হাঁটা-চলা করছেন, কেবিনে থেকে আবার সিসিইউতে তামিম

তামিম ইকবালের হার্টে রিং পরানো চিকিৎসক মনিরুজ্জামান মারুফ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে তামিমের শরীর বেশ ভালো রেসপন্স করছে। রাতে তার ভালো ঘুমও হয়েছে। অল্প-স্বল্প হাঁটা-চলা শুরু করেছেন। গতকাল গভীর রাতে তাকে দেওয়া হয়েছিল খাবার। সেই খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে পেরেছেন। সাভারের কেপিজে হাসপাতালে তত্ত্বাবধানে থাকা আরেক সহকারী চিকিৎসক মোহাম্মদ রাসেলও জানিয়েছেন, কথা বলে ভালো রেসপন্স করতে পারছেন তামিম। তবে এখনও নিবিড় পর্যবেক্ষণে তাকে রাখতে হচ্ছে। কোনো প্রকার ঝুঁকি নিতে নারাজ তারা।

মঙ্গলবার সকালে তামিমকে কিছুক্ষণের জন্য সিসিইউ থেকে বেরিয়ে কেবিনে নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে আবার নিয়ে যাওয়া হয় সিসিইউতে। আপাতত তামিম সেখানেই থাকবেন। লোকসমাগম কম এবং বাড়তি নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাকে সিসিইউতেই রাখা হয়েছে। গতকাল (২৪ মার্চ) বিকেএসপিতে ঢাকা লিগের ম্যাচ খেলতে নামার আগে প্রথ‌মে মাইনর ও প‌রে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে’ অজ্ঞান হ‌য়ে পড়েন তামিম। তাকে কে‌পি‌জে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা এতোটাই খারাপ হয়েছিল যে, ২২ মিনিট সময় ধ‌রে সি‌পিআর ও তিনটি ডি‌সি শক দি‌তে হ‌য়ে‌ছে। এরপর দ্রুত এন‌জিওগ্রাম ক‌রে শতভাগ ব্লক থাকা একটা আর্টারিতে রিং লা‌গি‌য়ে‌ছেন চিকিৎসকরা। অবিশ্বাস্য গ‌তি‌তে হ‌য়ে‌ছে সব‌কিছু। চিকিৎসকদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত সময়মতো হওয়ায় তামিম পেয়েছেন নতুন এক জীবন। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘‘তামিমের যেটা হয়েছিল, ম‌্যাসিভ হ‌্যার্ট অ‌্যাটাক হলে ১০-১৫ শতাংশ রোগী হাসপাতালে পৌঁছতে পারেন না। তামিম ভাগ‌্যবান যে হাসপাতালে আসতে পেরেছিল। রক্ষা যেটা তার সঙ্গে ডাক্তার ছিলেন। কার্ডিয়াক ম‌্যাসেজ করতে পেরেছেন। হার্ট যখন পাম্প করতে পারছিল না। আমরা জোর করে ফোর্স করে পাম্প করিয়ে রাখতে পেরেছিলাম। এখানে আসার পর তাকে ক‌্যাথলাবে নিয়ে গিয়ে দেখা হয়েছে এবং তার যে বন্ধ আর্টারিটা ছিল তা সাথে সাথে খুলে দেওয়া হয়েছে। তামিম যেই অবস্থায় ছিল সেখান থেকে উঠে আসা সব সময় হয় না। উপযুক্ত সুচিকিৎসা, অ্যাপ্রোপিয়েট সিদ্ধান্ত পাওয়ার কারণে আমরা তামিমকে ফেরত পেয়েছি।’’ ‘‘আজ সকালে তার ইকোকার্ডিয়াক করে তার হার্টের ফাংশন দেখা হচ্ছিল। দেখে মনে হয়েছে, কোনো সমস‌্যাই নেই। একেবারে তরতাজা। মনে রাখতে হবে, এটাই কিন্তু ছদ্মবেশ। হার্টে আবার সমস‌্যা হতে পারে। সম্ভাবনা কমে গেছে। স্লাইট সম্ভাবনা আছে এজন‌্য ৪৮-৭২ ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রয়েছে। এ সময়ে কম কথা বলা, বিশ্রামে থাকা উচিত। ইনিশিয়াল পিরিয়ড এখানে স্টাবেল হয়ে তারপর রিহ্যাবে ভালো কোথাও যেতে চাইলে সে যেতে পারবে।’’ – যোগ করেন তিনি। আপাতত তামিম কেপিজে হাসপাতালেই থাকবেন। তাকে পর্যবেক্ষণেই রাখা হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হলে তার অন্তত তিন মাস লাগবে।