‘শেখ হাসিনার বক্তব্য সমর্থন করে না ভারত’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে যে সকল সমালোচনা করেন তা ভারত সমর্থন করে না। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) কংগ্রেস নেতা শশী থারুর নেতৃত্বে ভারতের সংসদের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী এই মন্তব্য করেন। মিশ্রী বলেন, ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের সাথে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এই সম্পর্কের ভিত্তি বাংলাদেশের জনগণের মধ্যেই নিহিত। তিনি জানান, ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে কোনো আলাদা প্ল্যাটফর্ম প্রদান করেনি, বরং হাসিনা তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এইসব মন্তব্য করে চলেছেন। মিশ্রী আরও বলেন, ঢাকায় তার সফরের সময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জানিয়েছেন, ভারত জনগণের সাথে সম্পর্ক অগ্রাধিকার দেয় এবং বর্তমান সরকারের সাথে কাজ চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক। তিনি জানান, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা গুলো নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের এক ধরনের অস্বীকৃতি রয়েছে যা উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এই হামলা গুলোকে আওয়ামী লীগের উপর হামলা বলে যুক্তি দেখালেও মিশ্রী ব্যাখ্যা করেন, এমন যুক্তি এই ধরনের আক্রমণের ‘ন্যায্যতা’ প্রমাণ করতে পারে না।

তিনি মন্দির ও ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর হামলার ঘটনাগুলোর সত্যতা মেনে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। তবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের এই ধরনের ঘটনায় যে ৮৮ জনকে গ্রেপ্তারের করেছে তা ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন। এই সময় মিশ্রী সাবেক ইসকন নেতার গ্রেপ্তারের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।  তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিছু সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সন্ত্রাসী’র ভারত-বিরোধী বক্তব্যের বিষয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ভুল তথ্য প্রচারণার অভিযোগ আনা হয়। তিনি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্য ও সংযোগ অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে রেল লিঙ্ক, বাস লিঙ্ক এবং অভ্যন্তরীণ জলপথ তৈরি হয়েছে। তবে, তিনি কমিটিকে জানিয়েছেন যে দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা ‘স্থগিত’ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং বলেন, ২০২২ সালে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারত ষোল লাখ ভিসা ইস্যু করেছে। অবশেষে, তিনি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি পুনর্বিবেচনার বিষয়টি তার আলোচনায় আসেনি বলে জানান।