শরতে অ্যালার্জির উপদ্রব

43

শরত স্নিগ্ধ এক ঋতু। শরতের সৌন্দর্য আপনাকে স্পর্শ করুক বা না করুক, শরতে অ্যালার্জি যেকোনো সময় আপনাকে কাবু করে দিতে পারে। একদিন আচমকা দেখবেন হাঁচির দমকে টিকে থাকা যাচ্ছে না। নাক বন্ধ হয়ে গেছে। কেমন লালচে দেখাচ্ছে ত্বক। শরতে অ্যালার্জির এই উপদ্রব আপনাকে ঠেকানোর জন্য একটু বাড়তি মনোযোগ দিতেই হবে। আমাদের দেহের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা তুলনামূলক অক্ষতিকর কোনো উপাদানকে দেহের জন্য ক্ষতিকর ভেবে বসে তখন অ্যালার্জিক রিয়্যাকশন দেখা দেয়। আর আপনার শরীরেও অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করবে। শরতকালে অ্যালার্জি হওয়ার জন্য এই ঋতুর বৈশিষ্ট্য অনেকটা দায়ি। পরাগ রেণু, ছাঁচের স্পোর, ডাস্ট মাইট শরতের সাধারণ অ্যালার্জেন। শরতে অনেকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যান। আর শহরে বাতাসেও এসব অ্যালার্জেন থাকতে পারে। তাই বাড়তি কিছু সতর্কতা এ সময় জরুরি।

শরতে অ্যালার্জির লক্ষণ বুঝবেন কিভাবে?

#সর্দি-কাশি
#নাক বন্ধ হয়ে থাকা
#চোখে পানি আসা
#হাঁচি
#গোঙানি
#চোখ ও নাক অনবরত চুলকানো
#চোখের নিচে ক্ষত হওয়া

সাধারণ সর্দি-কাশি বা করোনা ভাইরাসের উপসর্গের সঙ্গে এর কয়েকটা উপসর্গের মিল রয়েছে, তাহলে বুঝবেন কী করে যে আপনি ঋতুভিত্তিক অ্যালার্জিতে আক্রান্ত? আসলে অন্য রোগে জ্বর একটি মূল লক্ষণ হলেও অ্যালার্জির ক্ষেত্রে জ্বর হয় না, আর এটা সংক্রামকও নয়।

শরতের অ্যালার্জি এড়াতে কি করবেন?
শরতে অ্যালার্জেন থেকে বাঁচতে হলে সহজ কিছু কাজ রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন।

১.পরাগ রেণু এড়িয়ে চলুন
গ্রীষ্মের শেষে এবং শরতের শুরুতে ভোরের দিকে বাতাসে পরাগের মাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। গরম দিনে এবং ঝড় বা বৃষ্টির পরেও পরাগের মাত্রা ওঠানামা করতে পারে। তাই পরাগ সংখ্যা বেশি হলে বাইরে ঘোরাঘুরি কিছুটা সীমিত করুন। বাইরে থেকে ঘরে প্রবেশের সময় কাপড় বদলে ফেলুন। ভেজা কাপড় বাইরে শুকাতে দিলেও ঝেড়ে ভাঁজ করতে হবে।

২.বাসার স্যাঁতসেঁতে স্থান পরিষ্কার রাখুন
স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে মোল্ড বা ছত্রাক জন্মায় যা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে গিয়ে আপনাদের ত্বকেও সংক্রমণ ছড়ায়। ছত্রাক আমাদের ঘরের ভেজা স্যাঁতসেঁতে স্থান, যেমন- টয়লেট, রান্নাঘর, লন্ড্রিরুমে থাকে। এক্ষেত্রে বাড়িতেই ভিনেগারের দ্রবণে যন্ত্রের মোল্ডযুক্ত পার্টগুলো পরিষ্কার করে নিতে পারেন। ঘর যদি রঙও করান তার আগে মোল্ড পরিষ্কার করে নেবেন।

৩.ধূমপানমুক্ত রাখুন ঘরের পরিবেশ
এই ঋতুতে একেবারেই ধূমপান পরিহার করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। নিজ বাসার পরিবেশ যথাসম্ভব ধূমপানমুক্ত রাখুন।

৪.বিছানার চাদর ও অন্দরে নজর
আপনার বিছানা ময়লা হলে অ্যালার্জির শুরুটা সেখান থেকেই হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। বিছানাপত্রে শরতের সময় অনেক ডাস্ট মাইট পাওয়া যায়। ধোয়ার অযোগ্য, ভারি চাদরের বদলে মেশিনে ধোয়া যায় ও শ্বাস-প্রশ্বাসের যোগ্য এমন কাপড় ব্যবহার করুন। বালিশ ও গদিগুলোকে ডাস্ট মাইট প্রতিরোধী কভার দিয়ে ঢেকে রাখতে ভুলবেন না। গৃহসজ্জার সামগ্রী ও কার্পেটগুলো প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার ভ্যাকুয়াম করে ধুলো ও ডাস্ট মাইট ঝরিয়ে নিতে হবে।

৫.সুগন্ধি ক্লিনার ব্যবহার না করা ভালো
যথাসম্ভব গন্ধহীন পরিষ্কারক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। নন-ক্লোরিন ক্লিনার এবং ডিটারজেন্ট বেছে নিতে পারলে ভালো হয়।