পুরো বছরে রেমিটেন্স কমলেও অর্থবছরের শেষ দুই মাসে রেমিটেন্স আগের মাসগুলোর তুলনায় ছিল বেশি। তবে এই সময় ঈদ ছিল এবং ঈদের সময় রেমিটেন্স বরাবরই বাড়ে। সদ্য শেষ হওয়া জুন মাসে বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিরা ১২১ কোটি ৪৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। তার আগের মাস মে মাসে পাঠিয়েছিলেন ১২৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। এই দুই মাস ছাড়া বছরের অন্য মাসগুলোতে রেমিটেন্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমেছিল। নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিটেন্স এসেছিল ১০০ কোটি ডলারেরও কম। বাকি মাসগুলোতে এসেছে ১০০ কোটি ডলারের সামান্য বেশি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে রেমিটেন্স কমেছিল ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রাণ রেমিটেন্সের এই নিম্নমুখী প্রবণতায় উদ্বিগ্ন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও। প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠাতে ব্যাংক মাশুল না নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংক যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতেও বিশ্বব্যাপী রেমিটেন্স আরও কমে যাওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছে।
এটা মাথায় রেখে রেমিটেন্স বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছেন অর্থমন্ত্রী মুহিতও। বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ। রেমিটেন্স প্রবাহ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারাও উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি তারা এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। পরিস্থিতি বুঝতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া ঘুরে এসেছে। রেমিটেন্স কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বিদেশ থেকে অবৈধ পথে টাকা পাঠানোকে দায়ী করছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। অন্যদিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের অর্থনীতির নাজুক অবস্থার কথা বলে আসছে আইএমএফ। সেখানে গিয়ে অনেকের বেকার পড়ে থাকার খবরও আসছে। বাংলাদেশের রেমিটেন্সের অর্ধেকের বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত ও বাহরাইন থেকে।