সংস্কার প্রতিবেদন থেকে তৈরি হবে নতুন বাংলাদেশের চার্টার: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন চারটি সংস্কার কমিশনের প্রধান। তারা হলেন—সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সরফরাজ হোসেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চারটি সংস্কার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে একটি বৈঠক হয়েছে। আলোচনার শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন তৈরির গুরু দায়িত্ব পালনের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, এটা শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বহু রকম রিপোর্ট হয়, কমিটি হয়, রিপোর্ট আসে, গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিকতা পালন করি। আজকের আনুষ্ঠানিকতা সেটার বহু ঊর্ধ্বে। ড. ইউনূস বলেন, আজকের ঘটনা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। কারণ ইতিহাসের প্রবাহ থেকে এই কমিশনগুলোর সৃষ্টি হয়েছে। একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির হঠাৎ পুনরুত্থান হয়েছে, মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, সেখান থেকে ইতিহাসের সৃষ্টি। আজকের দিনের এই অনুষ্ঠান সেই ইতিহাসের অংশ। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সেই ইতিহাস ধারণ করতে পারছি কি না, সামনে নিয়ে যেতে পারছি কি না, সেই ইতিহাসের যে অঙ্গীকার সেই অঙ্গীকার আমরা পূরণ করতে পারছি কি না, আমরা মানুষের মনোভাব, স্বপ্নকে এর মধ্যে ধারণ করতে পেরেছে কি না, সেটা মূল বিষয়। আজকে তার যাত্রা শুরু হলো, সেই ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহে। একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এর কাঠামো রচনার কাজ আপনাদের হাতে দিয়েছিলাম কমিশনের মাধ্যমে। আমাদের যে স্বপ্ন আছে এবং সেই স্বপ্নগুলোর রূপরেখা তুলে ধরেছেন। যে স্বপ্ন নিয়ে জাতির পুনরুত্থান হলো, সেই স্বপ্নকে আমরা ধারণ করতে পারছি কি না, সেটাই আমাদের বিবেচ্য বিষয় হবে। এটা এখানে শেষ না, এই অধ্যায় শুরু হলো। স্বপ্ন এবং অভ্যুত্থান পরবর্তী যাত্রা শুরু হলো।  ড. ইউনূস আরও বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনারা আলোচনার রস তুলে দিলেন। এই আলোচনায় কীভাবে সবাই মতৈক্য হবে, এখান থেকে তৈরি হবে নতুন বাংলাদেশের চার্টার। সেই চার্টার মতৈক্যের ভিত্তিতে হবে। নির্বাচন হবে, সবকিছু হবে কিন্তু ইতিহাসের অংশ হিসেবে চাটার্র আমাদের জাতীয় কমিটমেন্ট।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি, সব দল এই চার্টারে সাইন করবে। এটা হবে আমাদের জাতীয় সনদ। যে সনদ বুকে নিয়ে আমরা অগ্রসর হব। যত তাড়াতাড়ি পারি, যত বেশি পরিমাণ পারি, এটা বাস্তবায়ন করতে থাকব। ভবিষ্যতে যে নির্বাচন হবে, এই চার্টারের ভিত্তিতে সেটাও যেন ঐকমত্যের সরকার হয়। এই চার্টারকে আমরা ধরে রাখব। আমরা এর কন্টিনিউটি চাই কাজে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।