৫১ শতাংশ মেয়েদের বিয়ে হয় ১৮তম জন্মদিনের আগেই : শিশু সুরক্ষায় সমাজকর্মীদের গুরুত্ব শীর্ষক আলোচনা তথ্য প্রকাশ

124

সমাজকর্ম এবং শিশু সুরক্ষায় সমাজকর্মীদের গুরুত্ব শীর্ষক আলোচনা সভা চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১ আগস্ট) সকালে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দেবেন্দ্র নাথ উরাঁওয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শিশু বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে কুলসুম। আলোচনায় আরো অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রুহুল আমিন ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাহিদা আখতার, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা শফিকুল আলম, ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়কারী মোমেনা বেগম, অ্যাঞ্চেলস গার্ডেনের নির্বাহী পরিচালক আমিনুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭১’র ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটে নিহত শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এবং কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়।
শিশু সুরক্ষায় সরকারের আইন কঠোরভাবে মেনে চলা ও শিশু নির্যাতন বন্ধ করা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা, ইভটিজিংকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া, ঝরে পড়া রোধ করাসহ শিশুদের সুরক্ষায় জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন। এজন্য তিনি সমাজকর্মীদের সমন্বিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বরোপ করেন।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে কুলসুম তাঁর উপস্থানায় জানান, ২০১৫ সালে ইউনিসেফের সহায়তায় সমাজসেবা অধিদপ্তর চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ প্রতিষ্ঠা করে, যা দেশব্যাপী একটি টোল-ফ্রি নম্বর। ২০২১ সালে হেল্পলাইনটি ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি শিশু এবং জনগোষ্ঠীর উদ্বিগ্ন সদস্যদের ফোন কলে সাড়া দেয় এবং তাদের আইনি সহায়তা, আশ্রয়, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবা বিষয়ে পরামর্শ সেবা প্রদান করে। ২০২০ সালে মহামারির চূড়ান্ত সময়ে চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ সাড়া দেয় ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি ফোন কল।
তিনি জানান, বাংলাদেশে এখনও শিশুরা যৌন নির্যাতন, শিশুশ্রম, বাল্য বিয়েসহ নানাধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতরে শিকার হচ্ছে। ইউনিসেফ, বাংলাদেশের মতে ১৪ বছরের কম বয়সী প্রতি ১০ জন ছেলে-মেয়ের মধ্যে ১৯ জন, অথ্যাৎ ৪ কোটি ৫০ লাখ ছেলে-মেয়ে, বাড়িতে সহিংস আচরণের শিকার হয়। ৫১ শতাংশ অর্থাৎ, অর্ধেকেরও বেশি সংখ্যক মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায় তাদের ১৮ তম জন্মদিনের আগেই। লাখ লাখ শিশু স্কুলের বাইরে থেকে যাচ্ছে বা ঝুঁকিপূণ্য শিশুশ্রমে আটকা পড়ছে। এই শিশুদের শনাক্ত করতে এবং তাদের ক্ষতি ও নিগ্রহের শিকার হওয়া থেকে বাঁচাতে একটি সুপরিকল্পিত, প্রশিক্ষিত ও সমর্থিত সমাজসেবা কর্মীবাহিনী নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।