সৌদি নারীদের বোরখা পরা জরুরি নয়: মন্তব্য জ্যেষ্ঠ ধর্মীয় নেতার

129

সৌদি নারীদের জন্য বোরখা পরার বাধ্যবাধকতা থাকা জরুরি নয় বলে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় পরিষদের এক জ্যেষ্ঠ নেতা মন্তব্য করেছেন। নারীদের অবশ্যই পর্দা করা উচিত, তার মানে এ নয় যে তাদের বোরখাই পরতে হবে, বলেছেন শেখ আবদুল্লাহ আল মুতলাক; খবর সৌদি গেজেটসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর। গত শুক্রবার রেডিওতে সম্প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে বোরখা নিয়ে এক নারীর করা প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে সৌদি গেজেট। কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলার্স সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নীতিনির্ধারণী পরিষদ। মুসলিম বিশ্বের ৯০ শতাংশেরও বেশি ধার্মিক নারী বোরখা পরে না; আমাদেরও উচিত নয় নারীদের বোরখা পরতে বাধ্য করা, বলেছেন মুতলাক। সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, দেশটির নারীদের ঘরের বাইরে এলে বোরখা পরা বাধ্যতামূলক। রিয়াদের রাস্তায় বোরখা বা আবায়া খুলে ফেলার অপরাধে ২০১৬ সালে এক নারীকে আটক করা হয়েছিল বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি নারীদের ঐতিহ্যবাহী কালোর পরিবর্তে রঙ বেরঙের আবায়া পরতে দেখা যাচ্ছে; অনেক এলাকায় নারীরা আবায়ার বাঁধন খোলা অবস্থাতেই লম্বা স্কার্ট কিংবা জিন্স পরেও চলাফেরা করছেন।
বিবিসি বলছে, কট্টরপন্থি ধর্মীয় অনুশাসনের আবরণ ঘুচিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে নারীদের মাঠে বসে খেলা দেখার সুযোগ দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ; এ বছর থেকে দেশটিতে নারীদের গাড়ি চালানোরও অধিকার দেওয়ার কথা। মুতলাকের এ মন্তব্যে সামনের দিনে বোরখার বিধিনিষেধও উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। মুতলাকের এ মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকে একে নারীর ওপর নিষেধের ঘেরাটোপ ভাঙার পদক্ষেপ হিসেবে দেখলেও, কেউ কেউ ঐতিহ্য নিয়ে টানাহেঁচড়ায় তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। আমাদের অঞ্চলের ঐতিহ্যের বিষয় আবায়া, যা সবার উপরই প্রযোজ্য, এটা ধর্মীয় কোনো ব্যাপার নয়, টুইটারে এমন প্রতিক্রিয়াই জানান মাশারি ঘামদি নামে এক ব্যবহারকারী। আরেক ব্যবহারকারীকে মুতলাকের কথা না শুনতে সৌদি নারীদের প্রতি অনুরোধ জানাতেও দেখা গেছে। এ বিষয়ে যদি একশ ফতোয়াও আসে, ঈশ্বরের দোহাই আমি আবায়া ছাড়বো না, আমার মৃতদেহের ওপর দিয়ে তা ছাড়তে হবে। মেয়েরা এ ফতোয়ায় কান দিও না, বলেছেন তিনি।