রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে সেনা সদস্যসহ নিহত ৪২

270

অবিরাম ভারি বষর্ণের ফলে রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ পাহাড় ধসের ফলে মাটি চাপা পড়ে সেনা বাহিনীর একজন মেজরসহ ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৫৬ জন। নিখোঁজ রয়েছে আরো ৩০ জনের অধিক। শহরের মানিকছড়ি আর্মী ক্যাম্পের এক অংশের ওপর পাহাড় ধসে পড়ে সেনা বাহিনীর ৫ সদস্য ও ভেদভেদী এলাকায় বসত ঘরের ওপর পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে একই পরিবারের ৬ জন নিহত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে গত ৪৮ ঘন্টার অবিরাম ভারি বর্ষণের ফলে শুধু রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা বিভিন্ন উপজেলায় ভয়াবহ পাহাড় ধসের সৃষ্টি হয়েছে। বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, রাঙ্গামাটি পৌরসভা, কাউখালী কাপ্তাই, রাজস্থলী উপজেলায়। রাঙ্গামাটির মানিকছড়িতে একটি সেনা ক্যাম্পের পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে ৫ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে। এরা হলো মেজর মাহাফুজ, ক্যাপটেইন তানভীর করপোরেল আজিজি, সৈনিক আজিজি ও সৈনিক শাহিন। সদর জোন কমান্ডার লে কর্ণেল রিদুয়ান ইসলাম জানান সেনাবাহিনীর এই টিমটি ক্যাম্পের এক অংশ ধসে পড়ার তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে এই টিমটি পাহাড় ধসের কবলে পড়ে। এই পর্যন্ত রাঙ্গামাটি সদরে ১৪ জন, কাইখালেত ১৪জন, কাপ্তাই ৭ ও বিলাই ছড়িতে ২জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অমিয় চাকদা, মিন্টু ত্রিপুরা, আইস মল্লিক, লিটন মল্লিক, চঞ্চু মল্লিক, রুমা আক্তার, হাজারা বেগম, সোনালী চাকমা বৈশাখী চাকমা, অংসিচিং চেনা মারমা কেথোয়চিং মারমা, লায়লা বেগম ও নুরে আক্তার নাম পাওয়া গিয়েছে। এখানো নিখোঁজ রয়েছে আর ৩০ জন। আহত হয়েছে ৫৬ জনের অধিক। নিহত ও আহতদের নাম পাওয়া য়ায়নি। ২দিনে টানা বর্ষণে শতাধিক বসত ঘরে পাহাড় ধসে পড়েছে। এছাড়া আরো কয়েকশত ঘরবাড়ি আংশি ক্ষতি হয়েছে। সোমবার থেকে রাঙ্গামাটিতে অবিরাম ভারি বর্ষণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে বৃষ্টির মাত্র আরো প্রবল হওয়ায় শহরের বিভিন্নি স্থানে ব্যাপক ভাবে পাহাড় ধস সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে এই ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাঙ্গামাটিতে গত ৪৮ঘন্টা ধরে প্রবল টানা বর্ষণের ফলে রাঙ্গামাটি শহরের পুলিশ লাইন, উন্নয়ন বোর্ড এলাকা, ভেদভেদীর শিমুলতলী, নতুন পাড়া, বেতার কেন্দ্র, তবল ছড়ি, পুলিশ লাইন, কাপ্তাই নতুন বাজার এলাকায় ব্যাপক পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। বর্ষণ অব্যাহত থাকায় শহরে আরো বড় ধরনের পাহাড় ধস হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পাহাড় ধসের ব্যাপারে রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মানান সঙ্গে ফোন কথা বললে তিনি জানান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে শহরের জন সাধারণকে পাহাড় ধস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিরাপদে আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য আহব্বান জানিয়ে সোমবার ও মঙ্গলকার শহরে বার বার মাইকিং করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এলাকায় বড় ধরণের পাহাড় ধস হয়েছে। আর একটু পাহাড় ধস নামলে উন্নয়ন বোর্ড সড়ক একেবারে ধসে পড়বে বলে এলাকাবাসী জানান। এই পাহাড় ধসের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অনেক লোক নিরাপদে সড়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন শহরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। রাঙ্গামাটিতে রোববার রাত থেকে শহরে টানা ২দিন বিদ্যুত না থাকা ও অবিরাম প্রবল বর্ষেণের ফলে রাঙ্গামাটির জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম সড়ক সহ শহরের অধিকাংশ সড়ক ভাঙ্গনের কবলে পড়ায় রাঙ্গামাটি শহরের সকল যোগাযোগ ব্যবস্থা ভোর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে।