সংসার সুখের হয় স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসায়

547

ইসলাম ধর্মে পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় করার ওপর ব্যাপক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। পরিবারের ভিত্তি শক্তিশালী হওয়ার মধ্যদিয়ে সেখানকার শান্তি ও সমৃদ্ধিই কেবল নিশ্চিত হয় না বরং সমাজ ও রাষ্ট্রও ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়।
সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, যেসব দেশের পরিবারগুলোর মধ্যে বন্ধন সুদৃঢ়, সেসব দেশের অনেক সমস্যারই বিশেষ করে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যার সৃষ্টিই হয় না। পারিবারিক বন্ধন শক্তিশালী করার একটি বড় উপায় হলো- ‘পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা’ জোরদার করা। ভারসাম্যপূর্ণ পরিবারে এসব বৈশিষ্ট্য জোরদার থাকে।
পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিতে পারিবারিক জীবন দু’টি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এক. বন্ধুত্ব, দুই. ভালোবাসা।
পবিত্র কোরআনের সূরা রুমের ২১ নম্বর আয়াতের শেষাংশে আল্লাহতায়ালা এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘তিনি তোমাদের মাঝে ভালোবাসা (বন্ধন) দিয়েছেন। যারা চিন্তাশীল অবশ্যই এ সবের মাঝে তাদের জন্য বহু নিদর্শন রয়েছে।’
তবে আল্লাহ প্রদত্ত এ আকর্ষণ ও ভালোবাসা রক্ষার জন্য স্বামী-স্ত্রী উভয়কে মিলে চেষ্টা চালাতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার বন্ধনটা এমন যে, এটাকে লালন করা হলে তা ক্রমেই দু’জনের মধ্যকার চিন্তা-চেতনাগত পার্থক্যকেও দূর করে দেয় এবং পরস্পরের প্রতি আত্মত্যাগী করে তোলে। নারী ও পুরুষের মধ্যে সৃষ্টিগত যে আকর্ষণ তার সফল পরিণতি ঘটে বিয়ের মধ্য দিয়ে। বিয়ের পর পরস্পরের ভালো দিকগুলোকে গুরুত্ব দিলে সংসার সুন্দর ও সুখময় হয়ে ওঠে এবং ভালোবাসা স্থায়ী হয়।
সাধারণত বিয়ের প্রথম দিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসার টান বেশি লক্ষ্য করা যায়। যদিও স্বামী ও স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা একটি অপরিহার্য বিষয়; কিন্তু এরপরও জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ভালোবাসার রঙ মাঝে মাঝে ফিকে হয়ে যায়। কিন্তু পরস্পরের পছন্দ-অপছন্দ ও আনন্দ-বেদনার জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী সংসার পরিচালনা করলে ভালোবাসা ফিকে না হয়ে বরং দিন দিন জোরদার হয়।
মানুষের জীবনের অপরিহার্য বাস্তবতা হচ্ছে বার্ধক্য। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শারিরীক সামর্থ্য কমে যায়। প্রয়োজন হয় আরও বেশি সহযোগিতার। সে সময় স্বামী-স্ত্রীর প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি অনুভূত হয়। বৃদ্ধ বয়সে জৈবিক প্রয়োজনীয়তা কমে গেলেও মানসিক প্রশান্তির প্রয়োজন অনেক বেশি। এ সময় স্বামী-স্ত্রীই পরস্পরের শারিরীক ও মানসিক সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে সহযোগিতা করতে পারে।