‘একশটা টেস্টই যেন শেষ না হয়’

‘একশটা টেস্টই যেন শেষ না হয়’ যে ক্ষণটার জন‌্য অপেক্ষা ছিল, যে সময়টার জন‌্য প্রতীক্ষা ছিল তার খুব কাছাকাছি ক্রিকেটাঙ্গন। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম যিনি টেস্ট ক্রিকেটের তিন অঙ্কে পৌঁছতে যাচ্ছেন। ১৯ নভেম্বর ঢাকায় আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট। এই টেস্টেই শততম টেস্টে মাইলফলক স্পর্শ করবেন মুশফিকুর। সময় তাই যত ঘনিয়ে আসছে ততই মুশফিকুরকে ঘিরে বাড়ছে উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা ও রোমাঞ্চ। যা ছুঁয়ে যাচ্ছেন মুশফিকুরের কোচদেরও। যাদের সঙ্গে ক‌্যারিয়ারের বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন, তাদের সবার চাওয়া মাইলফলক ছোঁয়া এই সময়টা তিনি উপভোগ করুক প্রাণ খুলে। নিজের আনন্দে খেলুক। শুধু তা-ই নয়, একশ টেস্টেই যেন থমকে না যায় মুশফিকুর ব‌্যাট। অন্তত এক-দুই বছর তাকে টেস্ট অঙ্গনে দেখতে চান প্রত‌্যেকে। কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ ‘‘আমাদের দেশে যারা টেস্ট খেলে তাদের টেস্টের সংখ্যা কম। এটা যদি ইংল্যান্ড হইতো বা অস্ট্রেলিয়াতে হতো বা ভারতেরও হতো, ওর যতদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, এতদিনে দেড়শ টেস্ট খেলে ফেলতো। সেই হিসাবে ইদানিং আমাদের একটু টেস্ট সংখ‌্যা বেড়েছে টেস্ট চ‌্যাম্পিয়নশিপের কারণে। আগে তো অনেক কম হইতো। সেখান থেকে একশটা টেস্ট খেলা মানে বিশাল কিছু।’’ ‘‘ওর সফরটা দেখেন আপনি। শুধু একশ টেস্ট বলবেন…ও কতদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। এমন না যে অযথাই খেলছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিন্তু আপনার পারফর্ম করে খেলতে হয়। আপনি পারফর্ম ছাড়া থাকলে আপনাকে কিন্তু খেলাবে না।’’ ‘‘মুশফিকুরকে তার পারফরম্যান্সটা ধরে রাখতে হয়েছে। আমাদের দেশের প্রথম একজন যে একশ টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। এজন‌্য ও নিজেকে প্রস্তুত রেখেছে। ওই ক্ষুধাটা তার ছিল। ওই জেদটা তার ছিল। আমি আশা করব, যদি দলের চাহিদা থাকে এবং তারও খেলার ইচ্ছা তাহলে যেন আরো খেলা চালিয়ে যায়। আরো বেশিদিন মাঠে থাকে। মানে একশটা টেস্ট যেন শেষ না হয়।’’ মিজানুর রহমান বাবুল কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ ‘‘মুশফিকুরকে শুভকামনা। একজন পারফেক্ট ব‌্যাটসম‌্যান। একজন পারফেক্ট স্পোর্টসম‌্যান। যাকে আপনি অনুসরণ করলে, যাকে আপনি মেনে চললে, আদর্শ ভাবলে ক‌্যারিয়ারে উন্নতি করতে পারবেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট যেভাবে চলে, যে ধাঁচে এগিয়ে যায় সেখানে একজনের ক‌্যারিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে ২০ বছর টিকে থাকা মুশকিল। মুশফিকুর প্রমাণ করেছে যদি আপনার নিবেদন থাকে, ভালো করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি পারবেন।’’ ‘‘ব‌্যাটসম‌্যান মুশফিকুর সব সময়ই বাংলাদেশ দলের সেরা। মিডল অর্ডারে লম্বা সময় বাংলাদেশকে সার্ভ করেছে। দেখুন তাকে চ‌্যালেঞ্জ করে কেউ তাকে রিপ্লেস করতে পারেনি। পারফর্ম করেই সে টিকে আছে এবং খেলে যাচ্ছে। আমি চাই সে সেই ধারাবাহিকতাই ধরে রাখুক। এখনো ফিট আছে। অন‌্যদের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করছে। খেলার প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এটা হয় না।’’ ‘‘শততম টেস্টটায় সেঞ্চুরি লাগবেই, এমনটাই নয়। হলে ভালো। না হলেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। থামলে হবে না। ওর অভিজ্ঞতাটা এই দলের প্রয়োজন এখন। যতদিন খেলতে মন চায় খেলুক। ও তো পারফর্ম না করে আর খেলবে না। তরুণ একজন ক্রিকেটার যদি তার ডেডিকেশন সম্পর্কে জানতে পারে সেটাই হবে বড় পাওয়া।’’

