহুর্ত, একেকটি বল। হৃদস্পন্দন থেমে যাওয়ার উপক্রম। পেণ্ডুলামের মতো ঝুলতে থাকা ফাইনাল ম‌্যাচে কখনো পাকিস্তান শাহীনসের মুখে হাসি। আবার কখনো হাসে বাংলাদেশ ‘এ’। সব সীমা অতিক্রম করে, চরম নাটকীয়তা শেষে ইতিহাসের পাতায় পাকিস্তান শাহীনস। দোহায় এশিয়া কাপ রাইর্জিং স্টারসের ফাইনাল ম‌্যাচ। নির্ধারিত ২০ ওভারের ম‌্যাচে কেউ কাউকে হারাতে পারে না। ম‌্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানে পাকিস্তান শাহীনস কাছে ম‌্যাচ হেরে শিরোপা হারিয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল।  মূল ম‌্যাচে পাকিস্তান শাহীনস আগে ব‌্যাটিং করতে নেমে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায়। জবাব দিতে নেমে ৯৬ রানে ৯ উইকেট হারায় বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ম‌্যাচ তখন পাকিস্তান শাহীনসের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু দশম উইকেটে সাকলায়েন আহমেদ ও রিপন মণ্ডল সব এলোমেলো করে দেন। রুদ্ধশ্বাস ব‌্যাটিংয়ে ২৯ রানের জুটি গড়ে ম‌্যাচ নিয়ে যান সুপার ওভারে। যদিও তারা শেষ ওভারে জয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। শেষ ওভারে জয়ের জন‌্য ৭ রান লাগত বাংলাদেশ ‘এ’-র। প্রথম বলেই রিপন ডাবলস নিলে ম‌্যাচ নেক টু নেক চলে আসে। পরের দুই বলে দুই ব‌্যাটসম‌্যান ২ রান নেন। চতুর্থ বলে গড়বড় করেন রিপন। পেসার আহমেদ ডানিয়েলের স্লোয়ার বাউন্সারে কোনো রান নিতে পারেননি। তাতে চাপ বেড়ে যায়। পরের ২ বলে কোনো বাউন্ডারি না পাওয়ায় ১ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয়। সুপার ওভারেও ব‌্যাটিং ছিল তালগোল পাকানো। প্রথমে সাকলায়েন ও পরে জিসান আলম আউট হলে বাংলাদেশ ৩ বলেই গুটিয়ে যায়। অথচ হাবিবুর প্রথম বলে ১ রান নেওয়ার পর একটি ওয়াইড ও বাই চারে বাংলাদেশ ২ বলে ৬ রান পেয়ে যায়। তৃতীয় বলেই জিসান আউট হলে বাংলাদেশ ‘এ’-র শিরোপার স্বপ্নও শেষ হয়ে যায়। সাদ মাসুদের বাউন্ডারিতে ২ বল আগেই পাকিস্তান শাহীনস জিতে নেয় সুপার ওভার। নাম বদলে শুধু ‘ইমার্জিং’ থেকে ‘রাইজিং স্টারস’ হয়েছে। বাকিটা ঠিকই আছে, এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল‌্য ২০১৯ সালে রানার্সআপ হওয়া। সেটাও ঘরের মাঠে পাকিস্তানের কাছে হেরে। ৬ বছর পর সেই একই তিক্ততার মুখোমুখি বাংলাদেশ ‘এ’। পাকিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করা দল পাকিস্তান শাহীনস (আদতে ‘এ’ দল)  ফাইনালে হৃদয় ভাঙে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের। প্রতিযোগিতার সাত আসরে দ্বিতীয়বার রানার্সআপ বাংলাদেশ ‘এ’। তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তান শাহীনস চ‌্যাম্পিয়ন। এছাড়া শ্রীলঙ্কা জিতেছে দুইবার। ভারত ও আফগানিস্তান জিতেছে একবার করে। রোববার দোহায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে শিরোপা জয়ের দারুণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দলের। কিন্তু ব‌্যাটিংয়ে চরম ব‌্যর্থ হয়ে ম‌্যাচটা স্রেফ উপহার দিয়ে আসেন আকবর আলীরা। টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে পাকিস্তান শাহীনসকে অল্পরানে আটকে রাখার পরিকল্পনা করেছিল দল। নিজেদের বোলিং পরিকল্পনায় তারা পুরোপুরি সফল। দারুণ বোলিং, দুর্দান্ত ফিল্ডিং এবং মাঠে চনমনে থাকা দল পাকিস্তান শাহীনসকে এক মুহূর্তের জন‌্য থিতু হতে দেয়নি। রান আউটে শুরু হয় আক্রমণ। রান আউটেই শেষ। বাকি ৮ উইকেটের ৩টি নেন রিপন মণ্ডল। ২টি পেয়েছেন রাকিবুল হাসান। এছাড়া ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মেহরব, জিসান ও সাকলায়েন। পাকিস্তান শাহীনসের সাত ব‌্যাটসম‌্যান দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় চরম ব‌্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে তারা। দলকে উদ্ধার করেন সাতে নামা সাদ মাসুদ। ২৬ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন তিনি। এছাড়া আরাফাত মিনহাস ২৫ ও মাস সাদাকাত ২৩ রান করে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন। জবাবে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের শুরুটা খারাপ ছিল না। জিসান আলমকে এক পাশে রেখে হাবিবুর রহমান সোহান আক্রমণ করে দলের রান এগিয়ে নেন। ২.