স্মার্টফোন আসক্তি কমাতে কঠোর ব্যবস্থা দক্ষিণ কোরিয়ার
স্কুলের শ্রেণিকক্ষে মোবাইল ফোন ও স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এ বিষয়ে সদ্য একটি আইন পাস হয়েছে যেটি কার্যকর হবে ২০২৬ সালের মার্চ মাস থেকে।
এই আইন মূলত শিশু ও কিশোরদের স্মার্টফোন আসক্তি কমাতে আনা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতি করছে এবং একাগ্রতা কমিয়ে দিচ্ছে।
নতুন আইনে বলা হয়েছে—
ক্লাস চলাকালে কেউ ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। শিক্ষকরা প্রয়োজনে পুরো স্কুল প্রাঙ্গণেই ফোন ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবেন। বিশেষ প্রয়োজনে, যেমন—শিক্ষার্থীদের অক্ষমতা, বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজন, শিক্ষামূলক কাজ বা জরুরি পরিস্থিতিতে ফোন ব্যবহার করার অনুমতি থাকবে। স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোনের সঠিক ব্যবহার শেখানোর ব্যবস্থা নেবে।
বুধবার সংসদে বিলটি পাস হয়। উপস্থিত ১৬৩ সংসদ সদস্যের মধ্যে ১১৫ জন এর পক্ষে ভোট দেন। এর আগে অনেক স্কুল নিজেরা নিয়ম করে ফোন নিয়ন্ত্রণ করলেও এবার তা আইনের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক হলো।
শিক্ষক, অভিভাবক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, ফোনের কারণে পড়াশোনার পাশাপাশি বন্ধুত্ব গড়া, খেলাধুলা কিংবা অন্যান্য কার্যক্রম থেকে শিক্ষার্থীরা দূরে সরে যাচ্ছে। সরকারি জরিপ অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষই ফোনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল। কিশোরদের মধ্যে এ হার ৪৩ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও দেখেই সময় নষ্ট করে। তবে এ আইন নিয়ে শিক্ষার্থী ও কিছু শিক্ষক দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, সমস্যার মূল জায়গা হলো অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষা (সুনুং)। এই পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য শিশুদের প্রথম থেকেই দীর্ঘ সময় পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকতে হয়।
অনেক শিক্ষার্থী মনে করে, শুধু ফোন কেড়ে নেওয়ায় সমস্যার সমাধান হবে না; বরং তাদের শেখাতে হবে কীভাবে ফোন ছাড়া সময় ব্যবহার করা যায়।শিক্ষক সংগঠনগুলোতেও মতভেদ আছে। একটি সংগঠন আইনটির পক্ষে সমর্থন জানালেও অন্যটি আনুষ্ঠানিক অবস্থান নেয়নি। কিছু শিক্ষক মনে করেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে, আবার কেউ কেউ মনে করেন ক্লাসের শৃঙ্খলা রক্ষায় এটি কার্যকর হবে।