প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫ বছর চাকরি আছে, এমন সরকারি চাকরিজীবী বর্তমানে ৭ লাখ। তাঁদের মধ্যে ১০ শতাংশকে ঋণ দেওয়া হলেও বছরে আবেদনকারী দাঁড়াবে ৭০ হাজার। বিভিন্ন ভৌগোলিক এলাকায় বসবাস করায় গড়ে প্রতিজনের ঋণের পরিমাণ ৪০ লাখ টাকা করে হিসাব করলেও বছরে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৮ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৮ দশমিক ৫ শতাংশ হারে ২৮ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক সুদ হবে ২ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ শতাংশ সুদে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণগ্রহীতারাই দেবেন। ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সুদের জন্য বাকি ৯৮০ কোটি টাকা সরকারের বাজেট বরাদ্দ হতে সুদ ভর্তুকি বাবদ পরিশোধ করা যেতে পারে। পঞ্চম গ্রুপের ঋণের পরিমাণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয়, ২০তম গ্রেডে বর্তমানে যে চাকরিজীবী যোগ দিয়েছেন, অবসরে যাওয়ার সময় তাঁর মূল বেতন দাঁড়াবে ২১ হাজার ৩১০ এবং গ্র্যাচুইটি হবে ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর ৭০ শতাংশ ঋণ পরিশোধ ধরা হলে পরিমাণ হয় ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ দেওয়া হলে ব্যাংক ও ডেভেলপারের সঙ্গে সম্পর্কের ধরনও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়, ঋণ দেওয়ার আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের একটি চুক্তি করতে হবে। এরপর হবে ঋণ আবেদনকারীর সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি। ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে শর্ত থাকবে এ রকমÑসরকারের নিয়মকানুন মেনে ভবন তৈরি করতে হবে এবং ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে আবাসন খাতের সমিতির (রিহ্যাব) সদস্য হতে হবে। ডেভেলপারের দেওয়া দলিল ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখতে হবে। এ ছাড়া ঋণ মঞ্জুর ও ডেভেলপার বরাবর মূল্য পরিশোধের ছয় মাসের মধ্যে ফ্ল্যাটের দখল হস্তান্তর করতে হবে, আর মাসিক কিস্তি শুরু হবে ঋণ মঞ্জুরের ছয় মাস পর থেকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টিতে সরকারের খুব বেশি আর্থিক সংশ্লেষ থাকবে না, বরং পরোক্ষভাবে দুর্নীতি প্রতিরোধের উপায় হতে পারে। কারণ, সব সরকারি চাকরিজীবীরই অন্তত একটি ফ্ল্যাটের মালিক হওয়ার স্বপ্ন থাকে। আর এজন্য এক শ্রেণির সরকারি চাকরিজীবী যেকোনো মূল্যে ওই স্বপ্ন পূরণ করতে চান।
জানতে চাইলে অর্থসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা বিষয়গুলো নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।’