সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে

90

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। ফলন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় তারা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সরিষা চষে উৎপাদন খরচও কম। বর্তমানে পাইকারী বাজারে প্রতিমণ সরিষা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ২শ টাকা। অপর দিকে ঘানিতে ভাঙ্গা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩৬০ টাকা থেকে ৪শ টাকা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সরিষা চাষি এবং তেল উৎপাদন ও বিক্রেতা মুঞ্জের আলম মানিক বলেন-বরেন্দ্র অঞ্চলে টরি-৭ জাতের সরিষা প্রতিবিঘায় ৩ থেকে ৫মণ ফলন হচ্ছে। অপরদিকে বিল ও চরাঞ্চলে বারী-১৪, ১৭ও ১৮ জাতের ফলন হচ্ছে ৫ থেকে ৯মণ পর্যন্ত। তিনি বলেন-বাজারে সয়াবিনের দাম বেশি হওয়ায় ভোক্তারা সরিষার তেল খাওয়া শুরু করেছেন। উৎপাদন খরচও কম এবং সরিষার জমিতে বোরোধানের আবাদ করা যায়, মাটিও ভালো থাকে এবং বাজারে সরিষার দামও ভালো। এসব কারণেই কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় জলতি মৌসুমে ১৭ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ৭শ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন, শিবগঞ্জ উপজেলায় ৩ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৩১০ মেট্রিকন টন, গোমস্তাপুর উপজেলায় ২ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ৮৭০ মেট্রিক টন, ৫ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে ৮ হাজার ৯২ মেট্রিক টন এবং ভোলাহাট উপজেলায় ৯৬৫ হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ হাজার ৪৪৮ মেট্রিক টন সরিষা। বর্তমানে কাটা মাড়ায় চলছে।
জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে টরি-৭, বারি-৯, ১১, ১৪,১৫,১৭,১৮, বিনা ৪,৮ ও ৯, বিএডিসি-১ এবং পাইওনিয়ন-৪৫। এসব জাতের মধ্যে সব চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে বারি ১৪ জাতের সরিষা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন-সরিষা আবাদে খরচ কম হয়, সেচ কম লাগে, মাটিও ভালো থাকে, ফলনও ভালো হচ্ছে এবং বর্তমান বাজারে দামও ভালো তাই কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এছাড়া সরিষার জমিতে অনায়াসেই বোরো ধানের আবাদ করতে পারবেন কৃষকরা। সবদিকদিয়েই লাভজনক। প্রতি হেক্টরে ১.৫২ মেট্রিক টন ফলন হচ্ছে যা গতবছর ছিল ১.৪১ মেট্রিক টন। অর্থাৎ প্রতিবিঘায় গড়ে ফলন হচ্ছে ৫ মণ। যা গতবার ছিল প্রতিবিঘায় ৪.৭ মণ। তিনি জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে ছিল, সরিষা সাছের জমির এরিয়াও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং রোগবালাই ছিলনা। তাছাড়া আধুনিক জাত চাষ করায় ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।