স্মার্ট প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাসটেইনেবল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট ট্রান্সফরমেশন (স্মার্ট) প্রকল্পের আওতায় অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ। এসময় তিনি বলেন, আম প্রক্রিয়াজাতকরে সারাবছরই যেন মানুষের কাছে পোঁছে দিতে পারি, এটা কিন্তু আমাদের কর্মপরিকল্পনা এটা যে শুধু সরকারি কর্মপরিকল্পনা তা কিন্তু না এটা সরকারি এবং বেসরকারি দপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি। আমের প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে প্রয়াস আমাদের সাথে কাজ করছেন এটাও আমাদের যে কর্মপরিকল্পনা রয়েছে তারই একটি অংশ।
তিনি আরো বলেন আপনারা (প্রয়াস) স্মার্ট প্রকল্পের মাধ্যেমে যে সকল বিষয় নিয়ে কাজ করবেন এগুলো আমি শুনলাম জানলাম এগুলো ভালো একটি উদ্যোগ, পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ। আরইসিপি এর মাধ্যমে সম্পদের স্বল্প ব্যায়ে সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। এগুলো আমাদের জন্য টেকসই এবং ভালো হবে। আপনাদের এই উদ্যোগের জন্য আমরা সারাবছরই যেন আমাদের ভোক্তার কাছে পোঁছে দিতে পারি সেই চেষ্টাটা থাকবে। একিই সাথে আমাদের মার্কেটিং পলিসিতে দুর্বলতা থাকার কারণে আমরা ভোক্তার কাছে সেভাবে পোঁছাতে পারছিনা। এখনো আমাদের সুযোগ আছে মার্কেটিং পলিসিটাকে আরো ফ্রুটফোলিওভাবে এগাতো পারি যার মাধ্যমে আমাদের জন্য লাভজনক হবে এবং ভোক্তারা সহজলব্য ভাবে পেতে পারে সেবিষয়ে আমরা কাজ করছি। আব্দুস সামাদ আরো বলেন, আমরা যদি শতভাগ অর্গানিক উপায়ে আম উৎপাদন করতে পরি তাহলে আমাদের আমের চাহিদাটা আরো বাড়বে। তিনি আরো বলেন, সরকরি এবং বেসরকারি সকল উদ্যোগ যেন পজিটিভলি হই আমরা আপনারদের সাথে আছি। আমাদের সকলের লক্ষ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই উদ্যেশ্যেই আমরা সকলে কাজ করবো। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হাসিব হোসেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা পেস প্রকল্পের আওতায় ছোট পরিসরে ফ্যাক্টরি তৈরি করে ভেল্যু চেইনে কাজ করা চেষ্টা করেছিলোম। প্রয়াস মনে করে যে প্রয়াস ইনিশিয়েটিভ নিবে কিন্তু বাস্তবায়ন করবে সবাই। তিনি আরো বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম প্রয়াস কাঁচা আমের পাউডার তৈরি করেছে। এখন অনেকেই করছে এটা আমাদের একটি অর্জন। শুধুমাত্র আমাকেই করতে হবে এটা আমরা মনে করছি না। হাসিব হোসেন আরো বলেন, বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয় আমার সেখানে আমি সার্চ করে থাকি বিভিন্ন মেশিননারিজ বা আইটেম বাজারে গিয়ে দেখি যেটা দেখতে ভালো লাগছে কম খরচ হচ্ছে সেগুলো নিয়ে কাজ করার। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রয়াসের আউটলেট দিয়েছি ছোট পরিসরে সেখান থেকে শিখছি আগামীতে আরো বড় হবে সেটা প্রত্যাশা করছি। তিনি আরো বলেন, প্রয়াস চাঁপাইনবাবগঞ্জে জন্ম নিলেও একদিন সবজায়গাতে থাকবে সব কাজই করবে। প্রয়াসকে মানুষ চিনবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রয়াস হিসেবে। এসময় তিনি আরো বলেন আমাদের গরু, ছাগল, গাড়লের খামার আছে সেখান থেকে আমরা প্রতি কোরবানির ঈদে অনলাইনের মাধ্যমে সেগুলো বিক্রি করে থাকি। আমরা ছোট পরিসরে কাজটি করছি আমরা চাই আমাদের এটা দেখে অন্যরাও এই কাজটা করুক লাভবান হোক। হাসিব হোসেন বলেন আমার স্বপ্ন চাঁপাইনবাবগঞ্জে ম্যাগো ট্যুরিজম হোক। এমনকি সেটা যেন সারাবছর পাওয়া যায় সেটার জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের কালচারাল টিম আছে প্রয়াস ফোক থিয়েটার ইনস্টিটিউট নামে। সেখানে লোকাল খাবার যেগুলো আছে আমাদের সেগুলো প্রমোট করার চেষ্টা করি। হাসিব হোসেন আরো বলেন, এই