রূপচর্চা এবার মৌসুমের সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে

308

রূপচর্চার পদ্ধতি পরিবর্তন করা জরুরি। কারণ একই পদ্ধতি বছরের পর বছর মেনে চলা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।
রূপচর্চার প্রসাধনী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘অর্গানিক হার্ভেস্ট’য়ের ভারতীয় রূপবিশেষজ্ঞ বিন্দিয়া গুপ্তা জানিয়েছেন ঋতুর সঙ্গে রূপচর্চার তাল মেলানোর গল্প।
সব ঋতুতে ‘সি-টি-এম’: ‘ক্লেনজিং-টোনিং-ময়েশ্চরাইজিং (সি-টি-এম)’ এই রুটিন সব ঋতুতেই প্রযোজ্য, পাল্টাবে শুধু প্রসাধনী। গরমের দিনে চাই কড়া ‘ক্লেনজার’ যা ত্বকের গভীর থেকে ময়লা দূর করতে পারে। বর্ষায় চাই ত্বকে উজ্জ্বলতা আনে এমন ‘ক্লেনজার’। আর শীতে চাই মৃদু মাত্রার ‘ক্লেনজার’ এবং শক্তিশালী ময়েশ্চারাইজার। শসা এবং চায়ের উপাদান আছে এমন টোনার গ্রীষ্মের দিনগুলোর জন্য আদর্শ, যা ব্রণ দূরে রাখবে।
যেই প্রসাধনী ব্যবহার করুন না কেনো তা ‘অর্গানিক’ হওয়া জরুরি। এতে ত্বক তার আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে এবং উপাদানগুলো খাঁটি হওয়ায় ত্বকের সমস্যাগুলো ভেতর থেকে সেরে ওঠে।
ঋতু ভেদে ‘এসপিএফ’: সব ঋতুতেই সানস্ক্রিন ব্যবহারে প্রয়োজন আছে। তবে বর্ষায় ব্যবহার করা উচিত পানিতে সহজেই ধুয়ে যায় না এমন সানস্ক্রিন।
রাতে ত্বকের যতœ: ত্বক সবচাইতে সক্রিয় হয় রাতে। তাই এই সময় বিশেষ ধরনের ‘নাইট ক্রিম’ ব্যবহার করা উপকারী। রাতে একটি ‘অর্গানিক নাইট ক্রিম’ ব্যবহারের অভ্যাস করতে পারলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং বয়সের ছাপও পড়বে দেরিতে।
স্ক্রাব: রোদপোড়া-ভাব দূর করে এমন স্ক্রাব গরমের দিনগুলোর জন্য বেশি উপকারী। আবার বর্ষার দিনে সাধারণ ‘এক্সফোলিয়েটিং’ স্ক্রাব যথেষ্ট। শীতে স্ক্রাব ব্যবহার করার সময় সাবধান থাকতে হবে। কারণ এ সময় ত্বক থাকে শুষ্ক ও রুক্ষ।
লিপবাম: শুধু শীতকাল নয় সব ঋতুতেই লিপবামের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বিশেষ করে ‘শিয়া বাটার’ যুক্ত লিপবাম সবচাইতে বেশি উপকারী।
ভারতের ‘কামা আয়ুর্বেদা’র নিজস্ব চিকিৎসক শারদ কুলকার্নি জানিয়েছেন আরও কিছু বিষয়।

* হঠাৎ করেই এক পদ্ধতি থেকে আরেক পদ্ধতিতে চলে যাওয়া চলবে না। ‘টেপারিং মেথড’ অর্থাৎ ধীরে ধীরে এক পদ্ধতি থেকে অন্য পদ্ধতিতে যেতে হবে যাতে ত্বক নয়া পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পায়।

* শরীর এবং চুলে তেল মালিশ করা স্বাস্থ্য, স্থিতিস্থাপকতা, শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সব ঋতুতেই তেল মালিশ করা উচিত।

* হঠাৎ করে প্রসাধনীর ব্র্যান্ড পুরোপুরি পাল্টে ফেলাও ঠিক না, কারণ এতে হীতে বিপরীত হতে পারে।

* পরিবেশের তাপমাত্রার উপর ভিত্তি করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের মাত্রা তারতম্য আনতে হবে। আবার একই কথা ত্বক পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, গরমের দিনে এই মাত্রা বেশি হবে।

* গ্রীষ্ম ও বর্ষায় জীবাণুর আক্রমণ বেশি হয়। তাই এই ঋতুতে বাড়তি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।

* ‘টোনিং’ সব ঋতুতেই ত্বকের প্রযোজনীয় চাহিদা পূরণ করে। কারণ এটি ত্বকের আটকে যাওয়া লোমকূপ পরিষ্কার করে এবং তাদেরকে সংকুচিত করে ত্বকে আনে তারুণ্যের দীপ্তি।

* যে পদ্ধতি-ই ব্যবহার করুন না কেনো, তা অতিরিক্ত প্রয়োগ করা উচিত নয়।

* ঋতু ও রূপচর্চার পদ্ধতি পরিবর্তনের দিনগুলোতে অতিরিক্ত মেইকআপ ব্যবহার করা উচিত নয়।

* খাদ্যাভ্যাস, ঘুম এবং শরীরচর্চা সবকিছুই প্রয়োজনীয় ও স্বাস্থ্যকর মাত্রা থাকা চাই।