ইরফান সাজ্জাদ পরামর্শ দিলেন ক্রিকেট বাঁচাতে

ইরফান সাজ্জাদ পরামর্শ দিলেন ক্রিকেট বাঁচাতে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ অভিনয়ের পাশাপাশি খেলাধুলায়ও বেশ দক্ষ। বিশেষ করে তারকা ক্রিকেট লিগে তার অংশগ্রহণ ও সামাজিক মাধ্যমে দেশের ক্রিকেট নিয়ে করা মন্তব্যগুলো আকর্ষণীয় আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। ইরফান বলেন, ‌‘আমার মনে হচ্ছে দেশের ক্রিকেট শেষের দিকে। ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ভাই যদি নতুন কিছু না করেন, তাহলে কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের দেশ থেকে ক্রিকেট গায়েব হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘পাইপ লাইনে যদি ভালো ক্রিকেটার না পাওয়া যায়, তাহলে ক্রিকেট বাঁচবে না। আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটারদের বয়স হয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু ম্যানেজমেন্ট তাদের বিকল্প তৈরি করতে পারেনি। ইরফান মনে করেন, ‘আমাদের ক্রিকেট ঢাকা কেন্দ্রীক হয়ে গেছে। চট্টগ্রামের মতো শহরের ক্রিকেট ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে ক্রিকেটের মান এতটাই নিচে চলে গেছে যে, সাত দিন অনুশীলন করলেই কেউ ভালো ক্রিকেট খেলতে পারে। এ অভিনেতা পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘প্রত্যেকটি জেলায় স্টেডিয়াম ও অনুশীলনের জন্য মাঠ তৈরি করা এবং ক্রিকেটারদের যথাযথ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া জরুরি। পাইন লাইনে ক্রিকেটার তৈরি করতে না পারলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ক্রিকেট গায়েব হয়ে যাবে, যা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক হবে। তিনি আরও বলেন, ‘ক্রিকেট আমাদের জন্য একটি শক্তি। যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে এই শক্তিকে আমরা হারাবো।

সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩৬৭ রোগী

সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৩৬৭ রোগী গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এই সময়ের মধ্যে এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৯৬ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ১০৮ জন এবং চট্টগ্রাম বিভগে ৭৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৫৪ জন, রংপুর বিভাগে ২৭ ও ময়মনসিংহ ৩ জন। এডিস মশাবাহিত এই রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৬৭ জন পুরুষ ও ৫১ জন নারী। আর এ বছরে জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৩০ হাজার ৯০৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

আল নাসরের জয়ের ম্যাচে নতুন উচ্চতায় রোনালদো

আল নাসরের জয়ের ম্যাচে নতুন উচ্চতায় রোনালদো সৌদি প্রো লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উড়ন্ত জয় পেয়েছে আল নাসর। শুক্রবার রাতে আল তাউওনের মাঠে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৫–০ গোলের বড় জয় পেয়েছে তারা। এদিন স্মরণীয় এক অভিষেক হলো পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড জোয়াও ফেলিক্সের। প্রথম ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি। গোলের দেখা পেয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও। দলের হয়ে অন্য গোলটি করেছেন কিংসলে কোম্যান। এই ম্যাচে গোল করে অনন্য এক কীর্তি গড়েন রোনালদো। ইতিহাসের প্রথম ফুটবলার হিসেবে টানা ২৪ মৌসুমে গোল করলেন ‘সিআর সেভেন।’ রোনালদোর মোট গোলসংখ্যা এখন ৯৪০। অর্থাৎ এক হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে রোনালদোর প্রয়োজন আর ৬০ গোল। বয়স ৪০ পেরোনোর পর এ নিয়ে ৪০ গোলে অবদান রাখলেন রোনালদো। এই ম্যাচ শেষে প্রথম ধাপ পেরোনোর বার্তা দিয়ে একাধিক ছবিও পোস্ট করেন পর্তুগিজ কিংবদন্তি। ট্রান্সফারমার্কেটের হিসাব অনুযায়ী পেনাল্টি থেকে এ নিয়ে তাঁর গোলসংখ্যা ১৭৬। রোনালদোর মাইলফলকের রাতটা অবশ্য বিশেষভাবে নিজের করে নিয়েছেন ফেলিক্স। খেলার শুরুতেই মাত্র সাত মিনিটে গোল করে এগিয়ে দেন আল নাসরকে। এরপর ৬৭ ও ৮৭ মিনিটে দ্বিতীয় ও তৃতীয় গোল করে তুলে নেন হ্যাটট্রিক। এর মাঝে এক মিনিটের ব্যবধানে গোল করেন রোনালদো ও আল নাসরের আরেক নতুন খেলোয়াড় কোমান। সৌদি লিগে আল নাসর পরের ম্যাচ খেলবে ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে। সেই ম্যাচে রোনালদোদের প্রতিপক্ষ আল খোলুদ।