প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পরিবেশবান্ধব উপায়ে কাজ করা। আমের উৎপাদন বা আমের তৈরি প্রোডাক্ট উৎপাদন করার জন্য সেটা পরিবেশ বান্ধব উপায়ে তৈরি করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ডিপ ইরিগেশনের মাধ্যমে বাগান তৈরি করার কথা আমরা বলছি। তিনি আরো বলেন আমকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফ্লাগশিপে ধরে রাখার জন্য আমাদের কাজ অনেক। এটা একা কারো কাজ না সবারই কাজ, এখানে গণমাধ্যমের ও অনেক কাজ আছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রয়াস বড় হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি প্রয়াস জনগণের সাথে থাকবে এবং সরকারের সাথে থেকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। সরকারের যে নির্দেশনা আছে সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবে। নতুন চিন্তাভাবনাগুলোকে মাথায় নিয়ে এগিয়ে যাবে। বিশেষ অতিথি বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক নাকিব হাসান তরফদার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার, শষ্য বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ জহুরুল ইসলাম। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রয়াসের পরিচালক পঙ্কজ কুমার সরকার।
পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্রয়াসের কার্যক্রম তুলে ধরেন কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ) আব্দুস সালাম। স্মার্ট প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশন উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম। এসময় অন্যানোর মধ্যে বক্তব্য দেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা জব্বার আলী এসময় অন্যানোর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার অনুজ চন্দ, প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির সহকারী পরিচালক জুলফিকার আলী, কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক ও স্মার্ট প্রকল্পের ফোকাল পার্সন ফারুক আহমেদ, কনিষ্ঠ সহকারী পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন, রেইজ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আলম বিশ্বাস, স্মার্ট প্রকল্পের পরিবেশ কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ, প্রয়াসের অফিসার শাহরিয়ার শিমুলসহ অন্যরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্মার্ট প্রকল্পের এমআইএস ও ডকুমেন্টেশন অফিসার মোমেনা ফেরদৌস। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)’র সহযোগিতায় স্মার্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি। উল্লেখ্য, স্মার্ট প্রকল্প নিয়ে প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর, শিবগঞ্জ, নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলায় এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলায় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে। এই প্রকল্পের মেয়াদকাল ৪ বছর। এর মাধ্যমে লক্ষিত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ১ হাজার ৫০০ জনকে ঋণ, অনুদান এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রিসোর্স ইফিশিয়েন্ট অ্যান্ড ক্লিনার প্রোডাকশন (আরইসিপি) চর্চার মাধ্যমে আম উৎপাদনকারী / আমচাষি / আম ব্যবসায়ী / আম প্রক্রিয়াজাতকারী (আমসত্ব, আচার, ম্যাংগোবার, ম্যাংগোজুস, ম্যাংগো পাউডার) / আমবাজারতাকারী (দেশ ও বিদেশ) / আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণে সরঞ্জাম বা মেশিনারিজ যানবাহন / নার্সারি / জৈব সার উৎপাদন ও বাজারজাতকারী অর্থাৎ আমের সাথে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাগণ এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত হবেন।