শিবগঞ্জ সীমান্তে তৃতীয় দফায় ২০ জনকে পুশ ইন বিএসএফের; বিজিবি’র দফায় দফায় তীব্র প্রতিবাদ

শিবগঞ্জ উপজেলার মাসুদপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে ২০ জনকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিএসএফ) দফায় দফায় এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি। এনিয়ে গত ২৩ দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি সীমান্ত দিয়ে ৪৫ জনকে পুশইন করল বিএসএফ। এর আগে গত ২৭ মে জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৭ জন এবং গত ৩ জুন জেলার ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারি সীমান্ত দিয়ে ৮ জনকে পুশ ইন করে বিএসএফ। ২৭মে এবং ৩ জুন পুশ ইনের শিকার ২৫ জনকে বাংলাদেশী হিসেবে শনাক্তের পর পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

বিজিবি,পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ ভোর পৌনে ৫টার দিকে প্রচন্ড দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে মাসুদপুর বিওপির আওতাধীন আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ৪/৫-১ এর নিকট দিয়ে ২০ জনকে ঠেলে পাঠায় ব্এিসএফ। পরে সীমান্তের শূণ্য লাইনের নিকট থেকে তাদের আটক করে বিজিবি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ এবং পরিচয় ও নাগরিকত্ব যাচাইয়ে তাদের বাংলাদেশী হিসেবে শনাক্তের পর দুপুরে তাদের শিবগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হস্তান্তর করা হয়। তবে ২০ জনের নিকট জন্মসনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়নি। পুশইনের শিকারদের মধ্যে ৩ জন পুরষ, ৭জন নারী এবং ১০ জন শিশু রয়েছে। এদের ৭জন কড়িগ্রামের ফুলবাড়ি, ৫ জন নাগেশ^রী, ৫ জন উলিপুর উপজেলা এবং ৩ জন রংপুর কোতোয়ালী থানা এলাকার বাসিন্দা। জানা গেছে ১০ থেকে ১৫ বছর পূর্বে তারা ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের পর হরিয়ানা প্রদেশে ইটভাটায় কাজ করত। পুশইনকৃত ১০ শিশু ভারতে জন্মগ্রহণ করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বলেন, অত্যন্ত অমানবিকভাবে প্রতিকুল আবহাওয়ায় এককাপড়ে ২০ জনকে পুশইন করা হয়। যা আন্তর্জাতিক আইনের সূস্পষ্ট লংঘন। চরম অমানবিক এবং কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে কোনরকম রীতিনীতির তোয়াক্কা করে নি বিএসএফ। তারা বিষয়টি আগেই জানাতে পারত। কিন্তু তারা পরে জানিয়েছে। অধিনায়ক আরও বলেন, বিষয়টি বিজিবি সদর দপ্তরের নিদের্শণা মোতাবেক জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারকে জাননো হয়েছে। কোম্পানী এবং ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পতাকা বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে লিখিতভাবে প্রতিবাদ জাননো হবে।
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, ৪/৫ বছরের শিশুসহ মানুষগুলো অত্যন্ত দরিদ্র। অত্যন্ত দূরাবস্থার মধ্যে দিয়ে তাঁরা এসছেন। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন তাদের ডাকবাংলোতে ২০ জনের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। পুশইনের শিকারদের পরিবারকে খবর দিয়ে আনার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।