রেডিও মহানন্দা ৯৮.৮ এফএম

শ্রীলঙ্কার বিদায়, সুপার ফোরে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান

আগের ম্যাচের মতোই ফিল্ডিংয়ে বিবর্ণ শ্রীলঙ্কা। বাঁচা-মরার ম্যাচে দায়িত্ব নিতে পারলেন না ব্যাটসম্যানরাও। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে নিজেদের মেলে ধরে লঙ্কানদের বিদায় করে দিয়েছে আফগানিস্তান। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে দলটির সঙ্গী বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে ৯১ রানে জিতেছে আফগানিস্তান। ২৫০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৫৮ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে এটাই আফগানদের প্রথম জয়। আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে সোমবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে টপ অর্ডারের দৃঢ়তায় শুরুটা ভালো করে আফগানিস্তান। প্রথম চার উইকেটের তিনটিতেই পায় পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি।
যথারীতি শুরুতে বোলারদের ওপর চড়াও হন মোহাম্মদ শাহজাদ। ঝুঁকি নিয়ে শট খেলা কিপার ব্যাটসম্যান ফিরেন আকিলা দনাঞ্জয়াকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে। ভাঙে ৫৭ রানের উদ্বোধনী জুটি। আরেক ওপেনার ইহসানউল্লাহকেও ফেরান দনাঞ্জয়া। দ্বিতীয় উইকেটে রহমত শাহর সঙ্গে ৫০ রানের জুটি উপহার দেওয়া ইহসানউল্লাহ ফিরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। তার ৪৫ রানের ইনিংসে বাউন্ডারি ৬টি।
দ্রুত ফিরেন অধিনায়ক আসগর আফগান। তবে চতুর্থ উইকেটে হাশমতউল্লাহ শাহিদির সঙ্গে ৮০ রানের জুটিতে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান রহমত। এক সময়ে আফগানিস্তানের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৯০ রান। সেখান থেকে আফগানদের আড়াইশ রানের ভেতরে রাখেন থিসারা পেরেরা। ৭ উইকেট নিয়ে ডেথ ওভারে গেলেও ফিল সিমন্সের শিষ্যরা প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেনি নিয়মিত উইকেট হারানোয়।
আইসিসি ৫ চারে ৭২ রান করে ফিরেন রহমত। হাশমতউল্লাহ দুই চারে ৩৭। শেষের দিকে তেমন কোনো জুটি পায়নি আফগানরা। মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইবদের কেউ পারেননি ঝড় তুলতে। তবে লড়াইয়ের পুঁজি পেতে কোনো সমস্যা হয়নি আফগানিস্তানের।
শুরু থেকে হাত থেকে ছুটেছে ক্যাচ। সীমানায় হাত ফস্কে হয়েছে বাউন্ডারি। রান আউটের সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি লঙ্কান ফিল্ডাররা। শেষ পর্যন্ত দিতে হল তার চড়া মাশুল। ৫৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার থিসারা। দনাঞ্জয়া ২ উইকেট নেন ৩৯ রানে।
রান তাড়ায় শূন্য রানে কুসল মেন্ডিসকে হারায় শ্রীলঙ্কা। আগের ম্যাচে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পাওয়া ওপেনার ফিরেন ২ বল খেলে।
শুরুর কঠিন সময়টা পার করে দিয়ে ভাঙে দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। বোলিংয়ে এসেই কুসল পেরেরাকে বোল্ড করে দেন রশিদ খান। থিতু হয়েও নিজের উইকেট ছুড়ে আসেন উপুল থারাঙ্গা (৩৬)।
আফগান স্পিন কিংবা পেস কোনোটাতেই স্বচ্ছন্দ ছিল না লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় উইকেট জুটি ছাড়া নেই তেমন কোনো জুটি। দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারেননি কেউই। আইসিসি শেহান জয়াসুরিয়া রান আউট হওয়ার পর খানিকটা প্রতিরোধ গড়েন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও থিসারা পেরেরা। তবে অহেতুক নবিকে উড়ানোর চেষ্টায় ম্যাথিউস ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলে আর পেরে উঠেনি শ্রীলঙ্কা। চন্দিকা হাথুরুসিংহের দল শেষ ৫ উইকেট হারায় মাত্র ১৮ রানে।
রশিদ, নবি, মুজিব উর রহমান ও গুলবাদিন নাইব নেন দুটি করে উইকেট।
টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারানো বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে আসগর আফগানের দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২৪৯ (শাহজাদ ৩৪, ইহসানউল্লাহ ৪৫, রহমত ৭২, আসগর ১, হাশমতউল্লাহ ৩৭, নবি ১৫, নাজিবউল্লাহ ১২, গুলবাদিন ৪, রশিদ ১৩, আফতাব ৭*, মুজিব ০; মালিঙ্গা ১/৬৬, চামিরা ১/৪৩, থিসারা ৫/৫৫, দনাঞ্জয়া ২/৩৯, ধনাঞ্জয়া ০/২২, জয়াসুরিয়া ১/২২)
শ্রীলঙ্কা: ৪১.২ ওভারে ১৫৮ (মেন্ডিস ০, থারাঙ্গা ৩৬, ধনাঞ্জয়া ২৩, কুসল পেরেরা ১৭, ম্যাথিউস ২২, জয়াসুরিয়া ১৪, থিসারা ২৮, শানাকা ০, দনাঞ্জয়া ২, মালিঙ্গা ১, চামিরা ২*; মুজিব ২/৩২ আফতাব ০/৩৪, গুলবাদিন ২/২৯, নবি ২/৩০, রশিদ ২/২৬)
ফল: আফগানিস্তান ৯১ রানে জয়ী