শিশুর মোবাইল ফোনের ব্যবহার কমাতে

ছোটবেলার দুষ্টুমি তো আগেও ছিল, তবে আজকের ‘জেন’, ‘আলফা’ প্রজন্মের বাচ্চাদের নিয়ে বাবা-মায়ের চিন্তা একটু অন্যরকম। রিলস দেখা, গেইম খেলা, কার্টুন সবকিছু এখন মোবাইলের পর্দায় আটকে গেছে। এই আসক্তি তাদের জেদি, অমনোযোগী আর শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় করে তুলছে। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা রহমান। তিনি বলছেন, “সন্তানকে স্ক্রিনের নেশা থেকে বের করে আনতে কিছু সাধারণ অভ্যাস বদলই যথেষ্ট। চলুন জেনে নিই কীভাবে সেটা সম্ভব।
নিজে প্রথমে মোবাইল থেকে দূরে থাকুন : শিশুর সামনে ফোন হাতে নিয়ে বসে থাকলে সে কী শিখবে? আপনি যদি নিজেই স্ক্রল করতে করতে সময় কাটান, তাহলে সন্তানের কাছে এটাই স্বাভাবিক মনে হবে। তাই সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় ফোন একদম দূরে রাখতে হবে। গল্প করুন, খেলুন, একসঙ্গে রান্না করুন এতেই সে বুঝবে ফোন ছাড়াও জীবন মজার।
খাওয়ার সময় মোবাইল একদম নয় : শিশুকে খাওয়ানোর জন্য অনেকে মোবাইল ধরিয়ে দেন। এটা একদম ভুল। এতে খাবারের প্রতি মনোযোগ থাকে না, স্বাদ বোঝে না, এমনকি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলতেও পারে। বরং পুরো পরিবার একসঙ্গে বসুন, গল্প করুন, হাসুন। খাবার শেষ হবে, সম্পর্কও মজবুত হবে।
ঘরের ভেতর খেলায় ব্যস্ত রাখুন : খেলাধুলায় মগ্ন থাকলে মোবাইলের কথা মনেই পড়ে না। বাইরে নিয়ে যাওয়া সবসময় সম্ভব না হলে ঘরেই নানান খেলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। লুডো, দাবা, পাজল, ব্লক সেট, রং পেন্সিল, গল্পের বই এসব দিয়ে শিশুকে ব্যস্ত রাখতে হবে। সৃজনশীল কাজে আগ্রহী করলে সে নিজেই স্ক্রিন ভুলে যাবে।
ধীরে ধীরে স্ক্রিন টাইম কমান : হঠাৎ ফোন কেড়ে নিলে শিশু আরও জেদ ধরবে। তাই ধীরে ধীরে কমাতে হবে।প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে দিন যেমন সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কার্টুন দেখা, তারপর বন্ধ। নিয়মিত এটা মানলে সে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। একটা স্বাস্থ্যকর রুটিন তৈরি হবে, আসক্তিও কমবে। শিশুর মোবাইল আসক্তি কমানো মানে শাস্তি দেওয়া নয়, বরং তাকে বোঝানো যে জীবন ফোনের বাইরেও অনেক রঙিন। একটু ধৈর্য আর ভালোবাসা দিয়ে শুরু করলেই ফল পাওয়া সম্ভব।