ইংল্যান্ড সফরের অনূর্ধ্ব–১৯ দল ঘোষণা

ইংল্যান্ড সফরের অনূর্ধ্ব–১৯ দল ঘোষণা ২০২৬ যুব বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। সাউথ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে সফর শেষে এবার ইংল্যান্ডে যাচ্ছে তারা। সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর শুরু হবে এই সিরিজ। আসন্ন সফরের বাকি ম্যাচগুলো হবে ৭, ১০, ১২ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর। আর সেই সিরিজের জন্য শুক্রবার আজিজুল হাকিম তামিমকে অধিনায়ক করে দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। যুবাদের সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতেও অধিনায়কত্ব করেছেন অলরাউন্ডার আজিজুল হাকিম। সম্প্রতি তার নেতৃত্বে জিম্বাবুয়েতে ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সেই দলের বেশির ভাগ সদস্যই আছেন ইংল্যান্ড সফরের দলে। বিসিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সিরিজটি খেলতে ৩১ আগস্ট লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ১ সেপ্টেম্বর লন্ডনে পৌঁছে পরদিন লাফবোরোয় অনুশীলন করবেন ক্রিকেটাররা। ৩ সেপ্টেম্বর সেখানে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ যুবাদের। ৫ সেপ্টেম্বর লাফবোরোতেই শুরু হবে সিরিজ। একই ভেন্যুতে ৭ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ওয়ানডে। ব্রিস্টলে ১০ সেপ্টেম্বর তৃতীয় ওয়ানডে। আর বেকেনহামে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচ ১২ ও ১৪ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: জাওয়াদ আবরার, আজিজুল হাকিম (অধিনায়ক), সামিউন বশির, দেবাশীষ সরকার, রিজান হোসেন, আল ফাহাদ, স্বাধীন ইসলাম, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ফরিদ হাসান, কালাম সিদ্দিকি, সানজিদ মজুমদার, রিফাত বেগ, শাহরিয়ার আল আমিন, সাদ ইসলাম ও ফারহান শাহরিয়ার।

খাদ্য, পানি, বায়ু ও প্রকৃতি সুরক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

খাদ্য, পানি, বায়ু ও প্রকৃতি সুরক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা, নিরাপদ খাদ্য, নিরাপদ বায়ু ও নিরাপদ পানির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে যুগোপযোগী নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি সুন্দর, সুজলা-সুফলা, নিরাপদ ও সবুজ শস্যশ্যামলা দেশে রূপান্তর করতে হবে। এজন্য, আমাদের অবশ্যই সাসটেইন্যাবিলিটির দিকে অগ্রসর হতে হবে। আজ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‌‘বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি কনক্লেভ ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য নাগরিকদের সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে হবে এবং অতিরিক্ত ভোগ কমাতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নির্ধারণ করব। জনগণের দাবিই প্রমাণ করে পরিবেশের সুরক্ষা কতটা জরুরি। সাদা পাথর লুটের ঘটনা এর একটি বড় উদাহরণ। একইভাবে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার কমাতে হবে, পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং উন্নয়নের নামে পাহাড় ও বনভূমির অযাচিত ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারের কাছে ট্যাক্স প্রণোদনার প্রস্তাব পৌঁছে দেয়া হবে যাতে পরিবেশবান্ধব উদ্যোগগুলো উৎসাহিত হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমাদের কাছে অনেক নীতি আছে, এখন সবচেয়ে জরুরি হলো কার্যকর বাস্তবায়ন। নাগরিক, সরকার ও বেসরকারি খাত একসঙ্গে কাজ করলে টেকসই বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।

