সোয়া ১৫ হাজার বিনিয়োগকারীর লেনদেন মোবাইলে

347

পুঁজিবাজারের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে প্রায় দেড় বছর আগে মোবাইল লেনদেন সুবিধা চালু করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা ব্রোকারেজ হাউজে না গিয়ে ঘরে বসেই শেয়ার লেনদেন করতে পারছেন। ফলে ডিএসই অ্যাপ ডাউনলোডোর মাধ্যমে এ সুবিধায় প্রতিনিয়ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে ২০১৬ সালের ৯ মার্চ ডিএসইতে লেনদেনে মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়। এরপর থেকে চলতি মাসের ১৬ জুলাই পর্যন্ত এ সুবিধায় বিনিয়োগকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ২৮৬ জনে। মোবাইল অ্যাপসের কল্যাণে বিনিয়োগকারীরা ব্রেকারেজ হাউজে না গিয়ে সরাসরি নিজেদের শেয়ার পছন্দমতো দামে (মার্কেট প্রাইস) বিক্রি করতে পারছেন। এতে ব্রোকারেজ হাউজকে শেয়ার কেনা-বেচা বাবদ কোনো পয়সা দিতে হচ্ছে না। ফলে পুরো মুনাফাটাই থাকছে বিনিয়োগকারীর পকেটে। এ বিষয়ে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে গতি ফেরানোর পাশাপাশি অত্যাধুনিক সুবিধার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে ডিএসইতে মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তির সর্বোত্তম সুবিধা বিনিয়োগকারীর দোরগোড়ায় পৌঁছাতে কাজ করছে ডিএসই, যোগ করেন তিনি। ডিএসই সূত্র জানায়, বিশ্বের অন্যান্য স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গত বছরের ৯ মার্চ ডিএসই মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। যাতে পুঁজিবাজারের লেনদেনকে সর্বাধুনিক ও সহজসাধ্য করা হয়েছে। এটি ডিএসইর আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার। ২০১৬ সালের মার্চ যাত্রা শুরুর প্রক্কালে এ অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো মাত্র দু‘শ’। ওই বছরের ডিসেম্বরে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজারে। একই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার, ফেব্রয়ারিতে ১০ হাজার, মার্চে ১২ হাজার, এপ্রিলে ১৩ হাজার, মে মাসে ১৪ হাজার ২৮১, সর্বশেষ ১৬ জুলাই যা বেড়ে ১৫ হাজার ২৮৬ জনে দাঁড়িয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজ কর্তৃপক্ষরা জানিয়েছে, মোবাইলে শেয়ার কেনা-বেচা আরো বাড়বে। কারণ এখনো হাতে গোনা কয়েকটি হাউজ মোবাইল লেনদেন চালু করেছে। বাকিরা চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছেন। সবার এ সুবিধা চালু হলে এ সংখ্যা আরো বাড়বে। সূত্র জানায়, মোবাইলে শেয়ার লেনদেন প্রক্রিয়ায় তিন ধরনের সংস্করণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি ব্রোকার হাউজগুলোর জন্য এবং বাকি দু’টি বিনিয়োগকারীদের জন্য। বিনিয়োগকারীদের দু’টি ভার্সনের মধ্যে একটি হচ্ছে ডিএসই-মোবাইল ভিআইপি। এটি দিয়ে সরাসরি ট্রেড করা যাবে না। বিনিয়োগকারী মোবাইলে শুধু তার পোর্টফোলিও দেখতে পারবেন। অন্যটি হচ্ছে ডিএসই-মোবাইল ট্রেডার। এ ভার্সন ব্যবহার করে বিনিয়োগকারী নিজে ট্রেড করতে পারবেন। তবে কোনো বিনিয়োগকারী বাজার দামের চেয়ে বেশি দামে ট্রেড অফার করলে ব্রোকারেজ হাউজের ট্রেডার সেই আদেশ বাতিল করতে পারেন। কিন্তু বাজার দামের আদেশ দিলে তা বাতিল করার ক্ষমতা ট্রেডারের থাকে না। তবে তার জন্য বিনিয়োগকারীকে নিজ নিজ ব্রোকারেজ হাউস থেকে ইউজার আইডি (ব্যবহারকারীর পরিচয়) এবং পাসওয়ার্ড (গোপন নম্বর) নিতে হবে। এরপর লেনদেন চলাকালে স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ঢুকে এমএ প্লাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে শেয়ার বেচাকেনার অর্ডার দেওয়া যাবে। এ অর্ডার কার্যকর হলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মোবাইলে একটি বার্তা আসবে। এছাড়া যারা একাধিক বিও হিসাব পরিচালনা করেন তাদের প্রতিটি বিও অ্যাকাউন্টের জন্য পৃথক ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড নিতে হবে। এজন্য আলাদা আলাদা ফিও দিতে হয়।