৩ ওভারে রান ২২। ওই সময়ে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ ‘এ’। এক ছক্কা মেরে জিসান আউট হন। সঙ্গী হারানোর পর হাল ছাড়েননি হাবিবুর। আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব‌্যাটিং করে এগিয়ে যান। কিন্তু ভুল এক শটেই সব শেষ! হাবিবুর শুধু নিজের বিপদই ডেকে আনেননি, ম‌্যাচের এপিটাফ লিখে দেন। ১৭ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৬ রান করে হাবিবুর আউট হন সাদ মাসুদের বলে। এরপর দলের পাঁচ ব‌্যাটসম‌্যানের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। ৩৬ থেকে দলীয় রান ৫৩ রানে যেতে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ ‘এ’। জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলে প্রথমবার ডাক পাওয়ার দিনে মাহিদুল অঙ্কন রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে শূন‌্য রানে আউট হন। ইয়াসির কাভারে ক‌্যাচ দেন ৮ রানে। আকবর (২), রাব্বী (৩) ও মৃতু‌্যঞ্জয় (০) ক্রিজে গিয়েছেন আর ফিরেছেন। এই ৩টি উইকেট নেন সুফিয়ান মুকিম। চায়নাম‌্যানের গুগলি বুঝতেই পারেননি তারা। ৫৩ রানে বাংলাদেশ ‘এ’-র ৭ ব‌্যাটসম‌্যান সাজঘরে। সেখান থেকে লড়াই শুরু করেন রাকিবুল ও মেহরব। ধ্বংসস্তুপ থেকে দলকে টেনে তোলেন। রাকিবুল দুটি চার ও একটি ছক্কায় জবাব দেন। মেহরব হাঁকান একটি চার। তাদের ২৬ রানের জুটিতে ম‌্যাচে ফেরে বাংলাদেশ ‘এ’। ৩৬ বলে ৪৭ রান প্রয়োজন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের। সেখানে শাহীদ আজিজকে প্রথম বলেই ছক্কা উড়ান মেহরব। তাতে ড্রেসিংরুমে ফেরে প্রাণ। এরপর সিঙ্গেল-ডাবলসে লক্ষ‌্য আরো কাছাকাছি আসতে শুরু করে। কিন্তু বড় শট খেলতে গিয়েই বিপদে পড়েন মেহরব। পেসার আহমেদ ডানিয়েলের শর্ট বল উড়াতে গিয়ে ডিপ ব‌্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক‌্যাচ দেন বাঁহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। ২১ বলে ১৯ রান করেন তিনি। তখনও জয় বেশি দূরে ছিল না বাংলাদেশের। ২৭ বলে লাগত ৩৬ রান। কিন্তু হাতে উইকেট কেবল ২টি। এক ওভারের বিরতিতে দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ রান করা রাকিবুল এলবিডব্লিউ হন। তবুও হাল ছাড়েন না সাকলায়েন ও রিপন। সাকলায়েন ১৯তম ওভারে আজিজকে দুটি ছক্কা ও রিপনকে এক ছক্কা মারেন। তাতে সমীকরণ দাঁড়ায়  ৬ বলে ৭ রান। কিন্তু শেষ ওভারে ১ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় তাদেরকে। এরপর সুপার ওভারেও। ফাইনাল ম‌্যাচটা হেরে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা নিয়েই এখন দেশে ফিরতে হবে তাদের।

রোনালদোর বিস্ময়কর বাইসাইকেল কিকে আল-নাসরের দাপুটে জয়

রোনালদোর বিস্ময়কর বাইসাইকেল কিকে আল-নাসরের দাপুটে জয় ৪০ বছর বয়সেও যেন সময়কে থামিয়ে রেখেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। রোববার রাতে সৌদি প্রো লিগে আল-নাসরের হয়ে আবারও দেখালেন সেই চেনা জাদু। এক অসাধারণ বাইসাইকেল কিকে গোল করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন পর্তুগিজ তারকা। ডান দিক থেকে আসা একটি ক্রসে মুহূর্তের মধ্যে শরীরকে আকাশে ভাসিয়ে অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে যে গোলটি করলেন, সেটি আটকানোর কোনো উপায়ই ছিল না প্রতিপক্ষ গোলকিপারের। রোনালদোর এই গোলেই আল নাসর ৪-১ ব্যবধানে হারায় আল-খালিজকে। আন্তর্জাতিক বিরতিতে পর্তুগাল দলে তিনি লাল কার্ড দেখেছেন আয়ারল্যান্ড ম্যাচে। আবার দেশকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করানোর উৎসবও করেছেন। ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা জাগিয়েছেন তিনি। যা হবে ইতিহাসের নতুন অধ্যায়। ২০২৫-২৬ মৌসুমে আল-নাসর যেন থামতেই জানে না। আল-খালিজের বিপক্ষে এই ৪–১ গোলের জয় তাদের টানা নবম জয়। লিগে সর্বোচ্চ ৩০ গোল করে তালিকার শীর্ষে তারা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও জোয়াও ফেলিক্স; দুজনেই করেছেন ১০টি করে গোল, দলটিতে এখন যেন পর্তুগিজ ঝড়। আল-আওয়াল পার্কে এই ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল আল-নাসর। চতুর্থ মিনিটেই ফেলিক্সের নিখুঁত পাস থেকে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন রোনালদো। যদিও অল্পের জন্য বাইরে যায় বলটি। এরপর সাদিও মানের দুর্দান্ত ক্রস থেকে ছয় গজ বক্সের ভেতর থেকেও পান আরও একটি সুযোগ। কিন্তু গোলকিপার অ্যান্থনি মরিস অবিশ্বাস্য সেভে বাঁচান দলকে। ৩৩ মিনিটে ফেলিক্সের গোলটি ভিএআর চেকের পরে হ্যান্ডবলের কারণে বাতিল হয়ে যায়। তবে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি আল-নাসরকে। অ্যাঞ্জেলোর দুর্দান্ত ক্রসে ফেলিক্স এবার ঠিকই বল জালে জড়ান। কয়েক মিনিট পরই ফেলিক্সের প্রেসিং থেকে পাওয়া বল ধরে ওয়েসলি করেন দারুণ এক গোল। তাতে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় আল নাসর। বিরতির পরই ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় আল-খালিজ। শুরুতেই মুরাদ আল হাওসাভির দুর্দান্ত এক শটে ব্যবধান কমে আসে। মুহূর্তেই বদলে যায় ম্যাচের রং। চাপ বাড়াতে থাকে অতিথিরা। তবে গোলরক্ষক নাওয়াফ আল-আকিদির দৃঢ়তায় টিকে থাকে আল-নাসর। এরই মাঝে সাদিও মানে চমৎকার এক লব শটে ব্যবধান বাড়িয়ে দেন ৩-১ এ। তারপর বিরাট ভুল করেন আল-খালিজের দিমিত্রিওস কুরবেলিস। আলি আল হাসানের ওপর ভয়ংকর স্টাম্পিং করে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। এরপরই আসে রাতের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ; ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সেই জাদুকরি বাইসাইকেল কিক। নাওয়াজ বুশালের ক্রসে হাওয়ায় ভেসে উঠে নিখুঁত ওয়ালি, বল গিয়ে জড়ায় জালের কোণায়। পুরো স্টেডিয়াম মুহূর্তের মধ্যে উল্লাসে মুখরিত হয়ে ওঠে। ৪-১ ব্যবধানে নিশ্চিত হয়ে যায় আল নাসরের বড় জয়। ফেলিক্স ছিলেন দলের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। এক গোলের পাশাপাশি ওয়েসলির গোলে দেন গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসিস্ট। লিগের যৌথ সর্বোচ্চ গোলদাতাও এখন তিনি ও রোনালদো। তবে ব্রোজোভিচের দিনটা ছিল একেবারেই বাজে। অযথা হাত দিয়ে বল ছুঁয়ে ফেলায় দল বঞ্চিত হয় সম্ভাব্য এক দুর্দান্ত গোল থেকে। প্রথমার্ধেই তাকে তুলে নেন কোচ হেসুস।

পাকিস্তানে আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে বন্দুকধারীদের হামলা

পাকিস্তানে আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে বন্দুকধারীদের হামলা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়েছে। আজ সোমবার এ হামলা হয়েছে বলে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের। একটি নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তর ভবনটিতে দুই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “প্রথম আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী প্রথমে কনস্টেবলের প্রধান প্রবেশপথে হামলা চালায় এবং অন্যজন কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে।” কর্মকর্তা আরো বলেন, “সেনাবাহিনী ও পুলিশ সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এলাকাটি ঘিরে রেখেছে এবং পরিস্থিতি সাবধানতার সাথে পরিচালনা করছে। কারণ, আমাদের সন্দেহ হচ্ছে সদর দপ্তরের ভিতরে কিছু সন্ত্রাসী রয়েছে।” সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরটি একটি সেনানিবাসের কাছে জনাকীর্ণ এলাকায় অবস্থিত।