রহনপুর ও শিবগঞ্জ মুক্ত দিবস আগামীকাল

88

১১ ডিসেম্বর, শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ও শিবগঞ্জ মুক্ত দিবস। প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ :
গোমস্তাপুর প্রতিনিধি : আজ উপজেলা সদর রহনপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর এ শহর হানাদার মুক্ত হয়। দিবসটি উপলক্ষে গোমস্তাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করেনি।
এ দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আকতার আলী খান কচি জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এ এলাকা ৭নং সেক্টরের অধীন ছিল। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর খুব সকালে লেফটেন্যান্ট রফিকের নেতৃত্বে প্রায় ৩০/৩৫ জনের একটি মুক্তিযোদ্ধা দল বাঙ্গাবাড়ী থেকে রহনপুর অভিমুখে রওনা হয়। পথে আলীনগর এলাকার মুক্তিযোদ্ধারাও তাদের সাথে যোগ দেন। এছাড়া মহানন্দা নদী পেরিয়ে বোয়ালিয়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা রহনপুরে প্রবেশ করে। মুক্তিযোদ্ধারা রহনপুরে প্রবেশের আগেই ভোরে পাকসেনারা রহনপুর এবি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গড়ে তোলা সেনা ক্যাম্প গুটিয়ে ট্রেনযোগে পালিয়ে যায় এবং রহনপুর শহর মুক্ত হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধারা নাচোল-আমনুরা হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দিকে রওনা হন।
শিবগঞ্জ প্রতিনিধি : আজ ১১ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ মুক্ত দিবস। এ দিনে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপণ যুদ্ধ করে পাকসেনাদের বিতাড়িত করেন এবং শিবগঞ্জকে মুক্ত করে বর্তমান উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউপির আবুল খায়ের বিশ্বাসের বাড়ি থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ৬ নভেম্বর পাকসেনাদের সম্মুখযুদ্ধে পরাস্ত করে কানসাট অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকেন।
এদিকে ৩০ নভেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর বালিয়াদিঘী- সোনামসজিদ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে ধোবড়া এলাকায় পাকসেনা অবস্থানে আক্রমণ চালান। ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে ধোবড়া এলাকায় মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের পরাস্ত করে সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা ডিফেন্স বসায়। ৮ ডিসেম্বর বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পাকবাহিনী বিনোদপুর ও মনাকষা এলাকার শতাধিক নিরীহ গ্রামবাসীকে ঘরে আটকে আগুনে পুড়িয়ে এবং ৫০-৫৫ জন শিক্ষিত ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। এ খবর পেয়ে সাবেক এমপি শাহজাহান মিয়া ও আমানুল্লাহ বিশ্বাসের বাহিনী এবং মনাকষা এলাকায় মইনউদ্দিন আহম্মেদ মন্টু ডাক্তারের মুক্তিবাহিনী ত্রিমুখী আক্রমণ করে সম্মুখযুদ্ধে মিলিত হয়ে শিবগঞ্জ অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে।
একইভাবে চককীর্তি ধাইনগরসহ আরো বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের দলগুলো শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে মিলিত হয় এবং পাকবাহিনীকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের দিকে তাড়িয়ে দিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শিবগঞ্জকে মুক্ত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়।