হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি মিডিয়া মোগল জিমি লাই দোষী সাব্যস্ত

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি মিডিয়া মোগল ও চীনের সমালোচক জিমি লাইকে বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির হাইকোর্ট। খবর বিবিসির। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় আনা সব অভিযোগে হাইকোর্ট জিমি লাইকে দোষী ঘোষণা করেন। তবে তার সাজা কী হবে, তা পরে জানানো হবে। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে বিদেশি শক্তির সঙ্গে আঁতাতের শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।  রায় ঘোষণার সময় বিচারকরা বলেন, “আমাদের মনে কোনো সন্দেহ নেই যে লাই (চীনা কমিউনিস্ট পার্টির) সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার অভিপ্রায় থেকে কখনোই সরে আসেননি।”

বিচারকদের মতে, হংকংয়ের জনগণকে সহায়তার নামে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের চীনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করা ‘এমন পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয়, যেখানে কোনো মার্কিন নাগরিক ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যকে সহায়তার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার উৎখাতে রাশিয়ার সাহায্য চাইছে।’ তারা আরো বলেন, প্রমাণে দেখা যায় লাইয়ের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল- ‘চীন ও হংকংয়ের জনগণের স্বার্থকে বিসর্জন দেওয়া’।

৭৮ বছর বয়সী জিমি লাইয়ের বিরুদ্ধে দুটি বিদেশি যোগসাজশের অভিযোগ এবং একটি রাষ্ট্রবিরোধী প্রকাশনার অভিযোগ অভিযোগ আনা হয়। যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন তিনি। গণতন্ত্রপন্থি কর্মী ও চীনের সমালোচক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আগে, লাই একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালে চীনে জন্মগ্রহণ করেন। কমিউনিস্টরা দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ১২ বছর বয়সে লাই চীন থেকে একটি মাছ ধরার নৌকায় করে পালিয়ে হংকংয়ে চলে আসেন। তিনি হংকংয়ে বিভিন্ন কাজ করে ইংরেজি শেখার পর, ১৯৭৭ সালে পোশাক ব্র্যান্ড জিওর্দানো প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যবসাটি একটি ফ্যাশন সাম্রাজ্যে পরিণত হয়, যা তাকে কোটিপতি করে তোলে।

তিয়ানানমেন স্কোয়ারের দমন-পীড়নের ঘটনার পর জিমি লাই মিডিয়া জগতের দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং নেক্সট মিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। এর অধীনে বিখ্যাত সংবাদপত্র অ্যাপল ডেইলি প্রকাশিত হতো, যা চীনের কঠোর নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল।