সিরিজ জয়ের সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে সফলতম বছর কাটাল বাংলাদেশ

রিশাদের মায়াবি গুগলি। সাইফ উদ্দিনের দুর্বোধ্য স্লোয়ার। মোস্তাফিজুর রহমানের বাহারি কাটারের সঙ্গে শরিফুলের গতি ও মেহেদীর স্পিন…টি-টোয়েন্টিতে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখতে, ঘাবড়ে দিতে আর কি চাই? চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শহীদ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামের ২২ গজ বাংলাদেশের বোলারদের জন্য প্রাপ্তির ডালা সাজিয়ে বসেছিল। আয়ারল্যান্ড সেখানে স্রেফ অসহায়। ঢিলেঢালা ব্যাটিংয়ে গুটিয়ে গেল ১১৭ রানে। সিরিজ নির্ধারণী অঘোষিত ‘ফাইনাল’ ম্যাচ হলো একেবারে নিরুত্তাপ। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৩.৪ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৮ উইকেটের জয়ে ২-১ ব্যবধানে বাংলাদেশ নিশ্চিত করল বিশতম সিরিজ জয়।
চট্টগ্রামে ম্যাচ শুরু হয়েছিল দুপুর ২টায়। এই মাঠে দিনের আলোয় চারটি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। চারটির তিনটিতেই জয়। দুটি আয়ারল্যান্ড ও একটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। একমাত্র হার ছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। এবার সেই ভুল করলো না দল। প্রত্যাশিত জয়ে নিশ্চিত হয়েছে সিরিজ।
বোলাররা সিরিজ জয়ের মঞ্চ প্রস্তুত করে দেন অতি সহজে, দারুণ বোলিংয়ে। সেই সাজানো ক্যানভাসে তুলির আঁচড় ছড়িয়ে রঙিন করে দেন তানজিদ ও পারভেজ। ওপেনিংয়ে ফিরে সাইফ হাসান ভালো শুরু করেছিলেন। ১২ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৯ রান তুলে নেন। এরপর ইয়ংকে এগিয়ে এসে পুল করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। তিনে নেমে অধিনায়ক লিটন প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি আজ। ৬ বলে ১ চারে ৭ রানে থেমে যায় তার ইনিংস। অফস্পিনার হ্যারি টেক্টরের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েন ক্যাম্ফারের হাতে।
৪৬ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ৫০ বলে ৭৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন তানজিদ ও পারভেজ। ঝড়ো ব্যাটিং করে তানজিদ ৩৬ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৫ রান করেন। পারভেজ ২৬ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকান। দুজনের ব্যাটিংয়ে কেবল আত্মবিশ্বাসই নয়, প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে উঠার টার্গেটও ছিল। তাইতো চোখ ধাঁধানো ছক্কাগুলো বাড়তি নজর কেড়েছে। এর আগে আয়ারল্যান্ড টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটনও টস জিতে ব্যাটিং করার আগ্রহের কথা বলেছিলেন। কিন্তু বোলিংয়ে বোলাররা এতোটা ভালো করবেন তা হয়তো তার প্রত্যাশাতেও ছিল না। মোস্তাফিজ ১১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ছিলেন দলের সেরা। সমান উইকেট পেয়েছেন রিশাদও। লেগ স্পিনার রান দিয়েছেন ২১। মোস্তাফিজ আরেকদিক দিয়েও এগিয়ে। বাঁহাতি পেসার হাত ঘুরিয়েছেন ৩ ওভার। রিশাদ কোটার ৪ ওভারই করেছেন। আয়ারল্যান্ডের হয়ে এদিন ব্যাট হাতে কেবল লড়াই করেন পল স্টার্লিং। আইরিশ অধিনায়ক দুইবার জীবন পাওয়ার পর ২৭ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৮ রান করেন। বাকিরা কেউ বিশের ঘর পেরোতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান করেন জর্জ ডকরেল। রিশাদ কার্টিস ক্যাম্ফারকে গুগলিতে বোল্ড করেন। তা চোখ ধাঁধিয়ে দেয় সবাইকেই। এছাড়া দিনের আলোয় মোস্তাফিজের বলগুলো গ্রিপও হচ্ছিল দারুণভাবে। কন্ডিশনের পুরো ব্যবহার তারা করেছে।