শরীরচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে, এগিয়ে আসুন রাজশাহীর উজ্জীবন পদ্মার পাড়ে

484

‘উজ্জীবন’ পদ্মার পাড় রাজশাহী। স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি আমার সকালকে সুন্দর করে দিয়েছে। অনেক বছর পর ভোর দেখছি নিয়মিত। আহা! কি অপূর্ব এক একটি ভোর! গত দশ মাসে আমার শরীরের ওজন বেড়েছে প্রায় দশ কেজি। খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করেও কাজ হচ্ছিল না। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা, হাঁটাহাঁটি করা বেশ অসলতার কাজ। এদিকে রক্তে শর্করা বাড়ছে। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার জানান, ডায়াবেটিকে আক্রান্ত হবার বর্ডার লাইনে অবস্থান করছি। ফলে হাঁটাহাঁটি ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে। তাই গত দুই সপ্তাহ আগে অ্যালার্ম দিয়ে একদিন ভোর সাড়ে পাঁচটায় বিছানা ছাড়লাম। আমার বাড়ি থেকে পদ্মা নদী ১৫ মিনিটের পথ। হাঁটতে হাঁটতে গেলাম নদীর পাড়ে। টি-বাঁধ থেকে পূর্ব দিকে কিছুটা এগিয়ে গেলে রিভারভিউ স্কুল। এর বিপরীতেই ছিল সিমলা পার্ক। সেখানে বড় বড় গাছের ছায়া। বেশ সুন্দর এলাকাটা। এখানে শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে হাঁটার সময় হঠাৎ শুনি হা হা হো হো হাসির উচ্চশব্দ। ব্যাপারটা কি আগ্রহ মিটাতে গিয়ে দেখি বেশ কয়েকজন বয়ষ্ক মানুষ ব্যায়াম করছেন। পরের দিন আমিও যোগ দিলাম তাঁদের সাথে। ভোর সাড়ে পাঁচে অ্যালার্ম বাজছে রোজ। একদমই অলসতা করছি না। বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরের অতীত সিমলা পার্কে পৌছে যাচ্ছি সময় মতো। দিনটা বেশ বড় হয়েছে আমার, ভালোলাগছে খুব! এরমধ্যে একদিন ব্যায়ামের সময় বৃষ্টি নামলো। গাছের নিচে দাঁড়িয়েও ভিজতে হলো। ছাদের নিচে দাঁড়াতে খানিকটা দূরে যেতে হবে। সেদিন মনে হয়েছে, আমাদের রাজশাহী নগরীর সিনিয়র সিটিজেনরা এখানে আসেন ব্যায়াম করতে। গড়ে চল্লিশজন নিয়মিত আসেন এখানে। তাঁদের সুবিধার কথা ভেবে যদি এখানে এমন অবকাঠামো তৈরি করা যায় যাতে বৃষ্টি হলে ভিজতে হবে না, ঘামের পোশাকটি জনসম্মুখে পাল্টাতে হবে না, টয়লেট সুবিধা ও পানি হাতের কাছেই পাওয়া যাবে, তাহলে খুবই উপকার হতো। এই চাওয়া কি খুব বেশি কিছু? রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষে এই চাওয়া মেটানো কি কঠিন হবে? আমার এই লেখাটি যদি রাজশাহী নগরীতে কর্মরত কোন মিডিয়া কর্মীর চোখে পড়ে তবে আপনার প্রতি বিনীত অনুরোধ, একদিন খুব সকালে আসুন উজ্জীবন পদ্মারপাড় রাজশাহীর কার্যক্রমের সাথে পরিচিত হতে। নগরীর সিনিয়র সিটিজেনদের শরীরচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে ভূমিকা রাখতে পারলে বিশ্বাস করেন আপনারও ভালো লাগবে। অনেক নারীকে খুব সকালে হাঁটতে দেখি। তাঁরাও দলবদ্ধ হয়ে ব্যায়াম করতে পারেন। এক্ষেত্রে তাঁরা চাইলে উজ্জীবন নিশ্চয়ই সহযোগিতার হাত বাড়াবে।।