১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই নির্বাচন আয়োজনে সরকার বদ্ধপরিকর

১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই নির্বাচন আয়োজনে সরকার বদ্ধপরিকর আগামী বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার বাইরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। শফিকুল আলম বলেন, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র নির্বাচন পেছাতে পারবে না। এদিকে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে রোডম্যাপও ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী, চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ আগস্ট রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এ রোডম্যাপ ঘোষণ করেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চূড়ান্ত করাসহ ২৪টি গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি প্রাধান্য দিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করে ইসি।

ট্রাম্পের অধিকাংশ শুল্কারোপ অবৈধ : মার্কিন আদালত

ট্রাম্পের অধিকাংশ শুল্কারোপ অবৈধ : মার্কিন আদালত যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আপিল আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা বেশিরভাগ শুল্ক অবৈধ। এই রায়ের ফলে তার বহুল আলোচিত পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যনীতি আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লো। খবর বিবিসির। ৭-৪ ভোটে দেওয়া রায়ে আদালত জানায়, ট্রাম্প আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (আইইইপিএ) ব্যবহার করে শুল্ক আরোপ করেছেন। কিন্তু এই আইন প্রেসিডেন্টকে এ ধরনের ক্ষমতা দেয় না। শুল্ক আরোপ কংগ্রেসের সাংবিধানিক এখতিয়ার বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়। নতুন এই রায় কার্যকর হবে আগামী ১৪ অক্টোবর। এর আগে প্রশাসন চাইলে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মামলাটি এখন প্রায় নিশ্চিতভাবেই সর্বোচ্চ আদালতে গড়াচ্ছে। বর্তমানে চীন, মেক্সিকো এবং কানাডার মতো বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ওপরই অন্যায্য শুল্ক আরোপ করে রেখেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প এই রায়ের সমালোচনা করে বলেছেন, যদি বহাল থাকতে দেওয়া হয়, তাহলে এই সিদ্ধান্ত আক্ষরিক অর্থেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দেবে। তিনি লিখেছেন, আজ একটি আপিল আদালত বলেছে আমাদের শুল্ক প্রত্যাহার করা উচিত, কিন্তু তারা জানে যে শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই জিতবে। এই রায় সঠিক নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, যদি শুল্ক তুলে নেওয়া হয় তবে এটি দেশের জন্য একটি সম্পূর্ণ বিপর্যয় হবে। এটি আমাদের আর্থিকভাবে দুর্বল করে দেবে। কিন্তু আমাদের শক্তিশালী হতে হবে। ট্রাম্প বাণিজ্যের ওপর জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু আদালত রায় দিয়েছে যে, শুল্ক আরোপ করা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার মধ্যে পড়ে না এবং শুল্ক নির্ধারণ কংগ্রেসের মূল ক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত। রায়ে মার্কিন ফেডারেল সার্কিট আপিল আদালত ট্রাম্পের সেই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন, যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতার আওতায় শুল্ক আরোপ বৈধ। কিন্তু আদালত স্পষ্ট বলেছে, এই শুল্কগুলো ‘অবৈধ ও আইনের পরিপন্থি’। ১২৭ পৃষ্ঠার বিস্তারিত রায়ে বলা হয়, আইইইপিএ কোথাও শুল্ক কিংবা এর কোনো প্রতিশব্দ উল্লেখ করেনি। একইসঙ্গে প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপের ক্ষমতায় স্পষ্ট সীমা টানার মতো কোনো প্রক্রিয়াগত সুরক্ষাও এতে নেই। তাই আদালতের মতে, কর ও শুল্ক আরোপের ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতেই বহাল থাকবে। রায়ে আদালত আরো বলেছে, ১৯৭৭ সালে কংগ্রেস যখন এই আইনটি পাশ করেছিল তখন অতীতের অনুশীলন থেকে সরে এসে প্রেসিডেন্টকে শুল্ক আরোপের সীমাহীন কর্তৃত্ব প্রদানের উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছিল বলে মনে হয় না। আদালত রায়ে লিখেছে, যখনই কংগ্রেস প্রেসিডেন্টকে শুল্ক আরোপের ক্ষমতা দিতে চায়, তখন সেটা স্পষ্টভাবে কখনো ‘ট্যারিফ’ বা ‘ডিউটি’র মতো সুস্পষ্ট শব্দ ব্যবহার করে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্য জোটের দায়ের করা দুইটি মামলার প্রেক্ষিতেই এই রায় দিয়েছে আদালত। ওই মামলাগুলো হয়েছিল গত এপ্রিলে দেওয়া নির্বাহী আদেশের পর। সেই আদেশে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর ১০ শতাংশ মূল শুল্ক এবং আরও ডজনখানেক দেশের ওপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এবং ওই দিনটিকে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন আমেরিকার অন্যায্য বাণিজ্যনীতির হাত থেকে মুক্তির দিন হিসেবে। এরপর মে মাসে নিউইয়র্কভিত্তিক কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড রায় দিয়েছিল, এসব শুল্ক অবৈধ। তবে আপিল প্রক্রিয়া চলার কারণে সেই রায় স্থগিত রাখা হয়। শুক্রবারের রায়ে শুধু বৈশ্বিক শুল্কই নয়, কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর আরোপিত শুল্কও বাতিল করা হয়েছে। আগে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, এসব শুল্ক মাদক আমদানি ঠেকাতে খুব জরুরি ছিল। তবে এই সিদ্ধান্ত ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্কের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ সেগুলো ভিন্ন ক্ষমতাবলে আরোপ করা হয়েছিল।রায় ঘোষণার আগে হোয়াইট হাউজের আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন, এসব শুল্ক অবৈধ ঘোষণা করা হলে তা ১৯২৯ সালের মহামন্দার মতো আর্থিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তারা এক চিঠিতে লিখেছিলেন, আইইইপিএ-এর আওতায় প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপের ক্ষমতা হঠাৎ বাতিল করা হলে তা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, বৈদেশিক নীতি ও অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।

বাংলাভাষী মানেই বাংলাদেশি, মোদি সরকারের ব্যাখ্যা চাইলো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

বাংলাভাষী মানেই বাংলাদেশি, মোদি সরকারের ব্যাখ্যা চাইলো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বাংলাভাষী হলেই লোকজনকে আটক করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কি না- ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারেকে এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল বিষয়টি নিয়ে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।এদিন, আদালতে বিচারপতি সুর্য কান্ত, জয়মাল্য বাগচী ও বিপুল এম পানচোলির বেঞ্চ বলেন, দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের সমস্যা থাকলেও প্রশ্ন হলো- কোনো বিশেষ ভাষাভাষীকে শুধু সেই ভাষার কারণেই বিদেশি হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে কি না। বিচারপতি বাগচী মন্তব্য করেন, আমরা পরিষ্কার হতে চাই, এই অভিযোগ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ কি আসলেই একটি নির্দিষ্ট ভাষা ব্যবহারকারীকে বিদেশি বলে ধরে নিচ্ছে? যদি তাই হয়, তবে এ ধরনের পক্ষপাতদুষ্ট ক্ষমতা প্রয়োগ কতটা সঠিক? জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিয়ায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন পর্ষদের চেয়ারপারসন ও তৃণমূল সংসদ সদস্য সমিরুল ইসলাম। তার অভিযোগ, বাংলাভাষী অভিবাসী শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হচ্ছে ও নাগরিকত্ব যাচাই না করেই বাংলাদেশে পুশ ইন করা হচ্ছে। আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, কলকাতা হাইকোর্টে একটি হেবিয়াস করপাস মামলা করা হয়েছিল এক নারীর পক্ষ থেকে, যাকে বাংলাদেশি সন্দেহে সীমান্তের ওপারে ঠেলে দেওয়া হয়। হাইকোর্টে ওই মামলা মুলতবি রাখা হয় সুপ্রিম কোর্টে চলা এই মামলার কারণে। এ সময় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে জানায়- দুটি মামলা আলাদা। হাইকোর্ট যেন অবিলম্বে শুনানি শুরু করেন ও নাগরিকত্ব নির্ধারণের প্রশ্নও সেখানে তোলা যেতে পারে। ভূষণ অভিযোগ করেন, শুধু বাংলায় কথা বলার কারণে একজন নারীকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, বাংলা মানেই বাংলাদেশি ভাষা, আর তাই যারা বাংলায় কথা বলে তারা বাংলাদেশি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল কিংবা ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বিদেশি ঘোষণা না করেই কীভাবে কাউকে ঠেলে দেওয়া হয়? তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো সমঝোতাও নেই। অন্য কোনো দেশ কাউকে গ্রহণে সম্মতি না দিলে জোর করে ঠেলে দেওয়া আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। বিচারপতি কান্ত বলেন, এখানে নানা বাস্তব প্রশ্ন রয়েছে, যা হাইকোর্টকেই দেখতে হবে। বিচারপতি বাগচি মন্তব্য করেন, সীমান্তে ধরা পড়া অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে প্রতিহত করার অধিকার নিরাপত্তাবাহিনীর রয়েছে। কিন্তু সীমান্ত অতিক্রম করার পর যদি কেউ দেশের ভেতরে থাকে, তবে তার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। সরকারের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলেন, কেন ব্যক্তিগত ভুক্তভোগীরা আদালতে আসছেন না? কেন বিভিন্ন সংগঠন সামনে আসছে? ভারত বিশ্বের অবৈধ অভিবাসীদের রাজধানী নয়। আমাদের নাগরিকদের জন্য যে সম্পদ রয়েছে, অবৈধ অভিবাসীরা যেন তা নষ্ট না করে, সেটাই আমরা নিশ্চিত করছি। তবে বিচারপতি কান্ত ইঙ্গিত দেন, অভিযোগ হচ্ছে- কেবল বাংলায় কথা বলার কারণে মানুষকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হচ্ছে। মেহেতা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, না, আমরা সংবাদমাধ্যমের খবরের ওপর নির্ভর করতে পারি না। বিচারপতি বাগচি বলেন, এখানে বিষয়টি সংবেদনশীল। একদিকে জাতীয় নিরাপত্তা, সম্পদের সুরক্ষা; অন্যদিকে আমাদের যৌথ ঐতিহ্য- যেমন পাঞ্জাব ও বাংলায় ভাষা এক হলেও সীমান্ত আমাদের আলাদা করেছে। তাই এই অভিযোগ যদি আবেদনে থাকে, তবে কেন্দ্রের অবস্থান পরিষ্কার করা জরুরি। মেহেতা জবাব দেন, তিনি সরকারের অবস্থান জানাবেন। তবে এই আইনজীবী ব্যক্তিগত ভুক্তভোগীদের আদালতে আসার ওপর জোর দেন। বিচারপতি কান্ত বলেন, সব ক্ষেত্রে হয়তো ব্যক্তিরা সরাসরি আসতে সক্ষম নন। মেহেতা আরও বলেন, প্রশান্ত ভূষণের মতো ‘জনহিতৈষীরা’ চাইলে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অবৈধ অভিবাসন সমস্যায় সাহায্য করতে পারেন। উত্তরে বিচারপতি বাগচি রসিকতা করে প্রশ্ন করেন, আমরাও কি তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেয়াল তুলব? আলোচনার একপর্যায়ে ভূষণ বলেন, বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত না করে কেবল সন্দেহের ভিত্তিতে কাউকে আটক করার অধিকার আইন দেয় না। মেহেতা প্রস্তাব দেন, এ মামলাটি রোহিঙ্গা ইস্যু সংক্রান্ত চলমান মামলার সঙ্গে একত্রে শোনা হোক। আদালত আগামী ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন এবং সলিসিটর জেনারেলকে এই মামলা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক মামলায় সরকারের জবাব দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।