ইতালিকে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপে নরওয়ে

ইতালিকে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপে নরওয়ে আরলিং হালান্ড যেন নিজেই ইতিহাস লিখে চলেছেন। দুই মিনিটের ব্যবধানে তার দুর্দান্ত দুই গোল ইতালিকে সান সিরোতে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে নরওয়েকে নিয়ে গেল ১৯৯৮ সালের পর তাদের প্রথম বিশ্বকাপে। ম্যানচেস্টার সিটির এই সুপারস্টারের গ্রুপপর্বে গোলসংখ্যা দাঁড়াল ১৬। যা পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানদোভস্কির রেকর্ডের সমান। ‘গ্রুপ–আই’ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোয়ালিফাই করতে নরওয়ের সামনে ছিল শুধু গণিতের হিসাব মেলানোর অপেক্ষা। তাদের বাদ দিতে ইতালির দরকার ছিল অবাস্তব এক নয় গোলের ব্যবধান। যা মাঠে সম্ভব হয়নি। তাই দীর্ঘ ২৮ বছর পর বিশ্বমঞ্চে ফিরতে যাচ্ছে নরওয়ে। আত্মবিশ্বাসও আকাশছোঁয়া। গত জুনে ইতালিকে ৩–০ গোলে হারানো ম্যাচটাই শেষ পর্যন্ত লুচিয়ানো স্পালেত্তির চাকরি শেষ করে দেয়। তার উত্তরসূরি জেনারো গাত্তুসো এবার প্লে-অফের প্রস্তুতি নেবেন। গাত্তুসো তার সেরা খেলোয়াড়দেরই দলে ফেরান। মোলদোভার বিপক্ষে খেলা দলে কেবল জিয়ানলুকা মানচিনি টিকে থাকেন। অন্যদিকে নরওয়ের একমাত্র পরিবর্তন, এস্তোনিয়ার বিপক্ষে খেলা অস্কার ববের জায়গায় নামেন ক্রিস্টিয়ান থরস্টভেট। প্রথমার্ধজুড়ে ইতালি ছিল আধিপত্যে। ফেদেরিকো দিমারকোর ভলিটি সামান্য বাইরে গেলে ১১তম মিনিটে আলো ছড়ান মাত্র ২০ বছর বয়সী ফ্রানচেস্কো পিও এসপোসিতো। দুর্দান্ত টার্ন আর নিখুঁত ফিনিশ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলেন তিনি। এরপর এসপোসিতো আরেকটি হেড বাইরে পাঠালেও দুই দলই তেমন পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। মাঝপথে রেফারির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে গাত্তুসো কার্ডও দেখেন। বিরতির পর যেন নতুন উদ্যমে মাঠে নামে নরওয়ে। আলেকজান্ডার সর্লোথের শট বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর চুলের অনন্য সাজে পরিচিত জুলিয়ান রাইয়েরসনও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।

সৌদিতে বাস-ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষে ৪২ ভারতীয় ওমরাহযাত্রী নিহত

