সব ধরনের মাংস, দুধ ও ডিম উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ

111

স্মার্ট লাইভস্টক-স্মার্ট বাংলাদেশ এ প্রতিপাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শনিবার (৪ মার্চ) দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান।
সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা অফিসার রওশন আলী। স্বাগত বক্তব্য দেন, জেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. কবির উদ্দিন আহমেদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তোসিকুল আলম বাবলু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন আখতার। কৃষি খামারিদের মধ্যে বক্তব্য দেন, জেলা কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও কৃষি উদ্যোক্তা মুনজের আলম মানিক, এস এম কামাল, নারী উদ্যোক্তা শরিফা খাতুন বেবী। আরো বক্তব্য দেন, জেলা পোল্ট্রি ফিড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও জেলা পোল্ট্রি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান আলাল।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারি উন্নয়ন প্রকল্পের সহযোগিতায় সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরবনারি হাসপাতাল এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
৫০টি স্টলে গরু, ছাগল, গাড়ল, দুম্বা, হাস মুরগিসহ বিভিন্ন প্রাণি প্রদর্শন করেন খামারিরা। প্রদর্শনিতে অন্যতম আকর্ষণ ছিল প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির অস্ট্রেয়িান দুম্বা, দেশি গাড়ল, তানসিরের স্টলে ছিল ৫ কেজি ওজনের সোনালি মুরগ,আতিক ইয়াসিরের স্টলে ছিল ৬শ টাকা জোড়া বাজরিকা পাখি, ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা জোড়া ককাটেল পাখি, ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা জোড়া লাভবার্ড, ৬শ থেকে ৮শ টাকা জোড়া অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু, ২হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা জোড়া জাভা পাখিসহ অন্যান্য প্রজাতির পাখি। অন্যএ একটি স্টলে ছিল দেশি বিদেশি বিড়াল ও কুকুর। এছাড়া এক ব্যক্তির শখের ৩টি ঘোড়া সবার নজর কাড়ে।
এছাড়াও ছিল প্রাণিদের খাবারসহ গুরুর দুধ থেকে তৈরি মানুষের খাবারও।
খামারি ও ব্যবসায়িরা সহজ শর্তে কৃষিঋণের দাবিসহ বর্তমান বাজারে জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পোল্ট্রিসহ অন্য মুরগের দাম বৃদ্ধির বিষয় কথা জানান এবং বিদেশ থেকে কাঁচা মাল আমদানিতে সরকারের কাছে দাবি জানান।
জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে জনগণের কথা ভেবে নিরাপদভাবে গরু ছাগল, হাঁস-মুরগসহ খাদ্যপণ্য উৎপাদনের জন্য খামারিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যা কিছু উৎপাদন করবেন তা যেন জনকল্যাণে হয়। এসময় তিনি প্রাণিসম্পদ খাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিবান্ধব। তিনি কৃষিকে ঢেলে সাজিয়েছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে কর্মপরিকল্পনা তিনি ঘোষণা করেছেন তাতে আমাদের কৃষি হবে স্মার্ট কৃষি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বার্ষিক সব ধরনের মাংসের চাহিদা ০.৭৩৫৮ লক্ষ মেট্রিক টন এর বিপরীতে উৎপাদন ১.২১লক্ষ মেট্রিক টন। দুধের চাহিদা ১.৫৩৩ লক্ষ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ১.৬২৩ লক্ষ মেট্রিক টন। অন্যদিকে ডিমের চাহিদ ১৭.৪৭২ কোটি। এর বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ১৯.৩১ কোটি ডিম।
বিকেলে খামারিদের স্টলগুলোর মধ্যে ৯টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয়।