সরকারের ৭,৩৩৫ কোটি টাকা মুনাফা তেল বেচে

490

জ¦ালানি তেল বিক্রি করে ভালই ব্যবসা করছে সরকার; চলতি অর্থবছরের দশ মাসে নিট মুনাফা হয়েছে সাত হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা।আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কম দামে তেল কিনে বেশি দামে বিক্রি করার কারণে তিন বছর ধরে মুনাফায় রয়েছে সরকার।বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৭ অনুযায়ী, বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে সরকারের ৪৫টি সংস্থার মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান লোকসান দিলেও তেল আমদানিকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ৭ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে।
আগের অর্থবছরে (১২ মাসে) বিপিসির মুনাফার পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৪০ কোটি টাকা, যা ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ছিল ৪ হাজার ১২৬ কোটি টাকা।গত তিন বছর বিপিসি লাভের মুখ দেখলেও তার আগের বছরগুলোতে সংস্থাটি লাগাতার লোকসানে ছিল।
২০১১-১২ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। তার আগের বছরে (২০১০-১১) লোকসানি ছিল ৮ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা।
২০১২-১৩ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৪ হাজার ৮৩২ কোটি ও ২ হাজার ৩২১ কোটি টাকা।
তেলের দাম ধাপে ধাপে কমে চার বছরে এক তিন ভাগের একভাগে নেমে আসার পর সরকার বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে গত বছর একদফা দাম কমিয়েছে।
২০১২ সালে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ছিল ১০৫ ডলার, যা কমতে কমতে ২০১৬ সালে তা ৩০ ডলারে নেমে আসে।
এই প্রেক্ষাপটে ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪ শতাংশ এবং অকটেন ও পেট্রোলের দাম ১০ শতাংশের মতো কমানো হয়। তার কয়েকদিন আগে ফার্নেস অয়েলের দাম প্রতি লিটার ৬০ টাকা থেকে ৪২ টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল তেল ৫৫ থেকে ৬০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছে।
এরপরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আরেক দফা তেলের দাম কমানোর কথা বার বার বলে আসলেও শেষ পর‌্যন্ত তা হয়নি।
এবিষয়ে অর্থমন্ত্রী  বলেন, “তেলের দাম একবার কমানো হয়েছিল। তবে যতটা কমানো উচিত ছিল, ততটা কমাইনি। বিশ্ববাজার পরিস্থিতি হিসাব-নিকাশ করে আরেক দফা কমানোর চিন্তা আমাদের রয়েছে।”
অর্থনৈতিক সমীক্ষা পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত তিন বছরে সরকারের ৪৫টি সংস্থা যে লাভের মুখ দেখেছে তা বিপিসির মুনাফার উপর ভর করেই হয়েছে।
বিদায়ী অর্থবছরের দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সরকারের সংস্থাগুলো সম্মিলিতভাবে ৬ হাজার ৬১৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা মুনাফা করেছে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে লাভের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। তার আগের বছরে এই লাভের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা।
অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) বিদায়ী অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে ৩ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা লাভ করেছে।
এই দশ মাসে সবচেয়ে বেশি লোকসান দিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, ৫ হাজার ১৪১ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের ১২ মাসে এই লোকসানের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা।