হামলাকারীদের হাতে ছিল আইএসের পতাকা

265

মিসরে মসজিদে হামলাকারীদের হাতে জঙ্গি দল আইএসের পতাকা ছিল বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয়। এক বিবৃতিতে হামলার আহতদের বরাত দিয়ে কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হামলাকারীদের মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ জনের কাছে আইএসের পতাকা ছিল। মিসরের উত্তরে সিনাই এলাকায় শুক্রবার মসজিদে বোমা ও বন্দুক হামলায় এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩০৫ জনে পৌঁছেছে। সরকারি সংবাদ সংস্থা মিনা বলছে, এর মধ্যে ২৭ জন শিশু। আহত হয়েছে ১২৮ জন। এখন পর্যন্ত হামলার দায় আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ স্বীকার করেনি। হামলার পর মিসরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন। হামলার পরেই মিসরে উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু হয়েছে। মিসরের সিনাই উপদ্বীপে আইএস এবং তাদের ভাব ধারাসম্পন্ন স্থানীয় জঙ্গিদের উপস্থিতি বেশ কয়েক বছর ধরে। ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় হোসনি মোবারকের পতনের পর থেকে সিনাই ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে জঙ্গিরা মাথাচাড়া দেওয়ায়। ২০১৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর পরিস্থিতির সুযোগে জঙ্গিরা ফের সক্রিয় হয়। সামরিক অভ্যুত্থানের সময় এবং পরবর্তী সময় প্রেসিডেন্ট হয়ে আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি পূর্ববর্তী ক্ষমতাসীন দল মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন শুরু করেন। এতে স্থানীয় অনেককে কাছে টেনে নেয় জঙ্গিরা। ২০১৪ সালে ওলিয়াত সিনাই নামে স্থানীয় একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠীর উত্থান হয়। তারা আইএসের প্রতি নিজেদের আনুগত্য প্রকাশ করে। সংঘবদ্ধ হয়ে এই পর্যন্ত বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। মিসরের যে মসজিদে গত শুক্রবার হামলা হয়েছে তা সুফিবাদে বিশ্বাসী লোকদের কেন্দ্রস্থল। আইএস এবং এর অনুসারীরা সালাফিপন্থী। সুফিবাদের সমালোচক। এর আগেও সিনাইয়ে সুফিবাদে বিশ্বাসীরা মাঝেমধ্যে উগ্রবাদী হামলার শিকার হয়েছেন। সুফি মতবাদে বিশ্বাসী এক নেতাকে অপহরণের পর শিরñেদ করা হয়েছে।
মিসরের সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা তদন্তের অংশ হিসেবে হামলায় আহতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে এই হামলায় আইএসের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। আহতেরা জানিয়েছে, ২৫ থেকে ৩০ জন হামলাকারী আইএসের পতাকা নিয়ে এসেছিলেন। তাঁরা মসজিদের দরজার সামনে অবস্থান নেন। মসজিদের ১২টি জানালায় অস্ত্র বসিয়ে রাখে।