২৭০০ বছর আগের সূর্যগ্রহণের হিসাব সংশোধন করলেন গবেষকেরা

প্রাচীন চীনা নথি বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সূর্যগ্রহণের নতুন তথ্য পেয়েছেন। তাদের মতে, এই তথ্যগুলো পৃথিবীর ঘূর্ণনগতির ইতিহাস বুঝতে সহায়তা করবে। গবেষণাটি ২ ডিসেম্বর অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স-এ প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, খ্রিষ্টপূর্ব ৭০৯ সালের ১৭ জুলাই ঘটে যাওয়া সূর্যগ্রহণের বর্ণনা পাওয়া যায় ‘স্প্রিং অ্যান্ড অটাম অ্যানালস’ নামের একটি প্রাচীন নথিতে। তবে এই নথি সূর্যগ্রহণের প্রায় দুই থেকে তিন শতাব্দী পরে লেখা হয়েছিল। পরে ‘বুক অব হান’-এ আরও একটি মন্তব্য যোগ করা হয়, যেখানে সূর্যকে ‘উপরে-নিচে পুরো হলুদ’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

গবেষকদের ধারণা, এটি সম্ভবত সূর্যের বাইরের উজ্জ্বল বৃত্তের প্রাচীনতম লিখিত বর্ণনা।

গবেষকেরা আধুনিক গণনা পদ্ধতি ব্যবহার করে নথির তথ্য যাচাই করেছেন। প্রথমদিকে দেখা যায়, নথিতে উল্লেখ করা স্থান কুফু শহর থেকে ওই গ্রহণটি দেখা সম্ভব ছিল না। পরে ঐতিহাসিক মানচিত্র ও প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্য মিলিয়ে জানা যায়, আগের গবেষণায় কুফুর প্রকৃত অবস্থান থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার ভুল জায়গার সমন্বয় (কোঅর্ডিনেট) ব্যবহার করা হয়েছিল।

এ ভুল সংশোধন করলে পৃথিবীর সে সময়কার ঘূর্ণনগতির আরও সঠিক হিসাব পাওয়া যায়। একই সঙ্গে সূর্যের অবস্থান ও গ্রহণের সময় করোনা কেমন দেখা যেত, তারও নির্ভুল মডেল তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।

জাপানের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল অবজারভেটরির মিতসুরু সোামা বলেন, নতুন হিসাব আগের বহু গবেষণার ভুল সংশোধন করেছে। এতে অতীতের জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনাগুলোর তারিখ নির্ধারণ আরও নির্ভুল হবে। প্রাচীন যুগে মানুষ আকাশে ঘটতে থাকা ঘটনাকে শুভ–অশুভ লক্ষণ মনে করত। তাই তারা সূর্যগ্রহণ, অরোরা, ধূমকেতু—এসব ঘটনা খুব যত্ন করে লিখে রাখত।

লকহিড মার্টিন সোলার অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ল্যাবের গবেষক মেং জিন বলেন, প্রাচীন নথির পর্যবেক্ষণ আর আধুনিক গণনার সমন্বয়ে আমরা হাজার বছরের পুরোনো পৃথিবী ও সূর্যের অবস্থা সম্পর্কে নতুন ধারণা পাচ্ছি।