রাশিয়ার সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার যৌথ সমুদ্র মহড়া, পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত

চলতি সপ্তাহে রাশিয়ার সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার প্রথম যৌথ সামরিক মহড়া নিয়ে বিশ্লেষকরা বলেছেন, এটি নতুন প্রেসিডেন্ট প্রবোও সুবিয়ান্তোর উল্লেখযোগ্য বৈদেশিক নীতি পরিবর্তনে জাকার্তার একটি বড় ভূমিকার ইঙ্গিত। জাকার্তা থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে। ইন্দোনেশিয়া দীর্ঘদিন ধরে একটি নিরপেক্ষ বৈদেশিক নীতি বজায় রেখেছে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বা মার্কিন-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনো পক্ষ নিতে অস্বীকার করেছে। তবে জাকার্তার উপর পশ্চিমা চাপ সত্ত্বেও মস্কোর সাথে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে প্রাবোও। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের গবেষক পিটার পান্ডি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার জন্য সুবিধাজনক ভূ-রাজনৈতিক ব্লক নির্বিশেষে যে কারও সাথে সম্পর্ক উন্নত করা তাদের বৃহত্তর এজেন্ডার অংশ। ইন্দোনেশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আসিয়ান ব্লকের সদস্য। এটি ২০২১ সালে রাশিয়ার সাথে যৌথ মহড়ায় অংশ নেয়, তবে এর সদস্য দেশগুলো মস্কোর সাথে পৃথকভাবে কখনও মহড়া করেনি। মস্কোর সাথে জাকার্তার বিলিয়ন-ডলারের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। অস্ত্র পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এসআইপিআরআই অনুসারে, ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করার পরে এবং ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণ করার পরে রাশিয়ার উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় অস্ত্র আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। তারপরও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথিত হুমকি সত্ত্বেও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে ২০১৮ সালে সম্মত হওয়া ১ দশমিক ১ বিলিয়ন রাশিয়ান ফাইটার জেট চুক্তিটি প্রাবোও বজায় রেখেছেন। ২০২২ সালে আয়োজিত জি২০ শীর্ষ সম্মেলন থেকে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলো যখন ইন্দোনেশিয়াকে চাপ দেয় তখনও জাকার্তা তা মানতে অস্বীকার করে। প্রবোও জুলাই মাসে ক্রেমলিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিদিমির পুতিনের সাথে দেখা করেন, পরে যৌথ নৌ মহড়ার ঘোষণা দেন। গত মাসে তার দায়িত্ব গ্রহণের আগে প্রাবোও বলেছিলেন, তিনি ‘দৃঢ় বন্ধুত্বের একটি জাল’ তৈরি করতে চান। সেই লক্ষ্যে তিনি চীন এবং অস্ট্রেলিয়াসহ এক ডজনেরও বেশি দেশ সফর করেছেন, যেখানে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা চুক্তি করেছেন এবং জাকার্তা তখন থেকে উদীয়মান অর্থনীতির ব্রিকস গ্রুপে যোগদানের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।