সৌদিতে বাস-ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষে ৪২ ভারতীয় ওমরাহযাত্রী নিহত সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার পথে ওমরাহ পালন করতে যাওয়া ভারতীয় যাত্রী বহনকারী একটি বাসের সঙ্গে একটি ডিজেলবাহী ট্যাংকারের কমপক্ষে ৪২ জন নিহত হয়েছেন। খবর এনডিটিভির। মুফরিহাটের কাছে ভারতীয় সময় রাত দেড়টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গেছে। খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাসটি মক্কা থেকে মদিনার দিকে যাচ্ছিল। বাসের বেশিরভাগ যাত্রী তেলেঙ্গানার হায়দ্রাবাদ থেকে এসেছিলেন। দুর্ঘটনার সময় দলটি তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে মদিনার দিকে ফিরছিল বলে জানা গেছে। গালফ নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, সংঘর্ষের পর বাসটিতে আগুন ধরে যাওয়ার সময় অনেক যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে, ফলে তাদের পালানোর সুযোগ খুব কম ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১১ জন নারী এবং ১০ জন শিশু রয়েছে, যদিও কর্তৃপক্ষ এখনও সংখ্যাটি যাচাই করছে।  উদ্ধারকারী দল জানিয়েছে, বাসটি সম্পূর্ণরূপে পুড়ে গেছে, যার ফলে নিহতদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকার জানিয়েছে, তারা রিয়াদে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি নয়াদিল্লির কর্মকর্তাদের দূতাবাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করতে বলেছেন।

বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ৩০০ জন

বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ৩০০ জন পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে।  বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ভারতীয় সীমান্তে জড়ো হচ্ছে শত শত মানুষ। পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থানা এলাকার হাকিমপুর সীমান্তে এমন ঘটনা দেখা গেছে। বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র এই সীমান্তেই জড়ো হয়েছেন নারী শিশু সহ অন্তত ৩০০ জন বাংলাদেশি নাগরিক। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে, শহর থেকে বিভিন্ন সময়ে ভারতে অনুপ্রবেশকারী এই বাংলাদেশিরা ফের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য হাকিমপুর সীমান্তে এসে পৌঁছেছেন। কেউ দালালের মাধ্যমে কেউ আবার নিজেরাই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এসেছেন সীমান্তে। কিন্তু বিএসএফের বাধায় সীমান্তেই আটকে পড়েছেন এই বাংলাদেশিরা।  আটকে পড়া ব্যক্তিরা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে ভারতে অনুপ্রবেশের পর তারা কলকাতা, দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরু থেকে মুম্বাইয়ের মতো শহরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ভারত জুড়ে শুরু হওয়া এসআইআরের কারণে জেল ও জরিমানা এড়াতে দেশে তারা ফিরতে চাইছেন। অফিসিয়াল বিবৃতি জারি না করলেও বিএসএফ সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে এমন ছবি শুধুমাত্র হাকিমপুর সীমান্তের নয়। এই সীমান্তে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের সংখ্যাটা অনেক বেশি। বিএসএফ জানিয়েছে, আটকে পড়া এই বাংলাদেশিদের মানবিক বিবেচনায় গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্বের দাবির স্বপক্ষে নিথিপত্র বিএসএফের ১৪৩ নম্বর ব্যাটালিয়ন খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে আগামী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পশ্চিমবঙ্গে আরো ২৬ বাংলাদেশি জেলে গ্রেপ্তার

পশ্চিমবঙ্গে আরো ২৬ বাংলাদেশি জেলে গ্রেপ্তার আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের অভিযোগে আরো ২৯ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে তাদের মাছ ধরার ট্রলারটিও। রবিবার গভীর রাতে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ার অভিযোগে তাদের আটক করে ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনী। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য রবিবার রাতে তাদের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মাঝ সমুদ্রে মাছ ধরতে এসে পথ হারিয়ে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ে ওই বাংলাদেশি মৎস্যজীবীরা।  এর আগে, শনিবার রাতে, ২৯ জন বাংলাদেশি জেলেকে আটক করা হয়েছিল এবং তাদের সোমবার কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। এখন, আবারও, রবিবার ভোরে, আরো ২৬ জন বাংলাদেশি জেলেকে আটক করা হলো। যদিও বাংলাদেশ সরকার বারবার অভিযোগ করেছে যে, ভারতীয় জেলেরা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো দেখায় যে বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলারগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে সমুদ্রসীমা লঙ্ঘন করছে এবং ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করছে। ফলে উপকূলীয় সীমান্ত এলাকায় নজরদারি জোরদার করেছে কোস্টগার্ড এবং পুলিশ প্রশাসন।

এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে: প্রধান উপদেষ্টা

এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে: প্রধান উপদেষ্টা আগামী নির্বাচন ও গণভোটে শতভাগ সততা, নিরপেক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এবারের নির্বাচন গতানুগতিক কোনো নির্বাচন নয়; বরং এটি দেশ রক্ষার নির্বাচন।  এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সদ্য পদায়নকৃত ৫০ জেলা প্রশাসকসহ ৬৪ জেলার প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী নির্বাচনকে শুধু পাঁচ বছরের সরকার গঠনের একটি নির্বাচন নয়; বরং গণভোট যুক্ত হওয়ায় এটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটা সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি নির্বাচন। জাতি বহু প্রহসনের নির্বাচন দেখেছে, সেই স্মৃতি ছাপিয়ে যেতে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে।” “এটা গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচন; এই নির্বাচন গণঅভ্যুত্থানকে পূর্ণতা দেওয়ার নির্বাচন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতির জন্য নির্ধারিত হবে শতাব্দীর গতিপথ,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা। এই নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে এবং জেলা প্রশাসকরা থাকবেন ধাত্রীর ভূমিকায়।” জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আপনাদের যা যা জানা প্রয়োজন সব জেনে নেবেন। নির্বাচনকে একই সঙ্গে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে।” তিনি বলেন, “মনে রাখতে হবে বিপুল সংখ্যক তরুণ ও নারী ভোটার রয়েছেন, যারা ভোট দেওয়ার উপযুক্ত হলেও গত ১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি।”

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নামে দেশে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই নির্দেশ দেন। পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে তিনটি অভিযোগ শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি অভিযোগ তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মানুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  এ রায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া এবং হতাহতের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনরা।

মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ড, মামুনের ৫ বছর সাজা

মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ড, মামুনের ৫ বছর সাজা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তিনি জবানবন্দিতে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরাসরি ‘লেথাল উইপন’ (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার ওই নির্দেশনা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে পেয়েছিলেন তিনি। রায় ঘোষণার আগে আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে। মামলার বিচার কার্যক্রম চলতি বছর ১০ জুলাই অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারকাজ শুরু হয় এবং ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। গত বছর ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত অভিযোগ গঠনের পর থেকে তিন মাস ১৩ দিনের মধ্যে বিচার শেষ হলো। একনজরে শেখ হাসিনার বিচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গত বছরের ১৪ আগস্ট ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় অভিযোগ করেন শহীদ সিয়ামের বাবা বুলবুল ফকির। এতে প্রথম অভিযোগ ছিল শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়েছে, এক থেকে ৯ নম্বর আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্য আসামিরা দেশি এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করে মামলা হিসেবে ট্রাইব্যুনালের ‘কমপ্লেইনার’ রেজিস্টারে নথিভুক্ত করা হয়। এরপর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শুরু হয় গত বছরের ১৭ অক্টোবর। সেদিনই এ মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি মামুনকে এ মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চলতি বছরের ১২ মে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। আর প্রসিকিউশন শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে গত ১ জুন। প্রসিকিউশনের দাখিল করা অভিযোগপত্রটি ছিল ১৩৫ পৃষ্ঠার। এর সঙ্গে আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার বিভিন্ন নথি ও তথ্যপ্রমাণ জমা দেওয়া হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার জানে আলম খান ও মো. আলমগীর। পাঁচ অভিযোগ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ এ মামলার তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। সেগুলো হলো উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান; প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা।